সড়কটি সাঁথিয়া না কি বেড়ার আওতাধীন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের দুই কার্যালয় সিদ্ধান্তহীন। তাই ছয় থেকে সাতটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ নেয় না কেউ।
প্রতি বর্ষায় সড়কটি ভাঙে, বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়, এলাকাবাসী ধর্ণা দেয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি অফিসে। কিন্তু কাজ হয় না। এ বলে, এটা ওর কাজ, ও বলে, এটা আমার নয়, ওর কাজ।
যথেষ্ট হয়েছে- ভাবলেন যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মিলন, তিনি এলাকাবাসীকে বোঝালেন, সবাই মিলে দিলেন চাঁদা। কেনা হলো নির্মাণ সামগ্রী, হাত লাগালেন ছয় গ্রামের মানুষ। পাঁচ দিনের চেষ্টায় মেরামত হলো কাঁচা সড়কটি।
অনন্য সাধারণ এই কাজটি হয়েছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে। এলাকাবাসী চাঁদা তুলে পুনঃনির্মাণ করেছে দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি। শ্রমিকের খরচ বাঁচাতে কাজও করছে নিজেরা।
এতদিন এলাকাবাসীর দাবি পাত্তা না দিলেও স্থানীয় সরকার বিভাগ এখন সড়কটি পাকা করার আশ্বাসও দিয়েছে।
৯ নং ওয়ার্ডের সমাসনারী পূর্বপাড়া থেকে বাগজান পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করা হয় প্রায় ২৫ বছর আগে। সমাসনারী, বাগজান, কুশিয়ারা, তারাপুর ও পাইকরহাটিসহ প্রায় সাত/আটটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান মাধ্যম এ সড়ক।
মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, রাস্তা মেরামতের জন্য আমরা অনেকের কাছে ধর্ণা দিয়েছি। উপজেলা এলজিইডি অফিসে আমি নিজে গিয়েছি। তারা আমাকে আশ্বাস দিলেও সংস্কার করে দেননি। শেষে নিরূপায় হয়ে আমরাই চাঁদা তুলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি মেরামত করছি।
আমাদের প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভালোভাবে মেরামত করতে আরও অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল।
করমজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, রাস্তাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত। রাস্তাটি পাকাকরণসহ মেরামতের জন্য আমরা এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়কে জানিয়েছি।
এলজিইডির সাঁথিয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. শহীদুল্লাহ বলেন, রাস্তাটি সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হলেও সেটি এলজিইডির বেড়া কার্যালয়ের আওতাভুক্ত। ওই এলাকার লোকজন আমার কার্যালয়ে এলে তাঁদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছি।
তবে এলজিইডির বেড়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, রাস্তাসহ ওই এলাকাটি সাঁথিয়া কার্যালয়ের আওতাভুক্ত। বেড়ার অংশ বাগজান পর্যন্ত, যা অনেক আগেই পাকাকরণ করা হয়েছে। বেড়ার হলে তো ওইটুকু বাকি থাকত না।
প্রকৃতপক্ষেই ওই রাস্তাটি পাকা হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমি আমাদের সাঁথিয়ার প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব।