ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটের ২১ কোম্পানির কাছে ১১ তথ্য চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রোববার এক চিঠিতে কোম্পানিগুলোর কাছে এ তথ্য চাওয়া হয়।
চিঠির উত্তরের পাশাপাশি ২১ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানির সচিবকে বিএসইসিতে তলব করা হবে।
বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ওটিসি মার্কেটের উন্নয়নে বতর্মান কমিশন কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত আজাদী প্রিন্টার্স ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কোম্পানির ৭২ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার। ২০০৯ সালের পর এই কোম্পানির কোনো লেনদেন হয়নি।
বাংলাদেশ হোটেলসের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ১৯৭৮ সালে। ২০১৩ সালের পর এই কোম্পানির কোনো লেনদেন হয়নি। এখানে এমন কোম্পানিও তালিকাভুক্ত আছে ২০০৯ সালে শেয়ার বিক্রির জন্য ক্রেতা সন্ধান করছে, কিন্তু কেউ শেয়ার কিনছে না।
কোম্পানিগুলোর এমন অবস্থায় বিএসইসি থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলো ২০০৯ সাল থেকে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ওটিসি মার্কেটে তাকিাভুক্ত আছে। কোম্পানিগুলো সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পালন করছে না। এমনকি কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত থাকলেও এসব কোম্পানি পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। ফলে কখনও কখনও এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বার্থহানিকর ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অগ্রহণযোগ্য।
এমন অবস্থায় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড অধ্যাদেশ, ১৯৬৯-এর ধারা ১১ (২) অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর পর্ষদকে শুনানির জন্য বিএসইসিতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানতে চাওয়া ১১টি বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছে সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রতিবেদন, সব সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা, উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বর্তমান শেয়ার ধারণের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ওটিসি মার্কেট নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এসব কোম্পানির একটা রিফর্ম হওয়া উচিত। পুঁজিবাজারের অবস্থা আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক ভালো হয়েছে। তার সঙ্গে সমন্বয় রাখেতে হলে ওটিসি মার্কেটেও উন্নয়ন করতে হবে।
২১ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ম্যাক এন্টারপ্রাইজ, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বিডি মনোস্পুল পেপার, যশোর সিমেন্ট কোম্পানি, মুন্নু ফেব্রিক্স, বাংলাদেশ হোটেলস, রহমান কেমিক্যালস, ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস, পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ, অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল মিলস, গাছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্ম, ম্যাক পেপার ইন্ডাস্ট্রিজ, হিমাদ্রি, মোনা ফুড প্রোডাক্টস, আজাদী প্রিন্টার্স, ফিনিক্স লেদার কমপ্লেক্স, দি ইঞ্জিনিয়ার্স, বেঙ্গল বিস্কুট ও হিল প্ল্যান্টেশন।
বর্তমানে ডিএসইর ওটিসিতে ৬৪টি ও সিএসইর ওটিসিতে ৪৯টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে।