প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সংসদে এ বাজেট উত্থাপনের পর থেকে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বাজেটের বিভিন্ন অংশের যেমন সাধুবাদ জানানো হয়েছে, তেমন কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের প্রস্তাবও করেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
খুলনা থেকে যেসব প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, রপ্তানি খাতে উৎসে কর কমানো, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো, পাটকল শ্রমিকদের বরাদ্দ, তামাক ও প্লাস্টিকজাতীয় পণ্যে কর বাড়ানোর দাবি।
রপ্তানি খাতে উৎসে কর কমানোর দাবি বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ)
সংগঠনের সভাপতি আমিন উল্লাহ বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাসহ সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত, মানবসম্পদ ও কর্মসংস্থানকে বাজেটে বেশি গুরুত্ব প্রদান করায় এটি বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী বাজেট হয়েছে। এ বাজেটে পোশাক খাতের মতো সব রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করহার ১২ শতাংশ করায় অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।’
‘তবে হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতটি এক দশক ধরে বিভিন্ন আওতাবহির্ভূত কারণে লোকসান দিয়ে রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ খাতের রপ্তানির ওপর আরোপিত উৎসে কর ১ শতাংশ যুক্তিসংগত নয় বলে মনে করি। সুতরাং এ খাতের রপ্তানির ওপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপসহ বিশ্বের অর্থনীতিতে মন্দা অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় বিশ্ববাজারে চিংড়ির দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ২ ডলার কমেছে। এ ছাড়া কম মূল্যের ভেনামির সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ি রপ্তানি কার্যক্রম ভালোভাবে চালিয়ে যেতে কষ্টকর হচ্ছে। তাই অন্যান্য কৃষিপণ্যের মতো সরকার প্রদত্ত নগদ সহায়তা চিংড়িতে ১০ শতাংশ এবং অন্যান্য মাছে ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। তদুপরি বর্তমানে এ খাতের রপ্তানিতে নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ আয়কর কর্তন সম্পূর্ণরূপে রহিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা চায় খুলনা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি
খুলনা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কর্তৃক ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত জাতীয় বাজেটকে জনহিতকর, বাস্তবসম্মত, উন্নয়নমুখী, কৃষি ও ব্যবসাবান্ধব এবং যুগোপযোগী বলে মনে করে খুলনা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনা পরিষদ।’
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসতে ব্যবসায়ী সমাজসহ সব শ্রেণির মানুষের স্বার্থে সরকারের প্রস্তাবিত এ বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভবপর। পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ করা, ব্যক্তিগত আয়করের স্লাব কমানো, উৎপাদন পর্যায়ে ওষুধশিল্পে ভ্যাট কমানোসহ খানজাহান আলী বিমানবন্দর শিগগিরই চালুর লক্ষ্যে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের জোর দাবি জানাচ্ছি। এ বাজেট দেশে চলমান মেগা প্রকল্প ও জাতিসংঘের ঘোষিত এসডিজি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বাজেটে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার অপরিবর্তিত রাখাসহ ২৫ জন প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ নিয়োগ দিলে কর ছাড়ের সুযোগ রাখাকে সাধুবাদ জানায়। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটসহ ভবিষ্যৎ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং কোভিড-১৯ জনিত অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করা ও এ বাজেট সাপোর্ট শিল্প, কলকারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খুলনা চেম্বারের পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানায়।’
গাড়ির দাম বাড়ায় ভোগান্তি নেই মধ্যবিত্তের
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের মোংলা বন্দরের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আহসানুর রহমান আরজু বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু গাড়ির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে যেসব গাড়ির ক্ষমতা ২ হাজার সিসির ওপর, সেই সব গাড়ির দাম ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে সচরাচর যেসব গাড়ি বেশি বিক্রি হয়, তার ক্ষমতা ১৫০০ থেকে ২ হাজার সিসির মধ্যে। এর ওপরের ক্ষমতার গাড়ি শতকরা দুই থেকে চারজন ব্যক্তি কিনে থাকেন, যা বিলাসবহুল গাড়ি।’
‘মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ সাধারণত বিলাসবহুল গাড়ি কেনেন না, তাই বাজেটে গাড়ির দাম নিয়ে তাদের উদ্বেগের কিছু নেই। আগে যে দাম ছিল তা অপরিবর্তিত থাকবে।’
আহসানুর রহমান আরজু বলেন, ‘বিলাসবহুল গাড়ির দাম যে খুব বেশি বাড়ানো হয়েছে, তা নয়। আগে ২০০১ হাজার সিসি থেকে ৩ হাজার সিসির গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ছিল শতকরা ২০০ ভাগ, এখন ২৫০ ভাগ করা হয়েছে। এতে দাম যে অনেক বেড়ে যাবে তা নয়। ২৫০০ সিসির একটি হাইব্রিড আমাদের দেশে বেশ বিক্রি হয়। ওই গাড়ির দাম একটু বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘৩০০১ সিসি থেকে ৪ হাজার সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ৩৫০ শতাংশ থেকে ৫০০ শতাংশ করা হয়েছে। তবে ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বের গাড়ির সম্পূরক শুল্ক আগের মতোই অর্থাৎ ৫০০ শতাংশই রাখা হয়েছে।
‘এসব গাড়ি শতকরা দুই থেকে চারজনের বেশি কেনেন না। তাই দাম বাড়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনে (বিএফএএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ি বিদেশ থেকে আনতে জাহাজের ভাড়া সরকার নির্ধারণ করে না। এ ছাড়া বন্দরের ভাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে, যা জাতীয় বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ২ হাজার সিসির নিচে যেসব গাড়ি দেশে আসবে, তার পরিবহন খরচ আগের মতোই আছে। তাই দাম বাড়ছে না।’
পাটশিল্প নিয়ে চিন্তিত নন ব্যবসায়ীরা, শঙ্কিত শ্রমিকরা
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএ) চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সদস্যরা প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার পাট বিদেশে রপ্তানি করেন। আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট করা হয়েছে, তাতে পাটশিল্পের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আসবে।’
‘পাট খাত নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তাই পাট ব্যবসায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের সাধুবাদ জানাই।’
শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলাম, বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালুর জন্য। এ লক্ষ্যে আমরা ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করেছিলাম।
‘তবে প্রস্তাবিত বাজেটে তার কিছুই নেই। আমরা চাই অনতিবিলম্বে বাজেটে পাটকল শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হোক, একই সঙ্গে পাটকলগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া হোক।’
তামাক কোম্পানির লাভ বাড়বে
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক কোম্পানিকে নতুন ধূমপায়ী সৃষ্টি এবং পুরোনো ধূমপায়ীকে উৎসাহী করতে সহযোগিতা করবে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সদস্য সংগঠন সিয়াম।
সিয়ামের নির্বাহী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ নিম্নস্তরের সিগারেট সেবন করে। অথচ এই স্তরের করহার না বাড়িয়ে নামমাত্র মূল্যবৃদ্ধিতে দেশে ধূমপানের পরিমাণ বাড়বে এবং মানুষের ক্রয় সামর্থ্য বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির তুলনায় সিগারেট সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর-তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে।
‘একই সঙ্গে জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য পূর্বাবস্থায় বহাল থাকায় এগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বয়ে আনবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন না করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। বিপরীতে তামাক কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি তাদের মুনাফা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে।’
মাসুম বলেন, ‘দেশে সিগারেটের অধিকাংশই বিক্রি হয় খুচরা শলাকা হিসেবে। সিগারেটের ১০ শলাকার মূল্য প্রিমিয়াম স্তরে ৭ টাকা, উচ্চস্তরে ৯ টাকা, মধ্যম স্তরে মাত্র ২ টাকা এবং নিম্নস্তরে মাত্র ১ টাকা বৃদ্ধিতে খুচরা শলাকার দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। এতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া নিম্নস্তরের প্রতি শলাকার দাম বাড়বে মাত্র ১০ পয়সা বা ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং মধ্যমস্তরে ২০ পয়সা বা মাত্র ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের ভোক্তারা অবস্থাপন্ন শ্রেণির হওয়ায় এই স্তরে সামান্য মূল্যবৃদ্ধি ব্যবহার কমাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না।’
প্লাস্টিক শিল্পের ৫ শতাংশ শুল্ক বহালের দাবি
প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের নির্বাহী কমিটির সদস্য গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর ওই ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
‘পরিবেশ বিনষ্টকারী অন্যতম উপাদান হলো প্লাস্টিক ও পলিথিন। অনতিবিলম্বে এগুলোর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত ছিল এবং সেই লক্ষ্যে আইন হওয়া উচিত ছিল। তবে সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে এ শিল্পকে আরও উৎসাহিত করা হয়েছে, যা পরিবেশের জন্য একটি অত্যন্ত ক্ষতিকর পদক্ষেপ। আমরা চাই পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল থাকুক।’
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘দেশ ও জাতির মৌলিক চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আর্থসামাজিক গণমুখী বাজেট পেশ করেছেন। ২০৪১ ও ২০৩১-এর ভিশনকে টার্গেট করে বাজেটে মানুষের জীবনমান বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
‘মানুষের মর্যাদা যত বৃদ্ধি হবে, ততই অর্থনৈতিক সফলতা বৃদ্ধি হবে। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে শিক্ষাকে সর্বাধিক মূল্যায়ন করা হয়েছে। শিক্ষিত জাতি গঠিত হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অর্থনৈতিক মুক্তি চলে আসবে। এই শিক্ষিত জাতিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে শিল্প ও কৃষি খাতে।’
খুলনার মেয়র বলেন, ‘দেশ শিল্পায়িত হলে শিক্ষিত, দক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদের ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। দেশ হবে আত্মমর্যাদাশীল। দূর হবে দারিদ্র্য। সে জন্যই দারিদ্র্য দূরীকরণে বাজেটে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রস্তাব রাখা হয়েছে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা।
‘১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকরা পাবেন এ পেনশন সুবিধা। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও থাকছে একই সুযোগ। ২০০৮ সালের দলীয় নির্বাচনি ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনতে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করতে এ বাজেট পেশ করা হয়েছে। গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় বয়স্ক বৃদ্ধদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিতে বাজেটে ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে এই পেনশনের আওতায় রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া বেকারদের জন্য চালু করা হচ্ছে চার ধরনের বিমা ব্যবস্থা। দেশ ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থার প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। এই ডিজিটাল মুদ্রাব্যবস্থা চালু হলে মানুষের অনেক সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষা হবে বলে নেতারা মনে করেন। সব মিলিয়ে এ বাজেট গণমুখী একটি সুষম বাজেট। এই বাজেট বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।’
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘এত বড় বাজেট সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না সন্দেহ। দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়, ব্যাংকে টাকা নেই। এ সময় এত বড় বাজেট কল্পনার ফানুস ছাড়া কিছু না। প্রস্তাবিত বাজেট জনগণের স্বার্থে নয়।’