বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নগদ টাকার বড় চাহিদা

  •    
  • ১১ মে, ২০২১ ১৮:২৭

ভিড় থাকলেও ব্যাংকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা মাপতে থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার না করিয়ে কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

ঈদের আগে ব্যাংক খোলা আরও একদিন। তারপরেও নগদ টাকার জন্য মঙ্গলবার ব্যাংকে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সব ব্যাংকেই ছিল বাড়তি চাপ। এটিএম বুথেও ছিল লম্বা লাইন।

রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গলবার টাকা তুলতে ব্যাংকে ভিড় করেন অসংখ্য গ্রাহক। ব্যাংক খোলার আগেই দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। ফলে ব্যাংকের শাখার বাইরে চলে আসে গ্রাহকের সারি।

লেনদেনের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন সেবার বিল জমা দেয়ার লাইনও ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের কর্মকর্তাদের ব্যস্ত সময় পার হয়েছে।

অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বেতন দেয়ার জন্য টাকা তুলতে আসে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লেনদেন করেছেন গ্রাহকরা। যদিও কিছু কিছু ব্যাংকের শাখায় স্থান স্বল্পতার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হয়নি।

কোনো কোনো শাখায় বড় অঙ্কের টাকা তুলতে করপোরেট গ্রাহকদের দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিশেষ করে পোশাক কারখানাগুলোতে বেতন-বোনাস দেয়ার জন্য কর‌পো‌রেট গ্রাহকরা টাকা উঠিয়েছেন।

ক্যাশ কাউন্টারে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখা যায়। ছবি: নিউজবাংলা

কয়েকটি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী জানান, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ চলছে। ২/৩ জনের বেশি গ্রাহককে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এজন্য বাইরে লম্বা লাইন পড়েছে।

সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিসে দেখা গেছে, প্রতিটি কাউন্টারের সামনে গ্রাহকের দীর্ঘ সারি। কেউ ক্রেডিট কার্ডের বিল দিচ্ছেন৷ কেউবা দিচ্ছেন বিদুৎ, গ্যাসের বিল। আবার কেউ কেউ নগদ টাকা তুলে রাখছেন। কেউ এসেছেন সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে।

মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুল ওয়াহাব জানান, ‘সকাল থেকেই গ্রাহকের অনেক ভিড়। আমাদের প্রায় সব শাখাই খোলা রয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় লেনদেন প্রায় ৩/৪ গুণ বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নগদ টাকা তোলার চাপ। লোকজন ঈদে বাড়ি যাচ্ছে, সে কারণেই হয়তো নগদের ওপর চাপ বেশি।’

রূপালী ব্যাংকের গ্রাহক নজিবুর রহমান বলেন, ‘ঈদের আর অল্প ক’দিন বাকি, নগদ টাকার প্রয়োজন পড়বে। তাই টাকা তুলতে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি বিশাল লাইন। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বুঝতে পারছি না।’

ভিড় থাকলেও ব্যাংকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা মাপতে থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার না করিয়ে কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের ক্যাশ ও জমা কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে।

তবে ব্যাংকে গ্রাহকের টাকা তোলার চাপ বাড়লেও নগদ টাকার কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর হাতে দুই লাখ কোটি টাকার বেশি তারল্য উদ্বৃত্ত ছিল। এক মাস আগে যা ছিল দুই লাখ চার হাজার ৭০ কোটি টাকা।

ব্যাংকে আমানতকারীদের টাকা জমা রাখার প্রবণতা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে আমানত বেড়েছিল ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

এর মধ্যে চলতি আমানত গত অর্থবছরের কমেছিল ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

মেয়াদি আমানত গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

বর্তমানে আমানতের প্রবৃদ্ধির তুলনায় ঋণ বিতরণ কম হওয়ায় ব্যাংকগুলোর হাতে বাড়তি তারল্য জমা থাকছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। যেখানে ১৪ শতাংশের বেশি ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত তারল্য থাকায় স্বল্প সময়ের জন্য অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে হচ্ছে কম। এ কারণে বর্তমানে কলমানি (আন্ত:ব্যাংক লেনদেন) গড় সুদহার ১ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে এসেছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারির মধ্যে ঋণ বিতরণ কম হওয়ায় ব্যাংকের কাছে প্রচুর বিনিয়োগযোগ্য তারল্য জমা রয়েছে। ফলে নগদ টাকার দরকার পড়লে দ্রুত সময়ে তা জোগাড় করতে পারছে ব্যাংকগুলো। অথচ কয়েক বছর আগেও ঈদের সময় ব্যাংকের নগদ টাকার চাপ সামলাতে কলমানি মার্কেট থেকে ৬-৭ হাজার কোটি টাকা ধার করতে হয়েছে। কোনো কোনো ঈদের সময় কলমানির সুদের হার ২০০ শতাংশ পর্যন্ত উঠে যায়।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ (৫ মে থেকে ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত) নিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ব্যাংক সীমিত পরিসরে খোলা থাকছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন হচ্ছে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকছে।

এদিকে এক নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ঈদের আগে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক/কর্মচারী/কর্মকর্তাদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধের সুবিধার্থে এবং রপ্তানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখার স্বার্থে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাক শিল্প এলাকার তফশিলি ব্যাংকের সব শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ১৩ মে বৃহস্পতিবার (১৪ মে ঈদ হওয়া সাপেক্ষে) খোলা রাখতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর