বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি অনন্য নাম বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করি। শুধু এই নয় মাসের সংগ্রামেই কি বাংলা ভাষাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ’ জাতিরাষ্ট্রের স্বাধীনতা এসেছে? যদি উত্তরে হ্যাঁ বলা হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ছোট করা হয়। বাংলার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার হাজার বছরের ইতিহাস মুছে যায়। একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। এর ভাঁজে ভাঁজে আছে রক্তের দাগ, আত্মত্যাগ, জেল-জুলুম, নির্যাতনসহ নানা চরাই-উৎরাইয়ের ইতিহাস।
আমরা কি আমাদের পূর্ব পুরুষের রক্তের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস ভুলে যেতে পারি? কবি নির্মলেন্দু গুণ কবিতায় তাই উচ্চারণ করেন-
“শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে কবি (শেখ মুজিবুর রহমান) শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস শত বছরের অমর কবিতা। যে কবিতার সফল পরিণতি দিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান নামের রাজনীতির মহাকবি।
প্রাচীন যুগে বাংলা (বর্তমানে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ) এখনকার বাংলাদেশের মতো কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। আর প্রতিটি অঞ্চলের শাসক যার যার মতো করে শাসন করতেন। বাংলার এই অঞ্চলগুলোকে সমষ্টিগতভাবে নাম দেয়া হয় ‘জনপদ’। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন বঙ্গ, পুন্ড্র, গৌড়, হরিকেল, সমতট, বরেন্দ্র এরকম প্রায় ১৬টি জনপদে বিভক্ত ছিল। প্রাচীন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বাংলার সীমানা উত্তরে হিমালয় পর্বত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বর্মা (মায়ানমার), পশ্চিমে বিহার ও উড়িষ্যা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
বাংলায় প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো তাম্রযুগের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। ইন্দো-আর্যদের আসার পর অঙ্গ, বঙ্গ এবং মগধ রাজ্য গঠিত হয় খ্রিস্টপূর্ব দশম শতকে। রাজ্যগুলো বাংলা এবং বাংলার আশেপাশে স্থাপিত হয়েছিল। এশিয়ার মধ্যাঞ্চল থেকে আসা আর্যরাই সম্ভবত বাঙালি জাতির উপর সর্বপ্রথম বৈদেশিক আক্রমণ। বাঙালির স্বাতন্ত্র্যবোধ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে শোচনীয়ভাবে আর্যদের কাছে পর্যুদস্ত হয়। আর্যদের বিরুদ্ধে ওই প্রতিরোধই সম্ভবত বাঙালির প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। আর্যরা এদেশের ভূমিসন্তান অনার্যদের দস্যু, অসুর প্রভৃতি উপাধিতে চিহ্নিত করে এবং নিজেদের দেবজাতি বলে প্রচার করতে শুরু করে। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে বাংলার বেশিরভাগ এলাকাই শক্তিশালী মগধের রাজ্যের অংশ ছিল।
মগধ ছিল একটি প্রাচীন ইন্দো-আর্য রাজ্য। মগধের ক্ষমতা বিম্বিসারের (৫৪৪-৪৯১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এবং তার ছেলে অজাতশত্রুর (৪৯১-৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) শাসনামলে। বিহার ও বাংলার অধিকাংশ জায়গাই মগধ সাম্রাজ্যের অধিভুক্ত ছিল।
আর্য শাসনামলে নন্দ সাম্রারাজ্য ছিল বাংলার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় যুগ। নন্দ রাজাদের জন্ম হয়েছিল বাংলায়। উগ্রনন্দের বা ধননন্দের সময় ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে শক্তিশালী পুরুর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। সেই যুদ্ধে জয়ী হলেও, সামনে অগ্রসর হননি আলেকজান্ডার। তার জন্য একটি বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন নন্দ রাজা। গ্রিক ইতিহাসবিদ পুলতার্কের বর্ণনাতেও সে ইতিহাসের উল্লেখ রয়েছে। পুলতার্কের মতে,
“গঙ্গারিডাই ও প্রাসি এর রাজা তার (আলেকজান্ডার) জন্য ২,০০,০০০ পদাতিক, ৮০,০০০ অশ্বারোহী বাহিনী, ৮,০০০ যুদ্ধরথ ও ৬,০০০ হস্তিবাহিনী নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন।”
মগধ অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল মৌর্য সাম্রাজ্য। এই সাম্রজ্যে অশোকের রাজত্বকালে দক্ষিণ এশিয়া, পারস্য, আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছিল। বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজা ছিলেন শশাঙ্ক যিনি ৬০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে রাজত্ব করেছিলেন। শশাঙ্ক ছিলেন মগধের গুপ্ত সম্রাট মহাসেন গুপ্তের সীমান্তবর্তী মহাসামন্ত। তিনি বাংলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্র করে গৌড় (পদ্মা ও ভাগীরথি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল) নামের জনপদ গড়ে তোলেন। খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে তিনি রাজত্ব করেছেন বলে ধারণা করা হয়। কারো মতে, তিনি ৬০০ থেকে ৬২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজত্ব করেছিলেন। তার রাজধানীর নাম ছিল কর্ণসুবর্ণ বা কানসোনা। শশাঙ্কের শাসনামলেই সম্ভবত বাঙালি ভাষাতাত্ত্বিক নৃ-গোষ্ঠী নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল। তার মুত্যুর পর হর্ষবর্ধন বাংলার গৌড় দখল করে সাম্রজ্যের পতন ঘটে। অন্যদিকে কামরূপের ভাস্করবর্মন গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ দখল করে নেন।
গৗড় সাম্রাজ্যের পতনের পর পাল সাম্রাজ্যের যুগ ছিল বাংলার ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল যুগ। পাল রাজাগণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন উত্তরবঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চলে। পাল সাম্রাজ্যের রাজাগণ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা গোপাল। গোপালের আগমনের আগে বাংলা পাঁচটি খণ্ডে বিভক্ত ছিল যথা- অঙ্গ, বঙ্গ, গৌড়, সুহ্ম ও সমতট। তিনি খণ্ডরাজ্যগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং বিহার, উড়িষ্যা ও কামরূপও দখল করেন। পাল রাজাদের সময়েই বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদসমূহ রচিত হয়। পাল রাজবংশকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশের জনক মনে করা হয়।
প্রাথমিক জীবনে পাল রাজাদের অধীনস্থ দক্ষিণবঙ্গের সামন্তপ্রভু বিজয় সেন উত্তরবঙ্গের এক যুদ্ধে পাল সম্রাট মদনপালকে পরাজিত করে রাজধানী গৌড় দখল করেন। তিনি ত্রিহুত (উত্তর বিহার) ও কামরূপ (পশ্চিম আসাম) পর্যন্ত রাজ্যবিস্তার করেন। বিজয় সেন শৈব ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তার সময়ে কনৌজ, অযোধ্যা ও হরিদ্বার থেকে যে সমস্ত কায়স্থ এদেশে আসেন, তারাই মূলত বাঙালি কায়স্থদের আদিপুরুষ। বিজয় সেনের পৌত্র লক্ষণ সেনই সম্ভবত বাংলার শেষ ভূমিপুত্র রাজা ছিলেন। লক্ষণ সেনের সময় ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির আফগান সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর অতর্কিত আক্রমণে গৌড়ের পতন হয়, লক্ষণ সেন পালিয়ে পূর্ববঙ্গে আশ্রয় নেন।
খিলজীর আক্রমণের সময় লক্ষণ সেন তীর্থকেন্দ্রে অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিলেন। লক্ষণ সেনের পতনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলায় মুসলিম তথা বিদেশিদের শাসনের সূচনা হয়। খিলজীরা কখনও স্বাধীনভাবে কখনও দিল্লির অধীনে থেকে বাংলা শাসন করেন। বখতিয়ার খিলজীর নদিয়া জয়ের পর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা স্বাধীন ছিল না।
মুসলিমদের আগমনের পর বাংলাকে বিভিন্ন সময়ে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা শাসন করেছে। তুর্কি-মঙ্গোলিয়ান বংশধর জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাভূত করে ভারতবর্ষে মোঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। বাবরের ছেলে হুমায়ুন ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে গৌড় দখল করে বাংলায় আসেন। হুমায়ুনের ছেলে আকবর ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলা জয় করেন। তখন বাংলার রাজধানী ছিল রাজমহল। মুঘলদের হাত থেকে বাংলার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য দাউদ খান কররানী ও বাংলার বারোভুঁইয়া এবং তাদের নেতা ঈশা খাঁ বহুদিন পর্যন্ত প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যান। সেই সময় বাংলায় ভুঁইয়াদের সৈন্যদল ও নৌবহর ছিল।
১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর বাংলার সুবাদার মুর্শিদ কুলি খাঁ স্বাধীনভাবে বাংলার রাজকার্য পরিচালনা করেন। বাংলার রাজধানী ছিল তখন মুর্শিদাবাদ। মুর্শিদ কুলি খাঁর পৌত্র সরফরাজ খানকে হত্যা করে আলীবর্দী খান বাংলার নবাব হন। তার সময়েই মারাঠারা (বর্গী নামে খ্যাত) বাংলা আক্রমণ করেছিল।
১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ এপ্রিল আলীবর্দী খান মৃত্যুর আগে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করে যান দ্বিতীয় মেয়ে আমেনার ছেলে সিরাজউদৌলাকে। নবাব সিরাজউদৌলা ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২২ জুন পর্যন্ত বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা শাসক ছিলেন। তার শাসনকাল ছিল মাত্র ১৪ মাস ১৪ দিন। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদৌলা পরাজিত হলে বাংলা চলে যায় ব্রিটিশদের অধীনে।
ইংরেজদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পেতে প্রথম বিদ্রোহ করেছিলেন মীর কাশিম।
১৭৬৩ সালে বক্সারের যুদ্ধে মীর কাশিম পরাজিত হলে বাংলায় ইংরেজদের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে স্বাধীনতার দাবিতে বাংলায় চলতে থাকে ছোট ছোট বিদ্রোহ। যার মধ্যে ছিল ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, মেদিনীপুরে আদিবাসী কৃষক বিদ্রোহ, কুমিল্লার কৃষক বিদ্রোহ, সন্দ্বীপের কৃষক বিদ্রোহ, তাঁতি বিদ্রোহ, চাকমা বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, লবণচাষী বিদ্রোহ, রেশম চাষী বিদ্রোহ, রংপুরের কৃষক বিদ্রোহ, যশোর-খুলনার কৃষক বিদ্রোহ, বীরভূম কৃষক বিদ্রোহ, বীরভূমে বাকুড়ায় আদিবাসী বিদ্রোহ, বরিশালের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষক বিদ্রোহ, ময়মনসিংহ গারো বিদ্রোহ, ময়মনসিংহ কৃষক বিদ্রোহ ইত্যাদি। সেই ধারাবাহিকতায় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য বাঙালি ইংরেজদের বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ নামে ইতিহাসখ্যাত সেই বিদ্রোহ ছিল আধুনিক বাংলার প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম।
‘সিপাহী বিদ্রোহ’ সাফল্য না পেলেও বাঙালি অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়েছিল। যা পরবর্তীকালে ছড়িয়ে পড়েছিল সুন্দরবন অঞ্চলে কৃষক বিদ্রোহ, সিরাজগঞ্জে কৃষক বিদ্রোহ, কিশোরগঞ্জে কৃষক বিদ্রোহ এবং তেভাগা কৃষক বিদ্রোহ হিসেবে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা ভারত ভাগের নামে বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রে যুক্ত করে দেয়।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ শাসনের অবসান হলেও বাংলার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা মেলেনি। গোটা বাংলার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাংশ পূর্ব-বাংলা পূর্ব-পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়, পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিমাংশ পশ্চিমবঙ্গ নামে এবং পূর্ব প্রান্তের কিছু অংশ ত্রিপুরা নামে যুক্ত হয় ভারতের সঙ্গে। বাংলার অখণ্ড ভৌগোলিক সত্তার আরও কিছু খণ্ড অংশ বিহার, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা এবং আসাম নামের প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়।
যে ধর্মভিত্তিক চেতনা থেকে ১৯৪৭ সালে বাংলা বিভাজন, সেই রাজনীতির বদলে ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক পরিচয় প্রতিষ্ঠার নতুন রাজনীতি ও আকাঙ্ক্ষা পূর্ব বাংলায় প্রবল হতে থাকে ১৯৪৮ সাল থেকেই।
ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ৬-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং সত্তরের নির্বাচন ছিল প্রকৃত ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের ‘জাতীয়তাবাদী’ আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ‘জাতীয়তাবাদী নেতা’ হিসেবে মানুষের কাছে স্বীকৃতি পান। তার নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ’ নামের ভাষাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র। যার মাধ্যমে আদিবাসী জনগোষ্ঠীসহ এতদঞ্চলের সকল মানুষের মতোই নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি রক্ষা, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং অস্তিত্ব রক্ষার সার্বভৌম স্বীকৃতি পেয়েছেন। হাজার বছরের ইতিহাসের আবর্তন-বিবর্তনের ধাপ পেরিয়ে স্বাধীন ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছে। এই সুনির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল হাজার বছরের ইতিহাসের পথপরিক্রমায় একটি বিপুল জনগোষ্ঠীর সমাজ ও সংস্কৃতি রচনার বহুবিচিত্র অভিজ্ঞতার আলোকে একটি ‘সাংস্কৃতিক অঞ্চল’-এ পরিণত হয়েছে।
লেখক: শিক্ষক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক