পাকিস্তান নামক এককালের ‘রাঘব বোয়াল’ দেশটি আজ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই মুহূর্তে দেশটির মূল্যস্ফীতি ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থার চেয়েও খারাপ। বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কটে নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। দিনে দিনে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি।
মার্চ মাসে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এখন সেখানে ১ ডলারের জন্য ২৮৭ রুপি গুনতে হচ্ছে। দেশটির রিজার্ভ বলতে তেমন কিছুই নেই। যৎসামান্য যা আছে তা দিয়ে এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে না।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত হারের প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। পাকিস্তান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস (পিবিএস) প্রকাশিত তথ্য বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতি বেশি। শহরে ৩২ দশমিক ৯৭, গ্রামে ৩৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। নানা পদক্ষেপেও এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারছে না শাহবাজ শরিফ সরকার।
ঋণে জর্জরিত দেশটিকে এখন আর কেউ ঋণ দিতে চাচ্ছে না। এমনকি বন্ধুরাষ্ট্র চীনও না। ইতোমধ্যে চীনের কাছ থেকে যে ঋণ নিয়েছে তা শোধ দেয়ার সামর্থ্য এই মুহূর্তে পাকিস্তানের নেই। এই ঋণের পরিবর্তে ভবিষ্যতে হয়তো শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দরের মতো তাদেরও কিছু একটা চীনকে লিখে দিতে হতে পারে।
ইতোমধ্যে পাকিস্তান তাদের দখলে থাকা লাদাখ অঞ্চলের একাংশ চীনের হাতে তুলে দিয়েছে। বিতর্কিত এই অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব চীনের হাতে তুলে দেয়ার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। তবে এটা ঠিক জনবসতিপূর্ণ কোনো ভূখণ্ড চীন নেবে না।
পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশই চীন থেকে নেয়া। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ চায়না (আইসিবিসি) পাকিস্তানকে আরও ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে। এই ঋণ গ্রহণের ফলে পাকিস্তানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়বে আরও ২ বিলিয়ন ডলার।
আইসিবিসি বিদ্যমান ঋণের রোলওভার অনুমোদন করেছে এবং প্রকৃত অর্থপ্রবাহ পাকিস্তান তিনটি সময়োপযোগী কিস্তিতে উপলব্ধ করতে পারবে। এর মধ্যে প্রথমটির ৫০০ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যে সেন্ট্রাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান পেয়ে গেছে।
চীনা ঋণে বরাবরই অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঋণ সংস্থার তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি সুদ ধার্য থাকে। তাই ঋণ পরিশোধ অব্যাহত রাখা গ্রহীতা দেশগুলোর জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া চীন যে ঋণ দেয় তা কখনোই লাভজনক হয় না। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর। ২০১৭ সালে ৯৯ বছরের জন্য চীন এই বন্দর ইজারা পেলেও ঋণ পরিশোধ না হলে আরও ৯৯ বছর তারা দখলে রাখার শর্ত রেখেছে চুক্তিতে।
এদিকে ইসলামাবাদে চীনের এই ঋণফাঁদ ওয়াশিংটনকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভারতের নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনা ঋণের বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ ঋণগুলো জোরপূর্বক দখলদারীর শঙ্কা তৈরি করছে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রবাসী পাকিস্তানিরা দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো কমিয়ে দিলে বিপদ আরও বাড়বে ইসলামাবাদের। ভয়ানক অবস্থা হবে বিদেশি অর্থ তহবিলের।
বস্তুত পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য অসংলগ্ন অর্থনৈতিক বিষয়গুলো দায়ী। আর্থিক অভিজাতরা এই অবস্থাতেও বিভিন্ন ভর্তুকি সুরক্ষিত রাখতে ব্যস্ত। ফলে চরম অর্থনৈতিক দুর্দিন অপেক্ষা করছে পাকিস্তানের জন্য।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গত সপ্তাহে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য জ্বালানির ওপর একটি ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এর ফলে পাকিস্তানের মধ্য বা উচ্চ আয়ের মানুষদের পেট্রোলের জন্য ১০০ রুপি অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। অবনতিশীল অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে ডলার সাশ্রয়ের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করেছে।
অর্থনীতির এই চরম সঙ্কটের মধ্যে অতীতের ধার শোধের জন্য নতুন করে ঋণ নিয়ে আরও বিপদে পড়ছে পাকিস্তান। আরও বেশি ঋণ নিতে গিয়ে দেশের অর্থনীতি চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তৈরি হয়েছে আরও বেশি আর্থিক বিপর্যয়ের শঙ্গা।
২০২২ সালের জুনে গত অর্থবছরের শেষে দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৫২৩ ট্রিলিয়ন রুপি। গত ৩ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এযাবৎকালের সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৩০১ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান পড়ে গুরুতর নগদ অর্থ সংকটে। এই পতনের ফলে বন্ধু দেশগুলো থেকে ফের ধার নিয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পথে হাঁটা ছাড়া গত্যন্তর নেই দেশটির।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট বা পিডিএমের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার বা আইএমএফ থেকে ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বেলআউট প্যাকেজ পেতে মরিয়া। কিন্তু সেটা পেতেও অচলাবস্থা কাটছে না। আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য ঋণ কার্যক্রম পুনরায় শুরুর ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত আরোপ করেছে।
আইএমএফ ও পাকিস্তান ২০১৯ সালে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট স্বাক্ষর করে। গত বছর আরও ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার এতে যুক্ত হয়। এই প্যাকেজের শর্ত ছিল, ঋণ ছাড়ের আগে বাজেট ঘাটতি কমাতে হবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, আইএমএফের অর্থ বিদেশি বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ ব্যাংক এবং সৌদি আরব, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলো থেকে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিতে ভারসাম্য রাখতে আইএমএফের ওপর নির্ভর করছে। তহবিল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত পাকিস্তানিদের জন্য নতুন কিছু নয়। মোট ২২টি আইএমএফ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত পাকিস্তান। স্বাধীনতার পর থেকেই তারা বেশিরভাগ সময় বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের ছায়ায় রয়েছে। কিন্তু এবার আইএমএফের শর্ত খুবই কঠিন। অতীতের সব প্রতিশ্রুতির খেলাপই পাকিস্তানকে আইএমএফ-কে কঠোর মনোভাবের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এমন অবস্থায় কোনো বন্ধু দেশই পাকিস্তানের আর্থিক সঙ্কট থেকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। এর ফলে আইএমএফের দাবি মেনে নেয়া ছাড়া ইসলামাবাদের আর কোনো উপায় নেই।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ আবিদ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রাস্তার শেষ প্রান্তে আছি। আইএমএফের শর্ত পূরণের বিষয়টি মানুষকে বোঝাতে হবে।’
আর এটা করতে না পারলে পাকিস্তানের যে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে সেটাও তিনি মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) সেটা না করলে আমাদের পরিণতি শ্রীলঙ্কার থেকেও খারাপ হবে।’
আগামী সাড়ে তিন বছরে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধে খেলাপি হতে চলেছে পাকিস্তান। এই বিপুল পরিমাণ ঋন খেলাপি আটকাতে ডলারের টেকসই প্রবাহ জরুরি। দেশটি বর্তমানে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বসে আছে। এ অবস্থায় ইসলামাবাদ আইএমএফের বেলআউট কর্মসূচি পেতে ওয়াশিংটনের সমর্থন চাইছে।
অতীতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় পাকিস্তান বন্ধু দেশগুলোর ওপর নির্ভর করেছে। গত কয়েক দশকে সৌদিদের আর্থিক বেলআউট প্যাকেজ পাকিস্তানের জন্য অভ্যাসে পরিণত করেছিল। এছাড়াও সৌদি আরব দীর্ঘমেয়াদি ঋণে জ্বালানিও সরবরাহ করেছে পাকিস্তানকে। গত মাসেও তারা ইসলামাবাদকে ৪ শতাংশ হারে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। কিন্তু ইদানীং অতীতের মতো পাকিস্তানকে আর কোনো সহজ আর্থিক বেলআউট বা সুদমুক্ত ঋণ দিতে অস্বীকার করছে তারা।
সৌদি আরব স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, আরও ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি পাকিস্তানের আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ওপরই নির্ভর করবে। রিয়াদ পাকিস্তানের ওপর কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব সংস্কার বাস্তবায়নের শর্ত দিয়েছে। তাদের নতুন সুদ-বহনকারী ঋণ এবং বিনিয়োগের শর্তগুলোও আইএমএফ দ্বারা নির্ধারিত শর্তের মতোই কঠিন।
