ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন, একাডেমিক কাউন্সিল এবং ফাইন্যান্স কমিটির নির্বাচনে ১৩টি পদের সব কটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের প্রার্থীরা।
১৯৮৩ সালের পর এই প্রথম সব কটিতে প্রথমবারের মতো নীল দলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে।
‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিকল্প যে আর কেউ নেই এই জয়ের মাধ্যমে সেটির বহিঃপ্রকাশ হয়েছে’-এই মন্তব্য করেন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়। বিকেল সাড়ে তিনটায় নির্বাচন কমিশনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ফল ঘোষণা করেন।
এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৪৯৮ জন। ভোট পড়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৫৯টি। অ্যাকাডেমিক কমিটির সকল সদস্য এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।
সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ছয় ক্যাটাগরিতে ছয়টি পদের জন্য ভোট হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ডিন, প্রাধ্যক্ষ, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক।
এই ছয় পদের সবক'টিতে নীল দলের প্রার্থী থাকলেও দুইটি পদে প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাদা দল।
ছয় পদে বিজয়ীরা হলেন, ডিন ক্যাটাগরিতে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুস ছামাদ, প্রভোস্ট ক্যাটাগরিতে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে লোক প্রশাসন বিভাগের আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান, সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের মোহাম্মদ শরিফ উল ইসলাম এবং প্রভাষক ক্যাটাগরিতে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের মাহিন মোহিদ।
একাডেমিক পরিষদে নির্বাচনে বিজয়ীরা হলেন, সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে ড. ইসমাত রহমান, বিপুল চন্দ্র দেবনাথ, মন্দিরা চৌধুরী।
সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে ড. আ.স.ম মনজুর আল হোসেন, এ বি এম আশরাফুজ্জামান, মো. মমিন ইসলাম।
ফাইন্যান্স কমিটিতে নির্বাচিত হয়েছেন ড. মো. শফিকুল ইসলাম।
নির্বাচন শেষে নীল দলের আহবায়ক আবদুস সামাদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট হয়েছে, এ বিজয় তার স্বীকৃতি। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির বিকল্প যে অন্য কেউ নেই, এটা তার বহিঃপ্রকাশ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে মোট ১৮টি পদ রয়েছে৷ এর মধ্যে ছয়টি পদে (ডিন, প্রাধ্যক্ষ, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক) শিক্ষকেরা সরাসরি ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন৷
অন্য পদগুলোতে প্রতিনিধি নির্ধারিত হয় পদাধিকারবলে ও মনোনয়নে৷ তারা হলেন উপাচার্য, দুই সহ-উপাচার্য, একাডেমিক কাউন্সিল মনোনীত দুটি কলেজের অধ্যক্ষ, সিনেটের নির্বাচিত দুজন প্রতিনিধি (একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট ও একজন শিক্ষাবিদ), আচার্য (রাষ্ট্রপতি) মনোনীত তিনজন ব্যক্তি, সরকার মনোনীত অন্তত সচিব পদমর্যাদার একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং সিনেট মনোনীত (সিনেটের বাইরে থেকে) একজন বিশিষ্ট নাগরিক৷ সিন্ডিকেট সদস্যরা দুই বছরের জন্য মনোনীত ও নির্বাচিত হন৷ তবে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তারা বহাল থাকেন৷