বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নীতি সুদহার ২৫ পয়েন্ট বাড়িয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:৫৮

মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে জানানো হয়, নীতি সুদহার ২৫ পয়েন্ট বাড়ানোর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কিছুট কমে আসবে, পাশাপাশি কমবে টাকার সরবরাহ। এতে সাধারণ মানুষের হাতে ব্যয়যোগ্য অর্থ কমে আসবে। তাতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা সহজ হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিরা।

দেশের অর্থনীতির জন্য মূল্যস্ফীতি বা বেড়ে যাওয়া পণ্যমূল্যকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুদ্রানীতিতেও সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরায়।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার ২৫ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কিছুট কমে আসবে, পাশাপাশি কমবে টাকার সরবরাহ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার আরও বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের চাহিদা কমে আসবে, ব্যাংকগুলোতে বাড়বে আমানত। ফলে সাধারণ মানুষের হাতে ব্যয়যোগ্য অর্থও কমে আসবে তাতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা সহজ হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিরা।

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আগামী জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা এর আগের মুদ্রানীতিতে ছিল ১১ শতাংশ। অর্থাৎ, একদিকে ঋণের সুদহার বাড়বে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণ খানিকটা কমানো হবে। এতে দুই দিক থেকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

তবে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত ডিসেম্বরে ছিলো ১৮ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে আসতে চান তারা, বর্তমানে যা প্রায় সাড়ে নয় শতাংশ। এরপর ধীরে ধীরে তা ৬ শতাংশের ঘরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নেমে না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। এবারের মুদ্রানীতিতে চারটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে। সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমলেও অসুবিধে নেই।’

গভর্নর আরও উল্লেখ্য করেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে করা কঠিন। দেশের অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বাংলাদেশ ব্যাংক দেখছে। অন্য বিষয়গুলো দেখার জন্য নতুন অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

আগামী রোববার এ বিষয়ে তিনি বৈঠক ডেকেছেন বলেও জানান রউফ তালুকদার।

ব্যাংক খাতে অনিয়ম রোধে বেশ কিছু শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব ধরনের ভয়ভীতির উর্দ্ধে থেকে কাজ করে যাচ্ছি আমি। এজন্যই সরকারি চাকরি ছেড়ে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে এসেছি।’

উল্লেখ্য, উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক গত এক বছরে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।

আইএমএফের ঋণের শর্তানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহারের করিডর প্রথা চালু, সুদহারের সীমা প্রত্যাহার, ডলারের একক দাম, রিজার্ভের প্রকৃত হিসাবায়নসহ নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব উদ্যোগের সুফল ব্যাংক খাতে দীর্ঘমেয়াদে পড়বে বলে আশাবাদ জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

এ বিভাগের আরো খবর