বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাড়ে ছয় কোটি গরিবের তথ্য জানেন না অর্থমন্ত্রী

  •    
  • ২৬ জুন, ২০২১ ১৯:৪২

২০১৬ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪.৫ শতাংশ। পরে সেটি ২০ এর নিচে নেমে আসে বলে সরকারের পক্ষ থেকে নানা সময় জানানো হয়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোও সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে জানতে একটি গবেষণা চালিয়েছে। তবে সেটির ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা এখন সাড়ে ৬ কোটি।

করোনাকালে দারিদ্র্য বাড়ায় এখন সাড়ে ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকার বিষয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরো যে হিসাব করেছে, সেটির বিষয়ে কোনো ধারণা নেই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের।

একটি জাতীয় দৈনিক এরই মধ্যে বিবিএসের বরাত দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করেছে। আর এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তথ্যটি এখনও আমার কাছে আসেনি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’

শনিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন মন্ত্রী।

২০১৬ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪.৫ শতাংশ। পরে সেটি ২০ এর নিচে নেমে আসে বলে সরকারের পক্ষ থেকে নানা সময় জানানো হয়েছে, যদিও পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি।

এর মধ্যে গত বছর দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ছোট আকারের জরিপের ভিত্তিতে দাবি করে আসছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোও সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে জানতে একটি গবেষণা চালিয়েছে। তবে সেটির ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

অর্থমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন নানা বিষয়ে। করোনাকালে সরকারের কৃচ্ছতা, সরকারি কেনাকাটা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়েও জিজ্ঞাসা ছিল তাদের।

মন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা (সরকার) ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃচ্ছসাধন নীতি নিয়েছিলাম। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও সেটা অব্যাহত থাকবে। নতুন বাজেটেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নসহ অন্যান্য ব্যয়ে সরকারের কৃচ্ছসাধন নীতি অব্যাহত থাকবে ‘

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তৃতির ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করা হবে না। অপচয় বন্ধ করাও এর একটি উদ্দেশ্য।’

অর্থমন্ত্রী জানান, শনিবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১৬টি প্রকল্পের কেনাকাটার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এসব কেনাকাটায় এক হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এরমধ্যে সরকারের তহবিল থেকে দেয়া হবে ১ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। আর ৫৩ কোটি টাকা আসবে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে।

এডিপি ব্যয় কি সরকার কমাবে?

এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও সরকার ব্যয় কম করেছে। এই কৃচ্ছসাধন নীতি কি আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন ব্যয়ের ক্ষেত্রেও থাকবে?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কম ব্যয় করেছে এটা সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত নই। করোনার কারণে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। এরকম অবস্থায় সরকার যতটা প্রয়োজন ততটাই ব্যয় করতে চেয়েছে। যাতে অপচয় না হয়। সরকার এখনও অপচয় করতে চায় না।’

শাটডাউনে গরিবের জন্য কী সহায়তা?

আরেক সাংবাদিক বলেন, সোমবার থেকে কঠোর লকডাউন আসছে। এই লকডাউনের অসহায় গরিব মানুষের সহায়তার জন্য কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আলাদা কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখাশোনা করেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার দরকার হলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেবেন।’

একই বিষয়ে আরেক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দুস্থদের সহায়তা করে যাচ্ছে। নগদ অর্থ দিচ্ছে। যারা সমস্যায় আছেন বলে চিহ্নিত করা গেছে তাদেরকে নগদ সহায়তা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও করা হবে।’

আবার প্রণোদনা নিয়ে পর্যালোচনা

তৈরি পোশাক খাতে দেয়া বিশেষ প্রণোদনা সুবিধার শেষ কিস্তি ছাড়ের সময় হয়েছে। নতুন করে লকডাউনসহ অন্যান্য কারণে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হয়েছিলে, তার এখন প্রয়োজন আছে কি না তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলবেন।’

লকডাউন অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সব সময়ই ভালো প্রত্যাশা করে। এখনও তাই করছে। গত বছরও লকডাউন ছিলে, তার মধ্যে যেসব লক্ষ্য ছিল, সেগুলো অর্জন হয়েছে। বিশেষ করে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৭ শতাংশ। রেমিট্যান্স, রিজার্ভ বেড়েছে। এ বছরও আশা করা যায় ভালো হবে।’

রেমিটেন্স প্রসঙ্গ

অন্য এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স ভালো আসছে। আমরা যা বলেছি, তা সত্য হয়েছে। প্রবাসীরা দেশকে ভালোবাসেন বলেই রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স হয়েছে। অনেকে বলেছে রেমিট্যান্স আসবে না। আমরা ‘না’ নয় ‘হ্যাঁ’ সূচকে বিশ্বাসী। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঙ্গে আছেন। আমাদের বিশ্বাস সবাইকে সুস্থ রাখবেন। আমরা সবাই সুস্থ থাকলে দেশ সামনে এগিয়ে যাবে।”

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর থেকে ২৬৪ অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশের মানুষও ধরা পড়েছে। আমার কথা কেন অবৈধ চ্যানেলে যেতে হবে। সবাই বৈধ চ্যানেলে বিদেশে যেতে পারলে অনেক সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে। আমরা প্রবাসী মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে বলেছি, বৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে। তাই আমার অনুরোধ আপনারা অবৈধ পথে বা অবৈধ ফাঁদে পা দেবেন না।’

টিকাদান নিয়ে সরকারে উদ্বেগ

মন্ত্রী বলেন, ‘একটা উদ্বেগ অন্যান্য সকলের মত সরকারেরও আছে। সেটা হচ্ছে টিকাদান। অবশ্যই দ্রুত টিকা দিতে হবে। সরকার টিকা সংগ্রহের সর্বাত্বক চেষ্টা করছে। আশা করা যায় দ্রুত টিকা পাবেন দেশের সব জনগণ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিনেশন নিয়ে কনসার্ন। যতদ্রুত সম্ভব দেশের মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই কাজ করব। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন। যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে।’

বাজেটে পলিশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর বক্তব্য কেন

বাজেটের কিছু জায়গা পলিশ করার প্রয়োজন আছে—পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তার (পরিকল্পনামন্ত্রী) মতামত আগেই পেয়েছি। তিনি কিসের ভিত্তিতে এসব বলেছেন আমার জানা নেই। ’

এ বিভাগের আরো খবর