বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সোহরাই পরবের জন্য এ কেমন দণ্ড?

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১২:৫৯

ভাবা যায় ঈদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন বা বুদ্ধপূর্ণিমা পালন করার জন্য প্রশাসন কাউকে দণ্ড দিয়েছে! তাহলে সারিসারনা ধর্মবিশ্বাসী সাঁওতালদের সোহরাই পরব পালন করতে গিয়ে কেন দণ্ডিত হতে হবে। জেলখানায় ঢুকতে হবে? এভাবেই রাষ্ট্রের সঙ্গে নিম্নবর্গের এক দীর্ঘ দূরত্বের ঘের তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন।

কার্তিকে অনুষ্ঠিত হয় বাঙালি হিন্দুদের শ্যামা কালী পূজা। একইসঙ্গে মুণ্ডাদের গোহাইল পরব ও হাজংদের চরমাগা। এ সময়েই সাঁওতাল গ্রামে শুরু হয় বৃহত্তর ধর্মীয় সামাজিক পরব ‘সোহরাই’।

সোহরাই পরবের এক বিশেষ কৃত্যরীতি হলো- গ্রাম থেকে কয়েকজন বনে যান। বন্যপ্রাণী শিকার করে বাড়িতে জাহেরথানে (পূজাস্থলে) আসেন। এই শিকারকৃত্যের নানা রীতি ও নিষেধাজ্ঞা আছে। গর্ভবতী, শাবক, ডিম, সম্প্রতি প্রসব করেছে এমন প্রাণী, আটকা পড়া ভীত, অসুস্থ এ রকম প্রাণী শিকার করা যায় না। তাছাড়া সাঁওতাল সমাজের টোটেম অনুযায়ী সবাই সব ধরনের প্রাণী শিকারও করতে পারে না।

এক এক গোত্র এক এক ধরনের বন্যপ্রাণী টোটেমপ্রথার মাধ্যমে সংরক্ষণ করে। আর এই শিকার কোনোভাবেই বাজারে বিক্রি বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা যায় না। এমনকি সমাজের সবাই মিলে ‘উদরপূর্তি’ করে খাওয়ার জন্য এই শিকাররীতি নিষিদ্ধ।

বছরব্যাপী সাঁওতাল সমাজে নানা সংরক্ষণকৃত্য আছে যা প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের উদ্ভিদ-প্রাণী কী অণুজীবদের সুরক্ষায় পালন করা হয়। এই জটিল সংরক্ষণরীতির একটি চর্চা হল সোহরাই পরবের শিকারকৃত্য। বন থেকে বহুদূরে দালানে বাস করে গাড়ি নিয়ে বন্দুক হাতে দড়াম করে কোনো বন্যপ্রাণী ‘খুন’ করার মতো বিষয় এটি নয়। এটি অরণ্যের সঙ্গে সাঁওতালি জনজীবনের এক জটিল প্রতিবেশগত সম্পর্ক।

যা হোক এমনই এক সোহরাই পরবের রাতে ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর মৌলভীবাজারের বড়লেখার সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল গ্রাম থেকে নয় জন আদিবাসী মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক এলাকায় শিকার-কৃত্যে যায়। এ সময় স্থানীয় বনবিভাগ তাদের আটক করে। তাদের কাছে একটি সজারু পাওয়া যায়। রাতেই ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জগ সাঁওতাল ও সুবল ভূমিজ সিংকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। অপর সাত জনকে ১০ হাজার করে মোট ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়।

মাধবকুণ্ডের এই সাম্প্রতিক সজারু কাণ্ডের ঘটনাটি নিদারুণ ও জটিল। বিশেষত দেশের প্রশাসন, বনবিভাগ, গণমাধ্যম এবং পরিবেশবাদীদের কাছে। আদিবাসী জীবনের পরিবেশ-দর্শনের ময়দান থেকে এ রকম ঘটনা পাঠ না করতে পারলে প্রাথমিকভাবে দণ্ডিতদের ‘অভিযুক্ত এবং অপরাধীই’ মনে হবে।

কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইনেও প্রথাগত এই সংস্কৃতিকে গ্রহণ করা হয়েছে। সাঁওতালদের সারিসারনা ধর্মের এই সোহরাই পরব পালন করতে গিয়ে নয়জনকে দণ্ড ও শাস্তি পেতে হলো। কারণ প্রশাসন ও বনবিভাগ ঘটনাটিকে ‘বন্যপ্রাণী হত্যা’ হিসেবে দেখেছিল। তবে প্রশাসন প্রথমে বিষয়টি সাঁওতালি আয়নায় পাঠ না করলেও পরবর্তীতে দণ্ডিতদের জন্য এক অবিস্মরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

সাজার মেয়াদ শেষ হলে উপজেলা প্রশাসন গৃহহীন দুই দণ্ডিত আদিবাসী পরিবারের জন্য সরকারি ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। চলতি আলাপখানি বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি বন ও বন্যপ্রাণী বিষয়ে আদিবাসীদের প্রথাগত অধিকার সুরক্ষায় সক্রিয় হওয়ার দাবি জানাই।

কী ঘটেছিল সোহরাই রাতে?

‘রাইজিংবিডিডটকম’ ২২ ডিসেম্বর তারিখে ‘শজারু শিকার করায় শ্রীঘর, পরে মিলল পাকা ঘর’ শিরোনামে ছবিসহ একটি খবর প্রকাশ করে। গণমাধ্যমে এ সম্পর্কিত আরও খবর প্রকাশিত হয়। এসব খবর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সোহরাই পরবের জন্য সজারু শিকারের জন্য ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’ অনুযায়ী তাদের শাস্তি ও দণ্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় আইন কী বলে? সোহরাই পরবের জন্য সজারু শিকার করলে কি বন্যপ্রাণী আইনে কোনো শাস্তি বা দণ্ড হতে পারে? এ রকম ঘটনাকে কীভাবে পাঠ করা হবে? ‘ধর্মীয় প্রথাগত কৃত্য’ নাকি ‘আইনগত অপরাধ’?

কী আছে বন্যপ্রাণী আইনে?

২০১২ সালে পূর্বতন ‘বাংলাদেশ ওয়াইল্ডলাইফ (প্রিজারভেশন) অর্ডার ১৯৭৩’ রহিত করা হয়। প্রবর্তিত হয় নতুন আইন ‘বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’। এই আইনের ৬ নং ধারাটি ‘বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা’ সংক্রান্ত। এই ধারার ১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘লাইসেন্স বা ক্ষেত্রমত পারমিট গ্রহণ ব্যতীত কোন ব্যক্তি কোনো বন্যপ্রাণী শিকার বা তফসিল ৪ এ উল্লেখিত কোনো উদ্ভিদ ইচ্ছাকৃতভাবে উঠানো, উপড়ানো, ধ্বংস বা সংগ্রহ করতে পারবে না’।

যদি কেউ এই আইন লঙ্ঘন করে সেক্ষেত্রে বিধান কী আছে? আইনের ৬, ১০, ১১ ও ১২ ধারা লঙ্ঘন করলে দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইনের ৩৯ নং ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি বন্যপ্রাণী শিকার করে তবে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং এই অপরাধের জন্য তাকে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড প্রদান করা হতে পারে এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড প্রদান করা হতে পারে। কারো কাছে শিকার করা কোনো প্রাণী, নমুনা বা ট্রফি পাওয়া গেলে এসব জব্দ করার ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের আছে।

আইনের ৩২.১.ক নং ধারায় বলা আছে, লাইসেন্স ব্যতীত শিকার করা, দখলে রাখা বা ধৃত বন্যপ্রাণী বা তাদের আবদ্ধ অবস্থায় রাখার কারণে প্রজননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধিপ্রাপ্ত প্রাণী, দুর্ঘটনার কারণে মারা গেছে বা মৃতপ্রায় বন্যপ্রাণী জব্দ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

আইনটির গুরুত্বপূর্ণ ধারাটি হল ২৩(১)। এখানে পবিত্র বৃক্ষ, কুঞ্জবন, সাংস্কৃতিক-প্রথাগত-ধর্মীয় ও স্মৃতিস্মারক হিসেবে চিহ্নিত অঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।

তবে একটি শর্ত জুড়ে বলা হয়েছে, কমিউনিটি বা ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাদের প্রথাগত বা সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং অনুশাসন সংরক্ষণ করতে হবে।

বননির্ভর জনগোষ্ঠী বা আদিবাসী সমাজের সঙ্গে বনের জটিল প্রথাগত সম্পর্ক রয়েছে। সেই বন সংরক্ষিত, অভয়ারণ্য, বিনোদনপার্ক, ইকোপার্ক, সাফারিপার্ক, কুঞ্জবন, পবিত্রবন, গ্রামীণবন যাই হোক না কেন। রাষ্ট্রীয় আইনের বিধি অনুযায়ী যদি বনের ভেতর বননির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রথাগত, সাংষ্কৃতিক মূল্যবোধ ও অনুশাসন সংরক্ষণ করতে হয় তবে অবশ্যই এমন জনসমাজের অরণ্য-দর্শন ও অরণ্য-সংস্কৃতিকে বুঝতে হবে। ধর্মীয় কৃত্য, সামাজিক পরব এবং সাংস্কৃতিক রীতি পালনে বননির্ভর মানুষের বছরের নানা সময় ভেষজ-লতাগুল্মসহ কিছু বন্যপ্রাণীও সংগ্রহ করতে হয়।

এমন সমাজে ‘শিকার’ এক ঐতিহাসিক সামাজিক রীতি, কোনো বিপদজনক নেতিবাচক প্রপঞ্চ নয়। যেমন বাঙালি সমাজে ‘শিকার’ এবং ‘ধর্ষণ’ বা ‘দুর্ঘটনা’ বা ‘খুন’ প্রায় সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যবহৃত হয় ‘মেয়েটি ধর্ষণের শিকার’ বা ‘ছেলেটি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার’। যাহোক আমরা এই আলাপে ঢুকছি না। তো, নিজ সমাজের কোনো প্রথাগত বিশ্বাস, ধর্মীয় কৃত্য ও সামাজিক পরবের জন্য কোনো আদিবাসীজন যদি বন থেকে কিছু শিকার বা সংগ্রহ করেন সেক্ষেত্রে বিধান কী হতে পারে? তাকে কি আটক করা যেতে পারে বা তার কি দণ্ড হতে পারে? কিংবা তার কাছে যদি কোনো ‘ট্রফি’ পাওয়া যায় তা কি জব্দ হতে পারে? আইন কী বলে?

বন্যপ্রাণী আইনের ৩২ নং ধারায় শর্তসহ উল্লেখ আছে, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রথাগত, এতিহ্য বা দৈনন্দিন জীবনধারণের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত বন্যপ্রাণীর ট্রফি বা স্মৃতিচিহ্নের ক্ষেত্রে এই আইনের উপধারার বিধান প্রযোজ্য হবে না। মানে হলো, কোনো আদিবাসীজনের কাছে প্রথাগত রীতি পালনের জন্য সংগৃহীত কোনো বন্যপ্রাণ পাওয়া গেলে তা আইনত জব্দ বা আটক করা যাবে না।

এখন প্রশ্ন হল বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী এই ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ কারা? আইনের ২ নং ধারার সংজ্ঞায়ন অংশে বলা হয়েছে, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠার আইন ২০১০’ অনুযায়ী জনগোষ্ঠী হলো ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’। দেশের প্রায় ৫০ লাখ জনগণ রাষ্ট্রের দেয়া এই পরিচয়টি নিয়ে তর্ক তুলে নিজেদের আত্মপরিচয় দাঁড় করিয়েছেন ‘আদিবাসী’।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আইনের ২(১) এবং ধারা ১৯ অনুযায়ী সাঁওতাল জাতি রাষ্ট্রের তফশিলভুক্ত ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’। সাঁওতাল সমাজ যদি নিজেদের প্রথা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিধিপালনের জন্য সংরক্ষিত বন থেকে কোনো কিছু সংগ্রহ করেন তবে বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী তা ‘অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হবে না।

জোহার বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন, জোহার!

বন্যপ্রাণী আইনের ৫০ নং ধারায় আছে, সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কাজকর্মের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তার জন্য কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা দায়ের বা অন্য কোনো আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। মানে দণ্ডিত আদিবাসীরা হয়ত আইন অনুযায়ী, তাদের দণ্ড বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।

কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও জানান, দণ্ডিতরা বন্যপ্রাণী আইন সম্পর্কে অবগত ছিলেন না এবং দণ্ডিতরা দেশের আইনের প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজউদ্দিনের বক্তব্য তুলে ধরছি।

তিনি বলেন, ‘...এরা কালীপূজা উপলক্ষে একটি সজারু শিকার করেছিল, এভাবে বন্যপ্রাণী শিকার যে দণ্ডনীয় অপরাধ তা তারা জানত না। আটককৃতরা অত্যন্ত নিরীহ, হতদরিদ্র ও ভদ্র প্রকৃতির। ইচ্ছে করলে পালিয়ে যেতে পারত, কিন্তু একজন বনপ্রহরীর হেফাজতে তারা মধ্যরাত পর্যন্ত বসেছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালতও আইনের প্রতি দণ্ডিত আদিবাসীদের শ্রদ্ধাশীলতার প্রশংসা করেছেন।’

সোহরাই পরবের কৃত্য পালনের জন্য শিকার করতে গিয়ে দণ্ডিত জগ সাঁওতাল ও সুবল ভূমিজ সিংয়ের সাজার মেয়াদ ১৪ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান দণ্ডিতদের পারিবারিক তথ্য জানার চেষ্টা করেন এবং সাজাপ্রাপ্ত দুই গৃহহীনের জন্য সরকারিভাবে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২২ ডিসেম্বর ঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।

এই যে একজন ইউএনও, একটি উপজেলা প্রশাসন নিজ থেকে দণ্ডিতদের সমাজজীবন জানাবোঝার চেষ্টা করলেন এই গতি যেন বিকশিত হয়। প্রান্তজনের প্রতি গভীর মমতার ময়দান যেন দেশময় বিস্তৃত হয়। তবে রাষ্ট্রীয় আইন এবং দেশের বৈচিত্র্যময় জনজীবনের প্রথাগত সম্পর্ককে জানাবোঝার জায়গাটাকে আরও মজবুত করতে হবে। তা না হলে প্রথা ও কৃত্য পালন করতে গিয়ে কেউ এমনতর বারবার দণ্ড ও শাস্তির আওতায় আসতে পারেন।

ভাবা যায় ঈদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন বা বুদ্ধপূর্ণিমা পালন করার জন্য প্রশাসন কাউকে দণ্ড দিয়েছে! তাহলে সারিসারনা ধর্মবিশ্বাসী সাঁওতালদের সোহরাই পরব পালন করতে গিয়ে কেন দণ্ডিত হতে হবে। জেলখানায় ঢুকতে হবে? এভাবেই রাষ্ট্রের সঙ্গে নিম্নবর্গের এক দীর্ঘ দূরত্বের ঘের তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন। সব সমাজের গল্প সমান মর্যাদায় আগলে দাঁড়ালেই কেবল এই দূরত্ব চুরমার হতে পারে।

লেখক: গবেষক, প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ

এ বিভাগের আরো খবর