× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

তারুণ্য
PRAN RFL will hire 100 people through direct interview
google_news print-icon

সরাসরি সাক্ষাৎকারে ১০০ জনকে নিয়োগ দেবে প্রাণ-আরএফএল

সরাসরি-সাক্ষাৎকারে-১০০-জনকে-নিয়োগ-দেবে-প্রাণ-আরএফএল
প্রাণ-আরএফএল-এর চাকরির বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত
আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত তারিখে সরাসরি সাক্ষাৎকারে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। ‘কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ এবং টেলি সেলস এক্সিকিউটিভ’ পদে কর্মী নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠানটি।

আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত তারিখে সরাসরি সাক্ষাৎকারে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের নাম: প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ

পদের নাম: কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ এবং টেলি সেলস এক্সিকিউটিভ

পদসংখ্যা: ১০০টি

শিক্ষাগত যোগ্যতা: এইচএসসি/স্নাতক

অভিজ্ঞতা: প্রযোজ্য নয়

চাকরির ধরন: ফুল টাইম

প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ (নারীদের অগ্রাধিকার)

বয়স: সর্বোচ্চ ৩২ বছর

কর্মস্থল: নাটোর

সরাসরি সাক্ষাৎকারের তারিখ ও সময়: প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা

সরাসরি সাক্ষাৎকারের স্থান: প্রাণ এগ্রো লিমিটেড, একডালা, নাটোর

আরও পড়ুন:
স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারিজে নিয়োগ, নতুন গ্রাজুয়েটদের আহ্বান
পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি, কর্মস্থল বিদেশ
এইচএসসি পাসে সিটি গ্রুপে চাকরি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

তারুণ্য
Sunak wants to ban cigarettes in the UK

সিগারেট নিষিদ্ধ হচ্ছে যুক্তরাজ্যে!

সিগারেট নিষিদ্ধ হচ্ছে যুক্তরাজ্যে! প্রতীকী ছবি
চলতি বছরের মে মাসে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিনামূল্যে ভেপিং ও ই-সিগারেটের স্যাম্পল বিতরণ বন্ধ করে যুক্তরাজ্য সরকার। সেসময় এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানে আসক্তি রোধে দেশটি আইনি ফাঁকফোকর বন্ধের চেষ্টা করছে।

তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষায় যুক্তরাজ্যে সিগারেট নিষিদ্ধ করার চিন্তা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের ধূমপান-বিরোধী পদক্ষেপটি বিবেচনা করেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

নিউজিল্যান্ডের ওই আইনে ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পরে জন্মগ্রহণকারী সবার ওপর তামাক বা তামাকজাত সামগ্রী ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।

এ ব্যাপারে সুনাক বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ধূমপান মুক্ত করা ও দেশে ধূমপায়ীর হার কমানোর লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যেই জনগণকে উত্সাহিত করার চেষ্টা করছি।

‘এ লক্ষ্য পূরণে আমরা যে ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- বিনামূল্যের ভেপ কিট প্রদান, গর্ভবতী মহিলাদের ধূমপান ছাড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে একটি ভাউচার স্কিম প্রদান ও বাধ্যতামূলক সিগারেটের প্যাকেটে এর কুফল সম্পর্কে তথ্য দেয়া।’

চলতি বছরের মে মাসে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিনামূল্যে ভেপিং ও ই-সিগারেটের স্যাম্পল বিতরণ বন্ধ করে যুক্তরাজ্য সরকার। সেসময় এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানে আসক্তি রোধে দেশটি আইনি ফাঁকফোকর বন্ধের চেষ্টা করছে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় গত জুলাই মাসে একবার ব্যবহার করা যায় ২০২৪ সালের মধ্যে এমন ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করতে পৃথকভাবে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানায় ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

তারুণ্য
Fulfilling the dream of Junayed to fly in the sky

সেই জুনায়েদের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ

সেই জুনায়েদের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ বিমানের অভ্যন্তরে শিশু জুনায়েদ। ছবি: নিউজবাংলা
প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা থেকে বিমানে করে পর্যটন শহর কক্সবাজার এসে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছে শিশু জুনায়েদ মোল্লার। ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতির আওতায় সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন প্লাজা।

ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়া নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানের আসন পর্যন্ত যেতে পারলেও আকাশ থেকে পাখির চোখে পৃথিবী দেখার সুযোগ হয়নি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার শিশু জুনায়েদ মোল্লার। তার সেই অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিক্রয় ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন প্লাজা।

প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা থেকে বিমানে করে পর্যটন শহর কক্সবাজার এসে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছে শিশু জুনায়েদ মোল্লার। ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতির আওতায় সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন প্লাজা।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিমানে চড়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় জুনায়েদ। এরপর কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে রাখা হয় তাকে।

সেই জুনায়েদের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ

বিমানে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছানোর আনন্দে উচ্ছ্বসিত শিশু জুনায়েদ বলেন, ‘সেদিন নিরাপত্তা পেরিয়ে বিমানে উঠেছিলাম। কিন্তু আকাশে উড়তে পারিনি। অবশেষে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে ওয়ালটন প্লাজা। তারা ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বিমানে করে নিয়ে আসলেন। আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমি ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

ওয়ালটন প্লাজার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, “ওয়ালটন প্লাজা ব্যবসার পাশাপাশি সর্বদা বিভিন্ন সামাজিক ও আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রয়োজনে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ওয়ালটন প্লাজা। এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশে চলমান ওয়ালটন প্লাজার ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতির আওতায় ইতোমধ্যে শতাধিক পরিবারকে ৩২ লাখ টাকার বেশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দেশব্যাপী আলোচিত জুনায়েদের পরিবারও এসব সুবিধার বাইরে নয়।

“আমরা যখনই শুনেছি কৃষক ইমরান মোল্লার ছেলে বিমানে চড়ার শখ থেকে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা তার শখ পূরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা এই ছোট্ট ছেলেটির বড় স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট হতে দিতে চাইনি। ওর এই বড় স্বপ্ন দেখতে পারার সক্ষমতা চলমান থাকুক। স্বপ্ন পূরণে ওর সঙ্গী হতে পেরে আমরা গর্বিত।”

সেই জুনায়েদের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ

মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জুনায়েদের কৃষক বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ‘ছেলে আকাশে কোনো বিমান উড়ে যাচ্ছে দেখলে আনমনা হয়ে যেত। কী ভাবত সে-ই জানে। ছেলের বিমানে চড়ার স্বপ্ন পূরণ করায় ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’

জুনায়েদের স্বপ্ন এখন পাইলট হওয়ার। তার সেই স্বপ্ন পূরণে সবার দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন তিনি।

গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিমানে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়াই উঠে পড়েছিল জুনায়েদ নামের ওই শিশুটি। পরে জানা যায়, বাড়ি থেকে পালিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে জুনায়েদ। এরপর থেকেই আলোচনায় রয়েছে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের এই শিশুটি।

পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় জুনায়েদ এবং সেই শখ থেকে বিমানে চড়ার ইচ্ছা তার- এমনটি নিজেই গণমাধ্যমকে জানায় সে।

ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জ ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে ওয়ালটনের একটি রাইস কুকার কেনেন জুনায়েদের কৃষক বাবা ইমরান মোল্লা। এরই ধারাবাহিকতায় কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষারনীতির আওতায় কৃষক বাবার শখ পূরণ করতে এগিয়ে আসে ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:
স্নাতক পাশে শো-রুম ম্যানেজার নেবে ওয়ালটন
ক্ষতিগ্রস্ত কিস্তি ক্রেতার পরিবারের পাশে ওয়ালটন প্লাজা
কর্মক্ষেত্রে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পুরস্কার পেল ওয়ালটন
নতুন ‘য্যানন এক্স২০’ স্মার্টফোন আনল ওয়ালটন
‘এটিএস এক্সপো’তে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার দাবি ওয়ালটনের

মন্তব্য

তারুণ্য
Saharia Kanak on special duty in the Canadian police is the winner of the difficult journey

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী! সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত
বরিশালের এই সাহারিয়াই প্রথম বাংলাদেশি কানাডিয়ান যিনি ওপিপি নীতিনির্ধারণী লেভেলে হায়ার ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশের দক্ষিণের এক জেলায় সাহারিয়া কনকের জন্ম। বাংলাদেশ থেকে কানাডার ভৌগলিক দূরত্ব ও সাংস্কৃতিক ফারাক কতটা, তা প্রযুক্তির এ যুগে এসে হয়তো সহজেই সবার বোধে এসে যায়। তবে এই ভৌগলিক, আর্থ সামাজিক দূরত্ব আর অনেকখানি বন্ধুর পথ পেরিয়ে বাঙালি একজন নারী দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করতে যোগ্য হয়ে ওঠেন তা নিয়ে ধারণা পাওয়া খুব সহজ কিছু নয়।

সেই যোগ্য বাঙালি নারী হলেন আমাদের আজকের আলোচিত সাহারিয়া কনক। তিনি কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশে অধীনে (অন্টারিও মিনিস্ট্রি অফ সলিসিটির জেনারেল) রিজিওনাল বিসনেস এনালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।

বরিশাল থেকে ঢাকা, ঢাকা থেকে জাপান, এরপর জাপান থেকে কানাডা। সাহারিয়ার সব পথ একরৈখিক করেছে শিক্ষাগত যোগ্যতা, সততা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি। এর মধ্যে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেছে, সমৃদ্ধ হয়েছে তার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার। তবে অভিজ্ঞতা সবসময় সুখকর ছিল না। নিরলস চেষ্টায় তিনি পৌঁছেছেন তার কাঙিক্ষত লক্ষ্যে।

সাহারিয়া নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সেসব উদ্দীপক গল্প।

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
কানাডার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই মেধাবী মানুষটির। স্কুলের শিক্ষা শেষে বিএম কলেজে, এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে। এই পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে বৈবাহিক সূত্রে ২০০১ সালে বাংলাদেশ থেকে জাপানে যান তিনি।

সাহারিয়া জানান, তার স্বামী সেই সময়ে এনভারনমেন্টাল ইঞ্জনিয়ারিংয়ে জাপানে পিএইচডি করছিলেন। বৈবাহিক কারণে জাপানে গেলেও নিজে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন নিজের উচ্চ শিক্ষা এবং ক্যারিয়ার তৈরির বিষয়ে। সাহারিয়ার স্বামী ড.আনিসুর রহমান এ ব্যাপারে তার পাশে থেকেছেন সবসময়, এটি এ সফল নারীর পরম পাওয়া।

জাপানে যেখানে ছিলেন সাহারিয়া, সেখানে ভার্সিটির সোশ্যাল সাইয়েন্স ডিপাটরমেন্টে জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি ছাড়া কোনো রিসার্চ করার সুযোগ ছিল না মাস্টারস লেভেলে! আর সরাসরি পিএইচডি প্রোগ্রামে এনরোলমেন্ট হওয়ার মতো রিসার্চ ব্যাকগ্রাউন্ডও তার ছিল না। অবশ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্সকালীন সময়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রজেক্টে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে তার দুই বছরের অভিজ্ঞতা ছিল।

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
স্বামীর সঙ্গে সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

অনেক প্রচেষ্টার পরে প্রফেসর ডক্টর ইউসিয়াকি ইগুনির তত্ত্বাবধানে তার রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ শেখার সুযোগ মেলে সাহারিয়ার। কোনো বেতন বা স্কলারশিপ ছাড়াই দুই বছর টানা কাজ করার পর জাপান সোসাইটি ফর প্রোমোশন অফ সায়েন্সে বেশ বড় রিসার্চ প্রোজেক্ট ফান্ড/অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন তিনি। এই ফান্ড দেয়া হয় রিচার্স ফেলোশিপ ফর ইয়াং সায়েন্টিস্ট-এর আওতায়। সাহারিয়া এর আওতায় সংসার,পুত্র সবসামলে বাংলাদেশের মাইক্রোফিন্যান্স নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে ২০০৭ সালে অক্টোবরে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পোস্ট ডক্টরেট ফেলো হিসেবে তিনি চাকরি করেন।

সাহারিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে জাপানের পার্থক্য যা দেখেছি; দুর্দান্ত সিস্টেমেটিক, ট্রান্সপারেন্ট এবং কমিটেড সোশ্যাল কালচার। কিন্তু বাংলাদেশের মতো হাইলি পপুলেটেড, কারণ জাপানে ৭৫% পাহাড়ি বন ঘেরা এরিয়া, বাকি ২৫% ফ্লাট ল্যান্ড। জাপান বিশ্বের থার্ড লার্জেস্ট ইকোনমি এবং সেকেন্ড ডেভোলপড দেশ হলেও তা এশিয়য়ার অন্তৰ্ভুক্ত। তাই ফ্যামিলি নর্মস, ভ্যালুস, সামাজিকতায় অনেক মিল আছে আমাদের কোর ভ্যালুর সাথে জাপানিজ কালচারেরসব থেকে পজিটিভ ইনফ্লুয়েন্স ছিল আমার ক্ষেত্রে, তাদের বিনয়, ওয়ার্কম্যানশিপ, অনেস্টি এবং সিম্পল লাইফ স্টাইল।’

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
কানাডার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

এখানেই থেমে থাকেননি সাহারিয়া, ২০০৫ সালে কানাডায় নাগরিকত্ব নিলেও ২০০৮ সালের নভেম্বরে জাপান থেকে কানাডার অন্টারিও প্রদেশে অভিবাসন করেন তিনি। সে পথও কতটা বন্ধুর ছিল তা উঠে আসে সাহারিয়ার কথায়।

তিনি বলেন, ‘এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে নতুন করে ক্যারিয়ার আর জীবন শুরু, যা সব অভিবাসীর মতোই কঠিন। এ যেন কাজী নজরুলের ইসলালের ভাষায়- দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার হে। লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুঁশিয়ার!

‘নতুন দেশ, নতুন কালচার সবকিছু নতুন করে জানা শেখা। সাড়ে ৪ শ’র বেশি কালচারাল অরিজিন কানাডায় বসবাস করে। তা ছাড়া ভৌগোলিক বিশালত্ব- অন্টারিও বাংলাদেশের থেকে ৭.৫ টাইমস বড়! এখানে ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে প্রতিদিন জব করা খুবই স্বাভাবিক। তাই কালচারাল শিফট ছিল সিগনিফিকেন্ট।’

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

সাহারিয়া বলেন, ‘২০০৮ সালের নভেম্বরে যখন এসেছি, তখন ওয়ার্ল্ড রিসেশন চলছে; যার প্রভাব কানাডায় প্রকট ছিল। জব মার্কেট খুবই ভালনারবল। কিন্তু আমি আশাহত না হয়ে গভর্নমেন্ট-এর নিউ-কামার ট্রেনিং শুরু করি, যা আমাকে এই দেশ সম্পর্কে, জব নিডস এবং আমার স্কিল এসেসমেন্ট এ সাহায্য করবে বলেই বিশ্বাস ছিল।

‘কারণ কানাডা গভর্নমেন্ট বিনা খরচে প্রতিটি নিউ ইমিগ্র্যান্টকে (এন্ট্রির পরে প্রথম তিন বছর সবাইকে নিউ ইমিগ্র্যান্ট হিসাব করে যার যে ধরেন সাপোর্ট দরকার, তার এসেসমেন্টে সাহায্য করার বিভিন্ন সরকারি ফান্ডেড নন প্রফিট অর্গানিজশন আছে প্রতিটি শহরে) বিভিন্ন স্কিল ট্রেনিং এবং কালচারাল এসিমিলেশন- এর অপশন রেখেছে, যা সবাইকে এই দেশে অভিসংযোজিত হতে সাহায্য করে।’

দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে এ রকম একটি অর্গানাইজেশন নিউ-কামার সেন্টার অফ পিল-এ রিজিউম কভার লেটার রাইটিং অ্যান্ড কানাডিয়ান ইন্টারভিউ স্কিল বিল্ডআপের তিন মাসের ট্রেনিং শেষ করে ওখানেই ভলান্টিয়ার পজিশনে মাইগ্রেশন সেটেলমেন্ট অফিসে জয়েন করি। কানাডিয়ান জব এক্সপেরিয়েন্স নেয়ার জন্য দীর্ঘ ৮ মাস বিনা বেতনে ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সোমবার থেকে শুক্রবার কাজ করেছি।

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

‘এরপর ২০০৯ সালের অক্টোবরে ওই অর্গানিজশনের ডিরেক্টরের রেফারেন্সে একটি প্রাইভেট অর্গানিজশনে অ্যাডমিন কোঅর্ডিনেটর পজিশন ইন্টারভিউ পাই। মোট ১০জনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল ইন্টারভিউয়ের জন্য। এদের মধ্যে একমাত্র আমি নির্বাচিত হয়ে ওখানে জয়েন করি, যদিও বাসা থেকে বেশ দূরে এবং ড্রাইভিং করতে হতো তিনটা ব্যস্ত হাইওয়েতে। এটা এ কারণেই উল্লেখ করছি, এখানে প্রতিদিন নিউ-কামার অবস্থায় অনেকেই এটা করতে সাহস করবে না। কিন্তু আমি আমার জাপানের অভিজ্ঞতা, ওদের পরিশ্রমের সেই পজিটিভিটি মাথায় রেখে জবটা একসেপ্ট করে ওখানে ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত কাজ করেছি।’

সাহারিয়া বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক জবে অ্যাপ্লাই করেছি, কোথাও কোথাও ইন্টারভিউ পেলেও সফল হয়নি। এটা মনে হয়েছিল যে, এখানকার এডুকেশন না থাকায় ইন্টারভিউ পেলেও ঠিকমত কম্পিট করতে পারছি না; নিজেকে আরেকটু এনরিচ করতে হবে ড্রিম জব পাবার জন্য। তাই ২০১৩ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু-এর প্রফেশনাল মাস্টার্স ডিগ্র-এমপিএস (মাস্টার অফ পাবলিক সার্ভিস)- এ ভর্তি হই। ২০১৪ এর অল কোর্স ওয়ার্ক শেষ করেই দ্য অন্টারিও মিনিস্ট্রি অফ ফাইন্যান্স-এ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার হিসেবে জয়েন করি।

‘২০১৫ মার্চে এমপিএস- এর রিচার্স পেপার শেষ করে ডিগ্রি লাভের পর পাবলিক সার্ভেন্ট অফ কানাডা হিসেবে রেগুলার পজিশনে দ্য অন্টারিও মিনিস্ট্রি অফ চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ুথ সার্ভিসে রিচার্স অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করি। কিন্তু ততদিনে স্বপ্নের পরিধি বড় হচ্ছিল। এখানে প্রভিন্সিয়াল গর্ভমেন্টে এ প্রতিটি পজিশনের জন্য আলাদা সিভিল সার্ভিস কম্পিটিশন, তাই ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের এ সময়ে আমি অন্তত ৩০ ইন্টারভিউ দিয়েছি, কিন্তু জব অ্যাপ্লাই করেছি ১০০-এরও বেশি।’

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

সাহারিয়া বলেন, ‘ওয়াটারলু-এর মাস্টার্স ডিগ্রি খুবই সহায়ক ছিল। জব সার্চিং প্রসেস ফর গর্ভমেন্ট, এই ডিগ্রি আমাকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করেছে কানাডার পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে কাজ করার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন বাংলাদেশে। আব্বা ছিলেন আমার জীবনের আদর্শ পুরুষ। আমার শৈশব এর সব থেকে স্মৃতিময় সময় ছিল, আব্বা যখন তার ইউনিফর্ম পরে কাজ শেষে বাসায় ফিরতেন হাতে বিভিন্ন ধরেনর ফল আর চকলেট নিয়ে। সেই ক্ষণ ছিল স্বপ্নের মতো।’

বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশ পুলিশের অনেক কিছুই তার শোনা, সাহারিয়ার প্রয়াত বাবা যেমন পুলিশ বাহিনী নিয়ে গর্বিত ছিলেন তেমনি কিছু ব্যাপারে তার দুঃখ ছিল অপিরিসীম। বাংলাদেশ পুলিশ সুযোগ-সুবিধায় সুরক্ষিত নয় ও জনগণের বিশ্বাস অর্জনে ব্যর্থ। উদাহরণ স্বরূপ আরও বলা যেতে পারে,পুলিশ বাহিনীর জনগনকে মানবিক সেবা দিয়ে যে সম্মান পাওয়ার কথা তাতে ব্যাপক ঘাটতি, কিংবা আসামির স্বীকারোক্তি আদায়ের অমানবিক পদ্ধতি ও বাংলাদেশের স্বাক্ষী সুরক্ষা আইনের অষ্পষ্টতা নিয়েও তার বাবার মনে কষ্ট ছিল।

কানাডা পুলিশে বিশেষ দায়িত্বে সাহারিয়া কনক, কঠিন যাত্রার বিজয়ী যাত্রী!
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাহারিয়া কনক। ছবি: সংগৃহীত

কানাডার পুলিশ জনগণের আস্থা অর্জন করে তাদের প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠেছে, বাংলাদেশে যেটি এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে । কানাডায় সর্বস্তরের পুলিশ বাহিনীর স্বচ্ছতা, রেস্পেক্ট এবং সর্বোপরি জনগণের আস্থা বা গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম। এসব সাহারিয়ার অবচেতন মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। তাই কানাডার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অংশ হওয়া ছিলো তার স্বপ্নের দ্বিতীয় ধাপ। এই লক্ষকে সামনে রেখে সাহারিয়া সিটি, মিউনিসিয়াপলিটি এবং প্রভিন্সিয়াল পুলিশ -এ জব সার্চ এবং অ্যাপ্লাই শুরু করেন।

অবশেষে ২০১৮ এর এপ্রিলে ৬ মাসের ৫ লেভেল এর বাছাই পর্ব শেষে ফার্স্ট লেভেল অফ সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পার হয়ে অন্টারিও মিনিস্ট্রি অফ সলিসিটর জেনারেলের অধীনস্থ অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশে রিজিওনাল বিসনেস এনালিস্ট হিসেবে যোগ দেন তিনি।

বাংলাদেশের বরিশালের এই সাহারিয়াই প্রথম বাংলাদেশি কানাডিয়ান যিনি ওপিপি নীতিনির্ধারণী লেভেলে হায়ার ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।

মন্তব্য

তারুণ্য
After 10 years the path of love is opening again in Italy

‘ভালোবাসার পথ’ খুলছে এক দশক পর

‘ভালোবাসার পথ’ খুলছে এক দশক পর পরীক্ষামূলকভাবে পথে একটি অংশ খোলা হয়েছে যেখানে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘুরে আসার যাবে। ছবি: সংগৃহীত
চিঙ্কোয়ে তেরে পাহাড়ের রিওমাগিওরে গ্রাম থেকে শুরু হয়ে মানারোলা নামের আরেকটি গ্রামে গিয়ে শেষ হয়েছে ‘ভালোবাসার পথ’। পথটি সমুদ্রের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যে পরিপূর্ণ। এখান থেকে দেখা যায় আল্পস পর্বতমালার শেষভাগও।

বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক পায়ে হাঁটার রাস্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইতালির ‘ভিয়া দেল’আমোরে’কে, যার অর্থ ‘ভালোবাসার পথ’। দীর্ঘ দশ বছর পর ভ্রমণপিপাসু ও হাইকারদের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে এ পথটি।

ইতালির উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত চিঙ্কোয়ে তেরে পাহাড়ের গা বেয়ে ওঠা এ পথটি হাইকারদের (যারা পাহাড়-পর্বতে উঠতে পছন্দ করে) কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। শুধু তাই নয়, এটি দেশটির সরকার ঘোষিত একটি জাতীয় উদ্যান ও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যও বটে।

‘ভালোবাসার পথ’ খুলছে এক দশক পর

ভ্রমণপিপাসুদের কেন এ জায়গাটি এত পছন্দ, তা জানতে খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। গুগল করলেই দেখা যায় এর সৌন্দর্য। পাহাড়ের একদিকে রয়েছে জঙ্গলবেষ্টিত গ্রাম, অন্যদিকে পাহাড়ের পাদদেশে আছড়ে পড়ছে ভূমধ্যসাগরের নীলাভ সবুজ জলরাশি। সাগরের দিকে পাহাড়ের গা কেটে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বাড়ি। রঙ-বেরঙের সেবব বাড়ির ব্যালকনি থেকে রয়েছে ভূমধ্যসাগরের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ, রয়েছে বিশ্বখ্যাত ইতালিয়ান খাবারের স্বাদ নেয়ার সুযোগ। সবকিছু মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য এটি একটি স্বপ্নীল স্থান।

‘ভালোবাসার পথ’ খুলছে এক দশক পর

চিঙ্কোয়ে তেরে পাহাড়ের রিওমাগিওরে গ্রাম থেকে শুরু হয়ে মানারোলা নামের আরেকটি গ্রামে গিয়ে শেষ হয়েছে ‘ভালোবাসার পথ’। পথটি সমুদ্রের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যে পরিপূর্ণ। এখান থেকে দেখা যায় আল্পস পর্বতমালার শেষভাগও।

২০১২ সালে ভূমিধ্বসের কারণে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় ইতালি সরকার। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংস্কার কার্যক্রমের পর এ পথের প্রথম অংশ খুলে দেয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে খুলে দেয়া অংশটুকুতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘুরে আসা যাবে। সবকিছু ইতিচাবক থাকলে পথটির সম্পূর্ণ অংশ খুলবে ২০২৪ সালে।

‘ভালোবাসার পথ’ খুলছে এক দশক পর

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ইতালির পর্যটন শিল্প দেশটির প্রধান আয়ের উৎসগুলোর একটি। তবে গত দশক থেকে ‘অতি-পর্যটনের’ বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছে দেশটি। এ সমস্যা মোকাবিলায় ‘ভালোবাসার পথে’র উন্মুক্ত অংশে শুধু গাইডেড টুরের মাধ্যমে ভ্রমণ করা যাবে বলে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে।

পথটিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রক্ষার্থেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে দেশটির সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে দর্শনার্থীদের স্থানীয় ঐতিহ্য ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মালদ্বীপ ঘুরতে গেলে মাথায় রাখবেন যে ১০ বিষয়
বাংলাদেশ ঘুরে অভিজ্ঞতা কেমন, জানালেন বিশ্বের সব দেশ ঘোরা লেক্সি

মন্তব্য

তারুণ্য
Imroz is the second in the merit list in the education cadre of BCS by selling tea

চা বিক্রেতা ইমরোজ বিসিএস ক্যাডার, মেধা তালিকায় দ্বিতীয়

চা বিক্রেতা ইমরোজ বিসিএস ক্যাডার, মেধা তালিকায় দ্বিতীয় শিক্ষা ক্যাডারে দ্বিতীয় হওায়া আনন্দে উৎফুল্ল ইমরোজের বাবা-মা। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষা ক্যাডারে দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করা বেলায়েত হোসেন ইমরোজ জানান, ছেটো বেলা থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তার। লেখাপড়ার আগ্রহ থাকলেও আর্থিক সমস্যার কারনে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। বাবার চায়ের দোকানের পাশাপাশি সময় দিতে হতো কৃষিকাজেও।

বৃহস্পতিবার প্রবাসী স্বজনের মরদেহ আনতে ঢাকায় যাচ্ছিলেন শরীয়তপুরের বেলায়েত হোসেন ইমরোজ। চলন্ত বাসে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার সামনে থাকা অবস্থায় জানতে পারেন বিসিএসের ফল প্রাকাশের খবর।

নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে গিয়ে শিক্ষা ক্যাডারের দ্বিতীয় স্থানে নিজের রোল নম্বর খুঁজে পেয়ে নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। একাধিক সূত্র থেকে নিজের সফলতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রথমেই বাবা-মাকে জানান এ আনন্দের সংবাদটি।

সফলতার এ মুহূর্তটি মোটেও মসৃণ পথে হেঁটে আসেনি ইমরোজের জীবনে। তার বাবা একজন চা বিক্রেতা। বাবার চায়ের দোকানেই চা বিক্রি করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপরা করতে হয়েছে তাকে। আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়ালেখা করলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার খরচ কোথা থেকে আসবে- তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায় ইমরোজের জীবনে। খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন বিনোদপুর মৌলভীকান্দি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকরা। বিনা খরচে ইমরোজের লেখাপরার দায়িত্ব নেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

চা বিক্রেতা ইমরোজ বিসিএস ক্যাডার, মেধা তালিকায় দ্বিতীয়
৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা বেলায়েত হোসেন ইমরোজ। ছবি: সংগৃহীত

রাত ১০টা পর্যন্ত চা বিক্রির পাশাপাশি চালিয়ে যেতেন নিজের পড়ালেখা। অনেক সময় রাতে দোকানেই ঘুমাতে হতো তাকে। এভাবেই চলতে থাকে তার শিক্ষাজীবন।

অষ্টম শ্রেণি পাশের সময় বোনের বিয়ে হওয়ায় অর্থাভাবে পড়ালেখা বন্ধের যোগাড় হয়েছিল ইমরোজের। কিন্তু মায়ের ইচ্ছায় হাজারো বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও পড়ালেখা চালিয়ে যান তিনি। এর এক পর্যায়ে ২০১২ সালের দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। ভর্তি হন শরীয়তপুর সরকারি কলেজে।

পড়ালোখার খরচ যোগাতে তখন অন্যের বাড়িতে টিউশনি শুরু করেন ইমরোজ। ২০১৪ সালে এইচএসসিতেও শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)।

২০১৯ সালে ঢাবি থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি। এরপর শুরু করেন বিসিএসের প্রস্তুতি। প্রথমবার ৪০তম বিসিএসে সফলতা না আসলেও ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হন ইমরোজ।

ইমরোজ জানান, ছেটোবেলা থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। লেখাপড়ার আগ্রহ থাকলেও আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। বাবার চায়ের দোকানের পাশাপাশি সময় দিতে হতো কৃষিকাজেও। বিসিএস প্রস্তুতির মধ্যে করোনায় সব বন্ধ ছিল। এ সময় স্ত্রীর সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সমাজের বঞ্চিত মানুষের ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করতে চাই আমি। আমার মতো এমন কষ্ট করে যেন কাউকে পড়ালেখা করতে না হয়, সে বিষয়ে সবসময় কাজ করতে চাই।’

ইমরোজের মা হালিমা বেগম বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে বিসিএস পাশ করছে। আমাগো সকল কষ্ট ভুইলা গেছি।’

বাবা শমছু তালুকদার বলেন, ‘পোলার উছিলায় আল্লাহ চাইলে সুখের মুখ দেখমু। সবার কাছে আমার ছেলের জন্য দোয়া চাই।’

এর আগে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন ইমরোজ। বর্তমানে বড় সন্দীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে শিক্ষকতা করছেন তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সানাউল্লাহ বলেন, ‘ইমরোজ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের পরিবেশ বদলাতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদেরও অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করান তিনি। শিক্ষার্থীদের নিজের মতো করে পড়াতে ভালোবাসেন তিনি।’

আরও পড়ুন:
একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার হয়ে ‘বাবার স্বপ্ন’ ছুঁলেন দুই বোন
বর্গাচাষি ও দিনমজুরের ছেলের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প
৪১তম বিসিএসের ফল প্রকাশ, ক্যাডার হলেন ২৫২০ জন
দুই বারের বেশি বিসিএস দেয়া যাবে না, তথ্যটি ঠিক নয়

মন্তব্য

তারুণ্য
Two sisters achieved their fathers dream by becoming BCS cadre together

একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার হয়ে ‘বাবার স্বপ্ন’ ছুঁলেন দুই বোন

একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার হয়ে ‘বাবার স্বপ্ন’ ছুঁলেন দুই বোন বাবার স্বপ্ন পূরণ করে ৪১তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত দুই বোন। ছবি: নিউজবাংলা
স্কুলশিক্ষক আলতাফ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা কুলসুমা আকতার বলেন, ‘ওদের বাবার মৌলানা ছিলেন। উনি তো সবকিছু জানতেন। উনি বলতেন- শালীনতার মধ্যে থেকে জ্ঞানার্জনে কোনো বাধা নেই।’

চট্টগ্রামের স্কুলশিক্ষক মৌলানা সৈয়দ মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন সিদ্দিকির ৬ সন্তানই মেয়ে। এ নিয়ে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা নানা কথা বললেও মেয়েদের নিয়ে গর্বের শেষ ছিল না তার। স্কুলে শিক্ষকতা করে পাওয়া অর্থ দিয়ে নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি।

মেয়েদের নিয়ে বড় বড় স্বপ্নের কথা বলতেন আলতাফ হোসেন। সেই স্বপ্নে রাঙিয়ে দিতেন কন্যাদের।

চাকরির সুবাদে মেয়েরা ছোট থাকা অবস্থাতেই নিজ এলাকা ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভা ছাড়তে হয় তাকে। পুরো পরিবার নিয়ে ছুটেছেন এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা। তবে মেয়েদের পড়ালেখায় ক্ষতি হতে দেননি একবিন্দু।

মেয়েরা বড় হতে থাকলে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা তাদের জন্য বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আসতে শুরু করেন। কিন্ত নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়েননি আলতাফ হোসেন। তার ভাষ্য, ‘মেয়েরা পড়াশোনা শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে।’ এ নিয়েও আত্মীয়-স্বজন আর পাড়া-প্রতিবেশীদের আপত্তির শেষ ছিল না। অবশ্য সেসব কখনও গায়ে মাখেননি মৌলানা আলতাফ। বরং মেয়েরা যেন কারও কথায় কখনও স্বপ্নচ্যুত না হয়, সেই চেষ্টাই করতেন তিনি।

২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর আলতাফ হোসেনের মৃত্যু হয়। তবে তার স্বপ্ন আর সংগ্রাম বৃথা যেতে দেননি তার মেয়েরা।

আলতাফ হোসেনের দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা সিদ্দিকা ও সৈয়দা জান্নাতুন নাঈম রানী ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

তাদের ছোট দুই বোন সৈয়দা ইসরাত জাহান সিদ্দিকা ও সৈয়দা তানজিনা সিদ্দিকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। পাশাপাশি বিসিএসের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

ছোট দুই বোনের মধ্যে সৈয়দা রাহিমা সিদ্দিকা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে (চমেক) শেষবর্ষে পড়ছেন। সবচেয়ে ছোট সৈয়দা নিশাত সিদ্দিকা পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগে।

জান্নাতুন নাঈম অবশ্য ৪০তম বিসিএসেই ক্যাডার হিসেবে (শিক্ষা) সুপারিশপ্রাপ্ত হন। সেবারই প্রথম বিসিএসে অংশগ্রহণ করেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে ২০১৫ সালে স্নাতক ও ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি।

৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে ফের সুপারিশপ্রপ্ত হন জান্নাতুন, এবার তার সঙ্গে সুপারিশপ্রাপ্ত হন বড় বোন ফাতেমা সিদ্দিকাও। তবে ফাতেমা ৪১তম বিসিএসেই প্রথমবার অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে হিসেবে দুই বোনই প্রথমবার অংশগ্রহণ করেই সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

ফাতেমা সিদ্দিকার পড়াশোনা চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে। ২০১৪ সালে বাংলায় স্নাতক ও পরের বছর একই কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি।

স্বপ্ন ছুঁয়ে জান্নাতুন নাঈম বলেন, ‘আমরা ৬ বোন একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। আর্থিক টানাপোড়ন থাকলেও আমাদের কখনও বুঝতে দেননি বাবা। সবার আগে আমাদের পড়াশোনাকে আগ্রাধিকার দিতেন তিনি। আমরা প্রথম তিন বোন ২০১৮ সালে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলাম। তখন বাবা অনেক খুশি হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে আমার ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট ঘোষণার ১০ দিন আগে তিনি আমাদের ছেড়ে যান। উনি আমাদের সফলতা দেখে যেতে পারেননি, তবে আমাদের বিশ্বাস- উনি আমদের সঙ্গেই আছেন।’

ফাতেমা সিদ্দিকা বলেন, ‘আব্বু-আম্মু দু’জনই পড়াশোনা জানা মানুষ হওয়ায় আমরা শিক্ষার পরিবেশটা পেয়েছি। পরিবারে আমাদের পড়াশোনাটাই সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) পেত। বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলতেন। আব্বুকে এসে বলতেন- আপনারা তো বয়স্ক হয়ে গেছেন, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন। মেয়েদের কে দেখবে? তখন আমার বাবা বলতেন- আমার মেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হবে। তারা নিজেরাই নিজেদের দেখবে, দেশ ও দশের জন্য কাজ করবে।’

‘মেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল আলতাফ হোসেনের একমাত্র স্বপ্ন ছিল’ বলে জানান তার স্ত্রী সৈয়দা কুলসুমা আকতার। তিনি বলেন, ‘তখন কীভাবে যে মেয়েদের নিয়ে এত কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছি, এখন পেছনে তাকালে অবাক লাগে। তাদের বাবার একমাত্র স্বপ্নই ছিল- মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করা। রক্ষণশীল পরিবারে মেয়েদের পড়াশোনা করতে দেয়া হয় না বলে ধারণা অনেকের। কিন্তু ওদের বাবার মৌলানা ছিলেন। উনি তো সবকিছু জানতেন। উনি বলতেন- শালীনতার মধ্যে থেকে জ্ঞানার্জনে কোনো বাধা নেই। আমার মেয়েরাও অনেক মেধাবী ছিল। তারা সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বৃত্তি পেত।’

সৈয়দা কুলসুমা বলেন, ‘একসময় আমাদের মেয়েদের নিয়ে যারা নেতিবাচক কথা বলত, তারা এখন তাদের নিয়ে গর্ব করে। তাদের ধারণ করে। এখন অনেকেই বিশ্বাস করে যে, মেয়েরা চাইলেই অনেক কিছু পারে।’

মৌলানা আলতাফ হোসেনকে উদ্ধৃতি করে তিনি বলেন, ‘উনি বলতেন- আমার এই ছয়জন মেয়ে বলে কী হয়েছে? তারা মানুষ হলে ছেলেদের চেয়েও বেশি কিছু। আমার ছয়জন মেয়ে নয়, তারা আমার রত্ন।’

স্থানীয় কাউন্সিলর মো. আমান ‍উল্লাহ বলেন, ‘উনি একজন স্কুলশিক্ষক ছিলেন। উনার কোনো ছেল ছিল না, মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে মানুষ করেছেন। আগে তার প্রথম চার মেয়ে প্রাইমারির শিক্ষক ছিলেন। এখন বড় দু’জন বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। ছোট দু’জনও ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তারা আমাদের এলাকার গৌরব। নারী শিক্ষায় একটা দৃষ্টান্ত এটা।’

আরও পড়ুন:
বর্গাচাষি ও দিনমজুরের ছেলের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প
দুই বারের বেশি বিসিএস দেয়া যাবে না, তথ্যটি ঠিক নয়

মন্তব্য

তারুণ্য
The story of two youngsters becoming BCS cadre

বর্গাচাষি ও দিনমজুরের ছেলের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প

বর্গাচাষি ও দিনমজুরের ছেলের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প বিসিএস ক্যাডার আল আমীন (বাঁয়ে) ও বিসিএস ক্যাডার শামীম। ছবি: সংগৃহীত। কোলাজ: নিউজবাংলা
ময়মনসিংহের শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কেকের চর ইউনিয়নের ভাটি লঙ্গরপাড়ার দুই দরিদ্র পরিবারের সন্তান শামীম ও আল আমিন। ৪১তম বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন মেধাবী এ দুই যুবক।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ৪১তম বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। দারিদ্র্য আর নানা প্রতিকুলতা পার করে অনেক অদম্য মেধাবীরাই সুযোগ পেয়েছেন এবারের বিসিএস নিয়োগের সুপারিশে।

এমনই দুই যুবকের গল্প শোনাব আজ।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কেকের চর ইউনিয়নের ভাটি লঙ্গরপাড়ার দুই দরিদ্র পরিবারের সন্তান শামীম ও আল আমিন। ৪১তম বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন মেধাবী এ দুই যুবক।

শ্রীবরদী উপজেলার কেকের চর ইউনিয়নের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামের প্রান্তিক বর্গাচাষি আব্দুল কুদ্দুস ও হোসনে আরা দম্পতির ছেলে শামীম মিয়া।

পরিবারের অবস্থা দেখে বুঝার উপায় নেই, সদ্য ঘোষিত ৪১তম বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন এই পরিবারের বড় ছেলে শামীম। টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি তাদের ঘর। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে ছেলেদের লেখাপড়া শিখিয়েছেন আব্দুল কুদ্দুস। কষ্ট একদিন ঘুচে যাবে বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। অবশেষে সেই স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। এখন তিনি বিসিএস ক্যাডারের বাবা।

শামীম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃষি বিভাগে উত্তীর্ণ হন।

শামীমের বাবা কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। আমাদের ছোট সংসার। খুব কষ্ট করে বড় ছেলে শামীমসহ তিন ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছি। আমার ছেলে বিসিএস চান্স পাইছে। আমার দেহডা আল্লাহ শান্তি করে দিছে।’

মা হোসনে আরা জানান, ছেলের সফলতায় খুব খুশি তিনি।

বিসিএস ক্যাডার শামীম বলেন, ‘অনেক প্রতিকুলতা-বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করেই আজকের এ সাফল্যে পেয়েছি। আমার এ সাফল্যের পেছনে আসল কারিগর আমার বাবা-মা। আমার সাফল্যের কৃতিত্ব তাদেরকেই দিতে চাই।’

একই এলাকার দিনমজুর বকুল আহমেদ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের সন্তান আল আমিন। নানা প্রতিকুল পরিবেশে লেখাপড়া করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিয়েছেন তিনি; লড়ে গেছেন নিজের জীবন সংগ্রাম।

আল আমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ৪১তম বিসিএসে অংশ নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন তিনি।

আল আমিনের বাবা বকুল বলেন, ‘আমার ছেলে খুব কষ্ট করেছে, বিসিএসে টিকেছে। আমি তার জন্য খুব খুশি।’

বিসিএস ক্যাডার আল আমীন বলেন, ‘এ দীর্ঘ পথযাত্রায় আমি অনেক মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ ও চিরঋণী। পরিবারের পাশাপাশি অনেক মানুষ আমাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।’

একই গ্রামের অতি দরিদ্র পরিবারের দুই জনের এমন সাফল্যে খুশি স্থানীয়রাও।

আরও পড়ুন:
৪১তম বিসিএসের ফল প্রকাশ, ক্যাডার হলেন ২৫২০ জন

মন্তব্য

p
উপরে