বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুর বিভাগে পাঁচ বছরে মুক্তিযুদ্ধকালীন ছয় মর্টারশেল

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:৩৯

রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো সবই যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে। যখন যেখানে পাওয়া যাচ্ছে তখন নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এগুলো আলাদা করে খুঁজে বের করার সুযোগ নেই।’

রংপুর বিভাগের চার জেলায় গত পাঁচ বছরে ছয়টি মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল সেগুলো নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে হতাহতের ঘটনা এ বছরই প্রথম।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গত ২৪ মার্চ একটি মর্টারশেল উদ্ধার হয়। সেটির বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছে।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ধারণা, উদ্ধার হওয়া এসব মর্টারশেল মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে।

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি অফিস জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ৫ মার্চ লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবি এলাকায় স্থানীয় লোকজন পুকুর খোঁড়ার সময় একটি মর্টারশেল দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ মর্টারশেলটি উদ্ধার করে হাতিবান্ধা থানায় রাখে। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।

২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল একই জায়গায় আরও একটি মর্টারশেল পাওয়া যায়। সেটিও নিষ্ক্রিয় করা হয়।

২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল এলাকার চাওয়াই নদীর গোয়ালপাড়া ঘাটে মাছ ধরতে গিয়ে পরিত্যক্ত একটি মর্টারশেল খুঁজে পায় স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থী সাকিমুল ও শাকিল। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে সেটিও একইভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়।

এরপর ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের চাওয়াই নদী থেকে ১৯৬২ সালের একটি মর্টারশেল উদ্ধার করে পুলিশ। চাওয়াই নদী থেকে বালি তোলার সময় মর্টারশেলটি পানিতে ভেসে উঠলে দেখতে পায় স্থানীয়রা। বিষয়টি জানতে পেরে অমরখানা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা থানায় খবর দেয়।

মর্টারশেলটি ১৯৬২ সালের হলেও তা কোন দেশের সেটি জানা যায়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৬ নম্বর সেক্টরে ছিল পঞ্চগড়। পঞ্চগড়ের জগদলের পাশে অমরখানা এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। চাওয়াই নদীর ওপার থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের বারবার সম্মুখযুদ্ধ হয়।

এরপর মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নেয় মাগুরমারীতে। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়াগামী মহাসড়কে চাওয়াই নদীর উপর নির্মিত অমরখানা ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়ায় হানাদাররা তেঁতুলিয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি।

নিষ্ক্রিয় করা মর্টারটি যুদ্ধের সময় ওই এলাকায় ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল এমনটা ধারণা এই মুক্তিযোদ্ধার।

গত বছরের ১৮ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের লহনী বিলে মাটি খোঁড়ার সময় প্রায় ছয় কেজি ওজনের মর্টারশেল পাওয়া যায়। শ্রমিকরা বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফয়জার রহমানকে জানালে তিনি মিঠাপুকুর থানাকে খবর দেন।

পুলিশের ধারণা, মর্টারশেলটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি বাহিনী নিক্ষেপ করেছিল। কোনো কারণে সেটি বিস্ফোরিত হয়নি।

সর্বশেষ মর্টারশেলটি পাওয়া যায় গত ২৪ মার্চ বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে। মর্টারশেলটির বিস্ফোরণ হলে প্রাণ হারান বোরহান উদ্দিন, একই গ্রামের অহেদুল ও কুমড়িডাঙ্গা গ্রামের রানা মিয়া।

রাজধানী ও রংপুর থেকে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পরদিন সকালে। তারা বাড়ির ভেতর মর্টারশেলের অবশিষ্ট কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য পান। সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়।

প্রথমে নাশকতার আশঙ্কা করা হলেও সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) জানায়, বগুড়ায় নির্মাণাধীন ভবনের মাটি খুঁড়ে পাওয়া মর্টারশেলকে মূল্যবান কিছু ভেবে সেটি বাড়িতে নিয়ে যান বোরহান উদ্দিন। সহযোগীদের নিয়ে কাটতে গেলে সেটি বিস্ফোরিত হয়। তাতেই ঘটে হতাহতের ঘটনা।

রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো সবই যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে। যখন যেখানে পাওয়া যাচ্ছে তখন নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এগুলো আলাদা করে খুঁজে বের করার সুযোগ নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর