অভিভাবককে জুতাপেটা, অনিয়মসহ নানা অভিযোগে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার পশ্চিম সারডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
পশ্চিম সারডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবির বিরুদ্ধে যথাযত পদক্ষেপ নেয়ার দাবিতে গত ১৯ জুলাই ঢাকা-বুড়িমারী মহাসড়কে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা।
তারা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবি দেরিতে স্কুলে আসেন, এক অভিভাবককে তিনি জুতাপেটা করেছিলেন, স্কুলের অর্থ আত্মসাতেও তিনি জড়িত। এরপর প্রধান শিক্ষক ১১ জন অভিভাবকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
অভিভাবক আবদার আলী বুধবার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার কীভাবে একজন অভিভাবককে মারেন, আবার মামলাও দেন? যতদিন ওনার অপসারণ না হবে, ততদিন আমরা আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাব না।’
আফরোজা বেগম নামে আরেক অভিভাবক সে সময় বলেন, ‘স্কুলের হেড ম্যাডাম বাচ্চাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। অভিভাবককে তার জুতা দিয়ে পেটানোর কারণে আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাব না। উনি বদলি হলে পাঠাব।’
অভিভাবকরা জানান, গত ১৮ জুলাই দেরিতে স্কুলে যাওয়ার অভিযোগ তুলে এর কারণ জানতে প্রধান শিক্ষকের কাছে যান এক অভিভাবক। তখন প্রধান শিক্ষক তাকে জুতাপেটা করেন। এ ঘটনা শুনে অভিভাবকরা মানববন্ধন করেন।
১৯ জুলাইয়ের পর থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাননি অভিভাবকরা।
সরেজমিন বুধবার স্কুলে দেখা যায়, কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় শিক্ষকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
এই স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে। প্রধান শিক্ষকসহ আছেন সাতজন শিক্ষক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসায় আমরা প্রত্যেকে হোম ভিজিট করেছি। কিন্তু অভিভাবকদের দাবি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না। আমরা প্রতিদিনই তাদের বাড়িতে যাচ্ছি, কিন্তু একই কথা বলছেন।
‘আমরাও অতিষ্ঠ তার আচরণে। দুপুর ১২টায় আসেন ১টায় যান। প্রধান শিক্ষকের একক আধিপত্য, স্বেচ্ছাচারিতা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, রুটিন মেইনটেন্যান্সে অনিয়ম, এমনকি স্কুলের ফ্যান খুলে বাড়িতে নিয়ে যাওয়াসহ বহু অভিযোগ আছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।’