১৯৬৯ সালে ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতন ঘটে। ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া খান। জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসেই পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এর কিছুদিন আগে ১২ নভেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের উপকূল এলাকায় পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে, এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দশ লাখ লোক মারা যায়।
এত বড় একটি ঘটনার পর পাকিস্তান সরকারের যেভাবে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, তারা মোটেও সেভাবে এগিয়ে আসেনি। ঘূর্ণিঝড়ের পরেও যারা কোনোভাবে বেঁচে ছিল তাদের অনেকের মৃত্যু হয় খাবার আর পানির অভাবে। ঘূর্ণিঝড়ে কষ্ট পাওয়া মানুষগুলোর প্রতি এরকম অবহেলা আর নিষ্ঠুরতা দেখে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালিদের বিতৃষ্ণা আর ঘৃণা চরমে ওঠে।
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সারা পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বড় বড় জেনারেলের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি কোনো শ্রদ্ধাবোধ ছিল না। তারা ধরেই নিয়েছিল, নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না, তাই দলগুলো নিজেদের ভেতর ঝগড়াঝাটি ও কোন্দল লেগে থাকবে এবং এটাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে সেনাবাহিনী ক্ষমতার রশি তাদের হাতে রাখার সুযোগ পাবে।
নির্বাচনের ফলাফল দেখে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও তার সঙ্গী-সাথিদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, ফলাফলটি ছিল অবিশ্বাস্য- পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২ আসনের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটের ব্যবধানে ১৬০টি আসনে জয়ী হয়। মনোনীত মহিলা আসনসহ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৩১৩টি আসনের মাঝে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি, পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর দল পিপলস পার্টি ৮৮টি এবং অন্যান্য সব দল মিলে পায় বাকি ৫৮টি আসন।
সোজা হিসেবে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান শাসন করার সুযোগ আসে পূর্ব পাকিস্তানের তথা বাঙালির হাতে। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনের পর পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, তিনি ছয় দফার কথা বলে জনগণের ভোট পেয়েছেন তাই তিনি শাসনতন্ত্র রচনা করবেন এবং দেশ শাসিত হবে ছয় দফার ভিত্তিতে।
পাকিস্তানের সেনা নিয়ন্ত্রিত শাসকগোষ্ঠী তখন কোনোভাবেই বাঙালিদের হাতে পাকিস্তানের শাসনভার তুলে না দেয়ার বদ মতলব আঁটতে থাকে। আসলে ষড়যন্ত্রের পথে হেঁটে নিজের অজান্তেই জেনারেল ইয়াহিয়া খান আর তার দলবল ‘বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি রাষ্ট্র জন্ম দেবার প্রক্রিয়ার বাঁশি বাজিয়ে দেন।
পাকিস্তানি শাসকদের দুরভিসন্ধি স্পষ্ট হয় ১ মার্চ আকস্মিকভাবে জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিত করার মধ্য দিয়ে। বাঙালি গর্জে ওঠে। হাতে অস্ত্র ধরে দেশ স্বাধীন করার প্রত্যয় ধ্বনিত হয় কোটি কণ্ঠের স্লোগানে। মানুষকে এই অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান তার আজীবন সংগ্রাম সাধনার মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু তথা বাঙালির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রের ষড়যন্ত্রের সামগ্রিক বিষয়টি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সব দিক বুঝেশুনেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি দিয়েছিলেন তিনি।
সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলেছেন, মুক্তির কথা বলছেন। যুদ্ধ শব্দটি সরাসরি না বলে লড়াইয়ের জন্য জনগণকে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন। সামরিক-বেসামরিক পর্যায়ে চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষের অনেকেই এই ভাষণ শুনে শিহরিত হয়েছেন। সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছেন বাংলাদেশকে আর পাকিস্তানের গণ্ডিবদ্ধ না রাখার। আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ৭ মার্চের ভাষণ শোনার পর থেকে বাঙালির রক্তে আগুন জ্বলে ওঠে। আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ ও নিজেদের সামরিক প্রস্তুতি চালাতে থাকে ইয়াহিয়ার দল। বাঙালি দৃঢ় আস্থায় চালিয়ে যেতে থাকে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন। সবাই চূড়ান্ত নির্দেশের অপেক্ষায়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর কাছে খবর আসতে থাকে চট্টগ্রাম, রংপুর, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের ওপর আক্রমণ শুরু করেছে। বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞের সংবাদ পেয়েই তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের গোপন স্থানে চলে যাবার নির্দেশ দেন এবং বিশেষ ব্যবস্থায় একান্ত বিশ্বস্ত লোকের মাধ্যমে অয়্যারলেস স্টেশনে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা।
জেনোসাইডের জন্য জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ তারিখটা বেছে নিয়েছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন এটা তার জন্যে একটি শুভদিন। দুই বছর আগে এই দিনে তিনি আইয়ুব খানের কাছ থেকে ক্ষমতা পেয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশের ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞের আদেশ দিয়ে তিনি সন্ধ্যায় পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান।
জেনারেল ইয়াহিয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বলেছিল, কয়েক লাখ বাঙালিকে হত্যা কর, তখন দেখবে তারা আমাদের হাত চেটে খাবে! এই ধারণা থেকেই জেনোসাইড বা গণহত্যার নিখুঁত পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে করা হয়েছিল। সেই নীলনকশার নাম অপারেশন সার্চলাইট, যা শুরু হয়েছিল ২৫ মার্চ রাতে। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল, কেমন করে আলাপ আলোচনার ভান করে কালক্ষেপণ করা হবে, কীভাবে বাঙালি সৈন্যদের নিশ্চিহ্ন করা হবে, কীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আক্রমণ করা হবে, সোজা কথায়, কীভাবে একটি জাতিকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
শহরের প্রতিটি রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে, লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে দেরি হবে তাই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই রাত সাড়ে এগারোটায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের কাজ শুরু করেছিল। শুরু হয়েছিল পৃথিবীর জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ। এই হত্যাযজ্ঞের যেন কোনো সাক্ষী না থাকে সেজন্যে সব বিদেশি সাংবাদিককে ঢাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। তারপরেও সাইমন ড্রিং নামে একজন অত্যন্ত সাহসী সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা শহরে লুকিয়ে এই ভয়াবহ গণহত্যার খবর ওয়াশিংটন পোস্টের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে জানিয়েছিলেন।
ঢাকা শহরের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে পাকিস্তান মিলিটারির অনেক বাঙালি অফিসারকে হয় হত্যা, না হয় গ্রেপ্তার করে এবং সাধারণ সৈন্যদের নিরস্ত্র করে রাখে। পিলখানায় ইপিআরদেরকেও নিরস্ত্র করা হয়েছিল, তারপরেও তাদের যেটুকু সামর্থ্য ছিল সেটি নিয়ে সারা রাত যুদ্ধ করেছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পুলিশদের নিরস্ত্র করা সম্ভব হয়নি এবং এই পুলিশবাহিনীই সবার আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সত্যিকার একটি যুদ্ধ শুরু করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অনেক ক্ষতি স্বীকার করে পিছিয়ে গিয়ে ট্যাঙ্ক, মর্টার, ভারী অস্ত্র, মেশিনগান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে শেষ পর্যন্ত রাজারবাগ পুলিশ লাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
২৫ মার্চের বিভীষিকার কোনো শেষ নেই। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ও জগন্নাথ হলে অবস্থানরত ছাত্রদের হত্যা করে। হত্যার আগে তাদের দিয়েই জগন্নাথ হলের সামনে একটি গর্ত করা হয়, যেখানে তাদের মৃতদেহকে মাটিচাপা দেয়া হয়। এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যটি বুয়েটের প্রফেসর নূর উল্লাহ তার বাসা থেকে যে ভিডিও করতে পেরেছিলেন, সেটি এখন মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে, পৃথিবীর যেকোনো মানুষ চাইলেই তা নিজের চোখে দেখতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ছাত্রদের নয়, সাধারণ কর্মচারী এমনকি কয়েকজন শিক্ষকদেরকেও তারা হত্যা করে।
