যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের সাবেক বিজ্ঞানী স্যামি বেনজিওকে নিয়োগ দিয়েছে আরেক টেক জায়ান্ট অ্যাপল।
স্থানীয় সময় সোমবার অ্যাপলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক (এআই) গবেষণা বিভাগের দুই সহকর্মীকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন বেনজিও।
অ্যাপল সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মেশিন লার্নিং ও এআই কৌশলের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট জন জ্ঞানেন্দ্রর অধীনে প্রতিষ্ঠানটির নতুন এআই গবেষণা ইউনিটকে নেতৃত্ব দেয়ার কথা বেনজিওর।
টানা প্রায় আট বছর গুগলে ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। ২০১৮ সালে অ্যাপলে যোগ দেন তিনি।
অ্যাপলে বেনজিওর ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটিতে সদ্য যোগ দিতে যাওয়া বেনজিও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
১৪ বছর গুগলে কাজ করার পর গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটি থেকে সরে দাঁড়ান বেনজিও। গত মাসে রোমাঞ্চকর কাজের সন্ধান করছেন বলে জানিয়েছিলেন আলোচিত এ বিজ্ঞানী।
গত কয়েক মাসে নিজেদের দুই কর্মীকে বরখাস্ত করে গুগল। তাদের একজন মারগারেট মিশেল। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ নথি বাইরে স্থানান্তরের অভিযোগ এনেছিল সার্চ জায়ান্টটি।
অন্যজন হলেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক গবেষক টিমনিত গেবরু। কৃষ্ণাঙ্গ এ নারীর দাবি, অ্যাকাডেমিক গবেষণাপত্রের সহ-লেখক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। ওই গবেষণাপত্রের জন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়।
গবেষণাপত্রটিতে জেন্ডার ও সংখ্যালঘুদের প্রতি পক্ষপাতের বিষয় ছিল। এতে নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কাঠামোগত পক্ষপাতসহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভাষার মডেল নিয়ে কথা বলেছিলেন টিমনিত। গুগলের নির্দেশে ওই গবেষণাপত্র প্রত্যাহার না করায় তাকে বহিষ্কার করে প্রতিষ্ঠানটি।
দুই সহকর্মীকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বেনজিও।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিষয়ে গবেষণা দলের দায়িত্বে ছিলেন মিশেল ও টিমনিত। গুগলের কর্মপরিবেশের বৈচিত্র্য নিয়েও উদ্বেগ জানান তারা। দুজনের প্রতিই সমর্থন ছিল বেনজিওর।
গুগলের ব্রেইন রিসার্চ দলের শুরুর দিকে নেতৃত্ব দেয়া বেনজিও ‘ডিপ লার্নিং’ অ্যালগরিদম ডেভেলপমেন্ট করেন।
আরও পড়ুন:ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিনি বন্দিদের ন্যূনতম খাদ্য সরবরাহ থেকেও বঞ্চিত রাখছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। গত রোববার এক ঐতিহাসিক রায়ে এ কথা জানান দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, বন্দিদের জন্য উন্নত মানের খাবারসহ নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রায় ২৩ মাসে এই প্রথম ইসরায়েলের আদালত দেশটির সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এভাবে রায় দিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে আটক করেছে তারা। গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে আটক হওয়া অনেককে মাসের পর মাস শিবির ও কারাগারে রাখার পর অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে অতিরিক্ত ভিড়, অল্প খাবার, চিকিৎসার অভাবসহ রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে।
তিন সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মত রায়ে বলেন, সরকারকে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন তিনবেলা খাবার সরবরাহ করতেই হবে, যাতে বন্দিদের ‘মৌলিক বেঁচে থাকার শর্ত’ নিশ্চিত হয়।
দুই-এক ভোটে আদালত আরও স্বীকার করেছেন, সরকারের ইচ্ছাকৃত খাদ্যসংকোচন নীতি বন্দিদের মধ্যে অপুষ্টি ও অনাহার সৃষ্টি করেছে।
রায়ে বলা হয়, এখানে আরামদায়ক জীবন বা বিলাসিতার কথা নয়, বরং আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম বেঁচে থাকার শর্ত পূরণের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে খারাপ শত্রুর পথ অনুসরণ করা উচিত নয়।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ৬১ বন্দি ইসরায়েলের হেফাজতে মারা গেছেন। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চে এক কিশোর (১৭) অনাহারে মারা গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
কারাগার তদারকির দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বরাবরের মতো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বন্দিদের শুধু ‘আইনে নির্ধারিত সর্বনিম্ন শর্তেই’ রাখা হবে। আদালতের রায়কে তিনি ‘ইসরায়েলের জন্য লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
রায়টি আদালতে আবেদন করা মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল (এসিআরআই) ও গিশার বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এএসিআরআই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, ইসরায়েলের কারাগারগুলোকে সরকার ‘নির্যাতন শিবিরে’ পরিণত করেছে।
সংগঠনটির ভাষায়, কোনও রাষ্ট্রের উচিত নয় মানুষকে অনাহারে রাখা। মানুষ মানুষকে না খাইয়ে রাখবে না—সে যা-ই করে থাকুক না কেন। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, এপি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়াসুস যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘অমূল্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কারণে তা আজ বিপর্যস্ত।
রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানই নিখুঁত নয় এবং সর্বশেষ বিজ্ঞান এবং বাস্তব সময়ে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে অব্যাহত উন্নতি প্রয়োজন। তবে মার্কিন সিডিসির কাজ অমূল্য এবং এটিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে!’
কিন্তু, ট্রাম্পের সরকার তার পরিচালক সু মোনারেজকে তার চাকরির মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই বরখাস্ত করার পর মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) চরম অস্থিরতার মধ্যে পড়েছে। মোনারেজ মার্কিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বিজ্ঞানীদের বরখাস্ত করেছিলেন এবং দেশের টিকা নীতিগুলো পুনর্গঠন করেছিলেন।
টেড্রোস বলেছেন, সিডিসি ‘দীর্ঘদিন ধরেই উৎকর্ষের কেন্দ্র’ ছিল। অনেক দেশ এটি অনুকরণ করেছে। তিনি বলেছেন, সিডিসির সাথে ‘হু’-এর ‘ঘনিষ্ঠ এবং দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব’ রয়েছে। ‘হু’র সবচেয়ে বড় দাতা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশের অধীনে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি তহবিল দিয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে এক বছর সময় লেগেছে। মোনারেজ কেনেডির টিকা নীতি পরিবর্তনকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।
তার পদচ্যুতির ফলে কমপক্ষে চারজন শীর্ষ সিডিসি কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। ফলে মার্কিন সংস্থায় বিশৃঙ্খলা আরো গভীর করে তোলে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কেনেডি কোভিড-১৯ টিকা কারা গ্রহণ করতে পারবেন তা সীমিত করেছেন।
লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচানোর জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্ত ‘এমআরএনএ’ প্রযুক্তির জন্য ফেডারেল গবেষণা অনুদান বন্ধ করে দিয়েছেন এবং অটিজম সম্পর্কে মিথ্যা দাবির ওপর নতুন গবেষণা ঘোষণা করেছেন।
ভারতের মুম্বাইয়ের ফোর্ট এলাকায় নতুন গথিক স্থাপত্যশৈলীর একটি ভবন। পুরোনো ভবনটির একটি ছোট্ট অফিস থেকে ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে বের হচ্ছে পারসি সম্প্রদায়ের সাময়িকী ‘পারসিয়ানা’। ঐতিহ্যবাহী সাময়িকীটি আগামী অক্টোবর মাস থেকে আর বের হবে না। গত আগস্টে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক পেস্টনজি ওয়ার্ডেন ১৯৬৪ সালে ইংরেজি ভাষার সাময়িকীটি প্রকাশ করা শুরু করেছিলেন। মুম্বাইয়ের পারসি সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনযাত্রা ও ঘটনাবলি নথিবদ্ধ করাই ছিল প্রাথমিক উদ্দেশ্য। সপ্তম-অষ্টম শতকে ইরান বা পারস্য থেকে ভারতে আসা জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বীদের মানুষজন পারসি সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত।
১৯৭৩ সালে মাত্র এক রুপিতে সাময়িকীটি কিনে নেন সাংবাদিক জেহাঙ্গীর প্যাটেল। এর পর থেকে তিনিই এর সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর একটির বদলে মাসে দুটি করে সংখ্যা বের করা শুরু করেন তিনি। সাহসী প্রতিবেদন, ব্যঙ্গাত্মক কলাম ও চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে সাময়িকীটি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৮৭ সালে আন্ত:ধর্মীয় বিয়ের বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে সাময়িকীটি আলোড়ন তৈরি করেছিল।
ছয় দশকে পারসিয়ানা কেবল একটি সাময়িকী নয়; বরং সারা বিশ্বের জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সেতুবন্ধের মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানভিত্তিক এক পাঠক বলেন, ‘এটি শুধু প্রকাশনা ছিল না। ছিল আমাদের সঙ্গী ও সেতুবন্ধ।’ যুক্তরাষ্ট্রের এক পাঠক লিখেছেন, ‘এই সাময়িকী বিতর্কিত বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসত।’
আগস্টে পারসিয়ানার এক সম্পাদকীয়তে সাময়িকীটি বন্ধের কারণ হিসেবে বলা হয়, গ্রাহকসংখ্যা কমেছে, তহবিলের সংকট বেড়েছে ও প্রকাশনার কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো উত্তরসূরি পাওয়া যায়নি।
৮০ বছর বয়সি জেহাঙ্গীর ১৫ সদস্যের একটি দল নিয়ে পারসিয়ানা বের করতেন। তার সহকর্মীদের প্রায় সবার বয়স ৬০ ও ৭০–এর মধ্যে। পারসিয়ানা বন্ধ হয়ে যাওয়াকে ‘কষ্টের’ উল্লেখ করে জেহাঙ্গীর বলেন, ‘শেষ দিনে কোনো কেক বা উৎসব থাকবে না। এটা দুঃখের সময়।’
গাজা উপত্যকার গাজা শহরে ইসরায়েলের দূরনিয়ন্ত্রিত ও বিস্ফোরকভর্তি 'রোবট' দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে, যা সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
হামজা শাবান নামের ৩৫ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম, রোবটটি কোথায় আছে। আমার কাছে, নাকি কাছাকাছি?’ পরে দেখা গেল রোবটটি প্রায় ১০০ মিটার দূরে ছিল। এরপর আরেকটি বিস্ফোরণে তিনি জানালা থেকে দুই মিটার দূরে ছিটকে পড়েন। হামজা শাবান বলেন, ‘আমি হামাগুড়ি দিয়ে শোবার ঘরের দিকে পালাতে শুরু করলাম। আমি শুনতে পাচ্ছিলাম, উড়ন্ত ধ্বংসাবশেষ ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ একটার সঙ্গে আরেকটায় আঘাত করছে। ভয়ানক শব্দ।’
হামজা শাবানের এই অভিজ্ঞতা এখন গাজা নগরীর বাসিন্দাদের জন্য একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। গত মাসে ইসরায়েল প্রায় ১০ লাখ মানুষের গাজা নগরীতে হামলা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতি রাতেই বড় বড় বিস্ফোরণে শহরটি কেঁপে উঠছে।
ইসরায়েল ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় স্থলসেনা মোতায়েনের পরিবর্তে দূরনিয়ন্ত্রিত ও বিস্ফোরকভর্তি এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) পাঠাচ্ছে। এই নতুন যুদ্ধকৌশলের কেন্দ্রে আছে এই দূরনিয়ন্ত্রিত যানগুলো, যা দূর থেকে নির্দিষ্ট স্থানে পাঠানো হয় এবং তারপর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়।
কিছু ক্ষেত্রে এই যানগুলো রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরকভর্তি ব্যারেল ফেলে এবং পরে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যাতে পুরো এলাকার সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়। হামজা শাবান জানান, সাধারণত রাত ১০টা বা ১১টার দিকে যখন মানুষ ঘুমাতে যায়, তখনই বিস্ফোরণ শুরু হয় এবং প্রতি রাতেই এমন ৮ থেকে ১০টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘এসব বিস্ফোরণ ভীষণ শক্তিশালী, যা পুরো ভবনকে গুঁড়িয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।’
হামজা শাবান ইসরায়েলের অনেক যুদ্ধ দেখেছেন এবং এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের হামলার ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গেও পরিচিত। তবে এবারের ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এসব রোবটের সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা হয় না। এগুলো বিমান হামলার চেয়েও অনেক বেশি বিধ্বংসী।’
হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করলেও ইসরায়েল সেটি বাতিল করে দেয়। এরপর ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা পুরো গাজা উপত্যকা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করে, যার শুরু গাজা নগরী থেকে। এর পর থেকে ইসরায়েল আকাশ ও স্থল হামলা আরও জোরদার করেছে। গাজাভিত্তিক সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩ আগস্ট থেকে উপত্যকার জনবহুল এলাকায় অন্তত ১০০টি বিস্ফোরক রোবট ব্যবহার করা হয়েছে।
অলাভজনক সংস্থা ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের তথ্য অনুযায়ী, এসব বিস্ফোরণে প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হচ্ছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি রোবটে প্রায় সাত টন পর্যন্ত প্রচণ্ড শক্তিশালী বিস্ফোরক ভরা থাকে। এই রোবটগুলোর ব্যবহার গাজা নগরীর উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণের এলাকাগুলোতে বেশি হচ্ছে।
ইউরো-মেড মনিটর বলছে, এই রোবটগুলো এমন এক ‘অভূতপূর্ব গতিতে’ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা গাজা নগরীকে ‘মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার’ কৌশলের ইঙ্গিত দেয়। সংস্থাটি আরও বলেছে যে, বর্তমান গতিধারা চলতে থাকলে দুই মাসের মধ্যে নগরীর বাকি অংশও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিপুল সামরিক শক্তি এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তাদের অপরাধ ঠেকাতে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ না থাকায় এই সময়সীমা আরও কমে আসতে পারে।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম ওয়ালা জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী বিস্ফোরক রোবটের ব্যবহার তিন গুণ বাড়িয়েছে এবং গাজায় আরও শত শত রোবট পাঠানো হচ্ছে। এই যানগুলো এমনভাবে তৈরি যে তা অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ক্ষতি করে এবং হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের সরাসরি সংঘর্ষ কমিয়ে স্থল অভিযানে ইসরায়েলি সেনাদের ঝুঁকি হ্রাস করে।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই
প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার এক দিন পর সোমবার জাপানের পরবর্তী নেতা হওয়ার দৌড়ে প্রথম প্রার্থী হিসেবে যোগ দিলেন ‘ট্রাম্প হুইস্পেরার’ নামে পরিচিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিৎসু মোতেগি।
টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মোতেগি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জয়লাভ করলে তাকে জাপানে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও এর গুরুত্বপূর্ণ অটো সেক্টরে মার্কিন শুল্কের ফলে সৃষ্ট নতুন অস্থিরতা সামাল দেওয়ার মতো কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন।
দুটি নির্বাচনে দীর্ঘদিনের প্রভাবশালী দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপির) ভরাডুবি হলে ইশিবা গত রোববার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং এরপর অক্টোবরের শুরুতে তার দল নতুন প্রধানকে নির্বাচন করবে বলে জানা গেছে।
দলের হেভিওয়েট প্রার্থী মোতেগি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনস্থির করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে ও বিদেশে কঠিন সমস্যা সমাধান করে আমাদের দেশ জাপানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
১১ মাসের অস্থিরতার মধ্যে, ইশিবাকে আগে নির্ভরযোগ্য হিসেবে দেখা হতো। তবে তিনি সংসদের উভয় কক্ষেই তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলেন।
১৯৫৫ সাল থেকে প্রায় ধারাবাহিকভাবে শাসন করে আসা এলডিপির জন্য এটি একটি বড় ধরনের ধাক্কা। ৬৯ বছর বয়সি এলডিপির সাবেক মহাসচিব মোতেগি আগামী দিনে আবির্ভূত হতে পারেন, এমন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন।
হার্ভার্ড-শিক্ষিত এই রাজনীতিবিদকে শক্তিশালী ইংরেজিতে কথা বলার জন্য ‘ট্রাম্প হুইস্পেরার’ বলা হতো। কারণ তিনি মার্কিন-জাপান বাণিজ্য আলোচনায় দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন।
আরেকজন প্রার্থী হলেন ৬৪ বছর বয়সি কট্টর জাতীয়তাবাদী এবং এক সময়ের হেভি মেটাল ড্রামার সানা তাকাইচি। তিনি ২০২৪ সালে ইশিবার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। শিনজিরো কোইজুমিও (৪৪) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
শিনজিরো সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। তিনি সম্প্রতি ইশিবার কৃষিমন্ত্রী হিসেবে চালের দাম কমানোর দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ইশিবার শীর্ষ সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিমাসা হায়াশি ও সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তামন্ত্রী তাকায়ুকি কোবায়াশি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেন।
দলের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, এলডিপি এই সপ্তাহে কখন এবং কীভাবে তাদের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন- তা নিয়ে আলোচনা করবে। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য নতুন নেতার এখনো সংসদের উভয় কক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মাস খানেক আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি নিজেকে ‘ব্যাপকভাবে’ ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণার সঙ্গে যুক্ত মনে করেন। তার এই বক্তব্যের পর, অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগে ওঠে যে, নেতানিয়াহু আসলে বৃহত্তর ইসরায়েল বলতে কোন কোন দেশ বা অঞ্চলকে বোঝাচ্ছেন।
নেতানিয়াহুর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’সংক্রান্ত মন্তব্যের পরে অনেক আরব দেশ নিন্দা জানিয়েছে। দেশগুলো নেতানিয়াহুর মন্তব্যকে তাদের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছে। ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণাটিকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। তবে এই ধারণা মূলত দীর্ঘ সময় ধরে চরম জাতীয়তাবাদী ইসরায়েলি তথা জায়নবাদীদের মধ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ প্রায়শই এমন এক ভিশন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যেখানে ভূখণ্ড সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফিলিস্তিন, লেবানন এবং জর্ডানকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, মিশর এবং সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ অংশও ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
তবে সংকীর্ণ অর্থে ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় যেসব ভূখণ্ড দখল করেছিল, সেগুলো বোঝাতেও এই শব্দবন্ধ ব্যবহৃত হয়। সে সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করেছিল।
যদিও নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য সাম্প্রতিক এবং ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ধারণাটি নতুন নয় এবং স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িতও নয়, তারপরও কিছু মানুষের কাছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যা এবং ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের আলোকে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ধারণাটির জনক রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক থিওডর হার্জল। তিনি তার ডায়েরিতে লিখেছিলেন যে ইহুদি রাষ্ট্র ‘মিসরের প্রবাহ (নীলনদ) থেকে (ইরাকের ইউফ্রেটিস (ফোরাত নদী) পর্যন্ত’ বিস্তৃত হওয়া উচিত। এই বাক্যাংশটি হিব্রু বাইবেল বা তানাখের আদিপুস্তকের জেনেসিস অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। যেখানে আল্লাহ ইব্রাহিম এবং তার বংশধরদের ‘মিসরের প্রবাহ থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত’ বিশাল ভূমি প্রদান করেছেন।
