৬২০ সাল থেকে ১৯২৪ পর্যন্ত পৃথিবীর বেশির ভাগ অংশ মুসলমানরা শাসন করেছে। এই দীর্ঘ সময় এ শাসনের পেছনে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে ইসলামের চিরন্তন ও শাশ্বত আদর্শ এবং শাসক শ্রেণির উন্নত নেতৃত্ব ও নৈতিক গুণ।
নেতৃত্বের এ ধরনের গুণের অন্যতম দিক হলো অনুসারী বা অধীনদের প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসা।
সামরিক নেতৃত্বেও এই আবশ্যকীয় গুণটিকে প্রশিক্ষণের থেকেই সেনাদের হার্ডডিস্কে ইনপুট দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন যে এমন সব গুণাবলি ছাড়া নেতা হয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ), খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে একরাম, বহু খলিফা ও নেতারা তাঁদের সহকর্মী, অধীনস ও অনুসারীদের দুঃখকষ্ট, বিপদ-আপদে নিজেদের জীবন পর্যন্ত উজাড় করে দিতেন। যুদ্ধে যারা শহীদ হতেন তাদের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতেন। এতে করে অধীনরা হতেন একনিষ্ট অনুগত। আর ঠিক সেই কারণেই অধীনস্তরা তাদের নেতৃত্বের ওপর গভীর আস্থা দেখাতেন।
এমন ইতিহাসও আমরা জানি যে, বিভিন্ন ধর্মীয় যুদ্ধে আহত মুজাহিদরা নিজে পানি-খাবার না খেয়ে অন্য ভাইদের জন্য তা বিসর্জন করতেন। এভাবেই মহান নেতৃত্বের গুণে পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক আমাদের সামনে কী দৃষ্টান্ত দেখালেন?
হাজারো হেফাজত কর্মী তার ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে নেমে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী ও পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান। এ সময় শহিদ হন ১৭ জন এবং আহত হয়েছেন অসংখ্য কর্মী।
নেতা হিসেবে মামুনুল হকের উচিত ছিল শহিদ পরিবার ও আহতদের খোঁজখবর নেয়া ও তাঁদের দুঃখকষ্ট লাঘবে ঝাঁপিয়ে পড়া।
কিন্তু আমরা কী দেখলাম?
তিনি তা না করে চুপিসারে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ফাইভ স্টার রিসোর্টে বেড়াতে গেলেন! হায়রে নেতৃত্ব!
এ ধরনের চারিত্রিক গুণাবলি দিয়ে নিজের কর্মী বাহিনীর যেখানে হেফাজত করতে ব্যর্থ হলেন, সেখানে তিনি পবিত্র ইসলামের হেফাজত করবেন কীভাবে? সফলতা অর্জন করতে হলে নেতাদের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিতে হয়। সুখ-ভোগের পেছনে ছুটে কেউ সফল হতে পারেন কি?
এই কি নেতৃত্বের উদাহরণ?