বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রত্যাশা : স্বতন্ত্র মাধ্যমিক অধিদপ্তর

  • সম্পাদকীয়   
  • ৪ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩:০৫

বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ১৯১টি দেশে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো—‘শিক্ষকতাকে একটি সহযোগী পেশা হিসেবে পুনর্গঠন’, যা শিক্ষক, বিদ্যালয় এবং শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য সহযোগিতার রূপান্তরমূলক সম্ভাবনা তুলে ধরে।এ বছর বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয়ের কেন্দ্রীভূত ধারণা শিক্ষকদের স্কুল এবং শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য সহযোগিতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেবে। শিক্ষকতাকে স্বাভাবিকভাবে সহযোগী হিসেবে পুনরায় ফ্রেম করা - এমন নীতি, অনুশীলন এবং পরিবেশ দ্বারা সমর্থিত যা পারস্পরিক সমর্থন, ভাগাভাগি করার দক্ষতা এবং যৌথ দায়িত্বকে মূল্যায়ন করে এটি শিক্ষণ, শেখার এবং শিক্ষকদের পেশাগত সন্তুষ্টি শক্তিশালী করার জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের কাছেও এ দিবসটি অত্যন্ত গৌরব ও মর্যাদার। ১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির প্রেক্ষাপটে ১৯৪৭ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ অধিবেশনে একটি ‘শিক্ষক সনদ’ প্রণয়নের মধ্য দিয়ে শিক্ষক অধিকার সংক্রান্ত চিন্তার উদ্ভব ঘটে। ১৯৪৮ সালে সম্মিলিত জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ২৬ অনুচ্ছেদে শিক্ষা মৌলিক অধিকার এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশ–এর গুরুত্ব পূর্ণব্যক্ত হয়। বিভিন্ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী শিক্ষক সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং সুরক্ষিত করার জন্য ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশেষ আন্ত: রাষ্ট্রীয় সরকার সম্মেলনে ১৩ অধ্যায়ে বিন্যস্ত এবং ১৪৬টি ধারা, উপধারায় সম্মিলিত শিক্ষকদের অধিকার, কর্তব্য ও মর্যাদাবিষয়ক ঐতিহাসিক ‘ইউনেস্কো আইএলও সুপারিশ ১৯৬৬ ‘প্রণীত হয়। এ ঐতিহাসিক দলিলে শিক্ষাকে দেশ, সমাজ ও জাতি গঠনের শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করে শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার, মর্যাদা ও দায়-দায়িত্বের বিষয়টি সুদৃঢ়ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কিত অর্জিত সাফল্যকে সমুন্নত রাখাসহ আরো সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে বিশ্বের ১৬৭টি দেশের ২১০টি জাতীয় সংগঠনের প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ সদস্যদের প্রতিনিধিত্বকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষক সংগঠন ‘এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল’ গঠিত হয়। এ আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে প্রনীত দলিলটি যথাযথ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার অর্থবহ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ক্রমাগত অনুরোধ ও ৫ অক্টোবরকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ঘোষণা দানের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ড. ফ্রেডারিক এম মেয়র যুগান্তকারী ঘোষণা দেন।এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক পালনের শুভ সূচনা হয়। ১৯৯৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিবসটি পালন হয়ে আসছে। শিক্ষকদের জন্য প্রণীত ও ঐতিহাসিক দলিলে শিক্ষকতাকে একটি সেবামূলক পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা সংগঠনগুলোকে একটি শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে শিক্ষার অগ্রগতিতে বিদ্যমান অসংগতি দূরীকরণে শিক্ষার মূলনীতি ও কর্মকাণ্ডকে যুগোপযোগী করতে হবে। শিক্ষকের স্বাধীনভাবে পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা ভোগের সুযোগ প্রদান এবং পাঠ্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণের বিকাশে শিক্ষক সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে—শিক্ষা সংগঠনগুলোকে একটি শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে শিক্ষার অগ্রগতিতে বিশেষত শিক্ষানীতি প্রণয়নসহ শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে এ শক্তির অবদান সুনিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকতা পেশায় দায়িত্ব পালনে শিক্ষায়তনে স্বাধীনতা ভোগের সুযোগ প্রদান এবং শিক্ষাক্রম,পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণের বিকাশে শিক্ষক সংগঠনগুলোর সুব্যবস্থা থাকতে হবে।শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে; ১। শিক্ষকদের মর্যাদাকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে প্রদেয় বেতন-ভাতা নিশ্চিতকরণ;২। সমাজে শিক্ষকতার গুরুত্ব প্রতিফলনে অন্যান্য পেশায় সমমানের যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রদত্ত বেতনের সাথে অনুকূল তুলনীয়ভাবে ও পরিবার-পরিজনসহ যুক্তিসংগত জীবন যাপনের মান বজায় রাখার নিশ্চয়তা বিধান সাপেক্ষে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সুনির্ধারণ করা;৩। প্রতিষ্ঠিত বেতন স্কেলের ভিত্তিতে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন পরিশোধ;৪। জীবন ধারণের ব্যয় বৃদ্ধি ও বর্ধিত উৎপাদনশীলতার কারণে ব্যয়ের উর্ধ্বমুখী বিবেচনায় প্রয়োজন অনুসারে বেতন স্কেল পুনঃনির্ধারণ ইত্যাদি। এ দলিলের শিক্ষকদের চাকরি ও কর্মজীবন, পেশাগত স্বাধীনতা ও অধিকার, কর্মঘণ্টা ও ছুটি সামাজিক নিরাপত্তাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যা শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির সহায়ক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি উপরোক্ত সুপারিশ মালার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এর বাস্তবায়ন যথাযথ হচ্ছে না।সু-শিক্ষার জন্য প্রয়োজন সু-শিক্ষক। সু-শিক্ষককে অনেক গুণাবলির অধিকারী হতে হয়। সু-শিক্ষক পেতে হলে মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন স্কেল হলে উচ্চতর যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা এ পেশায় অংশগ্রহণে আগ্রহী হবেন। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর যতগুলো শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে,সবগুলো রিপোর্টে এ বাস্তবতা মেনে নেওয়া হয়েছে। ২০০৩ সালে গঠিত শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট মতে, ‘শিক্ষাক্রম যতই উন্নত মানের হোক, বিদ্যালয়ের ঘর দুয়ার যতই চাকচিক্যময় হোক, অবকাঠামগত সুবিধা দিয়ে যতই প্রয়োজন মাফিক হোক না কেন শেষ বিচারের শিক্ষার গুণগত মান নির্ভর করে শিক্ষকদের বিষয় জ্ঞানের পরিধি, তাদের প্রশিক্ষণ, তাদের কাজের আগ্রহ, দক্ষতা ইত্যাদির উপর। প্রকৃতপক্ষে, ভালো শিক্ষক না হলে কখনো ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না। অপরপক্ষে ভালো শিক্ষক পেতে হলে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা দেয়া প্রয়োজন। এ কমিশনের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের উপরও গুরুত্ব দেয়া হয়। ১৯৯৭ সালের অধ্যাপক শামসুল হকের নেতৃত্বে পরিচালিত শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের মতে শিক্ষকরা হচ্ছেন শিক্ষা ব্যবস্থার মূল শক্তি। অতএব শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। ২০০৯ সালে প্রণীত শিক্ষানীতিতেও শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর বেতন স্কেল ও যথাযথ মর্যাদা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক উপাদান হচ্ছে শিক্ষক। শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান করে তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষার উন্নয়ন অসম্ভব। তাই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে ও মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করতে হলে মাধ্যমিক স্তরে এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড নিশ্চিত করতে হবে।অপরদিকে জীবন মান উন্নয়ন ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য বিশ্বব্যাপী মানসম্মত শিক্ষার গুরুত্ব বেড়েই চলছে। শিক্ষা কাঠামোর গুরুত্বপূর্ন স্তর হল মাধ্যমিক শিক্ষা। অনেক উন্নত দেশে মাধ্যমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাপ্ত মৌলিক শিক্ষাকে সম্প্রসারিত ও সুসংহত করা, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রয়োগ কৌশলে জনশক্তি সরবরাহ করা মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য।এ স্তরের শিক্ষা লাভ করে দেশের বিরাট জনশক্তি আর্থ -সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। তাই আমাদের দেশেও মাধ্যমিক শিক্ষার চাহিদা বাড়ছে কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি আশানুরূপ নয়। মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিক্ষক নির্বাচন ও নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, স্কুল সংগঠন ও বিন্যাস, শিক্ষামূলক তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধন সম্ভব হয়নি। এ স্তরে শিক্ষার অন্যতম উপকরণ পাঠ্যপুস্তক নির্ভুলভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না। পাঠ্যপুস্তকে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ছে, যা শিক্ষার সুষ্ঠু প্রক্রিয়াকে নষ্ট করছে। তাছাড়া আকর্ষণীয় শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। অথচ পৃথিবীর অনেক দেশেই উন্নতমানের শিক্ষার উপকরণ ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষার স্বতন্ত্র অধিদপ্তর গঠনের মাধ্যমে স্তরের সফলতা ক্রমবর্ধমানহারে বেড়েই চলছে। বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষার পরিধি ও পরিসর ক্রমশই বাড়ছে। মেয়েদের ভর্তির হার বৃদ্ধির জন্য উপবৃত্তি