আইএমএফ ঋণ চুক্তি দ্রুত কার্যকর না করলে পাকিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক ঋণ সুরক্ষিত করা আরও কঠিন হবে। সেক্ষেত্রে পতন হবে তাদের ক্রেডিট রেটিং-এর। আইএমএফ এখন ইসলামাবাদকে বেলআউট দেয়ার আগে তাদের বহিরাগত অর্থায়নের নিশ্চয়তা দিতে বলেছে।
পাকিস্তানের দুরবস্থা প্রথম প্রকাশ পায় গত আগস্টে সিন্ধু, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ভয়াবহ বন্যার পর। তখনই জানা যায় যে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সরবরাহ করার মতো অর্থ তাদের কোষাগারে নেই। এরপর অবশ্য তারা বিদেশের কাছে হাত পাততে দেরি করেনি। অভ্যাসবশত প্রায় সঙ্গে সঙ্গে এই আবেদনে সাড়া দেয় বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দ্রুত ১০ টন বিস্কুট, ১০ টন ড্রাই কেক, পানি বিশুদ্ধকরণ ১০ হাজার ট্যাবলেট, ৫০ হাজার প্যাকেট ওরাল স্যালাইন, ৫ হাজার মশারি, ২ হাজার কম্বল ও ২ হাজার তাঁবু পাঠানোর জন্য এক কোটি ৪০ লাখ টাকার তহবিল অনুমোদন করে।
কিন্তু বিশ্ব পরিমণ্ডলে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে, এমন কথা বলে বাংলাদেশের এক কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যের মানবিক ত্রাণ সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান। নজিরবিহীন প্রাকৃতিক ওই বিপর্যয়ে পাকিস্তানের এক-ততৃীয়াংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
বন্যাকবলিত লাখ লাখ মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে যখন দিনাতিপাত করে, তখন বাংলাদেশ ত্রাণ সহায়তার প্রস্তাব দিলেও তা গ্রহণ করেনি পাকিস্তান। একেই বলে পরিণতি। যে বাংলাদেশকে এক সময় ভুখা, নাঙ্গা, কালা আদমির দেশ বলে ঘৃণা করত, তারা যখন ভিক্ষা দিতে চাইছে তখন তো শরমে মুখ লুকাবার জায়গা থাকে না।
জানা যায়, বাংলাদেশের ত্রাণ সহায়তার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। দেশটির এমন পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি এবং এজন্য দায়ীও এই সেনাবাহিনী। তাদের উদরপূর্তি করতে গিয়েই দেশটির এই বেহাল অবস্থা। সামরিক শক্তিতে সমকক্ষ না হলে ভারত যেকোনো সময় পাকিস্তান দখল করে নিতে পারে- এই ধুয়া তুলে তারা বাজেটের প্রায় ৮০ ভাগ অর্থ গ্রাস করেছে। ফলে দেশটি সামাজিক উন্নয়ন খাতে কোনো অর্থই ব্যয় করতে পারেনি। এ কারণে জাতিসংঘের উন্নয়ন সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে তারা যোজন যোজন পিছিয়ে।
দুর্দশার মূল কারণটি পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণের জানা হলেও তুলে নিয়ে গুম করার ভয়ে কেউ কথা বলে না। তবে দুর্মুখ বলে পরিচিত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান থেমে থাকেননি। তিনি একাধিকবার বলেছেন, ‘সামরিক খাতের ব্যয় মেটাতে গিয়ে আমরা সামাজিক উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে পারছি না, তাই দেশের উন্নয়নও হচ্ছে না।’ তাকে এর প্রায়শ্চিত্যও করতে হয়েছে। ক্ষমতা হারিয়েছেন, সে সঙ্গে বন্দুকধারীর গুলিতে তার জীবনই যেতে বসেছিল।
পাকিস্তানবাসীর মুখের একটি কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ চাউর হয়েছে- ‘শেখ হাসিনাকে পাকিস্তানেরও প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দেও। তিনিই পারবেন আমাদের ভাগ্য ফেরাতে। সেই সঙ্গে তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তান যে পাপ করেছিল তা কিছুটা হলেও মোচন হবে’।
এরপর মুচকি হাসা ছাড়া বাংলাদেশের আর কিইবা করার আছে। এই সেই পাকিস্তান যারা একাত্তরের গণগত্যার জন্য আজও বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি। এখানেও সেই সেনাবাহিনী। কারণ দুষ্কর্মটা তারাই করেছিল।
ইমরান খান একাধিকবার বিষয়টি সামনে এনেছেন। কিন্তু সেনাবাহিনী রুষ্ট হবে ভেবে ক্ষমা চাইতে সাহস করেননি। তবে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তানকে সাহায্য করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় আর কোনো দেশের নেই।
বাংলাদেশ যখন শ্রীলংকা ও মালদ্বীপকে ঋণ মঞ্জুর করে তখন পাকিস্তানের জনগণ বুক চাপড়েছে- ‘আহ! সুসম্পর্ক থাকলে বাংলাদেশের কাছ থেকে আমরাও দুই/চার বিলিয়ন ডলার পেতাম।’ তবুও অতীতের অপরাধের জন্য তাদের সরকার ক্ষমা চাইছে না। নিকট অতীতে হয়ত তারা সে কাজটিও করবে। তবে ততদিনে পাকিস্তান আইসিইউতে চলে যাবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট