বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোরবানির চামড়ায় অসাধুতা কাম্য নয়

  •    
  • ২৪ জুলাই, ২০২১ ১৫:৫১

দেশে কোরবানিকে কেন্দ্র করে যে বিশাল কাঁচা চামড়ার বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে পরিকল্পনার অভাবের কারণে দীর্ঘদিন থেকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সারা বিশ্বে এখন চামড়া শিল্পের যে চাহিদা রয়েছে সেটিকে বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে লাভবান হওয়ার চেয়ে মুষ্টিমেয় কিছু ট্যানারি মালিক ও বড় আড়তদার লাভবান হচ্ছে। দেশে বছরে যে কাঁচা চামড়া আহরিত হয় তার ৫০ শতাংশের বেশি কোরবানি ঈদে ঘটে থাকে।

করোনার এই সংকটকালে বিশেষ ছাড় দিয়ে এবার কোরবানির ঈদ পালনের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। গত বুধবার ২১ জুলাই দেশব্যাপী কোরবানির ঈদ পালিত হয়েছে। একসময় কোরবানির ঈদে বেশি পশু কোরবানি দেয়ার সামর্থ্যটা আমাদের ছিল না। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে যারা বসবাস করতেন তাদের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত সচ্ছল কৃষক ছিলেন এবং যাদের সন্তানদের কেউ কেউ শহরে চাকরি ও টুকটাক ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন তাদের অর্থ দিয়েই গ্রামে স্বল্প পরিসরে মানুষ কোরবানির ঈদে গরু-ছাগল কোরবানি দিতে পারতেন।

তখন গ্রামের মানুষের কোরবানির সক্ষমতার একটি অংশ ছিল শহর থেকে পাঠানো নিকটজনের টাকা। তারপরও গ্রামীণ অর্থনীতি যেহেতু ততটা স্বাবলম্বী ছিল না তাই কোরবানি দেয়ার সক্ষমতা অনেকেরই ছিল না। স্বাধীনতার পর এই চিত্র ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে। গত কয়েক দশকে গ্রামীণ অর্থনীতি এখন কৃষি, ছোট-মাঝারি ধরনের শিল্প যানবাহন ও প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে ওঠেছে। তাছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এখন প্রবাসে কাজ করছে।

এই সংখ্যাটি ৮০-৯০ লাখের বেশি বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে। এদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামীণ সমাজের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। গত দেড় বছর সারা বিশ্বের মতো আমরাও করোনার সংকটে রয়েছি। দেশের অর্থনীতির ওপর করোনার অতিমারি সংক্রমণ যে ছোবল হেনেছে তাতে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরে বসবাসকারী নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষ। তাদের একটি অংশ শহরের ব্যয়ভার বহন করতে না পারার কারণে গেল বছরই গ্রামে পাড়ি জমিয়েছে। এখনও কেউ কেউ আয় উপার্জন কমে যাওয়ায় কিংবা ছোট-মাঝারি বেসরকারি চাকরি বন্ধ থাকার কারণে গ্রামে পাড়ি দিতে বাধ্য হয়েছেন। গ্রামে কৃষিসহ নানা ধরনের কাজ রয়েছে। সুতরাং শ্রমজীবী মানুষের সেখানে কর্মসংস্থান কিংবা আয় উপার্জন করার কিছু না কিছু সক্ষমতা রয়েছে। এই দৃশ্যপট আগে ছিল উলটো। গ্রাম থেকে মানুষ শহরে আয় উপার্জন করতে আসত। কিছু উপার্জন করতে পারলে গ্রামে রেখে আসা পরিবারের মুখে অন্ন জুটত। এখন গ্রামেই অর্থনীতির নানান খাত ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে গড়ে উঠছে, চলছেও। ফলে করোনার এই সংক্রমণকালে যারা গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই নিজ এলাকায় কিছু না কিছু করে খেতে পারছে।

সেকারণেই দেশব্যাপী অর্থনীতির যে সংকটের কথা আমরা উচ্চারণ করছি তাতে শহরের প্রান্তিক মানুষদের চাইতে গ্রামীণ মানুষরা তুলনামূলকভাবে আয়-উপার্জনে আছেন বলেই নিরন্ন মানুষের হাহাকার শোনা যাচ্ছে না। এবার ঈদ উপলক্ষে গ্রামের কোরবানি সমাচার সম্পর্কে যারা খোঁজখবর রেখেছেন তাদের কাছে মনে হয়েছে গ্রামে কোরবানির সংখ্যা খুব একটা কমেনি। শহরে কিছু নিম্ন-আয়ের পেশা ও প্রান্তিক মানুষ নিকট অতীতের মতো এবারও কোরবানিতে হয়ত অংশ নিতে পারেননি। কিন্তু এই ঈদে যেহেতু সচ্ছল ব্যক্তিরা কোরবানির মাংস বিতরণ করেন। এবারও তাই ঘটেছে। দেশে প্রায় এক কোটির মতো গরু-ছাগল বেচাকেনা ও কোরবানি দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন এই সংখ্যাটি গত বছরের চাইতে কিছুটা কম। তবে আগে যেভাবে দেশের অর্থনীতির সংকটের কথা বলা হয়েছিল। কোরবানির হাটবাজার এবং অংশগ্রহণে তাতে বিরাট ধরনের কোনো দূরত্ব তৈরি হয়নি। গ্রামাঞ্চলে এই কোরবানিতে অংশ নেয়ার হার খুব একটা কমেছে বলে মনে হয় না। ফলে অর্থনীতিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ অর্থনীতি নানাভাবে পুষ্ট থাকায় জাতীয় অর্থনীতিতে এখনও ভারসাম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটি একধরনের মাঠপর্যায়ের চিত্র, যা জাতীয় অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থাটি বুঝে নেয়ার ক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতি বিশ্লেষক এবং নীতি নির্ধারকদের সহায়ক হবে বলে মনে করি।

এবার করোনা সংক্রমণের অতি উচ্চ অবস্থার মধ্যেও সরকার জীবন-জীবিকা ও ধর্মীয় অনুভূতিকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করার সুযোগ দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার যে অনুরোধটি ছিল তা অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্টরা রাখেনি বা উপেক্ষা করেছে। হাটবাজারের দৃশ্য সকলেই দেখেছে। সিটি করপোরেশন পশু জবাইয়ের জন্য যেসব উদ্যোগ নিয়েছিল সেগুলো খুব একটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। মানুষ চিরাচরিত প্রথায় বাড়ির আঙিনায় পশু জবাই দিয়েছে। সিটি করপোরেশন অবশ্য বর্জ্য অপসারণ করতে দেরি করেনি। কিন্তু এতসব পশুর রক্তে শহরগুলোতে যেভাবে খোলা জায়গায় দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে তাতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি কতটা বাড়বে সেটি কোরবানিদাতাদের সচেতনতায় খুব একটা ছিল না।

গ্রামাঞ্চলেও কোরবানির বিষয়টি যেভাবে সম্পন্ন হচ্ছে তা মোটেও জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিতে সমর্থনযোগ্য নয়। আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসছে, মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটছে কিন্তু কীভাবে উন্নত জীবনব্যবস্থায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে জীবনযাপন করতে হবে, নিজেদের আচার অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলে মানুষ অপেক্ষাকৃত স্বাস্থ্যসম্মত সমাজনির্মাণ করতে পারবে সেটি অনেকেই বুঝতে চাচ্ছে না। পশ্চাৎপদ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও বিপুলসংখ্যক মানুষের চিন্তাভাবনা ও জীবনযাত্রায় অনুষঙ্গ হয়ে রয়েছে। এটি অবশ্যই পুনর্মূল্যায়নের বিষয়।

করোনা মহামারিতে আমরা এমনিতেই নাকাল। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে যেভাবে ঈদ উদযাপন করা হয়েছে সেটি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠলে আমাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সুতরাং সুদূর ভবিষ্যতে পরিবর্তিত সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদেরকে চিন্তাশীল, যুক্তিবাদী এবং আধুনিক মানুষরূপে গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

দেশে প্রায় এককোটি গরুছাগল কোরবানি দেয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে পশু কেনাবেচা বাবদই ৫০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন ঘটেছে। খামারিরা তাদের পালিত পশু বিক্রি করে কেউবা লাভবান হয়েছেন, কেউবা ততটা পারেননি। এটি প্রতিবছরই একটি বাস্তব দৃশ্য। এবছর অনলাইনে যারা আগেভাগে বেচাকেনা করেছেন তাদের সুবিধা ভবিষ্যতে কতটা ভোক্তাদের জন্য নিশ্চিত করবেন তার ওপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতে এই খাতটি কতটা জনপ্রিয়তা লাভ করবে। তবে শহরের মানুষজন এবার আগেভাগেই অনলাইনে পশু ক্রয় করায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন গরুর এতদিনকার ব্যাপারীরা। তারা বাজারের চাহিদা সম্পর্কে প্রযুক্তির কারণে আগে থেকে হিসাব নির্ধারণ করতে পারেননি। সেকারণে অনেকেই পশু বিক্রি না করতে পেরে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। অবশ্য দেশে মাংসের চাহিদা পূরণে এসব পশু যেকোনো সময়ে বেচাকেনা হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে কোরবানি উপলক্ষে দেশে খামার শিল্প বেশ আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। আমাদেরকে এখন আর প্রতিবেশী দেশ থেকে আনা পশুর ওপর নির্ভর করতে হয় না। এটি দেশের খামার শিল্প ও মাংসের চাহিদাপূরণে অবদান রাখছে। পেশা হিসেবেও এটি এখন অসংখ্য সাধারণ পরিবার থেকে শুরু করে বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি লাভজনক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

দেশে কোরবানিকে কেন্দ্র করে যে বিশাল কাঁচা চামড়ার বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে পরিকল্পনার অভাবের কারণে দীর্ঘদিন থেকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

সারা বিশ্বে এখন চামড়া শিল্পের যে চাহিদা রয়েছে সেটিকে বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে লাভবান হওয়ার চেয়ে মুষ্টিমেয় কিছু ট্যানারি মালিক ও বড় আড়তদার লাভবান হচ্ছে। দেশে বছরে যে কাঁচা চামড়া আহরিত হয় তার ৫০ শতাংশের বেশি কোরবানি ঈদে ঘটে থাকে। যেহেতু ১-২ দিনের মধ্যেই এই সব কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই ট্যানারি ও কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে প্রতিবছর কাঁচা চামড়ার দর এতটাই নামিয়ে দেয় যে, অনেকেই এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এসব চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। নিকট অতীতে এ ধরনের বহু ঘটনা ঘটেছে। অসংখ্য মৌসুমি ব্যবসায়ী এই চামড়া আহরণ করতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছে। তারা প্রকৃত ক্রয়মূল্য পায়নি। ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা নানা অজুহাতে চামড়া ক্রয়ে অনীহা প্রকাশ করে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রান্তিক মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এর ওপরেও আরও কিছু ব্যবসায়ী ওপরের চামড়া সিন্ডিকেটের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা না পেয়ে এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ বছর কাঁচা চামড়া নিয়ে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা নতুন ফন্দি এটেছে। যেহেতু বাজারে ফড়িয়া এবং ছোট ছোট মজুতদার চামড়া ব্যবসায়ী নেই, তাই সিন্ডিকেটের পরিকল্পনা মোতাবেক চামড়া ক্রয়ে তারা তাদের স্বার্থ অনেক বেশি হাসিল করে নিয়েছে।

যে চামড়ার বাজারমূল্য ৫০০ টাকা হওয়ার কথা সেটি তারা ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যেই সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করেছে। যদিও বলা হয়ে থাকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রিবাবদ অর্থ কোরবানিদাতারা এতিমখানাগুলোতে দিয়ে থাকে। কোরবানিদাতারাও তাই মনে করে থাকে। কিন্তু দেশে কত সংখ্যক এতিম শিক্ষার্থী ও এতিমখানা রয়েছে সেটির কোনো পরিসংখ্যান সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে রয়েছে কি না জানি না। ওইসব কোরবানির চামড়া বিক্রি করা অর্থ এতিমখানাগুলো যথাযথভাবে পাচ্ছে কি না সেটি দেখভাল করার কেউ আছে বলেও জানা নেই। যদি সত্যি সত্যি এতিমখানাগুলো কোরবানির সময় চামড়া বিক্রি থেকে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ পেত তাহলে বেশিরভাগ এতিমখানা আর্থিকভাবে আরও সচ্ছল হওয়ার কথা ছিল। এ বছর চামড়া বিক্রিবাবদ কমপক্ষে ৪২০ কোটি টাকা এতিমখানাগুলোর পাওয়ার কথা। কিন্তু সেটি ঘটেছে বলে মনে হয় না। এখানেও কোনো মধ্যস্বত্বভোগী ট্যানারি ও আড়তদাররা নিয়োগ করেছেন কি না আমরা জানি না। পুরো এই বিষয়টি এভাবেই ‘লিল্লাহ’ ছেড়ে যাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা ভেবে দেখা উচিত।

মানুষের পবিত্র ধর্মবিশ্বাস ও আচার অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটেপুটে নিচ্ছে, কিছু মধ্যস্বত্বভোগীকে উচ্ছিষ্ট আকারে বিতরণ করে তুষ্ট রাখছে তারা আসলেই ধর্মের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ করছে বললে অত্যুক্তি হবে না। আমাদের দেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় রয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরও আছে। তারাই মূলত দেশের দুস্থ, অসহায় শিশুকিশোর ও মানুষদের কল্যাণে কাজ করার কথা। সরকার তাদেরকে একটি বড় ধরনের অর্থ বরাদ্দ দিয়েও থাকে। কিন্তু প্রতিবছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে যে বিপুল সংখ্যক পশুর চামড়া আহরিত হয়ে থাকে সেটিকে সুষ্ঠু পরিকল্পনা মোতাবেক সংগ্রহ এবং সরকারের নির্ধারিত মূল্যে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর কাছে উপযুক্ত মূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ দেশের এতিম, দুস্থ, বিধবা এবং হতদরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা গেলে এতদিনে সমাজের এই অবহেলিত এতিম ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর জীবন অনেকখানি বদলে যেতে পারতো।

একইসঙ্গে বাংলাদেশ চামড়াশিল্প থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারত। কিন্তু সুষ্ঠু পরিকল্পনা, নজরদারি এবং সততার অভাবের কারণে কোরবানির ঈদে আমরা দেশের মানুষ যে বিপুল পরিমাণ পশুর চামড়া উদারভাবে দিয়ে দিচ্ছে সেটি সদ্বব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমরা কোরবানির চামড়া নিয়ে দেশের মানুষের পবিত্র বিশ্বাসের সঙ্গে এক শ্রেণির ট্যানারি মালিক, আড়তদার, চামড়া ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগীকে ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার করতেই দেখি। সরকার এখানে মনোযোগ দেবে কি?

লেখক: গবেষক, অধ্যাপক

এ বিভাগের আরো খবর