সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রথম সারির নেতারা।
তারা বলেছেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে আনতে নগদ রোল মডেলের ভূমিকা পালন করতে পারে।
সম্প্রতি এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এআইটি) ‘১১তম সিইও টক’ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তি’ বিষয়ে ওয়েবিনারে আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নেতারা নগদ-এর উদ্ভাবন অনুসরণ করে নিজ নিজ দেশে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির গতি সঞ্চারের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা তানভীর এ মিশুক ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, যদি বেসরকারি পর্যায়ে সঠিক যন্ত্রপাতি ও উদ্যোগ থাকে, তাহলে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বে সরকার পিপিপি দেয়ার জন্য প্রস্তুত।
তানভীর এ মিশুক জানান, ২০২২ সালের মধ্যে ৩৬০ ডিগ্রি আর্থিক সেবা দেয়ার জন্য ডিজিটাল ব্যাংক দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
ওয়েবিনারে এআইটির স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের ডিরেক্টর ড. সান্দার ভেঙ্কটেশের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন এআইটির নলেজ ট্রান্সফার বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. নাভিদ আনোয়ার।
বাংলাদেশ রেটিং এজেন্সি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিনি নগদ-এর অবিশ্বাস্য অগ্রযাত্রা প্রত্যক্ষ করছেন এবং তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের স্টার্টআপ জগতে বেঞ্চমার্ক হিসেবে দেখছেন।
নেপালের ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম লিমিটেডের ইন্টার্ন সিইও সঞ্জীব শুভ বলেন, ‘বড় প্রতিষ্ঠানগুলো খুব কম সময়ের মধ্যে পড়ে যাবে। সেটা হতে পারে আগামী দশকের মধ্যে। আর এই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করবে এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে ডিজিটাল স্টার্টআপগুলো।’
নগদ ভবিষ্যতে ‘গেম চেঞ্জারের’ ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন তিনি। জানান, বাংলাদেশে কয়েকবার ঘুরে তিনি এটা অনুভব করেছেন যে, সামনের দিনে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে নগদ-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক বড় ধরনের সম্ভাবনা আছে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর উইরাকুন বিজয়াবর্ধনে, বাংলালিংকের সাবেক চিফ কমপ্লেইন্ট অফিসার এম নুরুল আলম, শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিপিএ করুণাতিলক ওয়েবিনারে অংশ নেন এবং উদ্ভাবন ও বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য তানভীর এ মিশুকের প্রশংসা করেন।
তারা সবাই বলেছেন, নগদকে অনুসরণ করে আরও অন্যান্য দেশে এমন মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে।
নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘শুরুর দিকে আমরা আমাদের অংশীদারের কাছ থেকে অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। পরবর্তী সময়ে তারাও আমাদের সহযোগিতা করেছে এবং সরকারের আন্তরিক সাহস পেয়ে আমরা প্রতিবন্ধকতা জয় করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ডাক বিভাগ একটি লস প্রোজেক্ট হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। পরে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পার্টনারশিপ করি। প্রথম দিকে কিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল। কিন্তু আমি জানি ডাক বিভাগের অবকাঠামো দিয়েই একটা পার্থক্য তৈরি করা সম্ভব।’
২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করা নগদ এখন দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)।
ইতোমধ্যে সফল একটি ব্যবসায়িক মডেল হিসেবে নগদ সর্বজন স্বীকৃত। আর প্রযুক্তিগত দক্ষতাই এর অন্যতম কারণ। যার ফলে খুব অল্প সময়ে নিজেদের এই অবস্থানে নিতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
যাত্রার দুই বছরের মাথায় দেশের এক নম্বর ডাউনলোড অ্যাপের স্থানটিও দখল করে নগদ।