সব দেশেই কিছু মানুষ ছিলেন এবং আছেন যারা নীরবে নিভৃতে থেকে কাজ করতে পছন্দ করেন। তাদের কাজের কথা অনেকে জানতে পারেন, আবার অনেকে জানার সুযোগও পায় না। তবে যারা ব্যক্তির ভূমিকাকে মূল্যায়ন করতে পছন্দ করেন তারা জনস্বার্থে এসব মানুষের ভূমিকা ও অবদানকে মানুষের সম্মুখে নিয়ে আসা গুরত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তাহলেই সমাজে প্রকৃত জনদরদি, সমাজসেবী, রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জীবন থেকে নতুন প্রজন্মের তরুণরা অনেক কিছু জানা, বোঝার ও শেখার সুযোগ পায়। নীরবে নিভৃতে যারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কাজে সহযোগিতা করেছেন তারা আদর্শ মানুষ। তাদের ভূমিকা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য যারা নীরব ও নিভৃতচারী মানুষের জীবন ও ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত থাকেন তাদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব মানুষের জীবন ও ভূমিকাকে মানুষের অগোচরে না রেখে সম্মুখে তুলে আনা।
আমাদের সমাজে এরকম অনেকেই ছিলেন এবং এখনও হয়তো আছেন, যারা নীরবে নিভৃতে থেকে সমাজ, মানুষ, রাষ্ট্র এবং প্রাণিজগতের অনেক কিছু রক্ষা করার জন্য কাজ করে গেছেন বা যাচ্ছেন। যাদের কথা খুব কম মানুষই জানার সুযোগ পায়। আগে লেখালেখির বিষয়টি তুলনামূলক কম ছিল। সেকারণে তেমন মানুষজনের ভূমিকা সম্পর্কে কেউ কিছু লিখে না যাওয়ায় কারণে আমরাও সেইসব মানুষদের গুরত্বপূর্ণ অবদান সম্পর্কে তেমন বেশি কিছু জানতে পারিনি। তবে কিছু মানুষের ভূমিকা লোকমুখে যুগ যুগ ধরে প্রচারিত হয়েছে, অনুসন্ধানীরা এ যুগে এসে তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তবেই কেবল আমাদের জন্য কিছু বই-পুস্তক কিংবা রচনা উপহার দিচ্ছেন যা এই যুগের আগ্রহীদের প্রেরণা জোগাতে সাহায্য করছে।
বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব জীবদ্দশায় খুব বেশি আলোচনায় আসেননি। কারণ তিনি ছিলেন প্রচারবিমুখ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী হিসেবে তাকে সবসময় বাইরে খুব বেশি দেখা যেত না। এমনকি বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানের দায়িত্বগ্রহণ করেন তারপরও তিনি সচরাচর জনসমক্ষে খুব বেশি আসতেন না। তার মানে এই নয় তিনি মানুষ, সমাজ ও পরিবেশকে উপেক্ষা করতেন, পছন্দ করতেন না বা ব্যক্তিজীবনে তিনি খুব রক্ষণশীল ছিলেন– এমনটি ভাবার মোটেও কোনো কারণ নেই।
তিনি স্বভাবগতভাবেই একজন নীরবে নিভৃতে থাকা সমাজসচেতন, দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে নিজের ভূমিকা যখন যেভাবে যেখানে রাখা প্রয়োজন ছিল তিনি তাই করেছিলেন। তিনি সহধর্মিণী হিসেবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রজীবন থেকে বেড়ে ওঠা ও গড়ে ওঠার পেছনে যখন যা তার পক্ষে করা প্রয়োজন ছিল, তিনি তাই করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা রেণুর নাম কয়েকবার কৃতজ্ঞতার সঙ্গে লিখেছেন। স্বামী সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ হওয়ায় সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে যেভাবে স্বামীর জীবন ও রাজনীতিকে অনেকটাই ভারমুক্ত ও হালকা করার চেষ্টা করেছিলেন সেটি ছিল অনন্য। জাতীয় জীবনে যখনই দুর্যোগ নেমে এসেছিল, বঙ্গবন্ধুর কাজে সহায়তা করার ক্ষেত্রে স্ত্রী হিসেবে ফজিলাতুন নেছা মুজিব তার পাশে ছায়ার মতো অবস্থান নিয়েছিলেন। কারগারের অন্তরালে থাকা স্বামীকে প্রেরণা জুগিয়েছেন, সংসারের হাল ঠিকমতো ধরে রেখেছিলেন, আবার অর্থের সংকটকালে সেটিও সংগ্রহ করেছিলেন।
এছাড়া রাজনীতির খবরাখবর স্বামীকে দেয়া আবার স্বামীর কাছ থেকে নেয়া খবর যথাস্থানে পৌঁছে দেয়ার কাজটুকুও তিনি করেছিলেন অত্যন্ত রাজনীতিসচেতন একজন মানুষ হিসেবে। পাকিস্তানের গোয়েন্দারা তাকে একজন সাধারণ গৃহিণীর বেশি যেন ভাবতে না পারে, তিনি সে ধরনের ভূমিকাতেই নিজেকে প্রদর্শন করতেন। ফলে গোয়েন্দারা বুঝতেই পারেনি তিনি বঙ্গবন্ধুকে কীভাবে সাহায্য করেছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর প্রেরিত বার্তা তিনি কীভাবে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। যদি গোয়েন্দারা বুঝতে পারত যে শেখ মুজিবের স্ত্রী তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন কিছু কাজ করিয়ে নিচ্ছেন যা পূর্ব বাংলার রাজনীতির জন্য বিরাট বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে তাহলে বেগম মুজিবকে তারা মোটেও তা করতে দিত না।
