বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিনেমা হলে ভাঙ্গারির ব্যবসা

  •    
  • ৯ আগস্ট, ২০২২ ১০:০৬

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অপসংস্কৃতির ধারা থেকে মানুষকে ফেরাতে সুস্থ্য বিনোদন দিতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলোর তালিকা প্রনয়ণ করেছি। মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’

পঞ্চগড়ে টুনিরহাট সিনেমা হল এক সময় দর্শকদের ভিড়ে জমজমাট থাকলে এর মালিক ওয়াজেদ আলী বর্তমানে ভাঙ্গারির ব্যবসা করছেন। হলটি এখন পুরোনো কাগজের গুদাম।

শুধু এটিই নয় জেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের বিনোদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত ১৩টি সিনেমা হলই এখন বন্ধ। হল মালিকদের অনেকে যুক্ত হয়েছেন অন্য ব্যবসায়।

বন্ধ এসব সিনেমা হল চালুর দাবি জানিয়েছেন জেলার সিনেমাপ্রেমীরা। দেশে মানসম্মত সিনেমা তৈরি হলেও এর থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন অভিযোগ তুলে তারা এ দাবি জানান।

এর আগে লোকসান গুনতে গুনতে ২০১৪ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায় জেলার অনেক সিনেমা হল।

সিনেমা হলগুলো বন্ধ থাকায় জেলায় বিনোদনের সংকট তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে তরুণরা এবং বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনের সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব। তাই স্থানীয়দের দাবি শিগগির বন্ধ হলগুলো চালু করা হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া আলোছায়া প্রেক্ষাগৃহকে চালু করতে সে সময় শিল্প ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার বিশেষ আগ্রহে জেলার একমাত্র সিনেমা হলটি আবার চালু হয়।

৯০-এর দশকে আলোছায়া প্রেক্ষাগৃহের পাশে গড়ে ওঠে ছায়াছন্দ সিনেমা হলটি। এই দুই প্রেক্ষাগৃহকে কেন্দ্র করে শহরের মূল সড়কের নামও হয়ে যায় সিনেমা রোড। বর্তমানে সিনেমা রোড আছে, আছে হলের ভবনও, কিন্তু দরজায় ঝুলছে তালা। ২০১৬ সালের দিকে দুটি হলই বন্ধ হয়ে যায়। সিনেমা ব্যবসায় ধস নামার কাছাকাছি সময়ে বন্ধ হয়ে যায় জেলার আরও ১১টি হল।

সিনেমাপ্রেমীরা চান পর্যটন এই নগরীতে হলগুলো আবার চালু হোক। তাদের ভাষ্য, দেশে এখন ভালো সিনেমা নির্মিত হলেও হল চালু না থাকায় তারা এ বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই হলগুলো দ্রুত খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নেবে সরকার।

নাট্যকর্মী মো. রফিকুল ইসলাম ও মোস্তাক আহমেদ জানান, দেশে এখন ভালো সিনেমা নির্মাণের হাওয়া বইছে। আমাদেরও ইচ্ছা করে পরিবার নিয়ে সন্ধ্যা বা বিকেলে হলে গিয়ে সিনেমা দেখে আসি। কিন্তু আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।

এদিকে হলের মালিকরাও ভালো সিনেমার আশায় দিন গুনছেন। বলছেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে আবার সিনেমা হল চালু করবেন তারা।

আলোছায়া ও ছায়াছন্দ প্রেক্ষাগৃহের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হল পুড়ে গিয়েছিল। এলাকায় তখন একটাই সিনেমা হল। বঙ্গবন্ধু পঞ্চগড় এলে হলের ভঙ্গুর অবস্থা দেখে পুনরায় চালু করতে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

‘পরে কাটপিস সিনেমার ব্যবসা শুরু হলে হল বন্ধ করে দিই। এখন ভালো সময় এসেছে। সরকার সহযোগিতা করলে অবশ্যই দুটি প্রেক্ষাগৃহই আবার চালু করব।’

একই কথা জানান ঝংকার সিনেমা হলের মালিক ওয়াজেদ আলী।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আবু তোয়বুর রহমান বলেন, ‘সিনেমা হলগুলো চালু করতে হলে মালিকদের সহযোগিতা করতে হবে। হলগুলো চালু হলে আবার সেই সময়ের স্মৃতিমাখা দিনগুলো ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ প্রয়োজন।’

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অপসংস্কৃতির ধারা থেকে মানুষকে ফেরাতে হলে সুস্থ্য বিনোদন দিতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলোর তালিকা প্রনয়ণ করেছি। মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর