দেশের যোগাযোগ খাতে বদলে যাওয়ার চিত্র এখন দৃশ্যমান। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এক অন্যরকম বাংলাদেশ দেখবে গোটা বিশ্ব। অর্থাৎ আগামী বছরের মধ্যে বড় চারটি মেগা প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। এ তো গেল একাংশের আলোকিত হওয়ার গল্প। এমন অনেক গল্প আছে যা বলার মতো।
সত্যিই বদলে দেয়ার এক অনন্য গল্প এখন দেশজুড়ে। লগ্ন যখন একেবারেই ‘শুভ’ তখন যা অসাধ্য তাও মানুষের প্রয়োজনে করতে ক্ষতি কি না। একেবারেই ক্ষতি নেই। ইচ্ছে করলেই অসাধ্য সাধন সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা আর একটু বড় দৃষ্টিতে দেখার। তাই সময় বলছে স্বপ্ন দেখার সময়ে দেখতে ক্ষতি নেই।
সংকটের অমাবস্যা কাটিয়ে যখন আকাশজুড়ে চকচকে পূর্ণ পূর্ণিমার চাঁদ তখন আর বসে থেকে লাভ কী! সুন্দর এই লগ্নে জনস্বার্থে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন বা খাল উদ্ধার কি হবে না? যদি দুই কোটি মানুষের নগর হয় তাহলে কমবেশি সবাই এই শহরে জলাবদ্ধতার শিকার। এর বড় কারণ হলো খালগুলো চোখের সামনে দখল হয়ে এখন বিলুপ্তির পথে অনেকগুলো। এক সময়ের বড় খালগুলো দখলের থাবায় নালা কোথাও ড্রেনে রূপ নিয়েছে। ৫০ বছর আগেও নাকি ঢাকায় ৭০টির বেশি খাল ছিল। এখন ক’টি আছে?
বছরের পর বছর সব মহল থেকে দাবি ওঠলেও খাল উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। সাধারণ মানুষের প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে চলতে হয়েছে। এখন তাই। তেমনি ড্রেনের ময়লা পানির দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্টের কথা তো আর নতুন করে বলার কিছু নেই।
দীর্ঘ সময় পরে হলেও কাঁধ থেকে শনি নেমেছে। অর্থাৎ ওয়াসার হাতে থাকা খালগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিয়েছে। ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব এখন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। আগে দীর্ঘ সময় জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যর্থতা কাঁধে নিয়ে এ দায়িত্ব পালন করেছে, পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন হলো, যেখানে কোটির বেশি মানুষের দুর্ভোগের বিষয় জড়িত সে কাজটি আরও আগে প্রাধান্য পাওয়া উচিত ছিল। কেন পায়নি, সে প্রশ্ন একেবারেই বিস্তর। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় থেকে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল এটা সত্যি।
সিটি করপোরেশন ভাগ হয়ে যখন দক্ষিণে সাঈদ খোকন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় একটি অনুষ্ঠান করলেন; স্পষ্ট মনে আছে তিনি সেখানে ঘোষণা দিলেন, কিছু দিনের মধ্যেই মতিঝিল-পল্টন এলাকায় কালভার্ড রোডের ঢাকনা খুলে দেয়া হবে। খালে থাকবে পরিচ্ছন্ন পানি। চলবে অত্যাধুনিক ওয়াটার বোট। যানজটের ধকল থেকে বাঁচতে মতিঝিল থেকে পল্টন পর্যন্ত যাত্রীরা নৌকায় আসতে পারবেন। কথা কথাই রয়ে গেল। কাজ হয়নি।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার খাল উদ্ধার, জলাবদ্ধতা নিরসন ও খাল দিয়ে নৌকা চলাচলের আরেকটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছে সবার সামনে। খালগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়ার পর চলছে উদ্ধার অভিযান। এই মুহূর্তে রাজধানীর সবচেয়ে বড় খবর এটি। কয়েকদিন ধরেই নগরীর মানুষের চোখ উত্তর সিটির বোল ড্রেজারের দিকে। প্রভাবশালীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দালানসহ বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে খালের জমি চিহ্নিত করা একেবারেই দুরূহ কাজ। সত্যিই দুরূহ। এসব কাজে বুকের পাটা লাগে। সাহস লাগে। লাগে খুঁটির জোর। লোভ, লালসা আর পাওয়া না পাওয়াসহ ভোটের রাজনীতির চিন্তা করলে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা যায় না। যেমন মহাসড়কের পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনা ও সড়ক-মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করা যায়নি তিন চাকার পরিবহন।
ইতোমধ্যে উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সিএস জরিপ অনুসারে অনতিবিলম্বে ঢাকা শহরের খালের সীমানা চিহ্নিত করে খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পুনঃখনন করে পানি ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি, পাড় বাঁধাই করে সবুজায়ন, ওয়াকওয়ে (হাঁটার পথ) ও সাইকেল লেন তৈরির করা হবে। খালগুলো দখলমুক্ত করার জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ঢাকার মানুষের জন্য এর চেয়ে আশা আর স্বপ্নের কথা কী হতে পারে? এটা সম্ভব। যেমন করে সম্ভব হয়েছে নদীর জায়গা উদ্ধার। কাজটি হয়ে গেলে আরেকটু উন্নত শহরের কাছাকাছি আমরা সহজেই চলে যাব। তখন কিন্তু খাল বা নদী দখল করা এত সহজ হবে না। অর্থাৎ আজকের উদ্যোগগুলো আগামী দিনের জন্য অনেক বড় রকমের সতর্ক বার্তা হয়ে থাকবে।
১৯৬৩ সালে এটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের হাতে ছিল ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা। এরপর পৌরসভা এ দায়িত্ব পালন করত। ১৯৮৮ সালে এটি ঢাকা ওয়াসাকে হস্তান্তর করা হয়। যদিও কাজটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের কাজ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সংক্রান্ত বহু আলোচনা পর্যালোচনা হয়েছে। এরপর একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে সেগুলো মূল্যায়ন করা হয়েছে। কমিটির ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঢাকা ওয়াসা থেকে দুই সিটি করপোরেশনের হস্তান্তরের প্রস্তাব করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে হস্তান্তরের জন্য সমঝোতা সাক্ষর হয়েছে। সে অনুযায়ী ড্রেনেজ-সংক্রান্ত ঢাকা ওয়াসার জনবল ও সম্পদ দুই সিটি করপোরেশনের কাছে চলে যাবে।
গত প্রায় দুই দশক থেকেই ঢাকায় একটু ভারী বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা হয়। এটি নিরসনের মূল দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাঁধে থাকলেও সিটি করপোরেশনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর সঙ্গে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ও বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোও জড়িত।
জলাবদ্ধতা নিরসনের অংশ হিসেবে ঢাকা ওয়াসা শহরের ২৬টি খাল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) এবং প্রায় ৩৮৫ কিলোমিটার বড় আকারের নালা ও চারটি পাম্পস্টেশন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করে। দুই সিটি করপোরেশন দেখভাল করে প্রায় ২ হাজার ২১১ কিলোমিটার নালা। এখন থেকে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা সব নালা ও খাল দুই সিটি করপোরেশনের হাতে গেল।
এরই ধারাবাহিকতায় মেয়র আতিকুল ইসলাম সাহসের সঙ্গেই বলেছেন, ওয়াসার কাছ থেকে খালের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরই খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদে আমরা কাজ শুরু করেছি। যতই প্রভাবশালী হোক না কেন খাল দখলদার কেউ ছাড় পাবে না। খালপাড়ের সব বহুতল ভবন ভেঙে দেয়া হবে।
মানচিত্র অনুযায়ী খালের জায়গায় যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, তা একতলা হোক বা দশতলা হোক, ভেঙে ফেলা হবে। এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খালেও এই অভিযান চালানো হবে। ইতোমধ্যে রাজধানীর ইব্রাহিমপুর এলাকায় ইব্রাহিমপুর খাল পরিষ্কারকরণ ও খালের দুই পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলছে। প্রথম দিন থেকেই সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে এই অভিযানে। অভিযানের সময় দেখা দেখে উৎসুক জনতা করতালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন। মেয়রের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
উদ্ধার অভিযানে বাধা দেয়ার খবর আসেনি একটিও। একটি বিষয় সবার কাছেই পরিষ্কার, মেয়ররা এত বড় কাজ হাতে নিয়েছেন কীভাবে? কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজে মেয়র দু’জনকে পছন্দ করেছেন। ভালো মানুষ। পরিচ্ছন্ন ইমেজ সবার। তাই নির্বাচিতও হয়েছেন। তাদের কোনো কাজ মানেই প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি সমর্থন রয়েছে। এই সমীকরণ যখন একেবারেই সঠিক, তখন নিজেদের আড়াল করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। কোনো কথা নেই। নেই আওয়াজ। মুখ বুজে সবকিছু সহ্য করতে হচ্ছে। চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে দখলের বিশাল অট্টালিকা।
আমরা সাধারণ মানুষ হিসেবে শুধু ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে এমন স্বপ্ন দেখছি তা নয়। অনেক সময় গড়ালেও ওয়াসার এমডিও আমাদের মতো করেই স্বপ্ন দেখছেন। খাল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, ২০১২ সালে ঢাকা ওয়াসা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার (খাল ও নালা রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন) দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে ন্যস্ত হওয়া উচিত।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হিসেবে তাজুল ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পর এ উদ্যোগে গতি আসে। এর ফলে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর অনুষ্ঠানটি হয়। এর মাধ্যমে ঢাকা শহরের বৃষ্টি-বর্ষা ও প্লাবনের পানিনিষ্কাশন আরও বেগবান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে এটা সত্যি যে তিনি ইতিবাচক স্বপ্ন না দেখলেও হয়ত খাল তার হাতছাড়া হয়ে যেত। সময়ের কারণে হয়ত তিনিও পালে হাওয়া লাগিয়েছেন।
আতিকুল ইসলামের খাল নিয়ে পরিকল্পনা এখন মাথায়। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় আমরা দেখেছি, খালের সঙ্গে পয়ঃনালার সংযোগ দেয়া হয়েছে। সেফটি ট্যাংক করে এমন সংযোগ বন্ধ করতে হবে। ওয়াটার ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকার পশ্চিমাংশে বাঁধ তৈরি করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ঢাকার পূর্বাংশে বালু নদীর পাশ দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করার কথা বলা হচ্ছে, সেটি অবশ্যই ‘এলিভেটেড’ হতে হবে।
‘খাল তুমি কার’, নিজের এমন উদ্ধৃতির কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আজ খাল ঠিকানা পেল। খাল সিটি করপোরেশনের হয়ে যাচ্ছে। এসব খাল পরিষ্কার করে খালে আগের মতো পানির গতি ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আতিকুল ইসলাম।
ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হস্তান্তরকে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত বিশাল কর্মযজ্ঞের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ঢাকা শহরে পানি জমলে কাল থেকেই প্রশ্ন উঠবে, কিন্তু ডিএসসিসি এ ব্যাপারে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ঢাকার জিরানি, মান্ডাসহ তিনটি খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট (পান্থপথ ও সেগুনবাগিচা) পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাসে এ কাজ করা হবে। কালুনগর খাল আংশিক পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর ধোলাই খাল ও বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল নিয়ে কাজ করা হবে। ডিএসসিসি নিজস্ব অর্থায়নে কাজগুলো করবে। এ ছাড়া খাল-নালা উন্নয়নে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে বলেও জানান ডিএসসিসি মেয়র। ঢাকা শহরের খালগুলো উদ্ধার ও পরিষ্কার করে ঢাকা শহরকে একটি নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ার ঘোষণা দেন ফজলে নূর তাপস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকা শহরকে আমরা দৃষ্টিনন্দন, বাসযোগ্য, স্বাস্থ্যকর নগরীতে রূপান্তর করতে চাই। ঢাকা শহরকে ঠিক করতে হলে যার যে দায়িত্ব, সেটি সঠিকভাবে পালন করতে হবে। যে কাজ আমি করলে ঠিক হবে সেটি আমি করব, আর যে কাজ আমি করলে ঠিক হবে না, সেটি ধরে রাখা ঠিক হবে না।’
ঢাকার মৃত খাল, কালভার্ট ও ড্রেনের পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে শুরু হয়েছে তিন মাসের ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’। শুরু করেছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। প্রথম দিন পান্থপথের বক্স কালভার্ট পরিষ্কার কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
ডিএসসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পান্থকুঞ্জ পার্ক থেকে শুরু হওয়া কালভার্টটি শেষ হয়েছে ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে। কালভার্টটিতে মোট ২৪টি মুখ রয়েছে। ২৪টি মুখে আটকে থাকা কঠিন বর্জ্য অপসারণের পরও যদি কালভার্টটি প্রবহমান না হয়, তাহলে কালভার্টের ভেতরে অক্সিজেনসহ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নামিয়ে দিয়ে তা পরিষ্কার করা হবে।
নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হলেও নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হচ্ছে। সারা দেশে নদী দখলে যুক্ত ৫০ হাজার প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রো রেল কর্ণফুলি টানেলের মতো বড় মেগা প্রকল্প এখন দ্যুতি ছড়াতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সড়ক ও রেল যোগাযোগে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। মানুষের প্রয়োজনে সব কাজ যখন হচ্ছে তবে ‘সদিচ্ছা’ প্রমাণে আর কোনো ব্যাখ্যার দরকার হয় না। প্রয়োজন উদ্যোগ নেয়া। এগিয়ে আসা। আশা করি মেয়রদের কাজের মধ্য দিয়ে খাল নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার বাস্তব রূপ পাবে অচিরেই। জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি সবকটা খাল আবারও প্রাণ ফিরে পাবে। কংক্রিটের নগরীতে চলবে পাল তোলা নৌকা আর ওয়াটার ট্যাক্সি। আমরা সেদিনের অপেক্ষায়।
লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক।