বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শত বছরের লেনদেন শেষে বন্ধ হচ্ছে কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:১৩

ভারতের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অন্যতম ‘কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ’ (CSE) এক শতকেরও বেশি সময় পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম বন্ধের পথে। এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা আইনি জটিলতা শেষে সোমবার সিএসই শেষ দীপাবলি ও কালীপূজা উদযাপনের করেছে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (SEBI) সিএসই-র বিরুদ্ধে নিয়ম না মানার অভিযোগে শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সিএসই বোর্ড আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে স্বেচ্ছা প্রস্থান প্রক্রিয়া শুরু করে। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল শেয়ারহোল্ডারদের জরুরি সাধারণ সভায় প্রস্থান অনুমোদিত হয়।

চেয়ারম্যান দীপঙ্কর বোস জানান, ‘আমরা সেবির কাছে প্রস্থান অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছি। বর্তমানে সম্পদের মূল্যায়ন চলছে।’

সেবি রাজবংশী অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি সংস্থাকে সম্পদের মূল্যায়নের দায়িত্ব দিয়েছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সিএসই হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ চালাবে, এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিএসই ক্যাপিটাল মার্কেটস প্রাইভেট লিমিটেড (CCMPL) বিএসই ও এনএসইতে ব্রোকারেজ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

১৯০৮ সালে যাত্রা শুরু করা সিএসই এক সময় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। বিশেষত ছোট ও মাঝারি শিল্পের শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে এটি ছিল অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু ১২০ কোটি টাকার কেতন পারেখ কেলেঙ্কারির পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ভেঙে পড়ে এবং এক্সচেঞ্জের অবনতি শুরু হয়।

স্টকব্রোকার সিদ্ধার্থ থিরানি স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে মা লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আমরা ট্রেডিং শুরু করতাম। ২০১৩ সালে সেবি লেনদেন স্থগিত করলে সব থেমে যায়। এবারের দীপাবলি যেন সেই ঐতিহ্যের শেষ প্রহর।’

সিএসই কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছা অবসর ঘোষণা করে, যেখানে ২০ দশমিক ৯৫ কোটি রুপি এককালীন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি রুপি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সমস্ত কর্মী এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেও কিছুজনকে নিয়ন্ত্রক কার্যক্রমের জন্য চুক্তিভিত্তিক রাখা হয়েছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে চেয়ারম্যান বোস বলেন, ‘এসই ভারতের মূলধন বাজারে এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’ বর্তমানে এখানে ১ হাজার ৭৪৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ৬৫০ জন নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে।

সিএসইর তিন একর জমি সৃজন গ্রুপের কাছে ২৫৩ কোটি টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, যা সেবির অনুমোদনের পর কার্যকর হবে।

এই বছরের দীপাবলি সিএসইর জন্য শুধুই আলোর উৎসব নয়, বরং একটি যুগের অবসান ছিল। ৯০ দশকের জমজমাট ট্রেডিং ফ্লোরের স্মৃতিকে বিদায় জানাতে এবার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আগামী সপ্তাহে এক্সচেঞ্জ চত্বরে আয়োজন করা হবে প্রতীকী পূজা ও বিদায় অনুষ্ঠান।

এ বিভাগের আরো খবর