করোনাভাইরাস মহামারিতে অক্সিজেন ব্যাংক নিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ইউনিভার্সাল এমিটি ফাউন্ডেশন’।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি করোনা পরিস্থিতিতে রোগীদের বিনা মূল্যে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসামগ্রী দিচ্ছে। খুলনাসহ দেশের বেশ কিছু সংকটময় এলাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অক্সিমিটার (রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপক যন্ত্র) রোগীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তারা।
সংগঠনের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে ২৪ ঘণ্টায় বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। এ ছাড়া মহামারির সময়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারকে নিয়মিত খাদ্যসহায়তাও দিচ্ছে সংগঠনটি।
এমিটি অক্সিজেন ব্যাংকের সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘খাবার বা পানির অভাব হলে কয়েক দিন বেঁচে থাকা যায়, কিন্তু অক্সিজেন ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা কল্পনা করা যায় না। তাই আমরা রাত-দিন রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মুমূর্ষু রোগীদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছি। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আমাদের কাজটি আরও সহজ হবে।’
উপকারভোগী খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, ‘ইউনিভার্সাল এমিটি ফাউন্ডেশন এই করোনা মহামারির মধ্যে আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ না করলে আমার পরিবারের পক্ষে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ত। আসলেই তারা মানবতার বাহকের মতো আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।’
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি এবং আমার এমিটি টিম প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন খাদ্য, অক্সিজেন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিয়ে আমাদের দেশের অভাবগ্রস্ত মানুষগুলোকে যথাসময়ে সাহায্য করতে পারি।
‘আমরা যদি সরকার এবং দাতা সংগঠনগুলোর সহায়তা পাই, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব।’
২০১৫ সালে লালমনিরহাটে বন্যাকবলিত মানুষদের সহায়তা দেয়ার ছোট একটি প্রকল্প নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইউনিভার্সাল এমিটি। এখন পর্যন্ত তারা ৩০টি ভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।
সংগঠনটির চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘ফুড ফর গুড, ‘ইনকাম এইড, ‘সেফ শেল্টার’, ‘লাইফলাইন’, ‘এইড ফর এডুকেশন’, ‘এইড ফর লাইফ’, ‘ফিড এ হাঙরি চাইল্ড’, ‘এমিটি মিল্ক ব্যাংক’, ‘এমিটি মিট ব্যাংক’, ‘উইন্টার কেয়ার’, ‘এনিমেল ওয়েলফেয়ার’, ‘কেয়ার ফর এল্ডার', ‘সেফটি ফর উইমেন’।
এসব প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ইউনিভার্সাল এমিটি ফাউন্ডেশন।