বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সময়ের চিত্র কতটা জানা-অজানা?

  •    
  • ১১ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:৩২

বর্তমানেও অনেক ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য তথ্যের চাইতে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্যের ছড়াছড়ি অনেক বেশি। সুতরাং প্রকৃত সত্যকে জানা ও বোঝার বিষয়গুলো নির্ভর করে একটি মানুষের সত্যানুসন্ধানের প্রতি নিষ্ঠার ওপর। অতীত যত দূরের হয়, তত বেশি পৌরাণিক কাহিনি এবং সময় বিবর্জিত বিকৃত তথ্যের গল্পে ঠাঁসা হয়।

প্রত্ন–ইতিহাসবিদ ও নৃতত্ত্ববিদগণ আমাদেরকে হোমো-সাপিয়ানদের তথা চিন্তাশীল মানুষ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মানবপ্রজাতির কাছে ও দূরবর্তী প্রজাতিগুলোর মধ্যে বুদ্ধির বিকাশ তেমন একটা ঘটেনি। হোমো-সাপিয়ান তথা আমরা বুদ্ধিমান মানব প্রজাতি ৭০-৮০ হাজার বছর আগেই বুদ্ধিবৃত্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছি। এই পরিবর্তন সাধন করতে পূর্ববর্তী প্রজন্মের প্রায় সোয়া এক লাখ বছর বিবর্তন ও পরিবর্তনের ধারায় ধীরে ধীরে বুদ্ধির উপাদানসমূহ অর্জন করতে হয়েছিল।

৭০-৮০ হাজার বছর আগে মানুষ কথ্যভাষার সংস্কৃতিতে বিরাট ধরনের অর্জন সাধন করে। কথা বলতে পারার মধ্য দিয়ে মানুষ শুধু মনের ভাবই প্রকাশ করেনি। নিজেদের দলবদ্ধ জীবনকে সংহত করতে পেরেছে, একইসঙ্গে জীবন ব্যবস্থারও বহুমাত্রিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধন করতে পেরেছিল। বুদ্ধিবৃত্তিক এই প্রক্রিয়াটি মানুষের গোত্রীয় সমাজ, অভিবাসন প্রক্রিয়া, খাদ্যাভ্যাস, শিকার ও সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্যের সংগ্রহ পূর্বাপেক্ষা সহজতর হয়েছে।

এই হওয়ার পেছনে ছিল মানুষের নিরন্তর শ্রম এবং চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগানো। এর মাধ্যমেই ১২-১৩ হাজার বছর আগে মানুষ কৃষিবিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়। কৃষি বিপ্লবের ফলে মানুষের খাদ্য, বসবাস, চাষাবাদ,পারস্পারিক সম্পর্ক, পরিবারব্যবস্থা, উৎপাদনের নতুন হাতিয়ার, ভাষা ও সংস্কৃতির নতুন বৈশিষ্ট্যের অর্জন এবং সর্বোপরি একটি অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের সমাজ ব্যবস্থায় উন্নীত হওয়ার ফলে সভ্যতায় উত্তরণ ঘটানো সম্ভব হয়েছে।

খ্রিস্টপূর্ব ৪-৫ হাজার বছর থেকেই মানুষ ছোটো নগরকেন্দ্রিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার সৃষ্টি করে। এটি মানুষের ক্রমবিবর্তনশীলতার ফলেই সংগঠিত হতে থাকে। এই সময় মানুষ ভাষা , সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং অতিপ্রাকৃতিক শক্তির বিশ্বাস থেকে ধর্মীয় বিশ্বাসেও স্থানিকভাবে জড়িয়ে পড়ে। সভ্যতায় এই উত্তরণকে আমরা এখন প্রাচীন যুগের সভ্যতা হিসেবে অভিহিত করে থাকি। এটি মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ভারতবর্ষ, চীন এবং আমেরিকা মহাদেশেও প্রায় কাছাকাছি সময়ে, প্রায় অভিন্ন বৈশিষ্ট্যে বিস্তার লাভ করেছিল। এর পরবর্তী উত্তরণ ঘটে রাজনীতি ও ধর্মের ব্যপক প্রভাব ও প্রসারে মধ্যযুগের সমাজ, রাষ্ট্র ও জীবনব্যবস্থা পরিচালনার মধ্যে। তবে মধ্যযুগের অবস্থানটি ইতিহাসের পথপরিক্রমায় দেড় হাজার বছরের বেশি সময় পায়নি।

মানুষ এই সমাজ ব্যবস্থাতেও আবদ্ধ থাকেনি, পরিবর্তনের ধারায় অর্থনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা, শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবনের বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন সংঘটিত করার মাধ্যমে আজ থেকে মাত্র ৪-৫ শ’ বছর আগে অপেক্ষাকৃত উন্নত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করতে সক্ষম হয়।

শিল্পবিপ্লবের এই প্রভাবে পৃথিবী এখন নতুন আবিষ্কৃত ভূখণ্ডে যেমন বিস্তৃত পরিচয় লাভ করেছে, একইভাবে যন্ত্র প্রযুক্তি, উৎপাদনশীলতা, প্রশাসন, রাষ্ট্র রাজনীতি, জ্ঞানবিজ্ঞান, শিক্ষাসংস্কৃতি এবং বিশ্বমানবের নতুন ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বকে সবার জন্য অবাধ চলাচল ও বসবাসের যোগ্য করার এক উচ্চতর দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটতে দেখা যাচ্ছে।

ইতিহাসের এই দীর্ঘ পথচলার অভিজ্ঞতা সকলের জানা নেই। কিন্তু মানুষ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের পর নতুন প্রজন্মের হাত ধরে অগ্রসর হয়েছে। এক সময়ের নতুনরা পুরাতন হয়েছে, স্থলাভিষিক্ত হয়েছে নতুনরা। এই প্রক্রিয়ায় মানুষ সময়ের ভেতর দিয়ে চলতে চলতে কতসব দুর্ভেদ্য বাধা-বিপত্তি, সংকট অতিক্রম করেছে, একই সঙ্গে নতুন বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা, হাতিয়ার, বোধ, বিশ্বাস, সম্পর্ক ইত্যাদিকে ধাতস্থ করেই ইতিহাসের পথচলার মাধ্যমে মানুষের শুধু অস্তিত্বই রক্ষা করেনি, প্রতিনিয়ত উন্নতও করেছে। সেই উন্নত অবস্থারও পরিবর্তন করেছে নিরন্তর। এভাবেই সভ্যতা অত্যন্ত প্রাথমিক স্তর থেকে ধাপে ধাপে বর্তমান উন্নত ও সমৃদ্ধির গন্তব্যে ধাবিত হচ্ছে। এই সবই হচ্ছে সময়ের ভেতর দিয়ে মানুষের চলার এক কঠিন ও জটিল ইতিহাস। অর্জনটি এক প্রজন্মের নয়।

পূর্ববর্তী সব মানব প্রজন্মের। কিন্তু আমরা সময়ের কতটুকু দেখতে পাই, জানতে পারি কিংবা বুঝতে পারি- এমন সব প্রশ্নের উত্তর আমাদের কজনের জানার ইচ্ছা আছে?

সময় একটি চলমান ও গতিশীল প্রক্রিয়া। এটি সর্বত্রই এই নিয়মেই চলে এসেছে, চলছে এবং চলবে। জগতের আর কোনো প্রাণী ইতিহাসের এমন কালবিভাজনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। তবে প্রাণিজগতের সবই সময়ের প্রবাহ প্রক্রিয়ায় বেঁচে ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু মানুষই একমাত্র জীব বা প্রাণী যারা বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে সময়কে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের নিরিখে বুঝতে চেষ্টা করে। তবে সব মানুষই তার বুদ্ধির প্রয়োগ সমানভাবে খাটান না। সেকারণেই বুদ্ধির চর্চায় কেউ পিছিয়ে আছেন, কেউবা এগিয়ে আছেন আবার অনেকেই বিষয়গুলো নিয়ে নানা বিভ্রান্তিতে আছেন।

কারণ সময়কে দেখা, জানা ও বোঝা মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। এই মহূর্তে আমি খোলা চোখে শুধু আমার চারপাশকেই কেবল দেখতে পাই। অথচ আমি একটি এলাকায় থাকি এর চাইতেও বড় পরিসরে থানা, উপজেলা, জেলা, বিভাগ এবং রাষ্ট্রের বলয়ে আমি থাকি। একইভাবে গোটা বিশ্বেরও আমি একজন। আমরা সবাই এভাবেই আমাদের সময়কে যার যার ক্ষুদ্র পরিসরে চোখের দৃষ্টিতে দেখতে পাই কেবলমাত্র। কিন্তু বর্তমান যুগের মানুষ হিসেবে আমরা এখন তথ্য প্রযুক্তির নানা সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের প্রতিদিনের দেখাকে অনেকটাই প্রসারিত করতে পারি। তাতে আমরা কোথায় কী ঘটছে সেগুলো গণমাধ্যমের কল্যাণে দেখতে, জানতে ও বুঝতে পারি । কিন্তু এই কাজটি কত কোটি মানুষের মধ্যে কতজন নিয়মিত করতে পারেন বা করেন?

সময়ের পরিক্রমায় আমরা ব্যক্তিগতভাবে এর কণিকার সামান্য অংশও দেখার সুযোগ পাই না। সুতরাং বুদ্ধিমান মানুষ হওয়া সত্ত্বেও আমরা ব্যক্তি বা সমষ্টিগতভাবে আমাদের সময়ের খুব সামান্যতম অংশই কেবল দেখতে, জানতে ও বুঝতে পারি। এমনই যখন সময়ের গতিপ্রবাহের বাস্তবতা, তখন বলতে দ্বিধা নেই যে আমরা মেধাবি, বুদ্ধিমান সচেতন মানুষরাও নিজেদের বর্তমানকেও খুব ভালো করে দেখা, জানা ও বোঝার মধ্যে নেই।

চলমান বর্তমানই মুহূর্তের মধ্যেই অতীতের মহাবিশালতার গর্ভে যুক্ত হয়ে যায়। আবার ভবিষ্যতের খুব নিকট সময়কেই কেবল আমরা বর্তমানেই ছুঁয়ে যেতে দেখি। সেটিও মহাকালের ইতিহাসে যুক্ত হয়ে পড়ে। সেকারণে আমরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারি না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মেধাবিরাও বলতে পারেননি বা পারছেন না নিকট ভবিষ্যতে কী হবে, ঘটবে বা ঘটতে যাচ্ছে। তবে যারা সময়ের বিবর্তনের ভেতরে থেকে কোনো না কোনো ঘটনার গতি প্রকৃতি গভীর পর্যবেক্ষণে রাখেন। তারা তাদের জানা বিষয়ে সম্ভাব্য ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কিছু আভাস ইঙ্গিত ও সতর্কতা সম্পর্কে ধারণা করতে পারেন। কিন্তু দূরভবিষ্যতের কথা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। মানুষ তার সময়কেই যেখানে ক্ষুদ্র পরিসর ব্যতীত খুব স্পষ্ট করে ধরতে পারে না। সেখানে বৃহত্তর পরিসরে দেখা, বোঝা ও জানা খুবই কঠিন কাজ বলে বিবেচিত হয়।

অতীত সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা অনেক। তবে নিকট অতীত কিংবা দূরবর্তী বিশেষায়িত কোনো ঘটনা বা ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে সত্যানুসন্ধান করার চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু অর্জনের পরিমাপটা খুবই আপেক্ষিক হতে বাধ্য। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির ইতিহাসে সবচাইতে গৌরবজনক অধ্যায়।

৫০ বছর আগে আমাদের জাতিকে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ কিংবা সমর্থন দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এতো বড় অর্জনে আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রতিনিয়ত সজাগ ও সতর্ক থাকতে হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি মানুষই কোথায় কী ঘটছিলো তার খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করত।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকাসহ বিশ্বের গণমাধ্যমের খবরাখবর শুনত, একে অপরকে জানিয়ে দিত। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভের খবর শুনে গোটা জাতি আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিল। কিন্তু তারপরও নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের জানার সুযোগ কতটা ঘটেছিল।

এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে, বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে যা জানতে পেরেছিল তা সমগ্র যুদ্ধের ইতিহাসের খুব সামান্যই ছিল। তারপরও বলতে হবে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ১৯৭১-এর নয় মাস যতটুকু দেখেছে, বুঝেছে এবং জেনেছে তা মোটামুটি স্বাধীনতার গুরত্বকে বোঝার জন্য নির্ভর করা যায়।

এর পরবর্তী ৫০ বছরের ঐতিহাসিক ঘটনাবলির কোনোটিই জাতীয়ভাবে আমরা এতটা ঐক্যবদ্ধভাবে দেখা, জানা ও বোঝার চেষ্টা করিনি। কারণ আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, আস্থা-অনাস্থা ও বিশ্বাসের পার্থক্য ছিল। সেকারণে অনেকেই জাতীয় জীবনের অন্য ঘটনাবলি সম্পর্কে ততটা জানতে উৎসাহী ছিল কি না সন্দেহ আছে। তাছাড়া নানা প্রচার, অপপ্রচার, গুজব, কল্পকাহিনি ইত্যাদি ভেদ করে প্রকৃত সত্যকে জানা ও বোঝার চেষ্টা করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়।

বর্তমানেও অনেক ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য তথ্যের চাইতে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্যের ছড়াছড়ি অনেক বেশি। সুতরাং প্রকৃত সত্যকে জানা ও বোঝার বিষয়গুলো নির্ভর করে একটি মানুষের সত্যানুসন্ধানের প্রতি নিষ্ঠার ওপর। অতীত যত দূরের হয়, তত বেশি পৌরাণিক কাহিনি এবং সময় বিবর্জিত বিকৃত তথ্যের গল্পে ঠাঁসা হয়। সেকারণে জ্ঞান-বিজ্ঞানের শাখাসমূহকে কালের পর্বে নিরিখে যাচাই-বাছাই, পঠনপাঠন এবং সর্বজনবিদিত জ্ঞানের ধারণাকে চর্চার মাধ্যমে বুঝতে হবে, জানতে হবে।

আধুনিক বিশ্বের বিজ্ঞানের শাখাসমূহ জ্ঞানের উৎপত্তি, বিকাশ এবং অতীত প্রবাহকে প্রতিনিয়ত গবেষণা, অনুসন্ধান এবং চর্চার মাধ্যমে বাস্তব জ্ঞানভিত্তিক ধারণা লাভের তৎপরতা অব্যাহত রাখে। সুতরাং আমাদেরকে সময়ের বাস্তব ঘটনা প্রবাহকে দেখা, জানা ও বোঝার ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিকচর্চা অব্যাহত রাখতে হবে, কোনো অবস্থাতেই অন্ধ বিশ্বাস, পৌরাণিকতার ধারণা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা চলবে না। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের যে মহামারি চলছে তাতেও ইতিহাসের কালপর্বে কখন কী ঘটেছিল, এখন কী ঘটতে যাচ্ছে এসব বিষয়ে গবেষণা ও বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মের ওপরই আস্থাশীল হতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, গবেষক-কলাম লেখক।

এ বিভাগের আরো খবর