করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান শাটডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে একদল স্বেচ্ছাসেবী যুবক।
প্রতিদিন তারা পাঁচ শতাধিক মানুষের হাতে এক বেলার খাবার তুলে দিচ্ছে। শাটডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে তাদের এই কার্যক্রম।
এই কার্যক্রমের উদ্যোক্তা শহরের কোড়ালিয়া এলাকার জাকির হোসেন মিয়াজী, অপু পাটোয়ারী, মামুন হাওলাদার। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
জাকির হোসেন মিয়াজী জানান, তারা নিজেদের জমানো টাকায় চাল, ডাল, ডিম, সবজিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনেন। নিজেরাই করছেন রান্না। তারপর আশপাশের দরিদ্র মানুষকে পৌঁছে দিচ্ছেন সেই খাবার।
অনেকে আবার তাদের কাছে এসেও নিয়ে যান এক বেলার খাবার।
অপু পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু পেটের দায়েই মানুষকে বের হতে হয়। তাই আমরা চেষ্টা করছি অনাহারী মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে যাতে তারা ঘরে থাকে।’
প্রথমে তিনশ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হলেও এখন দেয়া হচ্ছে পাঁচশ মানুষকে। বিত্তবানদের সহায়তা পেলে আরও মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা যাবে বলে জানান এই যুবকরা।
এই যুবকদের সঙ্গে যোগ দেয়া স্কুলছাত্র আহসান হাবীব লিমন জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের স্কুল বন্ধ। এই অবসর সময়টা বাজে কাজে ব্যয় না করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
স্বেচ্ছাসেবী যুবকদের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার লোকজন।
কোড়ালিয়া এলাকার ফ্রুটন পাটোয়ারী জানান, এই যুবকরা যেভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। গত বছর অনেক বিত্তবান ব্যক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন অসহায় মানুষের কল্যাণে এগিয়ে এসেছিলেন। এবার তাদের তেমন দেখা যাচ্ছে না।
এই স্বেচ্ছাসেবীদের কল্যাণে অনেকের খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। তাদের মতো প্রতিটি এলাকার যুবকরা যদি এগিয়ে আসতো তাহলে মানুষকে খাবারের কষ্টে থাকতে হতো না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘যুব সমাজের স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে চাঁদপুর পৌরসভা ও আমার ব্যক্তিগত সহায়তা থাকবে তাদের জন্য।
‘পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষদেরও যার যার সাধ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’