দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি ডাক বিভাগের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ শুরু করেছে ‘ডোনেশন’ সেবা।
ফলে যে কেউ খুব সহজেই তার জাকাত বা যেকোনো অর্থ সহায়তা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে দিতে পারছেন।
জাকাতের মূল উদ্দেশ্য হলো অসহায় ও দরিদ্র মানুষের কষ্ট দূর করা। তবে ইচ্ছা থাকলেও সময় ও সুযোগের অভাবে অনেক মানুষই জাকাতের টাকা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারেন না। তাই দাতা, বিতরণকারী ও সহায়তাগ্রহণকারীর জন্য এ সেবা চালু করেছে নগদ।
জাকাত, ফিতরা বা অন্য কোনো অনুদান দেয়ার জন্য নগদ অ্যাপে প্রবেশ করে ডোনেশন অপশনটি ক্লিক করেই গ্রাহক তার জাকাত বা অন্য কোনো ধরনের দান করতে পারবেন।
‘ডোনেশন’ বাটনে ক্লিক করার পর যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাকাতের টাকা মানুষের কাছে পৌঁছাতে চান, সেই প্রতিষ্ঠানের নাম লিস্ট থেকে নির্বাচন করতে হবে। পরিমাণ লেখার পর নিজের ওয়ালেটের পিন নম্বর দিয়ে গ্রাহক তার জাকাত দিতে পারবেন।
বর্তমানে ২১টি প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বিদ্যানন্দ এক টাকার মিল, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, আমার বাংলাদেশ ফেউন্ডেশন, ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন (আইএইএফ), সাজিদা ফাউন্ডেশন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট, ইনোভেটিভ কনসালটেন্সি, হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, দরিদ্র চ্যারিটি ফাউন্ডেশন, মজার স্কুল, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, কে কে ফাউন্ডেশন, কৃষিবিদ ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যানিটি, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, আই কেয়ার প্রোগ্রাম, স্বপ্নযাত্রা, জাগো ফাউন্ডেশন এবং ইউনিভার্সাল হেল্প হাব (ইএইচএইচ)।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছেন যারা সাহায্য করতে আগ্রহী। কিন্তু মানুষের জন্যে কাজ করছে, এমন প্ল্যাটফর্ম খুঁজে না পাওয়ায় তাদের পক্ষে চাইলেও করা সম্ভব হয় না। এমন মানুষদের জন্যেই আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্মটাকে তৈরি করেছি।
‘এখন শুধু ইচ্ছা করলেই যে কেউ তার অনুদান বঞ্চিত মানুষটির কাছেও পৌঁছে দিতে পারবেন। এখন যে কোভিড মহামারির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি, সেখানে সহায়তা লাগবে এমন মানুষের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে সবটা করা সম্ভব নয়। সুতরাং বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে হবে।
দানের বিষয়ে মানুষকে আরও আগ্রহী করে তুলতে সম্প্রতি দাতব্য সংস্থাগুলোকে নিয়ে একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নগদ। ফেসবুকভিত্তিক এই অনুষ্ঠানে এসে দাতব্য সংস্থাগুলো কে কী কাজ করছেন সেটি সম্পর্কেও সবাইকে ধারণা দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানটি নগদ, যুগান্তর ও যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে লাইভ করা হচ্ছে।
এর আগে গত বছর কোভিডের কারণে কাজ হারানো ৫০ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন নগদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ১৭ লাখ পরিবারকে ঈদ উপহার পৌঁছে দেয়ার।
এবারও সাড়ে ৩৩ লাখ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দেয়া হচ্ছে, যার মধ্যে নগদকে দেয়া হয়েছে ১৫ লাখ উপহার বিতরণের দায়িত্ব।
এ ছাড়া চলমান কোভিডের সময়ে সরকারি নানান ভাতা, উপবৃত্তি, আর্থিক সহায়তা বিতরণে ডিজিটালাইজেশনের প্রচলন করে ভাতাভোগীর হাতে সহজেই সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেয়া, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং সরকারি অর্থের সাশ্রয় করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে নগদ।