রেকর্ড গড়া হয় রেকর্ড ভাঙার জন্যে- এমন কথা শোনা যায় রেকর্ড ভাঙা-গড়া ব্যক্তিদের মুখেই। রেকর্ড সম্পর্কিত বিষয়াদি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছে আর্থার গিনেসের হাত ধরে। ১৭৫৯ সালে সুইজারল্যান্ডের ডাবলিনের সেন্ট জেমস গেট নামক স্থানে গিনেস ব্রিউরি নামক প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে। যা পরে ২০০০ সাল থেকে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নামে পরিচিতি পায়। মূলত এটি একটি বার্ষিক প্রকাশনা। যেখানে বিশ্বের অনন্য কীর্তিগুলো স্থান করে নেয়।
বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশও বহুবার এতে জায়গা করে নিয়েছে। তবে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তি উদ্যোগে। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে এবার সুযোগ এসেছে ‘জাতিরাষ্ট্র’ হিসেবেও নাম লেখাবার। আর তা হলো রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহহীন জনগণের গৃহায়ন ব্যবস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে। যার নায়ক বাঙালির শক্তি-সাহস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বেই এবারে বিশ্ব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে ৭০ হাজার পরিবার ঘর পেতে যাচ্ছে গৃহহীন মানুষ। এর মধ্যে কার্যক্রম শুরুও হয়েছে।
যা প্রমাণ করে শেখ হাসিনার রাজনীতি মৌখিক সাম্য নীতি নির্ভর কিংবা অদূরে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে আর্তনাদের প্রচার নয়। বরং তার রাজনীতি নিভৃতচিত্তে জনগণের জন্যে, জনগণের হয়ে। এক কথায় শুধুই জনগণের জন্যে।
বছরের পর বছর খোলা আকাশ কিংবা রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট পাওয়া সাধারণ জনগণ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঘোষিত জনকর্মসূচির অংশ হিসেবে আধা পাকা ঘর এবং জমি পাচ্ছেন। যার মালিকানা হবে স্বামী এবং স্ত্রী দুজনেরই। যেখানে দুইটি কক্ষ, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর, একটি শৌচাগার এবং খানিক খোলা জায়গা থাকছে। সরকারি খাস জমিতে হওয়া ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে এই ঘরগুলো দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। শুধু তাই নয় এখানে স্থানান্তরিত হতে মালামাল পরিবহণের জন্যেও দেয়া হচ্ছে ৪ হাজার টাকা।
এই ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়ায় শুধু যে ঘরই দেয়া হচ্ছে বিষয়টা এমন নয়। কারণ এর মালিকানা নারী-পুরুষ দুজনের অংশগ্রহণ থাকছে।
অর্থ্যাৎ শেখ হাসিনা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসছেন। তাছাড়াও অর্থনৈতিক মানদণ্ড যেখানে ক্ষমতার রাজদণ্ড সেই মানদণ্ডকে শেখ হাসিনাই নারীদের দিয়ে চলেছেন অনন্য সাধারণ উপায়ে। যার উদাহরণ স্বল্প ব্যবস্থাপনা এবং বিনামূল্যে নারীদের মাঝে ব্যাংক হিসাব ব্যবস্থাকরণ। যার মাধ্যমে নারীরা এখন সন্তানদের বৃত্তি, ভাতা গ্রহণ করছেন। পাশাপাশি শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সারা জীবন জনগণকে সেবা প্রদানকারী সরকারি কর্মচারীদের মাস শেষে পেনশন ভাতা অ্যাকাউন্টে জমা পাচ্ছেন। যা তারা মোবাইলের এক ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে জানতে পারছেন। তাই বলা যায় জীবনমান বদলের যে আকাঙ্ক্ষা ও এর বাস্তবায়ন অবলোকন এবং অনুভবে প্রতিনিয়ত সুযোগ তৈরি করে চলেছেন।
নজরে আনার বিষয় হলো এই চলমান কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উদযাপন চোখে পড়েনি।
গৃহ বণ্টনের চলমান কর্মসূচির প্রথম পর্যায় অর্থাৎ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রায় ৭০ হাজার পরিবারের আধা পাকা ঘর পাবার বিষয়টি নিয়ে উদযাপনের উত্তাপ নেই। অথচ এটিই বিশ্বে গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যা এখন পর্যন্ত বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। এটিই মাদার অফ হিউম্যানিটি শেখ হাসিনার কর্মময় পথচলার অনিন্দ্য আচরণ।
ব্যক্তিকেন্দ্রিক আচরণ অপেক্ষা দেশ বা জাতিকেন্দ্রিক অর্জন আরও মহত্ত্বের। কাজেই এই দেশ বা জাতিকেন্দ্রিক অর্জনের বিশ্বদলিল নির্মাণের একটা উদ্যোগ গ্রহণ বোধকরি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রকে আরও গৌরব এনে দেবে। সে হিসেবে এখন প্রয়োজন জনগণের হয়ে, জনগণের জন্য লড়া। শেখ হাসিনার আবেগকে সম্মান প্রদর্শন এবং দেশের অর্জনকে উদযাপনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। যাতে বিশ্ববাসী দেখবে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে!
লেখক: রাজনৈতিক কর্মী