বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ অলিম্পিয়াডের মূল পর্বে দেশের দুটি টিম ঢাকা থেকে অনলাইনে অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এ অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ পর্ব আয়োজন করে।
গত মাসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের পারফরমান্স এবং মেধার ওপর ভিত্তি করে ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচিত করা হয়।
কানাডা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অলিম্পিয়াডটি জাজমেন্ট এবং মনিটরিং করা হচ্ছে।
এ বছর অলিম্পিয়াডের ‘ওপেন ক্যাটাগরি’ এবং ‘ফিউচার ইঞ্জিনিয়ারস’ ক্যাটাগরিতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার দুপুরে অনলাইনের মাধ্যমে বিচারকদের সামনে নিজেদের রোবট প্রদর্শন করে ওপেন ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা।
এ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে ‘ইকো এগ্রোমেট’ রোবট নিয়ে অংশ নেয় ‘পাওয়ারিয়াম’ নামের একটি দল। এ দলের সদস্য ছিলেন ঢাকা কলেজের মুহাম্মদ আবরার জাওয়াদ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজের তানজিম জামান খান এবং নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আশরাফুজ্জামান ফুয়াদ।
অন্যদিকে ফিউচার ইঞ্জিনিয়ারস ক্যাটাগরিতে অংশ নেয় ‘টিম প্রডিজি’। এ দলের সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সাজ্জাদ ইসলাম এবং নটর ডেম কলেজের তৌসিফ সামিন।
এ বছর ৬০টি দেশ ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এই অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে।
গাজীপুরের দমদমাতে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মা’ খ্যাত আক্তার নেসার মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় নিজ বাসায় রোববার সকাল ৫টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তার ছেলে গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ।
তার স্বামী প্রয়াত ইসমাইল হোসেন বাগমার ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি চার ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রোববার বাদ জোহর জয়দেবপুর রাজবাড়ী মাঠে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ আসর শ্রীপুর উপজেলার দমদমা গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ছাড়া গাজীপুর জেলা, সদর উপজেলা, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সমাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে চলতি বছরের জুলাইয়ে হওয়া সামরিক অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি থেকে রাষ্ট্রদূত ও সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
এক টেলিভিশনে রোববার দেয়া সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ‘ফ্রান্স তার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমাদের রাষ্ট্রদূতসহ কয়েকজন কূটনীতিক ফ্রান্সে ফিরে আসবেন।’
নাইজারের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা ‘শেষ’ জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে থাকা দেড় হাজার সেনাকে আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ সবাইকে দেশে নিয়ে আসা হবে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারে কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্ষমতার দখল নেয়া সামরিক বাহিনীর চাপ ও জনতার বিক্ষোভের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট উল্লিখিত ঘোষণা দিলেন।
নাইজারে গত ২৬ জুলাই হওয়া অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি না দেয়া মাখোঁর কাছে ফ্রান্সের সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সামরিক নেতারা। সেনা প্রত্যাহারের কাঙ্ক্ষিত সেই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।
জাতীয় টেলিভিশনে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠ করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই রোববার আমরা নাইজারের সার্বভৌমত্বের পথে নতুন ধাপকে স্বাগত জানাচ্ছি। এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যাতে নাইজারের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গৃহবধূ বেলী খাতুনের স্বামী অন্যের বাড়িতে দিনহাজিরা চুক্তিতে কৃষাণের কাজ করেন। কর্মস্থলের মালিক তার পরিবারের সঙ্গে কৃষাণের পরিবারকেও গত কুরবানির ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় বেড়াতে নিয়ে যান। আর গরিবের এই বেড়াতে যাওয়াটাই কাল হয়েছে।
চল্লিশোর্ধ্ব বেলী খাতুন কুয়াকাটায় গিয়ে পরপুরুষের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন- এমন অপবাদ দিয়ে গ্রামে রীতিমতো সালিশ বসিয়ে এই ‘অপরাধের’ জন্য জরিমানা করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
জরিমানার টাকা দিতে না পারায় দরিদ্র পরিবারটিকে এক সপ্তাহ ধরে সমাজচ্যুত করে রাখা হয়েছে। গ্রামের পক্ষ থেকে পালা করে পাহারা বসিয়ে পরিবারটির ওপর নজরদারিও করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অসহায় দরিদ্র পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে।
অপর গৃহবধূ বিউটি খাতুনের ক্ষেত্রেই প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে। তাকেও ওই সালিশ ডেকে ‘চরিত্রহীন’ ও ‘মূর্তি ব্যবসায়ী’ আখ্যা দিয়ে করা হয়েছে একঘরে। তাকেও একই অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অবশ্য তিন দিন পর ১০ হাজার টাকা সমাজপতিদের হাতে তুলে দেয়ায় তার ‘শাস্তি’ শিথিল করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের গাবরগাড়ি গ্রামে ঘটেছে এমন বর্বর ঘটনা। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও প্রশাসন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।
সমাজচ্যুত হওয়ার পর থেকে আমি ও পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনো কাজে যেতে পারছি না। এমনকি স্বজনের বাড়িতেও যেতে দেয়া হচ্ছে না। মাতব্বরদের ভয়ে গ্রামবাসী কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না। এমনকি আমার নিজের মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে পারছি না। এই কষ্ট কইবার মতো কোনো মানুষও নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, চরিত্রের ত্রুটি আছে- এমন অভিযোগ এনে গাবরগাড়ি গ্রামে দুই নারীকে এক সপ্তাহ ধরে সমাজচ্যুত করে রেখেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে কতিপয় গ্রাম্য মাতব্বর। আর ওই নারীরা সমাজচ্যুত হওয়ার পর থেকে গ্রামের কারও কথা বলতে পারছেন না। পারছেন না কএনা বাড়িতে বা বাজারে যেতে। লোকলজ্জায় ঘরের কোণে বসে চোখের জল ফেলছেন শুধু।
ভুক্তভোগী পরিবার ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানা যায়।
‘গাবরগাড়ি গ্রামে পরস্পর স্বজন দুই নারী রাত করে বাড়ি ফেরেন। আবার মাঝেমধ্যেই বেড়াতে যান এখানে-সেখানে। এটা চারিত্রিক ক্রটির অংশ।’- মাস দুয়েক আগে গাবরগাড়ি গ্রামের মোড়লদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা।
তৎপর হয়ে ওঠেন গ্রাম্য মোড়লরাও। তারপর এ নিয়ে ওই গ্রামের মো. জয়নাল মণ্ডলের বাড়ির উঠোনে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, গ্রামপ্রধান আলতাব হোসেন, মোজাম্মেল হক মন্টু, জুয়েল রানা, শফিকুল, বুলু ও আজিজুল হকসহ শতাধিক গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন। সেই সালিশে নানামুখী আলোচনা শেষে দুই নারীর চরিত্রের ত্রুটি আছে এমন অভিযোগ এনে তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। পাশাপাশি তাদের দু’জনকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানার ঘোষণা দেয়া হয়।
গ্রাম্য মোড়লদের এমন সালিশি সিদ্ধান্তে দিশেহারা হয়ে পড়েন দরিদ্র ওই নারীরা। তারা এই জরিমানার টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।
জরিমানা না দিয়ে গ্রামপ্রধানদের অপমান করা হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে ১৬ সেপ্টেম্বর পুনরায় একই স্থানে গ্রাম্য সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় অভিযুক্ত দুই নারীর পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দেয়া হয়।
একইসঙ্গে গ্রামবাসী কারও সঙ্গে তাদের কথা বলা, মেলামেশা এবং কারও বাড়ি দিয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এমনকি সমাজচ্যুত দুই নারীর একজন যাতে নিজের মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে না পারেন সে জন্য সালিশের দিন থেকেই পাহারাদার নিয়োগ করেছেন গ্রাম্যপ্রধানরা। এরপর থেকে ওই দুই নারী পরিবারসহ সমাজচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
অভিযুক্তদের একজন ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, গ্রামের কিছু নিয়মকানুন থাকে। সেটা না মানায় তাদেরকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। তাদের একজন ক্ষমা চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সমাজচ্যুতির নির্দেশ শিথিল করা হয়েছে। অপর নারী গ্রামপ্রধানদের কাছে এসে ক্ষমা চাইলে তার বিরুদ্ধে সমাজচ্যুতির নির্দেশও শিথিল করা হবে।
এদিকে দ্বিতীয় দফা সালিশের পর অভিযুক্ত নারীদের একজন জরিমানার ২০ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা গ্রামপ্রধানদের হাতে তুলে দিয়ে তাকে মাফ করে দিতে বলেন। এতে ‘সন্তুষ্ট’ হয়ে গ্রামপ্রধানরা ওই নারীর বিরুদ্ধে সমাজচ্যুতির ‘আদেশ’ কিছুটা শিথিল করেছেন।
আর অপর নারী জরিমানার টাকা দিতে না পারায় তার ওপর সমাজচ্যুতি নির্দেশ বহাল রাখা হয়েছে।
বেলী খাতুন বলেন, ‘সমাজচ্যুত হওয়ার পর থেকে আমি ও পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনো কাজে যেতে পারছি না। এমনকি স্বজনের বাড়িতেও যেতে দেয়া হচ্ছে না। মাতব্বরদের ভয়ে গ্রামবাসী কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না। এমনকি আমার নিজের মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে পারছি না। এই কষ্ট কইবার মতো কোনো মানুষও নেই।’
এ বিষয়ে গ্রামপ্রধান ও ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গ্রামের কিছু নিয়মকানুন থাকে। সেটা না মানায় তাদেরকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। তাদের একজন ক্ষমা চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সমাজচ্যুতির নির্দেশ শিথিল করা হয়েছে। অপর নারী গ্রামপ্রধানদের কাছে এসে ক্ষমা চাইলে তার বিরুদ্ধে সমাজচ্যুতির নির্দেশও শিথিল করা হবে।’
তাড়াশের ইউএনও মো. সোহেল রানা বলেন, ঘটনাটি জানার পর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করতে বলে দিয়েছি।
তবে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা ও গ্রামপ্রধান বুলুর সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই দুই নারী। তাদের একজন দুই বছর আগে গ্রামপ্রধান বুলুর ভাইয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন। আর অপরজন ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার কথামতো মূর্তির ব্যবসায় রাজি না হওয়ায় ষড়যন্ত্র করে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক বলেন, ‘ঘটনাটি নিন্দ্যনীয়। বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তাড়াশ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আলমকে পাঠানো হয়েছে। আর সমাজচ্যুতির বিষয়টি মিমাংসার জন্য গ্রামপ্রধানদের বলা হয়েছে। তারা সতর্ক না হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করতে বলে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:আষাঢ়-শ্রাবণে যে বৃষ্টির অপেক্ষা করেছে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ তার মিললো আশ্বিনে এসে। প্রতি বছর আষাঢ় কিংবা শ্রাবণ মাসে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। কিন্তু এ বছর গত কয়েক মাস ধরেই প্রত্যাশিত বৃষ্টি হয়নি রাজশাহীতে। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
রোববার বিকেলের ঝুম বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। মাঝারি মাত্রার এই বর্ষণে শহরের বেশিরভাগ ড্রেন উপচে পানি চলে আসে রাস্তায়। শহরের নিচু এলাকাগুলোতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। অবশ্য সন্ধ্যার পর বেশিরভাগ এলাকার জলাবদ্ধতা কমে আসে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান জানান, রোববার রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সকালে হয়েছে ৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার। বাকিটা হয়েছে বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে। চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
সন্ধ্যার পর বৃষ্টি কমে গেলেও আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, রাজশাহীতে সোমবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পানিতে রোববার বিকেলে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ছোট ড্রেন রয়েছে সেগুলো উপচে পানি ছড়িয়ে পড়ে প্রধান প্রধান সড়কে। নগরীর সাহেব বাজার, বর্ণালী মোড়, লক্ষ্মীপুর, উপশহর, ছোট বনগ্রাম, দড়িখড়বোনা, রেলগেট এলাকার সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে যায়।
এছাড়া নগরীজুড়ে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা দেখা যায়। বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতায় দেখা দেয় জনদুর্ভোগ।
আরও পড়ুন:সরকার ও বিরোধী দলের সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের পর আগামীতে গণমাধ্যমও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতিতে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
রোববার বেসরকারি ‘চ্যানেল ২৪’-এর কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
পিটার হাস বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আওতায় সরকারি দল, বিরোধী দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা এসেছে। আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।’
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন ব্যক্তির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগে পররাষ্ট্র দপ্তর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধী ব্যক্তিরা।
ভিসানীতি প্রয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, (গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারী) এসব ব্যক্তি ও তাদের নিকটতম পারিবারিক সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষিত হতে পারেন। এছাড়া একই অপরাধে জড়িত অন্য ব্যক্তিরাও ভিসানীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার হারাবেন। এদের মধ্যে আছেন বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি ও বিরোধীদলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য।
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়তার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত ২৪ মে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেন। সে সময় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অর্থ হিসেবে বলা হয়, ভোট কারচুপি, ভোটারকে ভয়ভীতি দেখানো, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধাদান, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ, মিডিয়াকে মতপ্রকাশে বাধা দেয়া।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে এডিসি হারুন অর রশিদের নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গঠন করা তদন্ত কমিটির তদন্তের সময়সীমা আরও তিন কার্যদিবস বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, ডিএমপি কমিশনার গোলাম ফারুকের কাছে রোববার তদন্তের সময়সীমা তিন দিন বাড়ানোর জন্য আবেদন করে তদন্ত কমিটি। এদিন কমিশনারের কাছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল।
সাময়িক বরখাস্ত এডিসি হারুন অর রশিদের ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর নির্যাতন চালানোর ঘটনা তদন্তে ডিএমপি একটি কমিটি গঠন করে।
দু’দফা সময় বৃদ্ধির পর গত মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ছিল কমিটির। কিন্তু কমিটি আরও সাতদিন সময় চাইলে তিনদিন বাড়ানো হয়। বর্ধিত সেই সময়ের শেষ দিন ছিল রোববার। এবার আরও তিন দিন সময় বাড়ানো হয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, এডিসি হারুন গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে এডিসি হারুন এডিসি সানজিদা সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে যান। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।
ওই সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সেখানে যোগ দেন এ দুই ছাত্রলীগ নেতাও। এক পর্যায়ে এডিসি হারুন পুলিশ এনে তাদের শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। পরে ওই দুইজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে মারধর করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে।
ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে ডিএমপি। এডিসি হারুনকেও করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত। তবে এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা পুরো ঘটনার দায় দিয়েছেন তার স্বামী মামুনকে। তিনি বলেছেন, তার স্বামীই প্রথমে হামলা চালান।
আরও পড়ুন:চাকরি দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার মামলায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১।
রোববার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আল্লাম এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর আবু সাঈদ চাঁদকে কারাগারে পাঠানো হয়। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দেয়ার মামলায় তিনি আগে থেকেই রাজশাহী কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে আসামি আবু সাঈদ চাঁদ, আলিম উদ্দিন এবং ওয়াজনবী রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বামনদীঘি চরঝিকড়া টেকনিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ওই স্কুলের বিভিন্ন পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে বাদী ও সাক্ষীদের কাছে চাঁদা দাবি করেন।
২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসের বিভিন্ন তারিখে তাদের কাছ থেকে আসামিরা মোট ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা নেন। পরে নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে তারা ওই স্কুলে যোগদান করেন। এরপর বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের অনুকূলে কোনো বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়নি। এমনকি শিক্ষার্থীদেরও কোনো নিবন্ধন হয়নি।
কিছুদিন পর তারা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, স্কুলটির কোনো অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও আসামিরা জেনেশুনে তাদের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন। পরে ২০০৭ সালের ২৯ জুলাই মাসুদ রানা নামে এক ভুক্তভোগী তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী শামসাদ বেগম মিতালী বলেন, ‘মামলায় আবু সাঈদ চাঁদকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি দু’জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই মামলার সঙ্গে আবু সাঈদ চাঁদ কোনোভাবেই জড়িত নন। এখানে তার কোনো সই-স্বাক্ষর কিছুই ছিল না। তিনি ওই সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর এটাই তার অপরাধ। এজন্যই তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।’
এদিকে রায় ঘোষণার পর আবু সাঈদ চাঁদের ছেলে মো. অলিভ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এই রায়কে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই রায় দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য, আমার বাবা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন। তবে নির্বাচনে বাবা অংশগ্রহণ করতে না পারলে ওই আসনে বাবার পক্ষে আমি অংশগ্রহণ করব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য