বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সময়ের জরুরি দাবি

  • আফতাব চৌধুরী   
  • ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:৪৪

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর উষ্ণায়নের জন্য ২০৫০ সালের মধ্যে ১৫-৩৭ শতাংশ বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বায়োডাইভার্সিটির ব্যাপারে প্রকৃতি কোনো দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না। সুযোগ আর পাওয়া যাবে না যদি না এখনই কাজ শুরু হয়। কিন্তু এসব কথা কে কাকে বোঝাবে?

এক সময়ের সবুজ-সজীব প্রাণসমৃদ্ধ পৃথিবীটাকে মানুষই নিজেদের একচেটিয়া ব্যবহারে আজ বসবাসের প্রায় অনুপযোগী করে তুলছে। সভ্যতার চাহিদায় আর চাহিদার সভ্যতার জন্য অরণ্য সাফ করে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে পৃথিবীকে গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

সমুদ্রের গভীরে, পাহাড়ের চূড়ায় বা আকাশের বুকজুড়ে আজ শুধু দূষণ আর দূষণ! গ্রিন হাউসের গ্যাসে আজ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ছোট্ট শিশুরাও এখন বুঝতে পারে বাস্তুতন্ত্র এখন আর স্বাভাবিক নেই।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। এর প্রভাব ইতোমধ্যে দেখা গেছে বিভিন্ন অঞ্চলে। মেরুর হিমবাহ গলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তলিয়ে যাওয়ার মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে পৃথিবীর নিম্ন অঞ্চলগুলো। ঘন ঘন দেখা যাচ্ছে সুনামি, বন্যা, ভূমিকম্পসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

প্রকৃতির এমন বৈরিতা কি নিছক স্বাভাবিক ঘটনা, নাকি ক্ষুব্ধ প্রকৃতির নীরব প্রতিশোধ এসব দুর্যোগ?

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক প্রাণী-গাছ, বিলুপ্তির পথে অনেক প্রজাতি। বদলে গেছে বাস্তুসংস্থান। বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে প্রাণীরা।

বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় সব দেশ একমত হলেও, তা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে কার্বন নিঃসরণকারী অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

এসবের পরও পৃথিবী রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে অনেকেই। উন্নত দেশের পাশাপাশি গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও।

সম্প্রতি এক ঘোষণায় দেশে বনাঞ্চলের পরিধি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে দেশেও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। কমানো যাচ্ছে না বন্য প্রাণী হত্যা ও পাচার। দেদারসে কাটা হচ্ছে গাছ।

একটি হিসাবে আমাদের দেশে ১৫০টি প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৭০০টি প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ১০০টি প্রজাতির, উভচর প্রাণী প্রজাতি ৯০ এবং মাছের প্রজাতি রয়েছে ৪৫০টি। আরও রয়েছে অজানা। আমাদের দেশে পৃথিবীর মোট প্রাণ-প্রজাতির ১৭২টি রয়েছে, শতাংশ হিসাবে ২.৯। এদের রক্ষা করতে হবে না?

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর উষ্ণায়নের জন্য ২০৫০ সালের মধ্যে ১৫-৩৭ শতাংশ বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বায়োডাইভার্সিটির ব্যাপারে প্রকৃতি কোনো দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না। সুযোগ আর পাওয়া যাবে না যদি না এখনই কাজ শুরু হয়। কিন্তু এসব কথা কে কাকে বোঝাবে?

প্রতিবেশী ভারতেই রয়েছে এশিয়ার মোট বাঘের ৩৫ শতাংশ, রাইনো ৮৫ শতাংশ এবং ৮০ শতাংশ হাতি। সীমান্তের এপাড়ে বাংলাদেশে এই সংখ্যা নগণ্য। আমরা যদি এ মুহূর্তে প্রাণিকুল রক্ষায় এগিয়ে না আসি তবে ভয়ংকর এক পৃথিবী অপেক্ষা করছে আমাদের উত্তরসূরির জন্য।

লেখক: সাংবাদিক-কলাম লেখক, বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত।

এ বিভাগের আরো খবর