বেগম মুজিব নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায় স্বামী কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতা মুজিবকে জেলে বসে আত্মজীবনী ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তার ভাবনাচিন্তা লেখার জন্য স্বামীকে অনুরোধ করলেন, নিয়মিত কাগজ সরবরাহ করলেন। স্বামী স্ত্রীর পরামর্শটিকে খুবই গুরত্বের সঙ্গে নিলেন। লিখলেন তিন তিনটি পাণ্ডুলিপি যার সম্পর্কে সেই সময় কিংবা স্বাধীনতার পরও অনেক বছর পরও কেউ কিছু জানতে পারেনি। কিন্তু বেগম মুজিব স্বামীর লেখা পাণ্ডুলিপিগুলো সযত্নে গোপন স্থানে রেখে গিয়েছিলেন যা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সকল মহাদুর্যোগের পরও হারিয়ে যায়নি, অক্ষত অবস্থায় কন্যা শেখ হাসিনা উদ্ধার করতে পেরেছিলেন। এই পাণ্ডুলিপি তিনটি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস রচনায় অত্যন্ত মূল্যবান দলিল হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। এই কাজটি করিয়ে নিয়েছেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। এর জন্যই তো তিনি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে অমর হয়ে থাকার কথা।
বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনীতি, সংসার, পরিবার, ভালোবাসাসহ অনেক কিছুকেই প্রভাবিত ও দখল করে রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিজে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বেগম মুজিবের পরামর্শ ভূমিকা, অবদান ইত্যাদিকে উপেক্ষা করতে চাননি। তাদের দুজনের জীবনের রসায়নটি ঘটেছিল পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে। বঙ্গবন্ধু তার স্ত্রী রেণুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে চাননি। এমনকি রাষ্ট্রপতি বা সরকারপ্রধান হয়েও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদার ভবনে থাকার সুযোগ পেয়েও স্ত্রীর ধানমন্ডির বাসা ছেড়ে না যাওয়ার কথায় গণভবন ও বঙ্গভবনে বসবাসের সরকারি অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। স্ত্রীকে তিনি কতখানি মূল্যায়ন করতেন তা এর মধ্য দিয়েই বুঝতে পারা যায়।
যদিও রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষা করার সুযোগটি নিয়েছিল ১৫ আগস্টের ঘাতক শক্তি। অনেকে হয়তো মনে করে থাকতে পারেন ৩২ নম্বরে থাকার কারণেই ১৫ আগস্টের ঘাতকরা এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড অনায়াসে ঘটাতে পেরেছিল। বঙ্গভবন বা গণভবনে থাকলে এমনটি হয়তো না-ও ঘটতে পারত। কিন্তু এটি কেবলই আমাদের ব্যক্তিগত ধারণা। ঘাতকচক্র বঙ্গভবন বা গণভবনে ঢুকে ১৫ আগস্টে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করতে চাইলে তাদের পরিকল্পনা কিছুটা ভিন্ন হতো মাত্র। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রপতি বা সরকারপ্রধানকে হত্যার ষড়যন্ত্রের ঘটনাবলি স্থান কিংবা ভবননির্ভর ছিল না। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডও ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের বড় ধরনের হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা যা তারা হয়ত যেকোনো জায়গাতেই সংগঠিত করার চেষ্টা করত। কিন্তু ওইসময়ে আমাদের দুর্বলতার প্রধান বিষয়টি ছিল, এমন একটি ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আগে থেকে জানা সত্ত্বেও সেটি প্রতিরোধ কিংবা প্রতিহত করার রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ছিল না। সেকারণেই অভ্যুত্থানকারীরা সফল হতে পেরেছিল, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ইতিহাসের নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য বহন করে আমাদেরকে চিরকাল লজ্জা দিয়ে যাচ্ছে।
বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকট আত্মীয় সদস্য ছিলেন। টুঙ্গিপাড়ার শেখ পরিবারের অন্যতম একজন ছিলেন শেখ জহুরুল হক, তার স্ত্রী ছিলেন হোসনে আরা বেগম। তাদের তৃতীয় সন্তান ফজিলাতুন নেছা রেণুর জন্ম হয় ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট। তার ৩ বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক এবং ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগম মৃত্যুবরণ করেন। তখন ফজিলাতুন নেছা রেণুর দায়িত্ব নেন দাদা শেখ কাশেম। পারিবারিকভাবে শেখ মুজিবের সঙ্গে চাচাতো বোন রেণুর ১৯৩৮ সালে বিয়ে হয়। তবে মুজিব তখন ছাত্র থাকায় প্রথমে গোপালগঞ্জ, পরে কলকাতায় পড়তে চলে যান। রেণু প্রথমে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল এবং পরে গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে পড়াশোনা করেন। কলকাতায় স্বামী মুজিব পড়াশোনা ও রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ৪৭-এর দেশভাগের সময় তিনি প্রথমে গোপালগঞ্জ পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনের নতুন অধ্যায় সূচিত হয়।