প্রদান, বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি,শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের ফলে মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। সে তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়েনি। মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থাকলেও সারাদেশে বিশাল সংখ্যক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা দুরূহ। প্রশাসনিক সুবিধার্থে নয়টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ৬৪ জেলার শিক্ষা কার্যালয়, ৫১৬টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ৬৮৬টি সরকারি কলেজ, ৭০৬টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবং ১০৪ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)-২০১৪ এর তথ্য মতে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১২৩২ যার মধ্যে কলেজ ১৫১৪। এ কারণে এ বিশাল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য আকাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। অধিকন্তু সরকারি মাধ্যমিকের অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, জেলা শিক্ষক অফিসার সহ বিভিন্ন স্থানে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রেষণে এনে অদক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা প্রশাসন পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।ফলে প্রাথমিক শিক্ষার মতো মাধ্যমিক শিক্ষার গতিশীলতা নেই।মাধ্যমিক স্তরের এ সকল সমস্যা বিবেচনা করে স্বাধীনতা উত্তর বর্ণিত সব শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০০৩ সালে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশন সুপারিশ করেছিল মাধ্যমিক স্তরের সার্বিক প্রশাসনের জন্য স্বতন্ত্র অধিদপ্তর গঠন করা হোক। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন জানুয়ারি ২০২৫ প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, ‘পৃথক মাধ্যমিক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। মাধ্যমিক শিক্ষার অধীনে অনেক প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে শিক্ষার মান ক্রমশ কমছে। তাই আলাদা অধিদপ্তর গঠন জরুরি।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আয়োজিত জাতীয় কর্মশালার সুপারিশের ভিত্তিতে বিয়াম ফাউন্ডেশন গবেষণা ও পরামর্শ সেবা কেন্দ্র একটি প্রতিবেদনে শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থা পুনর্গঠন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে দুটি পৃথক অধিদপ্তরে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। শুধু তাই নয়, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সচিব সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি মন্ত্রণালয় /বিভাগের সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য মার্চিং অর্ডার দেওয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ২৮ নভেম্বর ২০২৪ -এ দাখিলকৃত সময়নিষ্ঠ সংস্কার পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তি ছিল। তাই যুগোপযোগী ও মানসম্মত মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আলাদা অধিদপ্তরের বিকল্প নেই। যদিও বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেষণায় রয়েছে এবং সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার মার্চিং অর্ডারের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের জানুয়ারি -২০২৫ প্রতিবেদন এবং মনিরুজ্জামান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল এ সফল উদ্যোগকে নস্যাৎ করে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ সরকার প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক ও রহস্যজনক। তাই স্বতন্ত্র মাধ্যমিক অধিদপ্তর বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন।শিক্ষকতা শুধু পেশা নয়, ব্রতও বটে। শিক্ষকতা একটি শিল্প। যুগ পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত নিত্য নতুন পুস্তক লেখা,পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, পাঠ পদ্ধতি শিখন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের আধুনিক উপকরণ যেমন ওভারহেড প্রজেক্টর, অডিও ভিডিও স্লাইড, রঙ্গিন বোর্ড, চক, ডাস্টার প্রভৃতি কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তারা শিক্ষাদানকে উপভোগ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলুক, শিক্ষক সমাজ সুশিক্ষিত জাতি গঠনে চমৎকার ভূমিকা পালন করুক এবং সর্বোপরি তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি হোক বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এই প্রত্যাশা সবার।লেখক: গবেষক, প্রবন্ধকার ও প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ টিচার্স ফেডারেশন (এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল অধিভুক্ত)।

এ বিভাগের আরো খবর