ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে শিক্ষার্থীদের পরিবহণ ফি এবং আবাসিক ফি মওকুফের বিষয়টি বিবেচনার দাবি উঠেছে।
ছাত্রদের পক্ষ থেকে ডাকসুর সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনও এই দাবি জানান। আর এর আগে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম এ বিষয়ে জোরাল বক্তব্য রাখেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বিষয়টি উঠে আসে। অধিবেশনের সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। এই অধিবেশনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ।
দেড় বছর ধরে বন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল। সচল হয়নি পরিবহন ব্যবস্থা। তবুও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে পরিবহন ফি। এমনকি বন্ধ হলের ‘সিট ভাড়া’ হিসেবে দুই বছরের ফি জমা দিতেও বলা হয়েছে। আবাসিক হলে না থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে না চড়লেও হল এবং পরিবহন ফি নেয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এক জন শিক্ষার্থী বলছেন, ‘আমাদের সঙ্গে অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব দেখার কেউ নেই। শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জিম্মি।’
অধিবেশনে সাদেকা হালিম বলেন, ‘ভর্তি হতে এসে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ফি এবং আবাসিক ফি নেয়া হচ্ছে ৷ এটি নিয়ে কিন্তু আমাদের চিন্তা করতে হবে ৷ শিক্ষার্থীরা দেড় বছর হলে থাকেনি এই অবস্থায় অনেক কিছু খরচ হয়নি। হয়ত কিছুটা খরচ হয়েছে। সে হিসেবে আমরা যদি এক বছরের ফি মওকুফ করে দিতে পারি সেটি বিবেচনায় আনা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘এই কোভিড সময়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্ত্বশাসনের একটা বিষয় খুব প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। যেটি গণমাধ্যম বারবার তুলে ধরেছে। সেটি হলো, আমরা কীভাবে পরীক্ষা নেব, অনলাইনে নাকি অফলাইনে। এ জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বারবার নির্দেশনা দিয়ে আমাদের কনফিউজড করে দিচ্ছে। এই বছরের মে মাসে যখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনলাইনে পরীক্ষা নেব, তখন বলা হচ্ছে আপনারা অফলাইনে পরীক্ষা নেবেন।
‘কিন্তু এখন আমাদের ঠিকই অনলাইনে ফিরে যেতে হচ্ছে। কারণ, করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। ৪১টি জেলা ঝুঁকির মধ্যে আছে৷ অফলাইনে নিলে এই শিক্ষার্থীরা কীভাবে আসবে? সুতরাং আবারও আমরা অনলাইনে চলে গিয়েছি। শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে এই দুই মাস নষ্ট হয়ে গেছে।’
সিনেট অধিবেশনে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ডাকসুর সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনও শিক্ষার্থীদের হল এবং পরিবহন ফি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা হলে না থেকেও তাদের কাছ থেকে আবাসিক এবং পরিবহন ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের উপাচার্য সবসময় অন্তভুক্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেন। সে হিসেবে দুই বছরের জন্য যেন এসব ফি প্রত্যাহার করা হয় সে বিষয়ে মাননীয় উপাচার্যের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি৷’
এর আগে এই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সেখানেও ছাত্রলীগ নেতারা এসব ফি প্রত্যাহারের দাবি জানান।