করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় সোমবার থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে লকডাউন। সরকারে ঘোষণা অনুযায়ী লকডাউনের আওতামুক্ত আছে শিল্প কারখানাগুলো।
সড়কে নিয়মিত পরিবহন না থাকায় লকডাউনের প্রথম দিনেই কাজে যেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমিকরা।
সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সোমবার সকালে প্রতিদিনের মতোই প্রায় ১৫ লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মস্থলে যেতে বের হয়েছেন। শ্রমিক ও সংগঠনের নেতারা অভিযোগে বলছেন, চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটেই কর্মস্থলে গিয়েছেন তারা। মাঝেমধ্যে পরিবহনের দেখা পেলেও গাদাগাদি করে বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হয়েছে তাদের।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর তথ্য মতে, সাভারে শিল্প কারখানার সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি।
সোমবার সকালে ঢাকা-আরিচা, আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড এই তিনটি সড়কে শ্রমিকদের ভোগান্তি দেখা যায়। সবাই দলবেঁধে হেঁটে রওনা হয়েছেন। কখনও একটি বাস দেখা মাত্রই সবাই মিলে ছুটেছেন তাতে উঠতে।
পুরাতন ইপিজেডের গোল্ডটেক্স লিমিটেড কারখানার অপারেটর আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অফিসের শ্রমিক সাড়ে তিন হাজার। অফিস থাইকা গাড়ি দিছে। কিন্তু ওই স্টাফ বাসে শ্রমিকদের জায়গা হয় না। সবাইরে গাঁদাগাঁদি কইরা যাইতে হয়।
‘আমি থাকি ইউনিক এলাকায়। আইজ অফিসের গাড়ি জামের (যানজট) কারণে আইতে পারে নাই। রিকশায় ৩০ টাকার ভাড়া ৭০ টাকা দিয়া অফিসে গেছে। তারপরও রাইট টাইম ৮টায় অফিসে যাইতে পারি নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লকডাউনে যত কষ্ট আমাদের মত গরীব শ্রমিকদের। সরকারি ও অন্যান্য অফিসে কতরকম সুযোগ সুবিধা দেয়। আর আমাদের হাঁইটা, বেশি ভাড়া দিয়া করোনার মধ্যে ঝুঁকি নিয়া অফিসে যাইতে হইতেছে। কেন আমাদের শ্রমিকদের কি করোনা হয় না?’
ডিইপিজেডের ইয়ং ওয়ান গার্মেন্টের শিমলা আক্তার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ফ্যাক্টরি থেকে মাস্ক পড়ে আসতে বলছে। অফিসে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে ভালো ভাবে হাত ধুয়ে ঢুকতে বলছে। কিন্তু লকডাউনের প্রথম দিনেই আমরা গাড়ি পাই নাই। অনেক কষ্ট কইরা হাইটা আমরা অফিসে আসছি।’
আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকার ওলিয়াম স্যোয়েটার কারখানার অপারেটর মঞ্জু হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কি কমু ভাই। আমি থাহি গাজীরচট। আর আমার অফিস দুই কিলোমিটার দূরে পলাশবাড়ি এলাকায়। আইজ সকাল বেলা গাড়ি না পাইয়া হাইটা আসছি।’
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ভিন্ন কোনো অ্যারেঞ্জমেন্ট হয়নি। এর প্রেক্ষাপটে কোনো নতুন সিদ্ধান্ত হয় কি না সেটা দেখার বিষয়। কারণ এটা সেন্ট্রাল ডিশিসন। প্রজ্ঞাপনে যা নির্দেশনা আছে সেটাই আমরা পুরোপুরি মেনে চলছি।’