বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিল্পায়নে জোর দিতে হবে

  • আব্দুস সালাম মুর্শেদী   
  • ৩ মার্চ, ২০২১ ০৮:১৯

উত্তরণজনিত কর্মসংস্থানের ঝুঁকি কমাতে শিল্পায়নকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শিল্পায়ন হলে কর্মসংস্থান বাড়বে। বাড়বে মানুষের আয়। আর আয় বাড়লে মানুষ বেশি খরচ করতে পারবে।

উন্নয়নশীল দেশে টেকসই উত্তরণের অভিযাত্রায় সবার আগে আমলাতন্ত্র ও দীর্ঘসূত্রতা ঝেড়ে ফেলতে হবে। এগুলো দূর করা গেলে বাংলাদেশ উত্তরণ প্রস্তুতির পরীক্ষায় ৫০ ভাগ এগিয়ে যাবে। দায়িত্বশীলদের দায়িত্বের জায়গা থেকে সঠিক কাজটি সঠিক সময়ে করে গেলে উত্তরণের অভিযাত্রায় বাংলাদেশকে আর পিছু হটতে হবে না।

গত শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএন-সিডিপি) বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে চূড়ান্ত উত্তরণের সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে প্রস্তুতির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সময় দিয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে সক্ষমতা বাড়িয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত হতে হবে বাংলাদেশকে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা নিয়ে সফল বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য দ্রুত শিল্পায়নের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে স্বল্পোন্নত দেশের ধ্যানধারণা অচল। আমরা উত্তরণপ্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু মানসিকতার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।

সবকিছুতেই সময়ক্ষেপণ হয়। দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সেবা সরবরাহ ও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা নিয়েও প্রশ্ন আছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন হয়েছে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিতে। সেটা পর্যাপ্ত নয়। মিলছে না সব সেবা। রয়েছে আমলাতন্ত্র ও দীর্ঘসূত্রতা। এগুলো জিইয়ে রাখা হলে উত্তরণপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।

অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে এখনই প্রয়োজন নির্দিষ্ট সময়ে পরিকল্পনা নেয়ার।শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, দক্ষতা ও বিনিয়োগ- এগুলো চালকের মতো। পারস্পরিক নির্ভরশীল বলে একটার ঘাটতিতে আরেকটা দৈন্য তৈরি হয়। প্রস্তুতিপর্বের এই সময়টিতে সব কটি সূচকেই সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া জরুরি। তবেই অর্থনীতির আকার ও গতি উত্তরণপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

উত্তরণজনিত কর্মসংস্থানের ঝুঁকি কমাতে শিল্পায়নকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শিল্পায়ন হলে কর্মসংস্থান বাড়বে। বাড়বে মানুষের আয়। আর আয় বাড়লে মানুষ বেশি খরচ করতে পারবে। এতে চাহিদা ও ভোগজনিত বাড়তি খরচ অর্থনীতিতে প্রবাহিত হবে, যা মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়াতে সহায়তা করবে এবং প্রবৃদ্ধিকে সচল রাখবে।

তবে শিল্পায়ন এমনি এমনি হয়ে যাবে না। এর জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ আনতে হবে। বিনিয়োগ এখন যা আছে, কমপক্ষে তার দ্বিগুণ পর্যায়ে উন্নীত করতে পারলেই উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কার্যকর সুফল আসবে।

এই বিনিয়োগ শুধু দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এলে হবে না। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও (এফডিআই) আসতে হবে।

সম্ভাবনার জায়গাটি হলো বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সুযোগ বাংলাদেশের হাতে রয়েছে। আমরা এখন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের ক্ষেত্রে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশের একটি। দরকার শুধু বিনিয়োগের সুযোগসুবিধা বাড়ানো এবং ব্যাপকভাবে প্রচার। এ ছাড়া দেশের ব্র্যান্ডিংকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে।

আমাদের রপ্তানি বাস্কেট খুব বেশি বড় নয়। তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য পণ্যে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অংশীদারত্বও কম। আবার রপ্তানিযোগ্য পণ্যের বৈচিত্র্যও কম।

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো এ ব্যাপারে খুব একটা সক্রিয় ভূমিকা রাখছে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের যথেষ্ট উন্নতির সুযোগ রয়েছে। এটি নিশ্চিত করতে পারলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের নতুন নতুন পণ্যের বাজার সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে ।

আব্দুস সালাম মুর্শেদী: শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা ও সংসদ সদস্য

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহ আলম খান

এ বিভাগের আরো খবর