সড়কের অবস্থা যাচ্ছেতাই। ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাই দায়। মেরামতে উদ্যোগ নেই সরকারের, ভোগান্তি কাটে না এলাকাবাসীর। এ অবস্থায় এগিয়ে এলেন স্থানীয় ৫৫ তরুণ। নিজেরাই শুরু করলেন সংস্কার কাজ।
তরুণরা সামাজিক সংগঠন ‘সঠিক পথের আলো’র সদস্য। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের ইটারঘাট গ্রামে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ করছেন তারা।
সড়কটি ব্যবহার করে ১৫টি গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে মনু নদীর ভাঙনে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় চাতলাপুর ব্রিজ থেকে নছিরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ পিচ ঢালা রাস্তাটি। বিটুমিনের প্রলেপ উঠে সৃষ্টি হয় খানাখন্দ।
স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে এলাকাবাসী বারবার ধর্ণা দিলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে গত ১১ সেপ্টেম্বর মাঠে নামে সঠিক পথের আলো। শুরু হয় মাটি, বালু দিয়ে রাস্তা মেরামতের কাজ।
শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর স্থলবন্দর থেকে শমসেরনগর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সেই সড়কের তুলে ফেলা বিটুমিনও ট্রাকে করে এনে ব্যবহার করছেন তরুণরা।
তরুণদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয়রা। তারা নিজেদের সাধ্যমত অর্থ চাঁদা হিসেবে দিয়েছেন।
সঠিক পথের আলোর সভাপতি রুবেল আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই রাস্তা দিয়ে রিক্সা, মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করা যায় না। রোগী নিয়ে কুলাউড়া বা শমসেরনগরে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি মেরামতের কথা জনপ্রতিনিধিদের বললেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। এলাকাবাসীর আর্থিক সহায়তায় রাস্তাটি মেরামত করছি। আমরা সরকারের কাছে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হেকিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে বলে আসছি। কিন্তু তারা কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর স্বার্থে আমরা এ কাজে হাত দিয়েছি।’
শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, ‘এলজিইডির সঙ্গে কথা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী শুষ্ক মৌসুমে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।’
কুলাউড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইসতিয়াক হাসান বলেন, ‘রাস্তার কাজের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সামনের শুষ্ক মৌসুমে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।’
চলতি বছরের ২০ মার্চ কয়েকজন উদীয়মান ছাত্র-তরুণ নিয়ে যাত্রা শুরু করে সঠিক পথের আলো। তারা সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সংগঠনটি। বিয়ের জন্য অর্থ সহায়তা, গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণ করে থাকে তারা।