বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বপ্ন এখন জয়ের হাতে বদলে যাবে দেশ

  • রাজন ভট্টাচার্য   
  • ২৭ জুলাই, ২০২১ ১৬:৫৫

একদিন বাংলাদেশ থেকে প্রযুক্তি খাতের জন্য জনবল চাইবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এ দেশ হয়ে ওঠবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। এজন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শিক্ষার প্রসার দেশে দ্রুত ঘটানো জরুরি। তবেই সামনের দিনগুলোতে আগামী প্রজন্ম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় নেতৃত্ব দিতে পারবে। পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভরতায় উৎপাদনে যেতে পারবে বাংলাদেশ। এতে কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বাড়বে।

ব্যক্তিগত যোগ্যতার পাশাপাশি রাজনৈতিক দর্শন থাকলে যেকোনো ব্যক্তি দেশ ও সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্যক্তির ইচ্ছা শক্তিই অনুপ্রেরণার বড় উৎস হতে পারে। যেমন পেরেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সময়ের কারণে এখন গোটা বিশ্বই তথ্যপ্রযুক্তির দিকে বিদ্যুৎ গতিতে ছুটছে। যে দেশ যত বেশি প্রযুক্তিসমৃদ্ধ, সে দেশ তত বেশি উন্নত।

এমন চিন্তা থেকেই বর্তমান বাংলাদেশ জয়ের হাত ধরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লবের পথে। এ খাতে দেশ বিশ্বের বুকে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, এখন তা অনেকেই বিশ্বাস করেন। এর বড় কারণ হলো জয়ের নিজস্ব যোগ্যতা ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম, সদিচ্ছা সবই আছে। তিনি বিশ্বাস করেন, সক্ষমতা ও সদিচ্ছা থাকলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরিবর্তনের পথে ছুটে চলা সম্ভব। সেটা তিনি ইতোমধ্যে প্রমাণও করেছেন।

দেশকে তথ্যপ্রযুক্তির ধারায় এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালে দলটির নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। নতুন এই স্লোগানের সঙ্গে সুর মেলায় গোটা জাতি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম। কৃষি-অর্থনীতিনির্ভর দেশকে তথ্যপ্রযুক্তির ধারায় এগিয়ে নেয়ার পেছনের কারিগর হলেন সজিব ওয়াজেদ জয়। যিনি নিজেই একজন প্রযুক্তি খাতের দক্ষ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই সন্তানের ওপর ভরসা করেই গোটা জাতিকে এই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আজ ‘ভিশন ২০২১’ কার্যত সফল।

ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল কিন্তু সত্যিকার অর্থেই দেশবাসী উপভোগ করছে। করোনা পরিস্থিতি তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশকে আরও গতিশীল করেছে। এক কথায় বললে, ১৬ কোটি মানুষ আজ কোনো না কোনোভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সুবিধাভোগী। প্রযুক্তির বদৌলতে গোটা বিশ্ব আজ একেবারেই হাতের মুঠোয়।

সময়ের কারণে বাংলাদেশ এখন প্রযুক্তি খাতের প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে, একথা বিশ্ব নেতৃত্বের না জানার কিছু নেই। এ দেশে এখন একজন অশিক্ষিত মানুষও মোবাইল চালাতে জানেন। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। টেলিমেডিসিন সেবা নেন। মোবাইলে সেবা খাতের বিল জমা, উপবৃত্তি, বয়স্ক ভাতাসহ সামাজিক নানা সহায়তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধা ভোগ করেন। ওয়েবিনারে চলে সভা, সেমিনার। সব সেক্টরেই প্রযুক্তির ছোঁয়া।

আজ সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিনে তিনি রাজনৈতিকভাবে যতটা না পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিতি তিনি একজন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্ভাবনী মানুষ। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কিন্তু একজন প্রযুক্তিবিদ হিসেবেই বেশি। এ খাতের মানুষ হিসেবে তিনি নিজেকে যেভাবে গড়ে তুলেছেন তা গোটা দুনিয়ার কাছেই আজ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তাই আগামী পৃথিবীর কথাই চিন্তা করেই হয়ত তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশ ও উন্নয়নের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে একেবারেই বদলে দেবার স্বপ্ন দেখেন। এজন্য তার সবচেয়ে বড় সুযোগ হলো রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের হয়ে তিনি এ কাজটি সহজেই করতে পেরেছেন। মায়ের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি এ কাজটি আগামীতেও করে যেতে পারবেন। যার সঙ্গে রয়েছে নতুন প্রজন্মের সমর্থন, আকাঙ্ক্ষা ও ভালোবাসা।

যিনি নির্লোভ ও নিরলসভাবে কাজ করে প্রজন্মকে আলোর দিকে নিয়ে যেতে পারেন তিনি হলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়।

তার আলো দেখানো পথে প্রজন্মের একটি বড় অংশ যদি অনুসরণ করে তবে তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে নিজেদের একেবারেই ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। এতে গোটা বিশ্বে বাড়বে বাংলাদেশের সম্মান। সেইসঙ্গে এখন আমাদের দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যারা শ্রমিক হিসেবে যাচ্ছেন, তাদের একটা বিরাট বড় অংশই নানা কাজে যুক্ত। কিন্তু সঠিক ধারায় যদি দেশ এগিয়ে যায়- তবে আগামী দিনে প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি সম্ভব হবে। ফলে, একদিন বাংলাদেশ থেকে প্রযুক্তি খাতের জন্য জনবল চাইবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এ দেশ হয়ে ওঠবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার।

এজন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শিক্ষার প্রসার দেশে দ্রুত ঘটানো জরুরি। তবেই সামনের দিনগুলোতে আগামী প্রজন্ম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় নেতৃত্ব দিতে পারবে। পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভরতায় উৎপাদনে যেতে পারবে বাংলাদেশ। এতে কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বাড়বে।

অনেকে মনে করেন, জয় ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে ২০০৯ সালে দেখতে পেয়েছিলেন বলেই আজ দেশে ১০ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করার সুযোগ হবে।

বাস্তবতা বলছে, সজিব ওয়াজেদের সামনে অনেক সময় আছে। তাই তিনি রাজনীতির চেয়ে এখনও বেশি ভাবেন দেশের তরুণ প্রজন্ম ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে। চলতি বছরের ১৫ জুলাই তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ। এই তরুণ জনগোষ্ঠীই আমাদের সম্পদ। তরুণদের প্রশিক্ষিত করে আমরা যদি তথ্য-প্রযুক্তি খাতে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমরা খুব দ্রুতই তথ্য-প্রযুক্তির বিশ্ববাজারের একটি উল্লেযোগ্য অংশ অর্জন করতে পারব। বাংলাদেশ সরকার আইসিটি খাতে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে খুব দ্রুতই দেশে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে’।

দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে আরও লিখেছেন, ‘আমরা দেশে হাই-টেক পার্ক করেছি। ডিজিটাল প্লাটফরম ও ইন্টারনেট অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা নানা ধরনের সেবাপ্রাপ্তির সুযোগ তৈরি করেছি। নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে আমরা স্বল্প মূল্যে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট-সেবাপ্রাপ্তির ব্যবস্থা করেছি। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের অগ্রযাত্রা বজায় থাকবে’।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনারা আপনাদের নিজস্ব উদ্ভাবন এবং ভিশন ঠিক করুন, নিজস্ব ধারণা অনুসন্ধান করুন, নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করুন, কাউকে নকল বা অনুকরণ করবেন না, উদ্ভাবন করুন। এতদিন দেশের সব উন্নয়ন ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক। আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য ছিল- আইটি ইন্ডাস্ট্রি ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। সেই লক্ষ্য থেকে ২০টি ডিজিটাল হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে সারা দেশে। সরকার সারা দেশে ফাইবার অপটিক ক্যাবল ছড়িয়ে দিচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে এই ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সংযোগ বিস্তৃত করা হয়। এখন স্থানীয় সরকারের ক্ষুদ্রতম ইউনিট ইউনিয়ন পর্যায়েও তা ছড়িয়ে যাচ্ছে’।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বাংলাদেশ বিনির্মাণে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক বৃত্তের মধ্যেই তিনি আগামীর প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ উপহার দিতে পারেন। যতদিন শেখ হাসিনা দলপ্রধান বা ক্ষমতায় আছেন, অন্তত ততদিন জয়কে মায়ের পাশে থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যেতে হবে। এটাই সময়ের প্রত্যাশা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে বিশ্বের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে এক বদলে যাওয়া দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।

লেখক: সাংবাদিক

এ বিভাগের আরো খবর