বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মহামারিতেও বাড়ল রপ্তানি আয়, তবে লক্ষ্যমাত্রার কম

  •    
  • ৫ জুলাই, ২০২১ ১৯:৪২

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে সেটি বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮.৭৬ বিলিয়ন) ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। করোনাকালে সেটি অর্জিত না হলেও প্রবৃদ্ধিতে খুবই খশি অর্থমন্ত্রী।

মহামারিকালে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মতো রপ্তানি আয়েও বড় উল্লম্ফন নিয়ে শেষ হলো ২০২০-২১ অর্থবছর। যদিও অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের সাধারণ ছুটির পর কাঙ্ক্ষিত আয় হয়নি দেশের।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া এই অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮.৭৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ জুন মাসে ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ৩১ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।

আগামী দিনগুলোতেও এই আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা কথা শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

করোনার কারণে গত বছরের এপ্রিলে সাধারণ ছুটির কারণে অধিকাংশ শিল্পকারখানা তিন সপ্তাহের মতো বন্ধ ছিল। সে কারণে রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে যায়। সংক্রমণ রোধে ওই সময় লকডাইনসহ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানার উৎপাদন চালানোর সুযোগ দেয় সরকার। তাই এপ্রিল ও মে মাস ছাড়া রপ্তানি খুব একটা কমেনি।

চলমান শাটডাউনেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পোশাক কারখানা খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। তাতে দেখা যায়, রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক, পাট ও পাটপণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্য, রাসায়নিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বরাবরের মতো এবারও রপ্তানি আয়ে প্রধান ভূমিকা রেখেছে পোশাক খাত

মহামারির এই কঠিন সময়েও রপ্তানি আয় বাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ‘২০১৯-২০ অর্থবছরে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পের বিদ্যমান প্রণোদনার সঙ্গে ১ শতাংশ হারে অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়া শুরু হয়েছিল। এর ফলে এই খাতে করোনাভাইরাসজনিত মহামারির প্রভাব সফলভাবে মোকাবিলা করা গেছে।’

তিনি বলেন, ‘গত অর্থবছরেও এই ধারা অব্যাহত রাখার ফলে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়ায়। বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ রপ্তানি অর্জন করেছে। এ কারণে নতুন অর্থবছরেও এই অতিরিক্ত রপ্তানি প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে।’

আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করেন অর্থমন্ত্রী।

পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পোশাকের বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। মানুষজন আগের মতো কেনাকাটা শুরু করেছে। সে কারণেই মোটামুটি একটা ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়েছে।‘

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি

এই অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। আয় হয়েছে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় কম ছিল ২৬ শতাংশ।

তার আগের বছর (২০১৮-১৯) রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য।

পোশাক ও পাট খাতে সুসময়

মূলত তৈরি পোশাক এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ার কারণেই সার্বিক রপ্তানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত অর্থবছরে। তবে লক্ষ্যের চেয়ে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ পিছিয়ে আছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ১৪৫ কোটি ৬৭ লাখ (৩১.৪৫ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।

গত বছর মার্চে করোনা সংক্রমণের পর সাধারণ ছুটিতে পোশাক রপ্তানি কমে গেলেও পরে ঘুরে দাঁড়ায়

নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে সবচেয়ে বেশি; ১ হাজার ৬৯৬ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ শতাংশ। ওভেন পোশাকে থেকে এসেছে ১ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।

এই অর্থবছরে ১১৬ কোটি ১৯ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি।

এ ছাড়া ১১৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।

বেশ কয়েক বছর পর চামড়া রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছে বাংলাদেশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ৯৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার আয় হয়েছে; প্রবৃদ্ধির অঙ্ক ১৮ দশমিক ০৬ শতাংশ।

এ সময়ে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

প্রবাসী আয়েও জোয়ার

মহামারির মধ্যেও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪.৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর