ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বাংলা লোকগানের জনপ্রিয় একজন কণ্ঠশিল্পী। লোকগান ছাড়াও তিনি নজরুল সঙ্গীত, গণসঙ্গীত এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতসহ সঙ্গীতের অন্যান্য শাখার গান করেছেন। সঙ্গীত চর্চার পাশাপাশি তিনি একজন গীতিকবি ও সুরকারও ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং গীতিঅঙ্গন নামের সঙ্গীত বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশের একমাত্র সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা ‘মাসিক সঙ্গীত পত্রিকা’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। তার একটি ধারাবাহিক লেখা ‘লোকসঙ্গীতের ক্রমবিবর্তন’ প্রকাশিত হয় সঙ্গীত পত্রিকায়। এই লেখাটির ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি জার্মানি থেকে একটি পুরস্কারও পেয়েছেন।
২০১০ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে ‘কালজয়ী আব্বাসউদ্দিন’ নামে আরেকটি গ্রন্থ্। পরবর্তীতে কাজ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এবং লোকসঙ্গীতের বাংলাদেশ নামে দু’টি বিষয় নিয়ে।
১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রে গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলা সিনেমায় প্লে-ব্যাকে অভিষেক ঘটে তাঁর। এরপর তিনি ‘নয়নমণি’সহ আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। নয়নমণি চলচ্চিত্রে ‘কাঁদিস কেন মন’ গানটির জন্য তিনি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।
তিনি পাকিস্তান আমল থেকে এ পর্যন্ত অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে আছে- একুশে পদক, ওয়ার্ল্ড মাস্টার অ্যাওয়ার্ড, শিল্পাচার্য পুরস্কার ও শব্দসৈনিক সম্মাননাসহ অসংখ্য পদক ও পুরস্কার।
জন্ম ও পরিবারের কথা
মরমী লোকসঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার নবীন চন্দ্র রাজবংশী আর পূর্ণশশী রাজবংশীর প্রথম সন্তান ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। ঠাকুরদা কৃষ্ণমোহন রাজবংশীও ছিলেন গানপাগল মানুষ। লোকসঙ্গীতের জগতে ঠাকুরদা কৃষ্ণ সাধু আর বাবা নবীন সাধু নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। তাদের পৈত্রিকভিটা ঢাকা জেলার খিলগাঁও থানার দাসেরকান্দি গ্রামে। তখন অবশ্য তেজগাঁও থানার মধ্যেই পরতো।
বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান বলে মা তার জন্মের আগেই নাইওর চলে যান বাবার বাড়ি বালাপুর গ্রামে। সেখানেই দেশবিভাগের (ভারত-পাকিস্তান, ১৯৪৭ সাল) কাছাকাছি একটি সময়ে ২৬ জানুয়ারি জন্ম হয় ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর। তারা ছিলেন সাতভাই আর এক বোন। ফলে গ্রামে সবাই তাদের সাতভাই চম্পা বলেই ডাকতেন। এই সাতভাই এক বোন চম্পার মাঝে ছোট দুই ভাই তাদের শৈশবেই বসন্ত রোগে মৃত্যুবরণ করেন।
শৈশবে দেখা গ্রামের দিনগুলো
তিনি যখন ছোট ছিলেন তখন বিনোদনের জন্য তেমন কোনো উপকরণই ছিল না। বিনোদন বলতে পড়াশোনার পর খেলাধুলাই ছিল তাদের একমাত্র উপায়। আর গ্রামের প্রকৃতিও ছিল উদার। চারিদিকে খোলা মাঠ, সবুজে ছাওয়া গাছ-গাছালি। সারাদিন মাঠে খেলেছেন, গাছে চড়েছেন, নদীতে সাঁতার কেটেছেন। এই খেলাধুলা আর দুষ্টুমির জন্য বাবা-মায়ের কাছে বকা আর মার খেয়েছেন প্রচুর। কিন্তু খেলা বন্ধ হয়নি কখনও।
সঙ্গীতে-শিক্ষায় বেড়ে ওঠা
বাল্যকাল থেকেই তার সঙ্গীতের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল। বাবা যখন গান করতেন তখন ২/৩ বছরের ইন্দ্র মন্দিরা হাতে বাবার পাশে বসে পড়তেন। ওই সময় থেকেই মন্দিরা বাজানোয় খুব পাকা ছিলেন। এভাবে বেশ কয়েক বছর কাটে।
যখন পাঁচবছর বয়স তখন বাবার এক দুঃসম্পর্কীয় চাচা কেষ্টমোহন বাবাকে তার সম্পর্কে বলেন। তিনি অনেকদিন ধরেই ইন্দ্রকে খেয়াল করছিলেন। বাবাকে তিনি জানান, ইন্দ্রর গলা ভীষণ মিষ্টি। ওর গলায় সুরও ভালো আছে। তখন বাবা তাকেই ইন্দ্রকে গান শেখানোর ভার দিলেন। ফলে গানে তার হাতে খড়ি শুরু হয়ে যায় দাদা কেষ্ট সাধুর কাছে। তিনি তাকে লোকসঙ্গীতে তালিম দিতে শুরু করেন।
গানে তালিম নিতে নিতেই তাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া শুরু করেন। এরই মধ্যে কখন যে নিজেই অনুষ্ঠানে গান গাইতে শুরু করেন তা আর আজ মনে পড়ে না। তবে স্মৃতির মাঝে যে আজও আছে, সবসময়ই থাকবে সেটা হলো লোকগানের সম্রাট আব্দুল আলীমের সামনে গান করার স্মৃতি।
ছোটবেলা থেকেই তার একটি স্বভাব ছিল, তাকে কেউ গান করতে বললেই তিনি কোনোরকম সংকোচ না করেই গান শুরু করতেন। তখন তার মাত্র ৬/৭ বছর বয়স। তাদের এলাকার একটি স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলার প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আব্দুল আলীম এসেছেন। তিনিও সেই অনুষ্ঠানে গান করবেন।
ছোট্ট ছিলেন বলে তাকে একটি টেবিলের ওপর দাঁড় করিয়ে সামনে মাইক্রোফোন দেয়া হলো। সামনে লোকসঙ্গীতের এতো বড় পণ্ডিত বসা। কিন্তু তিনি কোনো রকম দ্বিধা না করেই তারই একটি গান গাইতে শুরু করেন।
তখন রোজার মাস মাত্র শেষ হয়েছে। তিনি ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি করেন। আব্দুল আলীম তন্ময় হয়ে তার গানটি শুনলেন। গান শেষে তিনি ছোট্ট ইন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়েছিলেন। এভাবেই তার সঙ্গীতগুরুর সঙ্গে পরিচয়।
পরবর্তী সময়ে খিলগাঁও স্কুলে শিক্ষকতা করার সময় স্কুলেরই আরেক শিক্ষক শামসুদ্দিন সাহেবের মাধ্যমে নতুন করে পরিচয় ঘটে আব্দুল আলীমের সঙ্গে। তখন আবার তার কাছে লোকসঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন। গানে তালিম নেয়ার পাশাপাশি তিনি স্কুলজীবন শুরু করেন দাসেরকান্দি গ্রামেরই ত্রিমোহিনী প্রাইমারি স্কুলে। এই স্কুল থেকেই প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষায় তিনি পুরো ঢাকা জেলায় প্রথম হন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি বেশ মেধাবী ছিলেন। কিন্তু তাদের এলাকায় কোনো হাইস্কুল না থাকায় ভর্তি হলেন কে. এল. জুবিলি হাই স্কুলে। দাসের কান্দি গ্রাম থেকে ওয়ারি কে.এল. জুবিলি স্কুলে যাওয়া অনেক লম্বা পথের আর সময়ের ব্যাপার ছিল। তাই তখন তিনি চলে গেলেন ওয়ারিতে তারই এক আত্মীয় নরেণ কাকুর বাসায়।
সেখানে কিছুদিন পড়ার পর সেই নরেণ কাকুর বাবা মারা গেলে তিনি চলে এলেন বাড়িতে। ঠিক সেই সময় তার পরিচয় ঘটে খলিলুর রহমান নামে এক কলেজ ছাত্রের সঙ্গে। খলিলুর রহমান তার প্রতিভায় ভীষণ মুগ্ধ। এতো ভালো গান করে, পড়াশোনায়ও ভালো। তিনি তখন তাকে নিয়ে গেলেন নরসিংদিতে।
সেখানে ননী গোপালের বাড়িতে লজিং থেকে ব্রাহ্মণদী হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তখন তিনি ক্লাস সিক্সের ছাত্র। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ওই বাড়ির গৃহকর্তার ছোট দুই ছেলে-মেয়েকে পড়াতেন। নরসিংদিতে দুই বছর থাকার পর ঢাকায় নিজের গ্রামে চলে এসে ভর্তি হলেন সিদ্ধেশ্বরী বালক বিদ্যালয়ে। এখান থেকেই মেট্রিক পাস করেন। ভর্তি হন সলিমুল্লাহ কলেজে। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে আবার ১৯৬৩ সালে মিউজিক কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে আই মিউজ ও বি মিউজ করেন।
সঙ্গীত চর্চা ও কর্মজীবন
১৯৫৮ সালে ভর্তি হন বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে। এখানে নজরুল সঙ্গীতের ওপর চার বছরের একটি কোর্সে তালিম নেন। পাশাপাশি মেট্রিক পাস করার পরই তিনি খিলগাঁও স্কুলের প্রাইমারি শাখায় বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যে শিক্ষকতা শুরু করেন। দিনে সেখানে পড়াতেন। ইন্টারমিডিয়েট করেই আবার ভর্তি হলেন সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে রাতের শিফটে।
তার শিক্ষক ছিলেন তারই গুরু আব্দুল আলীম। এরমাঝে ১৯৬৫ সালে নিখিল পাকিস্তানের সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করার পর টেলিভিশন এবং রেডিওতে সরাসরি বি গ্রেডের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে যান। রেডিও-টিভিতে গান করছেন। আবার সঙ্গীত কলেজে পড়ছেন। তখন শিল্পী আব্দুল আলীম মহাব্যস্ত একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী। প্রায় প্রতিদিনই তার কোথাও না কোথাও গানের অনুষ্ঠান থাকতোই।
তার অনুপস্থিতিতে তখন সঙ্গীত কলেজে লোকসঙ্গীতের অনেক ক্লাসই ইন্দ্রমোহন রাজবংশী নিতেন। এমনকি তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষের ক্লাসও তিনি দ্বিতীয় বর্ষে থাকতে নিয়েছেন। কারণ তখন তিনি রেডিও, টিভির এ গ্রেডের একজন শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে গেছেন। এভাবে সঙ্গীত কলেজের ছাত্র থাকাকালীন থেকেই তিনি সেখানকার শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতে থাকলেন।
১৯৭৪ সালে তিনি খিলগাঁও স্কুলে চাকরিটি ছেড়ে পুরোপুরিভাবে সঙ্গীত কলেজে যোগ দেন। ২০০৯ সালে এই কলেজের লোকসঙ্গীত বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণের পর আবার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক হিসেবে দুই বছর চাকরি করেন।
মুক্তিযুদ্ধ পর্ব
১৯৭০ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময় তারই আরেক সঙ্গীতগুরু হাফিজুর রহমানের লেখা ১২টি গণসঙ্গীত রেকর্ড করেন তিনি এবং রথীন্দ্রনাথ রায়। দেশকে নিয়ে, আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ওটাই ছিল প্রথম প্রকাশিত কোনো অডিও অ্যালবাম।
এই অ্যালবামটি প্রকাশ নিয়ে বেশ ঘটনা আছে। গানগুলো তারা করার পর কীভাবে রেকর্ড প্রকাশ করা হবে উপায় পাচ্ছিলেন না। তখন ডিস্ক আসতো ভারত থেকে। এই ডিস্ক পাবার উপায় একমাত্র এইচএমভি স্টুডিও। তখন বাংলাদেশে এইচএমভি’র প্রধান ছিলেন কলিম শরাফী।
একদিন তারা তার টিকাটুলির অফিসে গিয়ে সব খুলে বললেন। কলিম শরাফী ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী একজন শিল্পী। তিনি তখনই একটি নোট লিখে পাঠালেন যে এটি দেশাত্ববোধক গানের একটি অ্যালবাম। জরুরি এক লাখ প্রিন্ট পাঠাতে হবে। এই নোট পড়েই আর কেউ কোনো প্রশ্ন না করে এক লাখ কপি পাঠিয়ে দেন।
এই অ্যালবামের একটি কপি তিনি এবং রথীন্দ্রনাথ রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গিয়ে দিয়ে আসেন। তখন তারা দুজন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একটি ছবিও তুলেছিলেন। যেটি পরদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
১৯৭১ সালে তিনি একটি কাজে নরসিংদী যাওয়ার পথে পাক সেনার হাতে ধরা পড়েন। সেদিন তার ব্যাগে ওই ছবিটিও ছিল। কিন্তু নানা কৌশলে তাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যান। এরপর তিনি চলে যান মুক্তিযুদ্ধে। অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে প্রশিক্ষণ শিবিরে গেছেন। সেখানে এক বিকেলে বসে গান করছিলেন। তার গান শুনে সবাই অবাক হয়ে যান। আসলে অনেকেই তাকে নামে চিনতেন কিন্তু চেহারায় চিনতেন না। ফলে গান করেন কি না জানতে চাইলে তিনি জানান তিনিই ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।
এরপর আর তার অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়া হলো না। তিনি যোগ দিলেন শব্দসৈনিক হিসেবে। তার গান মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করে তুলতো।
চলচ্চিত্রে প্লে ব্যাক
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী প্রথম প্লেব্যাক করেছিলেন ১৯৬৭ সালে চেনা অচেনা ছবিতে। ওই ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার সঙ্গীতগুরু আব্দুল আলীমের সঙ্গে একটি গান করেছিলেন। এরপর তিনি ‘নয়নমণি’সহ আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। নয়নমণি চলচ্চিত্রে ‘কাঁদিস কেন মন’ গানটির জন্য তিনি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ৭৫টির বেশি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন।
সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি গঠন করেন। পাশাপাশি ২০০৫ সাল থেকে গীতিঅঙ্গন নামে আরও একটি সংগঠনে কাজ শুরু করেন।
গানের অ্যালবাম
অ্যালবাম বের করার ব্যাপারটি কখনোই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর কাছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান- ‘আমি শিল্পী, পাশাপাশি শিক্ষক। লোকগানের শিল্পী তৈরি করার দিকটাতে বেশি জোর দিয়েছি। তবে বছর তিরিশেক আগে রেডিওতে আমার কিছু গান নিয়ে কারা যেন একটি অ্যালবাম করেছিল। ইদানীং অনেকেই আমাকে অ্যালবাম করার জন্য অনুরোধ করছে। আমিও ভেবেছি, বিভিন্ন ছবিতে আমার গাওয়া গানগুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে চারটি অ্যালবাম করব। কারণ চলচ্চিত্রে আমার গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে। এগুলো একসময় হারিয়ে যাবে কিংবা বিকৃত হবে।’
গীতিকার ও সুরকার
লোকসঙ্গীতের পাশাপাশি একজন গীতিকার ও সুরকার হিসেবে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। শিশুতোষ গানের অভাব ও গুরুত্ব অনুভব করে তিনি বিভিন্ন সময় বেশ কিছু শিশুতোষ গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন। তার লেখা ১২টি গান নিয়ে একটি অডিও অ্যালবাম ‘রাঙা পুতুল’ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির জগতের পুরোধাদের নিয়ে তিনি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বেশ কিছু গান রচনা করেছেন।
ব্যক্তিজীবন
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী স্ত্রী দীপ্তি রাজবংশীর সঙ্গে সংসার জীবন শুরু করেন ১৯৭৪ সালে। দীপ্তি রাজবংশী নিজেও একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী। সঙ্গীত চর্চার পাশাপাশি তিনি শহীদ ফারুক গার্লস হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সঙ্গীতশিল্পী দম্পতির দুই সন্তান। বড় মেয়ে সঙ্গীতা জাপান থাকেন। আর ছেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। দু’জনই সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত।