অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় সুবিধা নিশ্চিতের অঙ্গীকারে যাত্রা শুরু করেছে অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম ‘মৌচাক’।
মৌচাক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা দেশের সর্বস্তরের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই মিনিটেই সংযোগ স্থাপন করতে দেবে। শিক্ষকরা দুই মিনিট সময় পেলেই দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এই প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে পারবেন।
‘আপনার সাফল্যে আমরা আর হাজারও শিক্ষার্থীর অনুপ্রেরণায় আপনি’- এই স্লোগানের মাধ্যমে মঙ্গলবার শুরু হয় ‘মৌচাক’-এর আনুষ্ঠানিক পথচলা।
প্ল্যাটফর্মটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। মৌচাক শিক্ষকদের জন্য ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করবে। যেখানে আপনিই হবেন আপনার ক্লাসের একমাত্র নিয়ন্ত্রক। দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের শিক্ষকের ক্লাস করতে পারবে ঘরে বসেই।
মৌচাকে রয়েছে আনলিমিটেড লাইভ ক্লাস ও পরীক্ষা, ক্লাস রেকর্ডের সুবিধা, ৩০ হাজারের বেশি প্রশ্ন ব্যাংক, আধুনিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, নোটিশ বোর্ডসহ আরও অনেক কিছু।
এখানে শিক্ষকরা পরীক্ষার উত্তরপত্র পাবেন পিডিএফ ফরম্যাটে এবং নম্বর ও গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিতে পারবেন।
মৌচাকে নিজের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী কোর্স সাজানোর সুযোগ রয়েছে। মৌচাক নিয়ে এসেছে অনেক মডেল টেস্ট এবং কুইজের মতো সব ধরনের প্রশ্নের সমাহার। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য থাকছে ই-মেইল এবং মেসেজের ব্যবহার।
মৌচাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সরাসরি ক্লাসের মতো করেই পর্যাপ্ত জ্ঞান আদান-প্রদানের সুযোগ পাবেন এমন একটি ওয়ান স্টপ সল্যুশনের ব্যবস্থার লক্ষ্য নিয়েই মৌচাকের যাত্রা শুরু হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী আর্থিক কারণে স্কুল কিংবা কোচিংয়ে পছন্দের শিক্ষকের ক্লাস করতে পারে না। এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে মৌচাক।’
দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ইমো।
সিলেট বিভাগের ব্যবহারকারীদের জন্য প্ল্যাটফর্মটি ২২ জুন থেকে বিশেষ ডাটা ডোনেশন চালু করেছে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ৪০ লাখ টাকার বেশি সমমূল্যের ডাটা পাচ্ছেন বিনা মূল্যে।
বরাদ্দ ডাটা থেকে গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ৫১২ এমবি, বাংলালিংক ব্যবহারকারীদের জন্য ৩০০ এমবি এবং রবি ও এয়ারটেল ব্যবহারকারীদের জন্য ১ জিবি করে ডাটা সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
এই ডাটা ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ইমো ব্যবহারকারীরা ১ হাজার ৫৫০ মিনিট পর্যন্ত অডিও কল এবং ৫৫০ মিনিট পর্যন্ত ভিডিও কল করতে পারবেন।
এই দুঃসময়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং প্রয়োজনীয় ফান্ড বা ত্রাণ সহযোগিতা পেতে ইমোর সুবিধাটি খুবই কার্যকরী হয়ে উঠবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফ্রি ডাটা চালুর পর থেকে তিন দিন পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করতে পারবেন সেগুলো।
সেই সঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত ত্রাণ এবং অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ রিলিফ’ নামে একটি ইমো চ্যানেল চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একাধিক এনজিওর সমন্বয়ে ইতোমধ্যেই ত্রাণ সংগ্রহ ও প্রচার কার্যক্রম শুরু করেছে এবং এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার এই ‘বাংলাদেশ রিলিফ’ চ্যানেলে যুক্ত হয়েছেন।
এই ভয়াবহ বন্যা লাখ লাখ মানুষকে কঠিন বিপর্যয়ে ফেলে দিয়েছে। বন্যায় ২৪ জুন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
দেশের এমন দুঃসময়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে এবং পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে প্রতিটি সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার একযোগে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি।
ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইমো এই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে এবং সিলেট ও নিকটবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে দ্রুত পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন:ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণাসহ উত্তরপূর্ব এলাকার জনপদ। অত্যধিক বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সেখানে অন্তত ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বেশিরভাগ এলাকা, দেখা দেয় খাদ্য সংকট, মানবেতর জীবনযাপন করছে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ।
উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণ বিতরণ করছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিবন্দি হয়ে সেখানে সবচেয়ে ভয়াবহ দিন কাটাতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধদের।
তাদের খাবারসহ স্বাস্থ্যব্যবস্থা এখন স্বাভাবিক রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। দেখা দিয়েছে শিশুখাদ্য সংকট। এমন অবস্থায় শিশুখাদ্য নিয়ে ত্রাণ কাজে এগিয়ে এসেছে গ্লোবাল টেকনোলজি লিডার শাওমি।
প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সিলেটসহ বন্যাদুর্গত উত্তরপূর্বাঞ্চলে ত্রাণ বিতর করছে, বিশেষ করে শিশুখাদ্য সংকট নিরসনে এমন উদ্যোগ নিয়েছে।
শিশুদের জন্য সঠিক পুষ্টিমানসম্পন্ন শুকনো খাবার তুলে দিয়েছে শাওমি বাংলাদেশ। সিলেট সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হকের হাতে খাবারগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। যা শুক্রবার সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি নেত্রকোণা এলাকাতেও ত্রাণ বিতরণ করেছে শাওমি।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বন্যায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জাতির এই ক্রান্তিকালে আমাদের সবার এক হওয়াটাও অতীব জরুরি। বন্যাউপদ্রুত এলাকায়, বিশেষ করে শিশুদের খাদ্যসংকট কাটানোর উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাওমি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমরা চেষ্টা করছি সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে। মানুষের এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সবাইকে এক হওয়া দরকার। বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তায় আমাদের একতা এবং আন্তরিকতা খুব বেশি প্রয়োজন।’
প্রতিকূল সময়ই এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম সময়। শাওমি পরিবারের সবাইকে সাধ্যমত বন্যাদুর্গতদের জন্য সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন শাওমির এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:সিলেটের বানভাসী মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে গোপালগঞ্জের এক কিশোরী। ঈদের পোশাক কেনার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়েছে সে।
মেয়েটির নাম তাহাজীব হাসান। সে এবার গোপালগঞ্জ সরকারি বীণাপাণি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
ঈদের পোশাক না কিনে ১০ হাজার টাকা সে বুধবার দুপুরে তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) হাতে।
নিউজবাংলাকে তাহাজীব বলেছে, ‘আমার ঈদের ড্রেস কেনার টাকা সিলেটের বন্যার্তদের জন্য দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। প্রতি বছর ঈদের সময় নতুন ড্রেস কিনে থাকি। কিন্তু এবার সিলেটে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে তা টিভি ও পত্রিকায় দেখে আমার মনে হয়েছে যে আমার ড্রেস কেনার চেয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো বেশী জরুরি।’
তার এই চিন্তার প্রশংসা করেছেন ডিসি শাহিদা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশী হয়েছি যে একজন শিক্ষার্থী তার আনন্দের টাকা সিলেটের বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য দিয়েছে। আমি বিত্তবানসহ সবস্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে আসুন আমার যার যার অবস্থান অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই।’
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার সব বহুতল বাণিজ্যিক ভবন (মার্কেট ভবন) পরিদর্শন করবে সরকার। প্রাথমিকভাবে এক হাজার ৭২টি ভবন পরিদর্শন করা হবে।
ইতোমধ্যে ১১টি সমন্বিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করা হয়েছে। ৮২টি প্রশ্নের নতুন চেক লিস্ট যাচাইয়ের মাধ্যমে এই পরিদর্শন কার্যক্রম চালানো হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নেতৃত্বে ১০৮টি টিমের মাধ্যমে সারা দেশের ৫ হাজার ২০৬টি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়।
বিডা এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, এই পরিদর্শন কার্যক্রমের প্রস্তুতির জন্য বুধবার বিডা সমন্বিত পরিদর্শন টিমের সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। বিডা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে ডাইফ।
১১টি সমন্বিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ টিমে ডাইফ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থাপত্য অধিদপ্তর, তিতাস গ্যাস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের দপ্তর, এফবিসিসিআই, ডেসকো, প্রধান বয়লার পরিদর্শকের কার্যালয়, রাজউক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সদস্যরা কাজ করবেন। তারা এই পরিদর্শন কার্যক্রম চালাতে গিয়ে ৮২টি প্রশ্নের সক্ষমতা খুঁজবেন।
ডাইফ মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পরিদর্শকরা এমনভাবে পরিদর্শন করবেন, যেন পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও মার্কেটগুলোর সঠিক চিত্র প্রতিফলিত হয়। একইসঙ্গে তারা ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন।
‘পরিদর্শন রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’
দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠন করা হচ্ছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব। দেশব্যাপী কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদের সই করা অফিস আদেশে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা যায়। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ক্লাব গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মাউশি মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছাত্রীদের আয়রন ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। এ কার্যক্রমকে বেগবান করতে দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ক্লাবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সেবা কার্যক্রম স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও অন্যান্য সেবা সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’
অফিস আদেশে বলা হয়, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণি থেকে ছয়জন করে মোট ৩০ জন এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার থেকে পাঁচজন করে মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করতে হবে।
বিদ্যালয়টি কো-এডুকেশন হলে ৩০ জন সদস্যের অর্ধেক মেয়ে এবং অর্ধেক ছেলে হতে হবে। ক্লাব পরিচালনার জন্য স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট সদস্যদের মধ্য থেকে সম্ভব হলে দুজনকে (একজন মেয়ে ও একজন ছেলে) ক্লাব লিডার নির্বাচন করতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও অন্যান্য সেবামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে ক্লাবের সদস্যদের সহায়তার জন্য প্রধান শিক্ষক দুজন গাইড শিক্ষক (একজন মহিলা ও একজন পুরুষ শিক্ষক) নির্বাচন করবেন। গাইড শিক্ষকরা ক্লাবের দেখভাল করবেন।
এর আগে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ অ্যাপস এবং গাইডলাইন উদ্বোধন করেন। ইতোমধ্যে দেশের এক লাখ শিক্ষককে এ বিষয়ে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে দেশের নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ২০ কোটি আয়রন ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের আর্থিক সহযোগিতা করছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
আরও পড়ুন:উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বৈষম্য দূর করা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে শিগগির নীতিমালা করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। উচ্চশিক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও পদ্ধতি কী হবে তা নীতিমালায় তুলে ধরা হবে।
মঙ্গলবার কমিশনের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি এসিওরেন্স (এসপিকিউএ) বিভাগ আয়োজিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত এক কর্মশালায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কর্মশালায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি বাংলাদেশের সংবিধান, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের বিষয়াদি পর্যালোচনা করবে।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, এই নীতিমালার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সেবা গ্ৰহণের পথ সুগম হবে। প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করা, তাদের জন্য বিশেষভাবে পরীক্ষার আয়োজন ও অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেয়া, প্রতিবন্ধী সহায়ক অ্যাপস তৈরি ইত্যাদি বিষয় এই নীতিমালায় সংযুক্ত করা হবে।
কর্মশালায় বক্তারা জানান, দেশে ১২ ধরনের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে উচ্চশিক্ষা গ্ৰহণ করতে হয়। প্রতিবন্ধকতা ও নেতিবাচক মানসিকতার কাএণ উপযুক্ত মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পলিসি গঠন করা গেলে উচ্চশিক্ষা গ্ৰহণে তাদের সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।
এসপিকিউএ বিভাগের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. শামিম কায়সার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুণ্ডুসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:তথ্যপ্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বর্ষসেরা প্রযুক্তি নারী ব্যক্তিত্বের সম্মাননা পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ‘গার্লস ইন আইসিটি ডে ২০২২’ শীর্ষক দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. লাফিফা জামালের হাতে সম্মাননা স্মারকটি তুলে দেয়া হয়।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য তাকে এই সম্মাননা দেয়া হয়। এর আগে তিনি প্রযুক্তিতে অনন্যা শীর্ষ ১০ সম্মাননাও পেয়েছেন।
তিনি ছাড়াও বর্ষসেরা প্রযুক্তি নারী ব্যক্তিত্বের সম্মাননা পেয়েছেন সিএসআইডির প্রশিক্ষণ বিভাগের সহকারী পরিচালক আনিকা রহমান লিপি ও স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজওয়ানা খান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অধ্যাপক ড. লাফিফা জামালের হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম তরিকুল ইসলাম, সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিসএবিলিটি (সিএসআইডি)-এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক ডেনিস ও প্রায়ান।
সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ড. লাফিফা জামাল বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীদের কাজের যোগ্য মূল্যায়ন হলে অন্যান্য সেক্টরের মতো তথ্যপ্রযুক্তিতেও নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি এ উদ্যোগের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সিএসআইডিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক বাধাগুলো অতিক্রম করার দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে একজন নারীর। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য লক্ষ্য থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হলে চলবে না। নিজের মধ্যে পেশাদারত্ব থাকতে হবে। নিজের পথ নিজেকেই তৈরি করতে হবে। ভয়কে জয় করে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই নারীরা সব বাধা দূর করে এগিয়ে যাবে।’
অধ্যাপক লাফিফা জামাল শিক্ষকতার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারীদের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত সিনেট সদস্য।
তিনি ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব প্রদান করে। তার নেতৃত্বে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড ২০১৮-এ বাংলাদেশ প্রথম স্বর্ণপদক পায়। তিনি বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
ড. জামাল বর্তমানে যুক্ত আছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারীদের উন্নয়নে গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজি (বিওব্লিউআইটি) এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে।
এ ছাড়া তিনি দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ ফ্লাইং ল্যাবসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। তিনি ইউরোপিয়ান কোঅপারেশন ইন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধীনে ইউরোপিয়ান নেটওয়ার্ক ফর জেন্ডার ব্যালান্স ইন ইনফরমেটিক্স শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পে বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য