আশেপাশে যে বস্তিগুলো ছিল সেগুলো জ্বালিয়ে দিয়ে মেশিনগানের গুলিতে অসহায় মানুষগুলোকে হত্যা করে। এরপর তারা পুরোন ঢাকার হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলো আক্রমণ করে, মন্দিরগুলো গুঁড়িয়ে দেয়, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। যারা পালানোর চেষ্টা করেছে সবাইকে পাকিস্তানি মিলিটারি গুলি করে হত্যা করেছে। ২৫ মার্চ ঢাকা শহর ছিল নরকের মতো, চারদিকে আগুন আর আগুন, গোলাগুলির শব্দ এবং মানুষের আর্তচিৎকার।
অপারেশন সার্চলাইটের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা। পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করার আগেই তিনি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণায় তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার আহ্বান জানান। তার ঘোষণাটি তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। যখন ঘোষণাটি প্রচারিত হয় তখন মধ্যরাত পার হয়ে ২৬ মার্চ হয়ে গেছে, তাই আমাদের স্বাধীনতা দিবস হচ্ছে ২৬ মার্চ। পৃথিবীর মানচিত্রে সংযোজন হলো নতুন একটি রাষ্ট্র- বাংলাদেশ।
২৫ মার্চ জেনোসাইড শুরুর পর বাংলাদেশে কোনো বাঙালির জীবনই নিরাপদ ছিল না। তবে আওয়ামী লীগের কর্মী বা সমর্থক আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রাগ ছিল সবচেয়ে বেশি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারে এরকম তরুণরাও সেনাবাহিনীর লক্ষ্য ছিল। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের মধ্যে ছিল কমবয়সি মেয়েরা।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের বিহারি জনগোষ্ঠীও বাঙালিনিধনে যোগ দিয়েছিল এবং তাদের ভয়ংকর অত্যাচারে এই দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী পাশের দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। জাতিসংঘ কিংবা নিউজ উইকের হিসাবে মোট শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি। সে সময় বাংলাদেশের জনসংখ্যাই ছিল মাত্র সাত কোটি, যার অর্থ দেশের প্রতি সাতজন মানুষের একজনই নিজের দেশ ও বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী হিসেবে পাশের দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল।
ভারত এই বিশাল জনসংখ্যাকে আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু তাদের ভরণপোষণ করতে গিয়ে প্রচণ্ড চাপের মাঝে পড়ে। অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু আগরতলায় মোট অধিবাসী থেকে শরণার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি। শরণার্থীদের জীবন ছিল খুবই কষ্টের, খাবার অভাব, থাকার জায়গা নেই, রোগে-শোকে জর্জরিত, কলেরা ডায়রিয়া এরকম রোগে অনেকে মারা যায়। ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, যুদ্ধ শেষে কোনো কোনো শরণার্থী ক্যাম্পে একটি শিশুও আর বেঁচে নেই ।
একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আকাঙ্ক্ষা মানুষের বুকের মাঝে জাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি তার পরিবারের সবাইকে নিজেদের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে ৩০ মার্চ সীমান্ত পাড়ি দেন। কলকাতা থেকে তিনি আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্থায়ী সরকার গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এপ্রিলের ১০ তারিখ মুজিবনগর থেকে ঐতিহাসিক স্বাধীনতার সনদ ঘোষণা করা হয়। এই সনদটি দিয়েই বাংলাদেশ নৈতিক এবং আইনগতভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই নতুন রাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে (মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা) বাংলাদেশের প্রথম সরকার দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সামনে শপথ গ্রহণ করে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫১ বছর হয়ে গেল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও আমরা উদযাপন করেছি। স্বাধীনতার যেসব প্রত্যাশা এখনও পূরণ হয়নি, সেগুলো পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে যেন আমরা ভুল না করি।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক