বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডিজিটাল বাংলার আলোর দিশারি

  • কামরুল হাসান খান   
  • ২৭ জুলাই, ২০২১ ১৪:৪৭

দেশ গঠনে তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে জয়ের ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দুটি প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এছাড়া জয় তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফরম ‘ইয়াং বাংলার’ সূচনা করেন।

শুভ জন্মদিন,সজিব ওয়াজেদ জয়। সুবর্ণ জন্মবার্ষিকীতে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এমন এক সময়ে সজিব ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মবার্ষিকী, যখন দেশের মানুষ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে। এ এক কাকতালীয় শুভলগ্ন বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুবর্ণ জন্মবার্ষিকী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং খ্যাতনামা পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াতনয় সজীব ওয়াজেদ জয় ১৯৭১-এর ২৭ জুলাই মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জন্মগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘জয়’ নাম রাখেন তার নানা শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭৫ সালে তার নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদতবরণ করার পরে, জয় মা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানি এবং লন্ডন হয়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। ফলে তার শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে ভারতে। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ হতে স্নাতক করার পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেন। পরবর্তী সময়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০৪ সালে দলের ক্রান্তিলগ্নে মা, মাটি ও মানুষের টানে তিনি বাংলাদেশে এসে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণে মা শেখ হাসিনাকে তথ্যভিত্তিক পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমেই মূলত দেশের আর্থসামাজিক চিত্র বদলে দেয়ার লক্ষ্যে তার পথচলার শুরু। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে যখন অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করছিল, তখন তিনি গণতন্ত্রের অনিশ্চিত গন্তব্যের বিষয়টি বিশ্ববাসীর নজরে এনেছিলেন। একইসঙ্গে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্বজনমত তৈরি করেছিলেন।

২০০৮ সালের জুনে শেখ হাসিনাকে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারাগার থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে স্লোগানটি যুক্ত হয় তার নেপথ্যে ছিলেন জয়। পরবর্তী সময়ে পর্দার অন্তরালে থেকে গোটা দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনা আর তার সফল রূপকার হলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

আওয়ামী লীগের চলমান ২য় মেয়াদের সরকারে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর অবৈতনিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি পুনরায় একাদশ জাতীয় সংসদ ২০১৯ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর অবৈতনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন।

দেশ গঠনে তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে জয়ের ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দুটি প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এছাড়া জয় তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফরম ‘ইয়াং বাংলার’ সূচনা করেন।

লেখাপড়া করা অবস্থায় রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত থাকলেও জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ সালে। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেয়া হয় তাকে, যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন তিনি।

ইতোমধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কারণেই বিশ্বব্যাপী করোনার ভয়াল থাবার মধ্যেও বাংলাদেশে সরকার পরিচালনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, পারিবিক-সামাজিক জীবন, কেনাকাটা, টেলিমেডিসিন, বিনোদনসহ অনেক কিছুই চলমান আছে।

জয় ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে ২০০৯ সালে দেখতে পেয়েছিলেন বলেই আজ দেশে ১০ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। শিক্ষাখাতে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ বেড়েছে। বিশেষত করোনা মহামারিতে সকল প্রতিষ্ঠান এখন প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।

পাঠ্যসূচিতে যেমন শিশুরা আইসিটি অধ্যয়ন করছে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার। এমনকি দেশের বিপিও খাতে বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি রফতানি করা হচ্ছে; ৫০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

সাড়ে ছয় লাখ মানুষ এই মুহূর্তে আইসিটি সেক্টরে চাকরি করছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষের কাজ করার সুযোগ হবে এই খাতে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী। গত একযুগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে গেছে তেমনি তার পুত্রের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে এদেশ প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে।

১২ ডিসেম্বর, ২০০৮ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিল ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে। একটি উন্নত দেশ, সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, একটি ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উৎপাদন ব্যবস্থা, নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি সব মিলিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যে সমৃদ্ধ ও উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সারথি বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেকে আধুনিক বিশ্বের এক তরুণ উদ্ভাবনী নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বিগত প্রায় একযুগে বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ ঘটেছে। প্রযুক্তিভিত্তিক তথ্য ও সেবা পৌঁছে গেছে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়।

গুরুতর অসুস্থ রোগী পরিবহনে মোবাইল থেকে ১৬২৬৩ নম্বরে একটি কল দিলেই অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ চব্বিশ ঘণ্টা যাতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পায় সে লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার জন্য ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ নামে কল সেন্টার চালু করা হয়েছে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার ২০১১ সালে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা বাস্তবায়ন করেছিল আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ব্যাংক ব্যবস্থা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দেড় দশকে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহককে ব্যাংকিং-সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, একই সঙ্গে বেড়েছে কর্মদক্ষতা ও মুনাফা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাংক খাতের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া এক মুহূর্তের জন্য ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড পরিচালনার কথা ভাবা প্রায় অসম্ভব। ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রকাশ আমাদের ব্যাংকিং খাত। এখানে যাবতীয় লেনদেন হিসাব-নিকাশ, অর্থ স্থানান্তরসহ সব কাজই এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমেই সম্পন্ন হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রথাগত ব্যাংকিং মাধ্যমের লেনদেনকে ছাড়িয়ে গেছে অনলাইন-ভিত্তিক লেনদেনে। বেশিরভাগ গ্রাহক অনলাইন ব্যাংকিংয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন, এর ফলে ব্যাংক খাতের সামগ্রিক কর্মদক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা, মুনাফা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনলাইন ব্যাংকিং পরিষেবা এমন সুবিধে দেয় যাতে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে টাকা এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে বা এমনকি অন্য কোনো ব্যাংকে বা আর্থিক সংস্থায় স্থানান্তর করা, লেনদেনের তথ্য দেখা ও প্রিন্ট নেয়া যায়।

সারা দেশের বিস্তৃত মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পল্লি এলাকায় ব্যাংকিং সেবাবঞ্চিতদের, ব্যাংকিং-সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে সুরক্ষিত অনলাইন ব্যাংকিং পরিষেবা, অ্যাকাউন্টের তথ্য, বিল পরিশোধ, অর্থ স্থানান্তর, নিকটবর্তী এটিএম থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে। যে সব দুর্গম অঞ্চলে যাতায়াত সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল, সেসব অঞ্চলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বহুল ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় প্রদত্ত ভাতা ও প্রণোদনা, উপবৃত্তি, বিল পরিশোধ, কৃষি ভর্তুকি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রেরণ করা হচ্ছে।

দেশে ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহার এবং ব্যস্তজীবনের কারণে নিজেদের প্রয়োজনীয় শপিংয়ের জন্য অনলাইন মার্কেট প্লেস হয়ে উঠেছে প্রধান মাধ্যম। ই-কমার্স বর্তমান সময়ের সব থেকে পরিচিত একটি নাম। ডিজিটাল বিপ্লবের প্রভাবে ব্যবসাবাণিজ্যের সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে জনপ্রিয় হচ্ছে ই-কমার্স। উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন আর স্বাবলম্বী হওয়ার সহজ একটি মাধ্যম এই ই-কমার্স। ই-কমার্স এমন একটি মাধ্যম যেখানে কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেম বা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয় বা বিক্রয় হয়ে থাকে।

বর্তমান বিশ্ব তথ্য-প্রযুক্তির বিশ্ব। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। সে কারণে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবনযাত্রা উন্নয়নে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি এনে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা। কৃষকের চাহিদামাফিক, সঠিক সময়োপযোগী ও আধুনিক তথ্য, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, মোবাইলের মাধ্যমে সরবরাহ করার ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কৃষকের ভাগ্যোন্নয়োনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

দেশের কৃষকদের মধ্যে কৃষিভিত্তিক সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, সেবা এবং তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ২০১২ সালের জুনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালনায় দেশের প্রথম সরকারি কলসেন্টার হিসেবে ‘কৃষি কলসেন্টার’-এর পরীক্ষামূলক যাত্রা সূচিত হয়। যেকোনো অপারেটরের মোবাইল ফোন থেকে প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সায় কল করে কৃষকরা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে যেকোনো সমস্যার তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাচ্ছেন ।

প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গ্রাম ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্ব দিয়ে স্বল্প সময়ে তৃণমূলপর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তিসেবা পৌঁছে দিয়েছে, যার সুফল গ্রামের মানুষ ভোগ করছে। হাইটেক পার্ক নির্মাণের মাধ্যমে সরকার প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রজন্ম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যারা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন পণ্য ও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তির পণ্য বাজারে আসছে। ফলে পুরানো পণ্য-সেবাগুলোর জায়গায় হালনাগাদ পণ্যসেবা দ্রুত চালু হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় স্মার্টফোনের সক্ষমতা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ক্লাউড কম্পিউটিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, রিয়েলটাইম স্পিচ রিকগনিশন, ন্যানো কম্পিউটার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ন্যানোটেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেকনোলজি, ব্লক চেইন, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, শক্তি সঞ্চয় কিংবা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং উইয়ারেবল ডিভাইস ও নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন, সাইবার সিকিউরিটি, স্মার্ট সিটিজ, থ্রিডি প্রিন্টিং ও বায়োমেট্রিকস এসব পণ্য-সেবার বিকাশ ঘটছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে ২০১৭ সালের ১২ মে শুক্রবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে অরল্যান্ডোর কেনেডি স্পেসএক্স সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাঙালির স্বপ্নযাত্রার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়। বর্তমান সরকারের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মহাকাশ জয় সম্ভব হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও প্রত্যক্ষ্য তত্বাবধানে মহাশূন্যে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’-এর নির্মাণ ও সফল উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার পাশাপাশি টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-এডুকেশন, ডিটিএইচ, ভিস্যাটসহ ৪০ ধরনের সেবা প্রদান, সমগ্র বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমায় নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার নিশ্চিত হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা যাবে।

সজীব ওয়াজেদ জয় সৃজনশীল উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস গ্রহণ করেছেন। ডিজিটালাইজেশনের সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের তরুণ প্রজন্ম আইসিটি পন্য উদ্ভাবন, বিদেশে রপ্তানি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী, প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ তার এই স্বপ্ন, প্রয়াস ও কর্মকৌশলকে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করার সুফল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। ১২ বছর আগে আওয়ামী লীগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচীর সুচনা হয়েছিল, আজ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া।

জয়ের মতো নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব আমাদের রাজনীতিতে যেমন ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা ঘটিয়েছে তেমনি উন্নয়নে সার্বিক অগ্রগতি সম্পন্ন করেছে। এ দেশের সকল অর্জনে আমাদের ছাত্র-তরুণ-যুবসমাজ সব সময়য়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পরিবার বিশ্বের ইতিহাসে এক বিরল পরিবার যে পরিবারে দুইজন প্রভাবশালী বিশ্বনেতার জন্ম হয়েছে । যে পরিবার বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি, আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, সরকার পরিচালনা, উন্নয়ন, দেশের মানুষসহ সবকিছুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানব জিনের উত্তরাধিকারের উপর প্রভাব আরও বেশি প্রমাণিত হচ্ছে। মানব জিন পরবর্তী প্রজন্মের উপর স্বভাব, চরিত্র, ভাবনা, কর্মকাণ্ড সবই নিয়ন্ত্রণ করে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপর জাতির পিতা, বঙ্গমাতা, এ সময়ের আলোচিত বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার রক্ত ও জিনের প্রভাব থাকবেই।

আধুনিক বিশ্ব এখন তথ্যপ্রযুক্তি ও মেধানির্ভর। আন্তর্জাতিক রাজনীতি,কুটনীতি, গণমাধ্যম সবই এখন প্রযুক্তিনির্ভর। আমাদের মতো দেশের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে সুশিক্ষার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় থাকতেই হবে। সকল বিবেচনায় সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের আগামী নেতৃত্বে অগ্রগণ্য হবে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুস্থ ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।

লেখক: চিকিৎসক-অধ্যাপক, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিভাগের আরো খবর