এমন এক সূর্যের অপেক্ষায় জাতি, যার আলো ফোটার সঙ্গে একটি শুভ্র, সুন্দর, নির্মল জীবন পাওয়া যাবে। সে প্রত্যাশা নিয়ে গানে গানে শুরু হলো পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষের ভোর।
বাংলা সন ১৪২৯ বরণ করতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বাণী ‘নব আনন্দে জাগো’ প্রতিপাদ্যে রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা‘নব আনন্দে জাগো’ লেখায় কবিগুরু বলছেন,
‘নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে
শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে
উৎসারিত নব জীবননির্ঝর উচ্ছ্বসিত আশাগীতি,
অমৃত পুষ্প গন্ধ বহে আজি এই শান্তিপবনে।’
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন দেখতে আসা দর্শক। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলাকরোনার কারণে গত দুই বছর দেশের মানুষ যেভাবে ভেঙে পড়েছিল, সেখান থেকে উঠে আসার অনুপ্রেরণা হিসেবেই ‘নব আনন্দে জাগো’ প্রতিপাদ্য।
ছায়ানটের আয়োজন শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টায়। শ্রাবন্তী ধরের কণ্ঠে রামকেলি রাগের মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন দেখতে আসা দর্শক। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলারামকেলি ভৈরব ঠাটের অন্তর্গত একটি রাগ। বেশ প্রাচীন এ রাগটিকে হিন্দোল রাগের অন্তর্গতও মনে করা হয়।
মোট ৩৭টি পরিবেশনা থাকবে আয়োজনে। এজ্রাস, সেতার, বাঁশি ছাড়াও একক, দলীয়, পাঠ, কথন থাকবে আয়োজনে।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন দেখতে আসা দর্শক। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা‘নব আনন্দে জাগো’র আংশিক গাইবেন সন্জীদা খাতুন। আয়োজন শেষ হবে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে। এর পর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন।
বৈশাখ আসে নবজীবনের অঙ্গীকারে নতুন করে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান নিয়ে। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাঙালির প্রাণের উৎসব হয়ে।
হৃদয়ে বাঙালি জাতি সত্তাকে ধারণ করে মানবিক সমাজ গঠনে বাঙালিকে প্রাণিত করে বাংলা নববর্ষ। এই প্রত্যয় অর্জনে অর্ধশতাধিক বছর ধরে সুর ও বাণীর আবহে রমনার বটমূলে আয়োজিত হচ্ছে ছায়ানটের আয়োজন।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলাছায়াটন তাদের শুভেচ্ছা বার্তায় জানিয়েছে, অতিমারির কারণে গত দুটি বছর আর্থিক ও সামাজিক বিপর্যয় এবং স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে আমরা গৃহবন্দি ছিলাম। দুঃসময় পেরিয়ে এবার নব আনন্দে জাগ্রত হওয়ার আয়োজন। সব লোভ-বিদ্বেষ-অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে সবার জীবনে নতুন বছর মঙ্গল বার্তা বয়ে আনুক, দেশের উন্নয়নে গতি সঞ্চার করুক।