বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে যে দলটি সামনে থেকে একক নেতৃত্ব দিয়েছে সেটির নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সংগ্রামের পিদিম প্রজ্বালন করে পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে আমাদের স্বাধীনতা এনে দেয়া সংগঠনটির নাম আওয়ামী লীগ। এজন্যই আমরা বুকভরা গর্ব নিয়ে বলি বাংলাদেশের ইতিহাস মানেই আওয়ামী লীগের ইতিহাস।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৫ সালে দলের নাম পালটে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ করা হয়।
১৯৫২ থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত টানা ১৪ বছর বঙ্গবন্ধু সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর অলঙ্কৃত করেন সভাপতির আসন। ছয় দফা থেকে শুরু করে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে এদেশের গণমানুষের দল হিসেবে তারা কতটা যোগ্য।
’৭৫ পরবর্তী ঘটনাবহুল ইতিহাসের পর দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে ছিল দলটি। এরপর ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর পুনরায় সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনে নিপীড়ন-অত্যাচারের শিকার হয়, সবরকম রক্তচক্ষুকে পিছে ফেলে পুনরায় ২০০৯ সালে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসে আওয়ামী লীগ। পর পর তিনটি নির্বাচনে জয়লাভ করে বর্তমানে টানা ১২ বছর সফলতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করছে দলটি।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে, যা দেখে অবাক পুরো বিশ্ব। একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বহির্বিশ্বে আজ সম্মানের পাত্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পরবর্তী যেকোনো সময়ের তুলনায় এই ১২ বছরে বাংলাদেশ এগিয়েছে কমপক্ষে ৫০ বছর।
নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সরকার বললে অত্যুক্তি হবে না! সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে প্রতিহত করে সরকার পরিচালনায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে সংগ্রামে লিপ্ত আওয়ামী লীগ, সেই সংগ্রাম অবিরাম থাকুক। জনগণের আস্থার চিরন্তন প্রতীকে রূপান্তরিত দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে জানাই অভিবাদন।
লেখক: শিক্ষার্থী, ফ্রেঞ্চ ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়