২০০৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন সাকিব আল হাসান। অসংখ্য স্মরণীয় পারফর্মেন্সের উজ্জ্বল তার এই দীর্ঘ ক্রিকেট যাত্রা। ‘ফিরছেন সাকিব’ সিরিজের শুরুতে থাকছে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সেরা পাঁচ কীর্তি।
সাকিবের ‘বাংলাওয়াশ’
২০১০ সালে বাংলাদেশে নিউ জিল্যান্ড এসেছিল ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়েই। সেই স্বপ্ন ব্ল্যাকক্যাপদের জন্য পালটে যায় রীতিমতো দুঃস্বপ্নে।
সিরিজে সাকিব ব্যাটিং ও বোলিং-দুইয়েই ছিলেন সেরা। ব্যাট হাতে ৭১ গড়ে ২১৩ রান। সঙ্গে ১৫.৯ গড়ে ১১ উইকেট। সিরিজের মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার হয়েছিলেন সাকিব।
প্রথম ম্যাচে ছিলেন না তামিম ইকবাল। বোলিংয়ের সময় প্রথম ওভারে ইনজুরিতে পড়েন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। অধিনায়কত্বের বাড়তি চাপ চলে আসে সহ-অধিনায়ক সাকিবের কাঁধে। সেই চাপই যেন বের করে আনে সাকিবের সেরাটা। ব্যাট হাতে ফিফটির পাশাপাশি বোলিংয়ে চার উইকেট নিয়ে একাই বধ করেন সফরকারীদের।
বৃষ্টিতে ভেসে যায় দ্বিতীয় ম্যাচ। তিন নম্বর ম্যাচে দুই উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৭ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে ফেরেন সাকিব।
সিরিজ নির্ধারণী চতুর্থ ম্যাচে ছিল সাকিব শো। ব্যাট হাতে করেন সেঞ্চুরি। বল হাতে তিন উইকেট। তাতেই ম্লান কেন উইলিয়ামসনের শতক। সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৭৪-এ সাকিবের অবদান ৩৬। বল হাতে নেন দুই উইকেট। সেই ম্যাচ জিতেই নিশ্চিত হয় বাংলাওয়াশ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০তে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ।
আক্ষেপের এশিয়া কাপ, সাকিবের এশিয়া কাপ
২০১২ সালের এশিয়া কাপ বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক চিরকালীন আফসোস। ফাইনালের দুই রানের আক্ষেপ অনেক দিন পুড়িয়েছে বাংলাদেশকে। সাকিবের আর মুশফিকের কান্নার ছবি ছিল লাখো ভক্তের হৃদয় ভাঙার প্রতিচ্ছবি।
শেষটা হৃদয়বিদারক হলেও পুরো টুর্নামেন্টই ছিল সাকিবময়। চার ম্যাচে করেছিলেন তিন ফিফটি। ভারতের বিপক্ষে করেন ৪৯। দুইবার পেয়েছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন। সঙ্গীর অভাবে দলকে জেতাতে পারেননি। বাকি দুই ম্যাচে তেমনটি হয়নি। সাকিবের গড়ে দেওয়া ভিতে ভর করে জয় পায় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পৌঁছায় এশিয়া কাপ ফাইনালে।
ফাইনালেও ফিফটি করেন সাকিব। তা যথেষ্ট ছিল না বাংলাদেশকে শিরোপা জেতাতে। তারপরও তিন ফিফটিতে ২৩৭ রান ও ছয় উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন সাকিব।
রাজসিক প্রত্যাবর্তন
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২০১৪ সালে সাকিব নিষিদ্ধ হন ছয় মাসের জন্য। পরে নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনা হয় তিন মাসে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ফেরেন আহত বাঘের মতো।
প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংস সাকিব পকেটে পুরেন ছয় উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে যা করেন, তা সাকিবকে নিয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়। এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেটে বিরল রেকর্ড গড়েন এই সব্যসাচী। টেস্টের ১৪৩ বছরের ইতিহাসে যা ঘটে তার আগে মাত্র দুই বার।
খুলনায় দ্বিতীয় টেস্টে সাকিবের ১৩৭ ও তামিমের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ রান তোলে ৪৩৩। বল হাতে সাকিব তুলে নেন পাঁচ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে তা হননি সাকিব। তুলে নেন ইনিংসে পাঁচ ও ম্যাচে ১০ উইকেট। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরেন রাজার মতোই। হয়ে যান ইয়ান বোথাম ও ইমরানের খানের পর এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেয়া তৃতীয় ক্রিকেটার।
অস্ট্রেলিয়া বধ
আগের বছরই দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে যখন বাংলাদেশ সফরে আসে অস্ট্রেলিয়া, সিরিজ জয়ের বাড়তি চাপ ছিল স্বাগতিকদের ওপর।
প্রথম টেস্টের আগের দিন অজি স্কিপার স্টিভেন স্মিথের গলায় ছিল অন্য সুর। অনেকটা হেয় করেই যেন বললেন, ‘বাংলাদেশ আগের ১০০ টেস্টে জিতেছে মাত্র নয়টি। এখনও অনেক দূরের পথ।’
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হলো স্মিথ ভুল বলেননি। প্যাট কামিন্সের বোলিং তোপে তিন উইকেট নেই ১০ রানের মাথায়। সেখান থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন সাকিব ও তামিম। দুই জনের ১৫৫ রানের জুটিতে ব্যাটিং বিপর্যয় এড়ায় টাইগাররা। সাকিব আউট হন ৮৪ রানে। ২৬০ রানে শেষ করে বাংলাদেশ।
শের-ই-বাংলার টার্নিং ট্র্যাকে বল হাতে সাকিব হয়ে ওঠেন দানবীয়। বাংলাদেশকে ৪৩ রানের লিড দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সাকিব মুড়িয়ে দেন ২১৭ রানে, ৬৮ রানে তুলে নেন পাঁচ উইকেট।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়ার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৬৫ রানের। তাড়া করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্মিথের ব্যাটে সহজ জয়ের পথেই ছিল অস্ট্রেলিয়া। আবারও সেই আশায় পানি ঢেলে দেন সাকিব।
সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ওয়ার্নারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন স্মিথকে। একে একে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ম্যাথু ওয়েডকেও পথ দেখান প্যাভিলিয়নের। ১০ উইকেট তুলে নেন সাকিব। দল পায় অবিস্মরণীয় এক জয়।
ম্যাচসেরা কে হবেন, সেটি নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কোনো। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়ে সাকিব নায়ক হবেন এমনটা তো হবারই কথা!
দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপে স্বপ্নের সাকিব
সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন বুকে চেপে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়ে দারুণ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত সেই আশা পরিণত হয় হতাশায়। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ শেষ করে নয় দলের মধ্যে অষ্টম স্থানে থেকে।
দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপে স্বপ্নময় হয়ে ছিলেন সাকিব। ছুঁয়েছেন একের পর এক রেকর্ডের চূড়া। যখনই মাঠে নেমেছেন সাকিব গড়েছেন কোনো না কোনো রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ছিলেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে। দলের ব্যর্থতায় সেই অর্জন আর হয়নি সাকিবের।
সাকিব বিশ্বকাপ শেষ করেন ৬০৬ রান ও ১১ উইকেট নিয়ে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক আসরে পাঁচ শতাধিক রান ও ১০টির বেশি উইকেট লাভ করেন সাকিব। সঙ্গে ঢুকে যান বিশ্বকাপ ইতিহাসের এক এলিট ক্লাবে, যেখানে সদস্য সাকিব একাই।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে আর কেউই ১ হাজার রান ও ৩০ উইকেট পাননি। সাকিবই একমাত্র।
আরও একটি রেকর্ড গড়েন সাকিব। এক আসরে সাতটি ফিফটি করেন তিনি। কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বাদে এই কীর্তি নেই আর কারও।
প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা চার বিশ্বকাপে দলের প্রথম ম্যাচে ফিফটি করে আরেকটি রেকর্ড গড়েন সাকিব।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৫ দিয়ে শুরু। এরপর নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে ৬৪। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ ভেসে যাওয়ার পর টানা দুই শতক ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। উইন্ডিজের সঙ্গে তার অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংসে ৫১ বল আগেই ৩২২ রান তাড়া করে বাংলাদেশ।
একমাত্র অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেই ফিফটি পাননি সাকিব। সেই আক্ষেপ মেটান আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
প্রথমে ব্যাট হাতে ৫১। ব্যাট হাতে টুর্নামেন্ট কাঁপানো সাকিব ম্যাচে আগুন ঝরান বল হাতে। ২৯ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে একাই ধসিয়ে দেন আফগানদের।
ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে হারতে হলেও সে দুই ম্যাচেই হাসে সাকিবের ব্যাট, আসে আরও দুটো ফিফটি।
বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
মন্তব্য