বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে ভীতি থেকে জন্ম নেয় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড

  •    
  • ২০ আগস্ট, ২০২১ ১৪:০৮

মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে মার্কিন-পাকিস্তান-সৌদি লবি প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর সফল নেতৃত্ব তাদের ভীত করে তুলেছিল। ভারত-রাশিয়া মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা স্বাধীন দেশেও আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শক্ত পায়ে দাঁড়াতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়বে। পাকিস্তানের চেষ্টা ছিল বাংলাদেশে তাদের সেবাদাস ধর্মীয় দলগুলোর মাধ্যমে নৈরাজ্য তৈরি করে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে অজনপ্রিয় করে তোলা। এই লক্ষ্যে তারা অনেক দূর অগ্রসরও হয়েছিল। আওয়ামী লীগের ভেতরে ভাগাড়ের শকুন খোঁজার চেষ্টা হলো। মোশতাকের মতো শকুন পেতেও দেরি হলো না।

মানুষের জন্য একবুক ভালোবাসা নিয়ে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুর কাছে ১৯৭১-এর ১৭ মার্চ জন্মদিনের অনুভূতি জানতে চেয়েছিলেন উপস্থিত সাংবাদিকেরা। বঙ্গবন্ধু সাবলীলভাবে বলেছিলেন-

“আমি আমার জন্ম উৎসব পালন করি না। এই দুঃখী বাংলায় আমার জন্মদিন কী আর মৃত্যু দিন কী!’

একই দিনে উত্তাল ছিল বাংলাদেশ। ইয়াহিয়া খান এসেছেন ঢাকায় আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করতে। গণহত্যার নীলনকশা এরই আগে চূড়ান্ত হয়েছে। দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু যথার্থই অনুমান করতে পেরেছেন। তাই এদিন বঙ্গবন্ধুর শুভার্থী পাকিস্তানের রাজনীতিক ওয়ালি খান বঙ্গবন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘ঢাকায় কী হতে চলেছে?’ উত্তরে একজন ভবিষ্যদ্বক্তার মতো করে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘কী আর হবে! প্রেসিডেন্ট এসেছেন, এরপর ভুট্টো আসবেন। আলোচনা ভেঙে যাবে, আমাদের ওপর আক্রমণ হবে, আমরা প্রতিহত করব, যুদ্ধ চলবে, সর্বশেষ আমরাই জয়ী হবো।’

এমন একজন রাজনীতিক হঠাৎ আবির্ভূত হননি। তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন নিজেকে। শৈশব থেকে যার সংগ্রামী আর বিপ্লবী জীবনের শুরু। বাঙালির মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। শাসকগোষ্ঠীর কোপানলে পরেছেন। জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন বহুবার। কিন্তু পিছু হটেননি। নেতৃত্বের অসাধারণ গুণে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। শৈশবের কথা যদি ছেড়েও দেই তবু বলতে হবে ভারত বিভাগের আগে তরুণ মুজিব পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নিজের সংগ্রামী জীবনের যাত্রা শুরু করেছিলেন। আর কখনও মাঠ ছাড়েননি।

বাঙালির অধিকার আদায়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত তার সংগ্রামী জীবনে কখনও বিরতি আসেনি। একটি নতুন জাতি- নতুন দেশের জন্ম দিয়ে বাঙালির হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর মতো একজন নেতার দৃঢ়তার সঙ্গে পথচলা বাংলাদেশবিরোধী দেশি-বিদেশি অনেক কুচক্রি মহলের মনে ভীতি ছড়িয়ে ছিল। এখান থেকেই শাখা ছড়িয়েছিল ষড়যন্ত্রের থাবা।

বাংলার মানুষের মহাশোকের ১৫ আগস্ট কেন অমন মর্মান্তিক অঘটন নিয়ে এসেছিল তার উৎস এবং পরিপ্রেক্ষিত খুঁজতে গেলে ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরাতে হবে।

সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পর পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে চলে যায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা। বাঙালির তাতে কোনো খেদ ছিল না। কারণ পাকিস্তান আন্দোলনে বাঙালি নেতারা আন্তরিকতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টিই ছিল প্রধান লক্ষ্য। কে উর্দুভাষী আর কে বঙ্গভাষী সে হিসেব তারা করেনি। আলাদা করে দেখেনি দুই অঞ্চলের পাকিস্তানিদের। পশ্চিম না পূর্বাঞ্চলের মানুষ পদাধিকারী হয়েছে সে হিসেবটিও জরুরি ছিল না। তারপর জন্ম নিল দুই অদৃশ্য সুতোয় জোড়া লাগানো অদ্ভুত পাকিস্তান।

পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ এবং অধিকার আদায়ের আন্দোলন গড়ে উঠতে থাকে তার সূচনা থেকেই যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ক্রমে তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের কাছে পূর্ব পাকিস্তান ছিল সোনার ডিম পাড়া হাঁস। অধিকার আদায়ের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধুকে ৬ দফা নিয়ে উপস্থিত হতে হয়। ৬ দফা ছিল প্রকৃতপক্ষে স্বায়ত্তশাসনেরই দাবি। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিকে শাসকগোষ্ঠী যে পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছিল তখন স্বায়ত্তশাসন দেয়াটাই ছিল পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার শেষ বিকল্প। কিন্তু এ অঞ্চলের স্বর্ণডিম্ব গ্রাস করার লোভে তারা ৬ দফা আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে বইয়ে দেয়ার চেষ্টা করল।

অদম্য বঙ্গবন্ধুকে দুর্বল করে দেয়ার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ রুজু করল। বিশাল জনপ্রিয়তায় আপ্লুত বঙ্গবন্ধুকে আটকে রাখা গেল না কারাগারে। গণ-আন্দোলনের মুখে পরাভব মানল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ফিরলেন। বঙ্গবন্ধুর তখন অভ্রভেদী জনপ্রিয়তা। শাসকগোষ্ঠীর একান্ত পায়বন্দ যারা তারা ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের সব শ্রেণির মানুষ ততক্ষণে মানসিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছে। এই সময় মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় এগিয়ে চলছে আন্দোলনের পথে। সামাল দিতে পারছেন না পাকিস্তানের লৌহমানব বলে কথিত আইয়ুব খান। উদ্বেল আন্দোলনের পথ ধরে উনসত্তরে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়ে গেল। অভ্যুত্থানের জোয়ারে ভেসে গেলেন লৌহমানব।

সেই উত্তাল সময়ে সেনাশাসক ইয়াহিয়া খানের পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব ছিল না। এ সময় তার মগজের শূন্যতা পূরণ করতে পাশে দাঁড়ালেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। কূটচালে দক্ষ ভুট্টোর চোখে তখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক নেতারা বরাবরই নিজেদের মেধা ও সাংস্কৃতিক অযোগ্যতার কারণে বাঙালির দেশপ্রেম এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরতাকে বুঝতে চায়নি। তাই অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে বার বার হোঁচট খেয়েছে। তেমন একটি ভুল ভুট্টোও করলেন। বাঙালির আন্দোলন প্রশমিত করার জন্য ইয়াহিয়া খানকে দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন। হয়ত বিবেচনা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের আসন কিছুটা ভাগাভাগি হবে। আর পশ্চিম পাকিস্তানে একচেটিয়া আসন পাবে পিপিপি। তা হলে আর পায় কে! একঢিলে দুই পাখি মারা পড়বে। তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন আর প্রশমিত হবে বাঙালির আন্দোলন।

কিন্তু ফল হলো উল্টো। সেনা মেধা দিয়ে রাজনীতি বোঝা না হয় কঠিন ছিল। কিন্তু ভুট্টোর রাজনৈতিক মেধাও হোঁচট খেল। বঙ্গবন্ধু এবং তার আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা যে কত গভীরে পৌঁছে গেছে তার তল পেলেন না ভুট্টো। নির্বাচনে অসাধারণ নিরঙ্কুশ বিজয় পেল আওয়ামী লীগ। আর তারপরেই শাসকগোষ্ঠী আর ভুট্টোদের ভাঁওতাবাজি স্পষ্ট হয়ে গেল। আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারেই টালবাহানা চলতে থাকে।

এই সময় থেকেই বাইপোলার রাজনীতি গোপনে সক্রিয় হতে থাকে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের উগ্র ইসলামি দেশগুলো পূর্ব পাকিস্তানকে ভারত ও সোভিয়েত প্রভাবমুক্ত রাখতে চেয়েছে। আর নিজ প্রভাব বলয় তৈরি করতে চেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সুতরাং ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। বঙ্গবন্ধু আর তার সহযোগীরা দূরদর্শিতা দিয়ে বিষয়টি বুঝতে পারেন।

বাংলার স্বাধীনসত্তা নিয়ে আত্মপ্রকাশের ক্ষণ তখন সমাগত। এ সময় কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তে না গিয়ে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে অগ্রসর হলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি জানতেন তার একটি নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়বে বাঙালি। কিন্তু প্রবল প্রতিপক্ষের হাতে কোনো সুবিধার অস্ত্র তুলে দেয়া যাবে না। তাই রাষ্ট্রদ্রোহ বা বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করার জন্য যে ফাঁদ পেতেছিল শাসকগোষ্ঠী তা সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চের ভাষণ এর উজ্জ্বল দলিল। বিপ্লবী বাঙালি প্রয়োজনীয় বার্তা পেয়ে গেল এই ভাষণের মধ্য দিয়ে।

এর পরের অধ্যায় আর বিশ্লেষণের অবকাশ নেই। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা। সবাই জানেন মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালির বিরুদ্ধে কতটা সক্রিয় ছিল মার্কিন ও সৌদি লবি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। কিছু সংখ্যক পাকিস্তানের তাঁবেদার দালাল ছাড়া দলমতনির্বিশেষে সব বাঙালি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলেও বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা গোটা নয় মাসই উজ্জীবিত রেখেছে বাংলার মুক্তিপাগল মানুষকে। তাই মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে মার্কিন-পাকিস্তান-সৌদি লবি প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর সফল নেতৃত্ব তাদের ভীত করে তুলেছিল। ভারত-রাশিয়া মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে।

বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা স্বাধীন দেশেও আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শক্ত পায়ে দাঁড়াতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়বে। পাকিস্তানের চেষ্টা ছিল বাংলাদেশে তাদের সেবাদাস ধর্মীয় দলগুলোর মাধ্যমে নৈরাজ্য তৈরি করে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে অজনপ্রিয় করে তোলা। এই লক্ষ্যে তারা অনেক দূর অগ্রসরও হয়েছিল। আওয়ামী লীগের ভেতরে ভাগাড়ের শকুন খোঁজার চেষ্টা হলো। মোশতাকের মতো শকুন পেতেও দেরি হলো না। উপমহাদেশের পারিবারিক রাজনীতির ঐতিহ্য ষড়যন্ত্রকারীদের সতর্ক করে তুলেছিল। এরা বুঝেছিল প্রো-মার্কিনি আর প্রো-পাকিস্তানি প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে হলে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে সমূলে বিনাশ করতে হবে। কারণ বাংলার মানুষের হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা মুছে ফেলা কঠিন। এভাবেই ১৫ আগস্টের কালরাত্রের নীলনকশা তৈরি হলো। সেনাবাহিনীর ভেতর পাকিস্তানপন্থি শকুন পেতে দেরি হলো না। এক চরম বীভৎসতায় এরা সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করল।

পরবর্তী রাজনীতিতে পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি স্পষ্ট হতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান বিএনপি দল গঠন ও সরকার গঠনের পর পাকিস্তানপ্রীতি স্পষ্ট হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত হত্যাকারীদের এই সরকার বিচারের মুখোমুখি দাঁড় না করিয়ে পুরস্কৃত করে। পাকিস্তানিদের ইচ্ছেপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে গোপন বিচারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।

রাজাকার-আলবদরের চিহ্নিত নেতারা স্বাধীন দেশে বিএনপির মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিল। বঙ্গবন্ধুর এই হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য চরম ক্ষতি সন্দেহ নেই। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা জিতে গেছে এমনটি ভাববারও কোনো কারণ নেই। স্থূলবুদ্ধির পাকিস্তানি নেতরা ১৯৪৭ সালেই যেমন বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিবেচনায় না এনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়ে হোঁচট খেয়েছিল, নির্বিচার গণহত্যা চালিয়ে বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্বাপিত করতে গিয়ে বাংলা ছাড়তে হয়েছিল তেমনি ১৫ আগস্ট সৃষ্টি করে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন করা যায়নি বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে। আর বঙ্গবন্ধুর রক্তকণা থেকে বাঙালির হৃদয়ে লক্ষ মুজিব জীবন্ত হয়েছে।

তাই ইতিহাসের স্বতঃস্ফূর্ত ধারাবাহিকতা বোঝার ক্ষমতা থাকলে পাকিস্তানপ্রেমী স্বপ্নবিলাসীদের বোঝা উচিত বাংলাদেশের মাটি পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো নীরস কঙ্করময় নয়, সরস মানবিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করেছে হাজার বছর ধরে। এখানে বাঙালি তার নিজস্ব সত্তা নিয়েই বেঁচে থাকবে। যে ভীতি থেকে ষড়যন্ত্রকারীরা ১৫ আগস্টের অন্ধকার জন্ম দিয়েছিল সে ভীতি মুক্ত হওয়ার তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

লেখক: অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিভাগের আরো খবর