বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাকিবের টেস্ট দুর্ভাগ্য

  •    
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ১২:১১

ফুরাচ্ছে অপেক্ষার প্রহর। জুয়াড়িদের প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসি এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে সাকিবকে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ২৮ অক্টোবর। সাকিবের ফিরে আসা উপলক্ষে নিউজবাংলার বিশেষ এই আয়োজন। আজ আমরা তাকাচ্ছি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সঙ্গে সর্বকালের সেরাদের তুলনায়।

২০০৯ সালে যখন প্রথমবার অলরাউন্ডার র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে পৌঁছান সাকিব আল হাসান, তখন থেকেই বিশ্ব ক্রিকেটের নজর তার ওপর। সময়ের সেরা অলরাউন্ডারের আলোচনায় চলে এসেছেন তিনি তার পরপরই। বাংলাদেশে সাবেক ক্রিকেটার, বিশ্লেষক ও ভক্তরা তাকে সর্বকালের অন্যতম সেরাও দাবি করেছেন নানা আলোচনায়।

সাকিব সর্বকালের সেরা কি না এই আলোচনা বাংলাদেশের বাইরে হয় সামান্যই। কারণ বাংলাদেশের টেস্ট স্বল্পতা। ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে মাত্র ১১৯টি, বছরপ্রতি ছয়টিরও কম।

সাকিব তার ১৩ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৫৬টি, যা তাকে পিছিয়ে দিয়েছে অনেকটা। সাকিব কত কম টেস্ট খেলেছেন সেটি বোঝা যায় তার সমসাময়িক খেলোয়াড়দের সঙ্গে তুলনায়।

ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের টেস্ট অভিষেক হয় ২০১৩ সালে। অর্থাৎ সাকিবের ছয় বছর পরে। স্টোকস ইতোমধ্যে খেলে ফেলেছেন ৬৭ টেস্ট। সাকিবের চেয়ে ১১টি বেশি। সাকিব নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারেননি ছয়টি টেস্ট। সেগুলো খেললেও পিছিয়ে থাকতেন স্টোকসের চেয়ে। ২০১২ সালে অভিষিক্ত ভারতীয় অলরাউন্ডার রভিন্দ্র জাদেজার ঝুলিতে আছে ৪৯টি টেস্ট ম্যাচ।

আরও পড়ুন: সাকিবই সেরা পাণ্ডব 

আরও পড়ুন: সাকিবের সেরা পাঁচ

কম টেস্ট খেলার কারণে পরিসংখ্যানেও পিছিয়ে সাকিব। জায়গা মেলে না সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারের আলোচনাতেও। স্যার গ্যারি সোবার্স থেকে স্যার ইয়ান বোথাম; ইমরান খান হয়ে জ্যাক ক্যালিস টেস্ট সংখ্যায় সাকিব পিছিয়ে অনেক ব্যবধানে। ক্যালিস টেস্ট খেলেছেন ১৬৬টি, বোথাম ১০২টি, ইমরান ৮৮টি ও সোবার্স ৯৩টি।

খালি চোখে সাকিবের টেস্ট পরিসংখ্যান সাদামটাই। ৫৬ টেস্টে ৩৯.৪০ গড়ে সাকিবের রান ৩৮৬২। বোলিংয়ে ৩১.১২ গড়ে ২১০ উইকেট। ক্যালিস ব্যাটিংয়ে ঢের এগিয়ে। ৫৫.৩৭ গড়ে রান করেছেন ১৩২৮৯। বোলিংয়ে ৩২.৬৫ গড়ে উইকেট সংখ্যা ২৯২।

বোলিংয়ে এগিয়ে থাকলেও ব্যাটিংয়ে সাকিবের চেয়ে পিছিয়ে ইমরান ও বোথাম দুজনই। বোথাম ১০২ টেস্টে ৩৩.৫৪ গড়ে রান করেছেন ৫২০০। বোলিংয়ে ২৮.৪০ গড়ে ৩৮৩ উইকেট। ইমরান ৩৭.৬৯ গড়ে রান করেছেন ৩৮০৭। বল হাতে ২২.৮১ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৩৬২ উইকেট।

সোবার্স ব্যাটিংয়ে সাকিবের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও বোলিংয়ে সামান্য পিছিয়ে। ৫৭.৭৮ গড়ে করেছেন ৮০৩২ রান। বল হাতে ৩৪.০৩ গড়ে নিয়েছেন ২৩৫ উইকেট।

অলরাউন্ডারদের পরিসংখ্যানে যে সূচকটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, সেটি হলো ব্যাটিং ও বোলিং গড়ের পার্থক্য। বোলিং গড়ের চেয়ে ব্যাটিং গড় যার যত বেশি, তাকে ধরা হয় তুলনামূলক ভালো অলরাউন্ডার।সোবার্সের ক্ষেত্রে পার্থক্যটি ২৩.৭৫। ক্যালিসের ২২.৭২। ইমরানের ১৪.৮৮ ও বোথামের ৫.১৪। সেখানে সাকিবের ৮.২৮। পরিসংখ্যান বলে সাকিব বোথামের চেয়ে ভালো হলেও বাকিদের চেয়ে নন।আসলেও কি তাই? সোবার্স, বোথাম, ইমরান কিংবা ক্যালিসের কি কখনও একই সঙ্গে দলের অধিনায়ক, সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা বোলারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছিল? গুরুদায়িত্বগুলো কাঁধে নিলে বাকিরা একই রকম খেলে যেতে পারতেন কি না সেই প্রশ্নও চলে আসাটাও স্বাভাবিক।

সাকিবের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে আরেকটি বিষয়ও। অন্যরা নিয়মিত সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট খেলার। তাতে টেস্ট টেম্পারমেন্ট ধরে রাখাটা হয়েছে সহজ। সাকিব সেখানে বছরে ১০টি টেস্ট খেলারও সুযোগ পাননি কখনও। সঙ্গে যোগ হয়েছে অন্য দুই ফরম্যাট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের চাপ।

সাকিবের ক্যারিয়ারের বড় অংশ শেষ। দেশসেরা ক্রিকেটারের বয়স এখন ৩৩। খেলবেন হয়তো বড়জোর চার, পাঁচ কিংবা ছয় বছর। সাকিব শেষ কোথায় করবেন কেউই জানেন না। হয়তো নিজেকে নিয়ে যাবেন শিখরে, অথবা হবে না তেমনটি। 

সামনের দুই বছর বাংলাদেশের এফটিপিতে অনেকগুলো টেস্ট আছে। তারপরও নিজের সেরা সময়ে যথেষ্ট টেস্ট খেলতে না পারার দুর্ভাগ্য সবসময়ই তাড়া করবে সাকিবকে।

এ বিভাগের আরো খবর