চলতি মাসের ১৭ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশে সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছর উদযাপন উপলক্ষে ১০ দিনের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শেষ হয়েছে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুপ্রতিম পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। তবে কোভিড ১৯-এর কারণে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে অনেক সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত হতে না পারলেও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকা, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের তথা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। এই সময়ে বাংলাদেশ ৯০ ডলারের মাথাপিছু আয় থেকে ২০৬২ ডলারের মাথাপিছু আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। প্রবৃদ্ধিও ঠিক একইভাবে ৬-৭% ঘরে উন্নীত হওয়ার ধারা বজায় রাখতে পেরেছে। তবে উন্নয়নের মূল ধারাটি স্বাধীনতার প্রথম সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে (৭.৪%) এবং ১৯৯৬-২০০১ ও ২০০৯ থেকে বর্তমান পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনকাল তথা মোট প্রায় ২১ বছর শাসনকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সিংহভাগ তথা ৭৩% অর্জিত হয়েছে, বাকি ২৭% অর্জিত হয়েছে ১৯৭৫-১৯৯৬, ২০০১-২০০৮ মোট ২৯ বছরে। এই সময় বাংলাদেশে সামরিক, আধা সামরিক এবং বেসমারিক সরকার ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই সরকারগুলো দেশের অর্থনীতি উন্নয়ন ও পরিবর্তনের জন্য মৌলিক যেসব নীতি ও কৌশল প্রয়োগ করা প্রয়োজন ছিল, তা না করার কারণে দেশের অর্থনীতি অনেকটাই বিদেশি সাহায্য নির্ভরশীল ছিল, স্থবিরতা কাটাতে পারেনি, সংস্কার যথাযথভাবে ঘটেনি। সে কারণে অর্থনীতিতে পরিবর্তনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এসব সরকারের শাসনামল অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ হওয়া সত্ত্বেও মোট উন্নয়ন ঘটেছে মাত্র ২৭ শতাংশ।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের হাল ধরার সময় দেশের মাথাপিছু আয় মাত্র ৯৩ ডলার ছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তার মৃত্যুর আগে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছিল ২৭০ ডলারে, প্রবৃদ্ধি ঘটেছিল ৭.৪ শতাংশ। সেইসময়ে বাংলাদেশ স্বপ্লোন্নত আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার মর্যাদা লাভ করে। এর কারণ বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে কৃষি, শিল্প, বৈদেশিক বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রায়োগিক নীতি ও কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন। ফলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা ১৯৭৫ সালেই লাভ করেছে। এই অবস্থান থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কোনো সরকারই বাংলাদেশকে বের করে আনতে পারেনি। শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে নির্বাচনে রূপকল্প-২০২১ প্রদান করেন। এতে তিনি বিদ্যুৎ, ডিজিটালাইজেশন, কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবহাওয়া, যোগাযোগ, রেমিট্যান্স ইত্যাদি খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন সাধনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০২১ সালকে তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেন।
ক্ষমতা গ্রহণের পরেই শেখ হাসিনার সরকার বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতি মোকাবিলায় ছোট মাঝারি ও বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেন। সেই সময় বাংলাদেশে মাত্র ৩২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেত- যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য ছিল। তখনও দেশে বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানা ও শহরাঞ্চল বিদ্যুতের দিনের বড় অংশই উৎপাদনের ঘাটতি ও অন্ধকারে থাকত। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা কল্পনার বাইরেই ছিল।
পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ শিল্পায়নের চাবিকাঠি হিসেবে বিদ্যুতায়নকে সবচাইতে গুরুত্ব দিয়েছিল। স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘটিয়ে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার মাধ্যমে দেশগুলো দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি লাভ করে। শেখ হাসিনা পৃথিবীর এসব দেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি বা যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশ অর্জন করে। এর ফলে দেশের গার্মেন্টস শিল্প থেকে শুরু করে সব ধরনের শিল্প, কৃষি, আবাসিক এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যিক মার্কেট স্থাপনাসহ সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রবাহ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে। বর্তমানে প্রায় ২২,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
এরপরও সরকার ভুটান, ভারত, নেপাল থেকে স্বল্পমূল্যে জলবিদ্যুৎ ক্রয়ের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ আরও বেশকিছু বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলছে। সরকার বিদ্যুৎখাতে যথাযথভাবে মনোযোগ দেয়ায় দেশের সর্বত্র অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীলতা লাভ করেছে। এই কারণেই গত ৮/১০ বছরে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনেতিক বর্ধনশীল রাষ্ট্রে পরিণত হতে পেরেছে। এছাড়া বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কৃষিতে নানা ধরনের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। দেশে প্রায় প্রতিবছরই বাম্পার ফলন উৎপন্ন হয়েছে। কৃষিখাতে এখন বৈচিত্র্যকরণ আসছে। শিল্পের কাঁচামালও কৃষি থেকে পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা এখন প্রায় সবটাই কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতা অর্জন করেছে। মাত্র ৪ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ বাংলাদেশ গ্রহণ করে থাকে। অথচ একসময় প্যারিসে অনুষ্ঠিত বৈদেশিক দাতাসংস্থার সভায় নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থঋণ আকারে এসব দেশ ও সংস্থা থেকে আনতে বাধ্য হতো। এখন বাংলাদেশ সেই নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠেছে। বেশকিছু মেগাপ্রকল্প বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত করছে। রেমিট্যান্স পাওয়ার প্রবাহ এখন কেবলই ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সক্ষমতা ভীষণভাবে বেড়ে চলছে। এর ফলে সরকার সমাজের গৃহহীন, আশ্রয়হীন, পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রণোদনা দানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়কে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর অনেক দেশই আশঙ্কা করেছিল ঘনবসতির এই দেশ করোনা সংক্রমণের অভিঘাত সহজে মোকাবিলা করতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশ সেই অভিঘাত অনেকটাই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ হামলে পড়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। সরকারকে দ্রুতই এই সমস্যার সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ টিকাদান কর্মসূচি চালু করার পরও জন সচেতনতার অভাবে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন ব্যবস্থায় উদাসীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ এ বছরও অর্থনৈতিকভাবে প্রবৃদ্ধি ৫.১৩ শতাংশ ধরে রাখতে পেরেছে বলে সকল মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে। তবে করোনা সংক্রমণের প্রভাব যদি আরও বেশি নেতিবাচক হয়, তাহলে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হতে পারে। গত এক বছরে চিকিৎসা ব্যবস্থায় যেসব পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়েছিল সেটিকে এখন জেলা ও উপজেলাপর্যায়ে সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা কার্যক্রমকে সাধারণ মানুষের অনেকটাই কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে।
সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে করোনার সংকট গভীরতর হয়েছে। সেই সময়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছর পালনের আয়োজন নিতান্ত আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের রাষ্ট্র এবং সরকার প্রধানগণ নিজ নিজ সরকারের প্রতিনিধি দল নিয়ে ১০ দিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ২ দিন করে বাংলাদেশে অবস্থান করেছিল। তাদের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগ অতিক্রম করেও সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানগণ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এই আয়োজনে উপস্থিত থাকার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রতিটি সরকারি বেশকিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক কারিগরি ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিকভাবে এসব রাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া অর্থনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যও বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের এই সক্ষমতা সাম্প্রতিক বছরগুলোর অর্জন হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে। শেখ হাসিনা শুধু দক্ষিণ এশিয়াই নয়, অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারগুলোর সঙ্গে যে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পেরেছিলেন সেটি তাদের সরকার প্রধানের প্রেরিত বার্তায়ও প্রতিফলিত হয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ৫০ বছরকে উন্নয়নের একটি বিশেষ অবস্থান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারই বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের মাধ্যমে যে মানবতার প্রমাণ দিয়েছে সেটি খোদ মার্কিন প্রেসিডন্ট জো বাইডেনও প্রশংসা করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশের ৫০ বছরপূর্তি এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছরকে ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও বাংলাদেশের এই অনুষ্ঠানে বার্তা পাঠিয়ে বন্ধুত্ব কামনা করেছেন। সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা চলে করোনা সংক্রমণে অতিমারি অবস্থার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশ ও সরকারের উপস্থিতি ঢাকায় না ঘটলেও তাদের প্রেরিত বার্তা এবং প্রতিশ্রুতি থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশ এই ৫০ বছরে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় যে উন্নয়ন ঘটেছে তাতে পৃথিবীর প্রায় সবদেশই বাংলাদেশকে অভিনন্দিত করেছে।
এই অভিনন্দন নিশ্চয় বাংলাদেশের জনগণ এবং ভিশনারি মিশনারি রাজনৈতিক নেতৃত্বের কৃতিত্ব। জনগণ শ্রম দেয়া এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, সরকার নীতি ও কৌশল দিয়ে সেই সুযোগগুলো সৃষ্টি করেছে। এখানেই বাংলাদেশের অর্জনের মূল কৃতিত্বের বিষয়গুলো নিহিত রয়েছে। জনগণ, নাগরিক সমাজ এবং সমাজ সচেতন মানুষ বাংলাদেশের সম্ভাবনার বিষয়সমূহকে খুঁজতে হবে যোগ্য ভিশনারি মিশনারি রাজনৈতিক নেতৃত্বের দেশ পরিচালনার মধ্যে যারা লক্ষ্য স্থির করে রাষ্ট্র, সমাজ ও জনগণের কল্যাণে একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা এবং জনগণের জীবনমান জনসম্পদরূপে পরিগণিত হওয়ার সক্ষমতা অর্জনকে অব্যাহত রাখা ব্যতিত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জকে ধরে রাখা বা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সেটি কেবলমাত্র রাজনৈতিক ভিশনারি মিশনারি নেতৃত্বের মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।
লেখক: গবেষক, অধ্যাপক, কলাম লেখক।