ইনটিউবেশনের আগে আমার মা’র সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। বলতে পারিনি ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। স্বস্তির জায়গা এটি যে তিনি কলেমা পড়ে নিয়েছিলেন।
ইনটিউবেশনের পরেও দেখছিলাম মা’র অক্সিজেন স্যাচুরেশন একটু পর পর কমছে, আইসিইউয়ের সবাই একটু পর পর বাড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রথমে ৮০, তারপর ৭০, ধীরে ধীরে ৪০। সব বুঝতে পারছিলাম, কিন্তু কিছুই করার নেই। হৃৎপিণ্ডটা বুক ফেটে বেরিয়ে আসছিল, কীভাবে বলব - মা আর সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা বাঁচবেন। দোয়া করি কাউকেই যেন নিজের কারো মৃত্যু এত কাছ থেকে দেখতে না হয়।
অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে বাবাকে ফোন করে বললাম, মা’র এনআইডি কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে আসো। বাবা তখনও বুঝতে পারেননি কী ঘটতে যাচ্ছে।
আইসিইউযের বড় ভাইয়েরা একটু পর পর এসে শক্ত থাকতে বলছেন, কিন্তু আমি পারছিলাম না। মা’র নিথর দেহের হাত ধরে বসেছিলাম আর কালেমা পড়ছিলাম। বাবাকে ফোন করে বললাম কোথায় তুমি, সব শেষ।
আল্লাহর অশেষ রহমতে জানাযার নামাজ মাগরিবের নামাজের পর শেষ করেই দ্রুত সময়ের মধ্যেই দাফন কাজ শেষ করতে পেরেছিলাম। কবরস্থানটা ঠিক মসজিদের সঙ্গে যেখান থেকে আজান ও কোরআন তেলওয়াত তিনি শুনতে পাবেন।
মা ইন্তেকাল করলেন। মা প্রতিদিন কিছু টাকা সদকা দিতেন আমাদের হায়াতের জন্য। আজ সেই মানুষটি-ই নেই। আজ যখন কাউকে তার মা’র সঙ্গে কথা বলতে শুনি, নিজেকে খুব অসহায় লাগে। আমার জন্য দোয়া করার তো আর কেউ নেই।
আমার মা’র জন্য সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে বেহেশত দান করেন।
সবাইকে অনুরোধ করি মাস্ক ব্যবহার করুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, সরকার প্রদত্ত টিকা গ্রহণ করুন।
লেখক: চিকিৎসক, নির্বাহী সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