বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুর মানসিক দৃঢ়তা

  • ফয়সাল আহমেদ   
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:০২

বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিব বলেছিলেন- “জনাব বিচারপতি, দয়া করে আমাকে সমর্থনকারী উকিল সাহেবদের যেতে বলুন। আপনারা বিলক্ষণ জানেন, এ হচ্ছে এক গোপন বিচার। আমি বেসামরিক লোক। আমি সামরিক লোক নই। আর এরা করছে আমার কোর্ট মার্শাল! ইয়াহিয়া খান কেবল যে প্রেসিডেন্ট, তা নয়। তিনি প্রধান সামরিক শাসকও। এ বিচারের রায়কে অনুমোদনের কর্তা তিনি। এই আদালত গঠন করেছেন তিনি।”

মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানের কারাগারে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ধারণা করেছিলেন, জেলখানার এই নির্জনকক্ষ থেকে মুক্তির আর কোনো সম্ভাবনা নেই। হয়তো বাংলার সবুজ শ্যামল ভূমিতে পা-ফেলা যাবে না আর কোনো দিন। ছুঁয়ে দেখা হবে না প্রিয় স্বদেশের মাটি। আর সেই- প্রিয় মুখগুলো!। পূর্ব বাংলার সাড়ে-সাত কোটি মানুষ, যারা তাকে প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসে। তাদের সঙ্গেও আর কোনো দিন দেখা-সাক্ষাৎ হবে না। কারণ তিনি জানতেন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সরকার তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করবে। তারা এটাই চায়। যে কারণে তারা তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম-পাকিস্তানে নিয়ে এসেছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার। এসব জেনে-বুঝেও তিনি সামান্য সময়ের জন্যও ভেঙে পড়েননি, তার মনোবল ছিল ইস্পাত কঠিন। এর অন্যতম কারণ- তিনি জানতেন, পূর্ব বাংলার মানুষ তার পাশে আছে। যে কারণে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েও তিনি নিশ্চিন্ত। বীর বাঙালি লড়াই করে, প্রাণ বিসর্জন দিয়ে হলেও সেই ‘স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা’ করবে। মুজিবের বাংলার মানুষ রক্ত দিতে জানে, জীবনের পরোয়া করে না। তা তো বহুকাল তিনি নিজেই দেখেছেন। আর তিনিই তাদের সেই মহান নেতা!। তিনি নিজেও কখনও প্রাণভয়ে পিছ-পা হননি। ভয়- ডর কী বিষয়, তা বঙ্গবন্ধুর জীবনে ছিল না। যে কারণেই তিনি আপামর বাঙালির মুজিব ভাই থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে উঠেছেন। এর আগেও তিনি অসংখ্যবার জেল খেটেছেন। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, কি শীত, কি গ্রীষ্ম, কাটিয়েছেন জেলখানার নির্জনকক্ষে।

কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন- “পাকিস্তানি শাসনামলের অর্ধেক সময়ই বঙ্গবন্ধুর কেটেছে কারাগারে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ও ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের নেতা তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন, তা দেখে শিহরিত হতে হয়। তাঁর জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন কেটেছে কারাগারে। এর মধ্যে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে ৭ দিন কারাভোগ করেন। বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে। তিনি ১৯৩৮ সালে প্রথম কারাগারে যান। এরপর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি ৫ দিন কারাগারে ছিলেন। একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আটক হয়ে মুক্তি পান ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় তিনি ১৩২ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল আবারও কারাগারে গিয়ে ৮০ দিন কারাভোগ করে মুক্তি পান ২৮ জুন। ওই দফায় তিনি ২৭ দিন কারাভোগ করেন। একই বছরের ১৯৪৯ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৩ দিন এবং ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি টানা ৭৮৭ দিন কারাগারে ছিলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়। সে সময়ে বঙ্গবন্ধু ২০৬ দিন কারাভোগ করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক আইন জারির পর বঙ্গবন্ধু ১১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। এ সময়ে টানা ১ হাজার ১৫৩ দিন তাঁকে কারাগারে কাটাতে হয়। এরপর ১৯৬২ সালের ৬ জানুয়ারি আবারও গ্রেপ্তার হয়ে মুক্তি পান ওই বছরের ১৮ জুন। এ দফায় তিনি কারাভোগ করেন ১৫৮ দিন। এরপর ’৬৪ ও ’৬৫ সালে বিভিন্ন মেয়াদে তিনি ৬৬৫ দিন কারাগারে ছিলেন। ছয় দফা দেওয়ার পর বিভিন্ন মেয়াদে ৯০ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ১৯৬৬ সালের ৮ মে আবারও গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি পান। এ সময় তিনি ১ হাজার ২১ দিন কারাগারে ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ দফায় তিনি কারাগারে ছিলেন ২৮৮ দিন।” [প্রথম আলো, ১২ আগস্ট ২০১৭]

বাঙালির ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দীর্ঘ কারাভোগের ইতিহাস যে মানুষটির রয়েছে তার জেল জীবন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই, ভাবনা নেই। নিজের কষ্ট নিয়ে ভাবনা নেই। তার ভাবনা একটাই বাংলার মানুষের মুক্তি, বাঙালির একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্টা। যদি নিজেকে নিয়ে ভাবতেন, মনে ভয় লালন করতেন, তাহলে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ পাকিস্তানি আর্মিদের হাতের আটক না হয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যেতেন। আর সে সুযোগ তার ছিল। তিনি জানতেনও তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এমনকি হত্যা পর্যন্ত করা হতে পারে। এ ধরনের তথ্যও তার কাছে ছিল। কিন্তু বাঙালির প্রাণের নেতা শেখ মুজিব তা করেননি। যদি সে রাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে শেখ মুজিবকে না পাওয়া যেত, তাহলে পুরো ঢাকাতেই আরও ভয়ংকর এক গণহত্যা সংগঠিত করত পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। পরে এ বিষয়ে এক সাংবাদিক জেনারেল টিক্কা খানের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন- তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে শেখ মুজিবও যদি ভারতে চলে যেতেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি কী করতেন স্যার? উত্তরে টিক্কা খান বলেন-

“আমি খুব ভাল করে জানি মুজিবের মত একজন নেতা তাঁর জনগণকে পরিত্যাগ করবে না। আমি গোটা ঢাকা শহরে তাঁকে খুঁজে বেড়াতাম এবং একটি বাড়িও তল্লাশির বাইরে রাখতাম না। তাজউদ্দীন অথবা তাঁর মত অন্য নেতাদের প্রেপ্তারের কোন অভিপ্রায় আমার ছিল না। সে কারণেই তাঁরা এত সহজে ঢাকা ছেড়ে যেতে পেরেছিল।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেটি বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁকে না পেলে কী ঘটতে পারে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির পর সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন-

“আমি ইচ্ছা করলে যে-কোন জায়গায় যেতে পারতাম। কিন্তু আমার দেশবাসীকে পরিত্যাগ করে আমি কেমন করে যাব? আমি তাদের নেতা। আমি সংগ্রাম করব। মৃত্যুবরণ করব। পালিয়ে কেন যাব? দেশবাসীর কাছে আমার আহবান ছিল- তোমরা প্রতিরোধ গড়ে তোল।”

এমনই এক উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে কোনো নেতা কি পালাতে পারেন?। শেখ মুজিব পারেননি, তিনি তা চাননি। মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে দেয়া সেই মানুষটি পাকিস্তানের কারাগারে দৃঢ়চিত্তে সময় পার করেছেন। তবে তার মধ্যে উৎকণ্ঠা ছিল। তিনি উদবিগ্ন ছিলেন বাংলার মানুষের ওপর চালানো গণহত্যা নিয়ে। কিন্তু তা জেলার কিংবা, প্রহরীদের বুঝতে দিতেন না। জেলখানায় তিনি কী করছেন, কীভাবে সময় পার করছেন তা জানতে খুব আগ্রহী ছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতি সপ্তাহে শেখ মুজিবের বন্দিজীবন নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হতো। কিন্তু সেলের মধ্যে প্রহরীদের সালামের উত্তর দেয়া ভিন্ন কোনো কথা তিনি বলতেন না।

বঙ্গবন্ধুকে পাকিন্তানের লয়ালপুর জেলের ছোট্ট যে কক্ষটিতে রাখা হয়েছিল, তাতে একটি বিছানা ছিল। ছিল একটি জানালাও, তবে এটি এত উপরে ছিল যে কোনোরকমে এক চিলতে আকাশ দেখা যেত। তিনি জানতেন না কোন শহরে আছেন, জেলখানার বাইরে কী ঘটছে। তবে তিনি বুঝতে পারছিলেন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার হাতেই তার মৃত্যু হতে যাচ্ছে। তিনি এর জন্য প্রস্তুতও ছিলেন। একসময় তার বিচার শুরু হয়।

১৯৭১-এর আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান টেলিভিশনে ঘোষণা করেন শেখ মুজিবের বিচার করা হবে; এবং তা করা হবে রাষ্ট্রের আইন অনুসারে। পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসকের সদর দপ্তর থেকে প্রচারিত এক প্রেসনোটে বলা হয়-

‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ ও অন্যান্য অপরাধের জন্য বিশেষ সামরিক আদালতে শেখ মুজিবের বিচার করা হবে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় আন্তজার্তিক সম্প্রদায়, বিশেষত ভারত, রাশিয়া সরকার, জেনেভাস্থ আন্তজার্তিক জুরিস্ট কমিশন ও জাতিসংঘ মহাসচিব। ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী চব্বিশটি দেশের কাছে আবেদন জানান, শেখ মুজিবের জীবন রক্ষার্থে উদ্যোগ নেয়ার জন্য। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ইংল্যান্ড থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতে পৌঁছে সেখানকার জনগণের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ মুজিব বলেছিলেন-

“দুদিন আগেও আমি পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার সেলের মধ্যে বন্দি ছিলাম। শ্রীমতি গান্ধী আমার জন্য দুনিয়ার এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে তিনি চেষ্টা করেন নাই আমাকে রক্ষা করার জন্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে কৃতজ্ঞ।”

রাওয়ালপিন্ডি থেকে দেড় শ’ মাইল দক্ষিণে লয়ালপুর কারাগারের একটি একতলা ভবনে শেখ মুজিবের বিচারসভা বসেছিল। সবকিছুই ছিল পূর্বপরিকল্পিত। সাজানো-গোছানো। বিচার ছিল একটা প্রহসন মাত্র। বিচারকদের সামনে শেখ মুজিব আত্মপক্ষ সমর্থনে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কেননা তিনি জানতেন রায় তো আগেই তৈরি হয়ে আছে। সব আয়োজনই চলছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ইচ্ছায়। তিনি চান যেভাবেই হোক শেখ মুজিবকে ফাঁসি দিতে হবে। শেখ মুজিব বাধ্য হতেন আদালতে যেতে, তবে সেখানে তিনি বিচারকদের উপেক্ষা করতেন। কোনো কথাই বলতেন না। কোর্ট মার্শালের এই বিচারকার্যে কয়েকজন বেসামরিক অফিসারের সঙ্গে পাঁচজন সামরিক অফিসারও ছিল। পাকিস্তানি জান্তা সরকার বারো দফা অভিযোগ এনেছিল শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে। এরমধ্যে ছয়টাতে ঝুলিয়ে ফাঁসি কার্যকর করার বিধান।

বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিব বলেছিলেন-

“জনাব বিচারপতি, দয়া করে আমাকে সমর্থনকারী উকিল সাহেবদের যেতে বলুন। আপনারা বিলক্ষণ জানেন, এ হচ্ছে এক গোপন বিচার। আমি বেসামরিক লোক। আমি সামরিক লোক নই। আর এরা করছে আমার কোর্ট মার্শাল! ইয়াহিয়া খান কেবল যে প্রেসিডেন্ট, তা নয়। তিনি প্রধান সামরিক শাসকও। এ বিচারের রায়কে অনুমোদনের কর্তা তিনি। এই আদালত গঠন করেছেন তিনি।”

ডিসেম্বরের চার তারিখ জান্তা সরকার কোর্ট মার্শালের কাজ শেষ করে। এরপর ইয়াহিয়া খান বিচারকদের রাওয়ালপিন্ডি ডেকে পাঠান রায় প্রস্তুত করার জন্য। সেখানেই ঠিক হলো শেখ মুজিবকে ফাঁসি দেয়া হবে।

শেখ মুজিব দেখছেন তার সেলের পাশে কবর খোঁড়া হচ্ছে। এটাই তার কবর হবে। তাতেও তার কোনো ভয় নেই। মনে মনে নিজেকে বলছেন- আমি তৈরি আছি। তিনি ভাবছেন তার প্রিয় দেশবাসীর কথা, পরিবারের কথা, নিজের কথা নয়! একজন মানুষের কী অসম্ভব রকমের মানষিক শক্তি থাকলে নিজেকে এমন পর্যায়ে উন্নীত করা যায়! নিশ্চিত মৃত্যু জেনেই যেখানে প্রতি মুহূর্ত পার করেছেন। অথচ একটিবারের জন্য ভেঙে পড়েননি। কোনো ভয়-ডর তাকে কাবু করতে পারেনি। শেখ মুজিবের জবানিতে বিখ্যাত কবি ও কথাশিল্পী অন্নদাশঙ্কর রায় লিখেছেন-

“দেখুন আমি দুই দুইবার মরতে মরতে বেঁচে গেছি। প্রথমবার আইয়ুব খানের বন্দিশালায়। ষড়যন্ত্রের মামলায়। আমার এক সাথি আমাকে হুঁশিয়ার করে দেয় যে, সন্ধ্যাবেলা সেলের বাইরে গিয়ে নিয়মিত বেড়ানোর অভ্যাসটি বিপজ্জনক। পেছন থেকে গুলি করবে আর বলবে পালিয়ে যাচ্ছিল বলে গুলি করেছি। অন্যের বেলা ঘটেও ছিল ওরকম গুলি চালনা। দ্বিতীয়বার ইয়াহিয়া খানের কারাগারে। আমার সামনেই আমার কবর খোঁড়া হচ্ছে। বুঝতে পারছি যে, আমার শেষ মুহূর্ত ঘনিয়ে আসছে। মনটাকে তৈরি করে নিই যে, মরতে যখন হবেই তখন মিছে ভয় কেন? শান্ত মনে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করি।” এ থেকে সহজেই বুঝা যায় সেসময় মানসিকভাবে কতটা দৃঢ় ছিলেন তিনি। তাঁর এই ইস্পাত কঠিন মানসিক দৃঢ়তার কারণেই বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছে। জয়তু জাতির পিতা!

লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক।

এ বিভাগের আরো খবর