বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অদ্ভুত রাজনীতি

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২১ ১৪:১৮

যদি প্রশ্ন করি দেশের জনগণের জান ও সম্পত্তি ধ্বংস করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? জনগণের কোন উপকারের জন্য তারা এই কাজ করছে? তার কোনো সদুত্তর তাদের কাছে আছে?

একদল মানুষ দেশের শাসক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে অথচ তারা নিজেরাই জানে না যে, এই সরকারকে উৎখাত করে তারা কাকে ক্ষমতায় বসাবে? আর তারা এ-ও জানে না যে, ক্ষমতায় বসে দেশ চালানোর মতো যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ কে বা কারা। যদি বিএনপির কথা মনে করে থাকে তাহলে তাদের নেতৃত্ব বাংলাদেশের জনগণের জানা আছে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যদি তারা ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে হয়তো তাদের জনগণ গ্রহণ করবে।

লক্ষ করা যাচ্ছে যে, এক বিশেষ গোষ্ঠী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য হেন অপকর্ম নেই যে করছে না। তাদের কাছে দেশ, জনগণ এসব কিছুই না। এই শ্রেণির লোকের সার্বক্ষণিক চিন্তা ও উদ্দেশ্য হলো কোনো না কোনোভাবে দেশে সব সময় একধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করে রাখা। এদের মধ্যে কিছু লোক আবার বিদেশে থাকে, আর তাদের কাজ হলো সারাক্ষণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা।

তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্য যেমন সারাক্ষণ গুজব ছড়ায় তেমনই দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই আনন্দ পায়। দেশে কিছু উছৃঙ্খল লোক জ্বালাওপোড়াও, ভাঙচুর করলে তারা খুব উত্তেজিত হয়ে ওঠে, আর মনে করে দেশে এই বুঝি আর একটি স্বাধীনতাসংগ্রাম শুরু হলো। দেশে সৃষ্ট যেকোনো অরাজক পরিস্থিতি যে দেশের সর্বনাশ করে তাদের তা তাদের বোঝার ক্ষমতা নেই। কারণ, তারা তো অন্য দেশে থেকে দেশের ব্যথায় ব্যথিত হয়ে কুম্ভীরাশ্রু প্রবাহিত করে।

কয়েক দিন ধরে দেশে মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী যে জ্বালাও-পোড়াও চালাচ্ছে তাতে অন্তত ৩০টি গাড়ি, ২০টি মোটরসাইকেল, ১০টি বাস, একটি রেলস্টেশন, ট্রেনের বগি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডাকবাংলোসহ নানান স্থাপনা পুড়েছে ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরা ঢাকাতেও জানমালের ক্ষতির নানান অপতৎপরতা চালাচ্ছে৷ এখন প্রশ্ন এই আন্দোলনটা কেন? এতে কি মোদি বা ভারতের কোনো ক্ষতি হচ্ছে? এতে যা ক্ষতি হওয়ার তা আমাদেরই হচ্ছে।

যদি প্রশ্ন করি দেশের জনগণের জান ও সম্পত্তি ধ্বংস করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? জনগণের কোন উপকারের জন্য তারা এই কাজ করছে? তার কোনো সদুত্তর তাদের কাছে আছে?

যেই দেশ থেকে বছরে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার জিনিস আমদানি না করলে বাংলাদেশের অর্থনীতি চলে না। যে দেশের পেঁয়াজ ছাড়া বাঙালির তরকারি চড়ে না। যে দেশ থেকে এ বছর ৫০ হাজার টন চাল কিনে না আনলে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যাবে না। যে দেশের ভ্যাক্সিন ছাড়া বাঙালি করোনামুক্ত হতে পারবে না। যে দেশের শাড়ি কাপড় না আনলে বাঙালি ললনার ফ্যাশন চলে না। যেই দেশের চ্যানেল না দেখলে বাঙালির সন্ধ্যা কাটে না। তাদের প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিরোধিতা করে দেশের জানমালের ক্ষতি করছে কেন তার উত্তর তো এই অন্ধ গোষ্ঠী নিজেরাই জানে না।

এখন প্রশ্ন হলো কারা এসব করছে?

প্রথমত, যারা এসব করছে তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে, দেশের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে, দেশের সুস্থ রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের স্বীকৃত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন অথবা কোনো শিক্ষিত গোষ্ঠী যারা মানব জীবনের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এমন কেউ না।

দ্বিতীয়ত, এরা এমন শ্রেণি গোষ্ঠীর যারা তাদের জীবন মান নিয়ে দারুণভাবে হতাশাগ্রস্ত তাই ধ্বংসযজ্ঞই তাদের আনন্দের খোরাক।

তৃতীয়ত, এদের কোনো আদর্শ বা লক্ষ্য নেই, নেই কোনো রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এদের নেই কোনো পারিবারিক বা সামাজিক বন্ধন। এরা বেড়ে উঠেছে পুরুষতান্ত্রিকতায় এবং অত্যাচারিত পরিবেশে যে কারণে মানবিক গুণাবলি এদের নেই বললেই চলে। এরা ধর্মীয় পশ্চাৎপদতায় বেড়ে উঠার কারণে হত্যা ও ধ্বংস এদের কাছে এক ধরনের ঈশ্বরীয় যুক্তিভিত্তিক অতি সহজ কাজ।

এদের ব্যবহার করছে অপরাজনীতির কান্ডারি কিছু সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী যারা সামনে থেকে রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনার সৎ সাহস রাখে না।

তাই যারা এই সরকার পছন্দ করেন না তারা বিদেশে বা দেশে বসে ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুকের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখছেন আর দেশের এই ক্ষতিকে আর এক মুক্তি আন্দোলন ভাবছেন তাদের অনুরোধ করব এই মূর্খতা থেকে বেরিয়ে আসেন। আমরা এই দেশকে আফগানিস্তান বানিয়ে আপনাদের আনন্দ দিতে পারব না, তা আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও। আসলে আপনারা যা করছেন তা হলো দেশদ্রোহ। জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।

লেখক: বাংলাদেশ প্রতিনিধি, টিভি ফাইভ মন্ড (ফ্রান্স)

এ বিভাগের আরো খবর