যেসব কাগজ দেশে উৎপাদন হয় না, সেসব কাগজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআইয়ে শনিবার পেপার, পেপার প্রডাক্টস ও প্যাকেজিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
শনিবার এফবিসিসিআইয়ে পেপার, পেপার প্রডাক্টস ও প্যাকেজিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রথম বৈঠক করে। ছবি: সংগৃহীত
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশে মাত্র ১১ ধরনের কাগজ উৎপাদন হয়। বাকি কাগজের জোগান আমদানিনির্ভর। কিন্তু এসব কাগজ আমদানিতে ৪৭ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। ভারতে এ ধরনের কাগজে আমদানি শুল্ক ১৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ১৯ এবং চীনে ১৭ শতাংশ।
আমদানি-নির্ভরতার কারণে বাংলাদেশে এই হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ করার জোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে জাতীয় পাঠ্যক্রমের বইয়ে ব্যবহৃত কাগজ শুল্কমুক্ত করার আহ্বান জানান তারা।
কার্টন প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কাগজসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানা হয় না। তাই বেশি দামে পণ্য কিনে কম দামে কার্টন বিক্রি করে লোকসান দিতে বাধ্য হন তারা।
এ ছাড়া কাঁচামাল কেনার সময় ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়করের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের ওপর ৭ শতাংশ টিডিএস দিতে হয়, যা অযৌক্তিক বলে মনে করেন কার্টন প্রস্তুতকারকরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছরের এপ্রিলে রপ্তানিতে আগ্রহী করে তুলতে কিছু রপ্তানি পণ্যের আমদানীকৃত কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় উপকরণ শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে ইউডি ও ইউপির ভিত্তিতে ছাড় দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোনো সহযোগিতা মিলছে না।
বৈঠকে প্রধান অতিথি এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘বিশ্বে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং পণ্যের আউটসোর্সিং বাজারের আকার ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বাজার ধরার জন্য বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের চেষ্টা করা উচিত।
‘প্রায় প্রতিটি প্যণ্যের উৎপাদন খরচের ১৫ শতাংশ ব্যয় হয় প্যাকেজিং খাতে। সে হিসেবে এ খাতের পরোক্ষ রপ্তানি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। তাই দেশের অর্থনীতিতে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং খাতের অবদান অনেক। কিন্তু সে অনুযায়ী সরকারের নীতিনির্ধারণে পর্যাপ্ত মনোযোগ পাচ্ছে না।’
এ খাতের উন্নয়নে সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দেন তিনি।
স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, ‘কাগজ ও কাগজজাত পণ্য খাতের উন্নয়নের উৎপাদক ও আমদানিকারকদের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমন্বয় প্রয়োজন।’
বিদেশি বাজার, বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরার জন্য দেশীয় কাগজজাত পণ্য উৎপাদকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান মো. এশারত হোসেন বলেন, ‘সরকারি সহায়তা পেলে প্রিন্টিং খাত তৈরি পোশাকের মতোই অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে।’
সভায় এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, হারুন অর রশীদ, রেজাউল ইসলাম মিলন, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।