‘একটু ভালো করে বাঁচবো বলে আর একটু বেশি রোজগার, ছাড়লাম ঘর আমি ছাড়লাম ভালবাসা আমার নীলচে পাহাড়...’
বিয়ের পর তিথির চার জন্মদিনের চারটাতেই আমি দেশের বাইরে! প্রথম জন্মদিনে ছিলাম অস্ট্রেলিয়ায়, দ্বিতীয় জন্মদিনে সিংগাপুরের ক্লেমেন্টি, তৃতীয় জন্মদিনে প্যাসিফিক ওশান আর এবার আছি সিংগাপুর থেকে ইন্দোনেশিয়া যাবার অপেক্ষায়।
বেশ কিছুদিন আগে মেরিনারদের বিয়ে কেন, করলে কী কী সুবিধা ইত্যাদি লেখা একটা পোস্ট দেখেছিলাম। আমি নিশ্চিত নই কতজন মেরিনারের জীবনসঙ্গী বিয়ের আগ থেকেই একা হাতে নিজেকে, সমস্ত পরিবারকে আগলে রাখা লাগবে বিষয়টি পুরোপুরি জেনে-বুঝে একজন মেরিনারকে বিয়ে করে। একটু আধটু জানলেও বাস্তবতা কতটা উপলব্ধি করতে পেরেছিল বিয়ের আগে সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ।
প্রথমদিকে আমি আর তিথি অনেক ফ্যান্টাসিতে ভুগেছি। মনে হয়েছে জাহাজে মাত্র ৬/৭ মাসেরই তো ব্যাপার। আবার আমি সিনিয়র র্যাংকে গেলে তিথিকে নিয়েও সেইল করতে পারব ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এখন মনে হয় মেরিনারদের জীবন যাপন নিয়ে একটু বেশিই স্বপ্নালু ছিলাম তখন। তিথিও বিয়ের আগে যতটা স্মুদলি সবকিছু একা হাতে হ্যান্ডেল করতে পারবে ভেবেছিল, বাস্তবে তার ব্যতিক্রমই বেশি দেখতে পাচ্ছে।
জাহাজে থাকা অবস্থায় শুধু আর্থিক সাপোর্ট ছাড়া আর কোনো সাপোর্ট আমরা আমাদের স্ত্রী বা পরিবারকে দিতে পারি না। বর্তমানে জুনিয়র র্যাংকে সেই আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার সুযোগও অপ্রতুল।
আর্থিক সাপোর্ট অবশ্যই একটা বড় ইস্যু কিন্তু সব কিছু নয়- এটি বেশিরভাগ মেরিনারদের জীবনসঙ্গী কিছুদিন সংসার করার পর বুঝতে পারেন, শুরুতে নয়।
একজন মেরিনারকে বিয়ে করা হয়ত সহজ, কিন্তু আমাদের লাইফস্টাইলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। মেরিনারদের বিয়ে করতে হলে অবশ্যই একজন মেয়েকে 'বিশেষ' এবং ‘অসাধারণ’ হতে হবে। ঢালাওভাবে যে কেউ আমাদের লাইফস্টাইলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে না। তাই কেউ যদি মানসিকভাবে তেমনটা শক্ত না হন তাহলে তার জন্য মেরিনার কাউকে বিয়ে না করাই সমীচীন বলে মনে করি।
আজকে তাজমীন (আমার সন্তান) বা আমাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তিথিকেই একা একা সব সামলাতে হবে। একটু সান্ত্বনা বা আমার বুকে মাথা রেখে নিজেকে শক্ত রাখার সুযোগও ওর নেই।
আমার জাহাজে ইন্টারনেট থাকার কল্যাণে হয়ত নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারব (সব জাহাজে সেই সুবিধাও নেই) কিন্তু সেটাই কি সব? টাকাও হয়ত প্রয়োজনের দ্বিগুণ দিলাম, কিন্তু বিপদের সময় স্বামীকে পাশে না পাওয়ার যে অপূর্ণতা, যে আক্ষেপ সেটা কী দিয়ে মিটাবে? আমি যতই দামি দামি গিফট-কসমেটিকস-চকলেটস নিয়ে দেশে যাই না কেন সেটা ওর কষ্ট-আফসোস আর আক্ষেপের তুলনায় নিতান্তই তুচ্ছ।
মেরিনাররা যেমন ‘জাহাজি’ ট্যাগ লাগানোর পর থেকেই নিজেরা দেশের প্রায় সবকিছু থেকেই বঞ্চিত হয় তেমনি তাদের স্ত্রী-সন্তানেরাও। নদীর এপার-ওপার দুই পাড়েই একটা হাহাকার-দীর্ঘশ্বাস থাকে সবসময়।
আমি তাজমীনকে কাছে না পেয়ে ধড়ফড়াইয়া মরি, ওদিকে ফোনে তাজমীন ‘বাবা, প্লিজ কাম হেয়ার, দাদা রুম’ বলে আমাকে ডাকে। ঈদের দিন বা অন্য যে কোনো বিশেষ দিনে আমি একা একা জাহাজে ডিউটি করি, ওদিকে ওরাও বাবা-স্বামীছাড়া!
আমি দেশে না থাকায় আমার বা তিথির প্রিয়জনদের বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন মিস্ করি তেমনি ওরাও আমাকে ছাড়া একা একা গিয়ে কোন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে না পুরোপুরি। যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেখানে বাকিদের সবাই বাবা-স্বামীর হাত ধরে উপস্থিত হয় তাজমীন-তিথি সেখানে একা, সঙ্গী-সাপোর্টহীন।
এতকিছুর পরেও আমাদের জীবনসঙ্গীরা আমাদের বা আমাদের পরিবারকে কখনো ফেলে যায় না। হয়ত কখনও কখনও আক্ষেপের ঝুড়ি খুলে বসে, অপ্রাপ্তি বা না পাবার কষ্টগুলো মুখ ফুটে বলে ফেলে কিন্তু দিনশেষে আমরা একই জাহাজে আমাদের জীবন-সমুদ্র পাড়ি দেই। কখনও বিক্ষুব্ধ জলরাশি বা পাহাড়সম ঢেউ এসে ভেঙে দিতে চায়, ডুবিয়ে দিয়ে চায় ভালবাসার সে জাহাজ, কিন্তু আমরা শক্ত করে দুজন দুজনার হাত ধরে বসে থাকি একটা দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে, হয়ত একসঙ্গে ভাসবো বা একসঙ্গে ডুববো, কিন্তু কখনও বিচ্ছিন্ন হব না....
আজকে আমার জীবন-তরীর ক্যাপ্টেনের জন্মদিন, যে কিনা সমস্ত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে জীবন-সমুদ্রে আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলেছে...
জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর শুভ কামনা রইলো তিথি। আল্লাহ তোমার সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ করুন। জানি না তোমার ঠিক কততম জন্মদিনে আমি দেশে থাকতে পারব, আর কত জন্মদিন এভাবে দূর থেকেই উইশ করে যাব। কে জানে কবে তোমার জন্মদিনের কেক সামনে রেখে তাজমীনকে কোলে নিয়ে গাইতে পারব-
‘হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ ডিয়ার তিথি। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ....’
লেখক: এক্স-ক্যাডেট, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি (৪৭তম ব্যাচ)
বিদেশ যেতে না পেরে ক্ষোভে মাইক ভাড়া করে পুরো এলাকাবাসীকে গালাগাল করেছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার এক যুবক। পরে সেই ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পানান গ্রামে। ওই যুবকের নাম সারোয়ার হোসেন রাব্বি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তিনি বিদেশ যেতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাব্বি বিভিন্ন এনজিও ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেউ সহযোগিতা না করায় তার মধ্যে ক্ষোভ জন্ম নেয়। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে তিনি ক্ষোভের বশে ৫০০ টাকা খরচ করে একটি মাইক ভাড়া নেন এবং পুরো গ্রামজুড়ে মাইকযোগে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে গালাগাল করেন।
পরে তিনি গালাগালের ভিডিও নিজ ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন। ভিডিওতে রাব্বি অভিযোগ করেন, তিন-চার মাস ধরে সৌদি যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেও মাত্র এক লাখ টাকা জোগাড় করতে না পারায় তার ভিসা ও মেডিকেল মেয়াদ (৩০ অক্টোবর) শেষ হতে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সমিতির কাছে ঋণ চাইলেও কেউ সহযোগিতা করেনি। এমনকি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকেও লোন নিতে গেলে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।
রাব্বি বলেন, “মানুষের কারণে আগেও দু’বার আমার ভিসা নষ্ট হয়েছে। এবারও কেউ সাহায্য করল না। তাই রাগের মাথায় ভুল করেছি।”
ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেনন “প্রথমে ক্ষমা চাইছি। আমি অনেক খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছি। আমি কেন এমন করেছি, শুনুন।”
রাব্বি জানান, তিনি বিবাহিত এবং এক ছোট সন্তানের পিতা। জীবিকার তাগিদে তিনি অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি বিকাশের কাজ করেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীরা প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও পরে ভিডিওটি ভাইরাল হলে অনেকে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ আবার রাব্বির মানসিক কষ্ট ও পারিবারিক চাপের প্রতি সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। তবে এখন চায়ের দোকান থেকে ঘরোয়া আড্ডা সব জায়গায় রাব্বির ঘটনাই আলোচনার বিষয়।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম স্বৈরাচারের মতো, তাদের রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।
রোববার দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে শাপলা অর্জন করা হবে। মধ্যযুগীয় রাজা বাদশাদের মতো আচরণ করছে নির্বাচন কমিশন। গণবিশ্বাসী ও জনবান্ধব আচরণ হওয়া উচিত ছিল।
এনসিপির এ নেতা বলেন, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার মতো বর্তমান কমিশনের কোনো যোগ্যতা নেই। নুরুল হুদার মতো পরিণতি যাতে না হয় এমন সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
রাজনৈতিক দলের জন্য তৈরি করা প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় এনসিপির আবেদন বারবারই নাকচ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নিরাপদ ও দখলমুক্ত সড়কের দাবিতে ফার্মগেটে বিক্ষোভ করেছে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ও সরকারি সাইন্স হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট মোড়ে শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে প্রথমে মানববন্ধন করে। পরে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের স্কুল ও কলেজের সামনে অটোরিকশাগুলো জ্যাম তৈরি করে। গেটের সামনে রিকশাগুলো লাইন ধরে থাকে। এই এলাকায় স্কুল, কলেজ ও বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী এই রাস্তা দিয়ে পারাপার করতে হয়। অটোরিকশা একটার পর একটা থাকায় জ্যাম সৃষ্টি করে। রাস্তা পারাপারের সমস্যা হয়। রাস্তা যখন ফাঁকা থাকে, তখন তারা ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালায়। অটোরিকশার যে ব্রেক, তা দিয়ে কন্ট্রোল করা সম্ভব না। অনেক সময় তারা শিক্ষার্থীর উপরে রিকশা তুলে দেয়। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পার হতে হয়।
পাঁচ দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনের সড়কে অবিলম্বে স্পিড ব্রেকার স্থাপন করতে হবে। পর্যাপ্ত ল্যাম্প পোস্ট লাগাতে হবে। লেন ডিভাইডার এবং ট্রাফিক আইল্যান্ড স্থাপন করতে হবে। ফুটপাথ থেকে সব অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা, পার্কিং স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে হবে।
বাড়িভাড়ার ৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে দেওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির পরপরই এ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমাদের সব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে রোববার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় শহিদ মিনারে ৮ম দিনের মতো অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। নতুন কর্মসূচি হিসেবে দুপুর ১২টায় শিক্ষাভবন অভিমুখে ভুখা মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বাড়ি ভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ, মেডিকেল ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা ও উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা।
এর আগে এদিন সকালে বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে এবং সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা বৃদ্ধিতে সম্মতি দেয় অর্থ বিভাগ।
উপসচিব মিতু মরিয়মের স্বাক্ষর করা এক অফিস আদেশে বলা হয়, ৬ শর্ত পালন সাপেক্ষে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। আদেশ আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নং গেটের কার্গো ভিলেজ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ২১ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ধ্বংসস্তূপ ভবনে এখনও পানি ছিটাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টার পরও এমন চিত্র দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, আগুন এখনও পুরোপুরি নির্বাপণে আসেনি। এজন্য ধোঁয়া উড়ছে। তবে আমাদের ২২ ইউনিট আগুন নির্বাপণের কাজ করছে। আগুন যেন বাড়তে না পারে সেজন্য অনবরত পানি ছিটানো হচ্ছে।
এদিকে, সকাল থেকেই বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ধ্বংসস্তূপ দেখতে আসছেন ভুক্তভোগীরা। উৎসুক জনতার ভিড়ও দেখা গেছে। তবে ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টে কর্মরত রেজাউল করিম রনি বলেন, শুক্র-শনিবার আমদানি বন্ধ থাকে। কিন্তু রপ্তানি সবসময় খোলা থাকে। সেই সুবাদে শনিবার দিন সকালে আমি এক্সপোর্ট করতে আসি। বৃহস্পতিবার আমরা টাকাও জমা দিয়েছি। কিন্তু মালামাল নিতে পারিনি। রোববার নেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আগুনের প্রভাব পড়বে দেশের তৈরি পোশাক কারখানায়। কারণ এখানে এমন পণ্য সবচেয়ে বেশি ছিল। তবে শনিবার বা ছুটির দিন এমন ঘটনা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। এছাড়া আগুনে হাজারও কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে শনিবার দুপুর সোয়া ২টায় বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। একইসঙ্গে কাজ করেন নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, দুই প্লাটুন বিজিবিসহ পুলিশ-আনসার সদস্যরা।
সূত্র বলছে, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজটি মূলত পোস্ট অফিস ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি জায়গায় বা আট নম্বর গেটের পাশে। আর আগুন লেগেছে আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে। এখানে আমদানি করা পণ্য রাখা হয়। আগুনে এখানকার প্রায় সব মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ভয়াবহ আগুনের কারণে বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ঢাকার বদলে সব বিমান চট্টগ্রাম ও সিলেটে অবতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে, তিনটি ফ্লাইট সিলেটে, চেন্নাই ও দিল্লি থেকে দুটি ফ্লাইট কলকাতায় অবতরণ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রাত ৯টার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা শুরু হয়। তবে ছয় ঘণ্টায় ২৩টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
তথ্য মতে, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটার, সিভিল অ্যাভিয়েশন, আনসারসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আনসার সদস্যই রয়েছেন ২৫ জন। তাদের সিএমএইচ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিমানবন্দরের সূত্রমতে, তৈরি পোশাক কারখানার জন্য আমদানি করা বিপুল পরিমাণ কাপড় ও বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ ছিল আগুন লাগা ভবনে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লেগেছে। কবে নাগাদ ফের কার্গো ভিলেজ চালু করা যাবে তা পরে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইমামবাড়ি বাজারে মিষ্টির বক্সের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে বিরোধের জেরে টর্চলাইট জ্বালিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের ইমামবাড়ি বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ১০ অক্টোবর বানিয়াচং উপজেলার সন্দলপুর গ্রামের আমির উদ্দিনের মালিকানাধীন নবীগঞ্জ উপজেলার ইমামবাড়ি বাজারের ‘ভাই ভাই হোটেল’ থেকে কালিয়ারভাঙ্গা গ্রামের সাদমান আহমেদ ইমন মিষ্টি ক্রয় করেন। মিষ্টির বক্সে অতিরিক্ত ওজন ধরা পড়লে ইমন বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। এতে হোটেল মালিকপক্ষ ও ইমন মিয়ার পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
গত শনিবার সন্ধ্যার পর উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ না থাকায় টর্চলাইট জ্বালিয়ে চলে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে বাজারজুড়ে টর্চের আলো আর চিৎকারে আতঙ্কে ছিলেন এলাকাবাসী।
চট্টগ্রামে ডাকাতি মামলার আসামি ও ডাকাত সর্দার শ্রী নিরঞ্জন দাসকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সীতাকুণ্ড থানার দক্ষিণ ঈদিলপুর এলাকায় র্যাবের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার নিরঞ্জন দাস, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানার সারিকাইভ এলাকার প্রফুল্ল কুমার দাসের ছেলে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে– চট্টগ্রাম মহানগরের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি ডাকাতি মামলার প্রধান আসামি শ্রী নিরঞ্জন দাস সীতাকুণ্ড এলাকায় অবস্থান করছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফফর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সদরঘাট নৌ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য