তিনি তরুণ, ছাত্র, যুবক এবং জাতীয় রাজনীতির সব সূচিত আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। তার পরিবার তখনও গোপালগঞ্জেই অবস্থান করছিল। ততদিন তাদের সংসারে শেখ হাসিনা ও শেখ কামাল এবং জামাল জন্মগ্রহণ করেন। শেখ মুজিব এই সময় কারাগারে কয়েক বছর কাটিয়েও দিয়েছিলেন। অবশেষে ১৯৫৪ সালে গোপালগঞ্জ থেকে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ঢাকার গেন্ডারিয়ায় এক ভাড়া বাসায় ওঠেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রাদেশিক মন্ত্রী হওয়ার পর মিন্টো রোডের মন্ত্রী পাড়ার বাসায় স্থানান্তরিত হলেও বেশিদিন এই বাসায় তারা থাকতে পারেননি। এরপর তাকে আবার পুরান ঢাকায় ভাড়া বাসায় উঠতে হয়েছিল। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া সেখানেই তিনি দেখভাল করতেন। পরিবারের আয় উপার্জনের বিষয়গুলোও তাকেই দেখতে হতো, পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং ফজিলাতুন নেছা মুজিবের পারিবারিক আয় থেকেই ঢাকার পরিবারের ব্যয়ভার অনেকটা নির্বাহ করতে হতো। ৫০ এবং ৬০-এর দশকের রাজনীতির দুর্যোগটি তিনি হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছিলেন।
১৯৬১ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে স্থির হন। ৩২ নম্বর হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার রাজনীতির সূতিকাগার হিসেবে। এতে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অংশগ্রহণও ছিল নীরবে নিভৃতে। ৬ দফার আন্দোলন সূচিত হলে কারাগারে বন্দি নেতা শেখ মুজিবের নির্দেশাবলি বেগম মুজিবই নেতাকর্মীদের জানিয়ে দিতেন, যোগাযোগ রাখতেন। প্রয়োজনে অর্থ সাহায্য করেও দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করতেন।
স্বামীর মামলার খরচ জোগানো, সংসার চালানো এবং ছাত্রনেতাদের কাউকে প্রয়োজনে দলের কাজে অর্থ জোগান দিতেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ঝুঁকি তিনি অনেকটাই সামাল দিয়েছিলেন। ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান শুরু হলে সরকার চেয়েছিল মুজিবকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানকে স্তব্ধ করতে। বেগম মুজিব সেই সময় প্যারোলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। মুজিবও সেই অবস্থানে দৃঢ় ছিলেন। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবের মুক্তির পর তিনি ২৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির বিজয়ের একটি নতুন মাইলফলক সূচিত হয়।
পাকিস্তানের ৭০ সালের নির্বাচন, নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি ইত্যাদিতে বঙ্গবন্ধু বিশেষভাবে ব্যস্ত ছিলেন। বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব শুধু পরিবারকেই নয়, তখন ৩২ নম্বরে আসা সব নেতা কর্মীদের সঙ্গেও প্রয়োজনে দেখা-সাক্ষাৎ ও করণীয় বিষয়গুলো দেখভাল করতেন। ২৫ মার্চ পরবর্তী সময়ে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ধানমন্ডির একটি বাসায় সন্তানদের সঙ্গে বন্দি ছিলেন। সেখান থেকে অবশ্য শেখ কামাল ও শেখ জামাল পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যান। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভের পর ১৭ তারিখ ৩২ নম্বরে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধু ফিরে আসার পর বেগম মুজিব অনেক বীরাঙ্গনা নারীর সহায়তায় পাশে দাঁড়ান। তিনি তাদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। এছাড়া বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, বাসায় বৈঠক করতেন, প্রয়োজনে সহযোগিতাও প্রদান করতেন। তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করেছেন এমন কোনো কথা কোনোদিন কানাঘুষাতেও শোনা যায়নি।
নিভৃতচারিণী এই মহীয়সী নারী ৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের বুলেটে প্রাণ হারান। তার এই আত্মবিসর্জন ইতিহাসে এখন স্মরণীয় পাঠ হয়ে উঠছে।
লেখক: গবেষক-অধ্যাপক।