কিছু ইসরায়েলি আবার ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ বলতে তুলনামূলক কম বিস্তৃত একটি এলাকাকে বোঝেন। এই বিষয়ে ইহুদি ধর্মগ্রন্থ বুক অব ডিউটেরোনমি বা যা দ্বিতীয় আইন বইতে উল্লেখ রয়েছে। যেখানে আল্লাহ মূসাকে (আ.) নির্দেশ দেন ফিলিস্তিন, লেবানন, এবং মিশর, জর্ডান ও সিরিয়ার অংশ দখল করতে। আবার অনেকে শামুয়েলের কিতাব থেকে উদাহরণ টানেন। যেখানে রাজা শৌল ও দাউদের অধীনে দখলকৃত ভূখণ্ডের বর্ণনা আছে, যার মধ্যে ফিলিস্তিন, লেবানন এবং জর্ডান ও সিরিয়ার কিছু অংশ রয়েছে।
ইহুদিদের অনেকেই এই ধারণাকে কেবল রাজনৈতিক ধারণা মনে করেন না। বরং তাদের কাছে এটি এক ঐশ্বরিক আদেশ পূরণ এবং তারা যা নিজেদের জন্য অধিকারভুক্ত মনে করে সেই ভূমি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটির সীমান্ত অস্থির ছিল। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়, ইসরায়েল গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীর, সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করে। এটি ইসরায়েলের ভূখণ্ড সম্প্রসারণের প্রথম বড় সামরিক প্রচেষ্টা ছিল। পরে সিনাই মিসরের কাছে ফেরত দেওয়া হয় শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে, আর গোলান হাইটস আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করা হয়।
এই যুদ্ধের পর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা নতুনভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, বিশেষ করে ধর্মীয় জায়োনিস্টদের মধ্যে। ২০ শতকের শেষ দিকে, এই শব্দ বন্ধটিকে কিছু ইসরায়েলি ইতিহাস ও ধর্মীয় লক্ষ্য পূরণের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালে ‘মুভমেন্ট ফর গ্রেটার ইসরায়েল’ নামক রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়, যা ১৯৭০-এর দশকের শেষ পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। এটি দখলকৃত ভূখণ্ড রক্ষা এবং ইহুদি নাগরিকদের বসতি স্থাপনের পক্ষে কাজ করত।
বর্তমান ইসরায়েলি সরকার ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ উল্লেখ আরও সাধারণ হয়ে গেছে। গত বছর অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ইসরায়েলের সীমান্ত সম্প্রসারণের পক্ষে বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন।
তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েল ক্রমশ সব ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড এবং জর্ডান, লেবানন, মিশর, সিরিয়া, ইরাক ও সৌদি আরবের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত করবে। ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণার উল্লেখ করে ধর্মীয় সূত্র টেনে তিনি বলেন, ‘লিখিত আছে যে, জেরুজালেমের ভবিষ্যৎ হলো দামেস্ক পর্যন্ত প্রসারিত হওয়া।’
স্মতরিচ ২০২৩ সালে প্যারিসে ইসরায়েলে ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির কর্মীর স্মরণসভায়ও একই ধরনের ধারণা তুলে ধরেছিলেন। জর্ডানসহ ইসরায়েলের মানচিত্রের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ নামে কোনো কিছু নেই।’ অন্যান্য মন্ত্রী এবং এমপিরাও গাজায় ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করার পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন।
মরণব্যধি ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের তৈরি ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সফল হয়েছে। যা এখন সব রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। রাশিয়ার ফেডারেল মেডিকেল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল এজেন্সির (এফএমবিএ) প্রধান ভেরোনিকা স্কভোর্টসোভা ইস্টার্ন অর্থনৈতিক ফোরামে এ ঘোষণা দেন।
নতুন ভ্যাকসিনটির নাম এন্টারোমিক্স। এটি তৈরি হয়েছে এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করার পর এটি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে।
নতুন এই ভ্যাকসিন দুর্বল ভাইরাস ব্যবহারের পরিবর্তে মানব শরীরের কোষগুলোকে প্রোটিন তৈরিতে প্রশিক্ষণ দেয়। এরপর শরীর এমন প্রোটিন তৈরি করে যা ক্যানসার কোষগুলোকে আক্রমণ করে।
পরীক্ষায় কী দেখা গেছে?
ফেডারেল মেডিকেল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল এজেন্সি জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটি তিন বছরের প্রাক-ক্লিনিকাল পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, বারবার ডোজ দেওয়ার পরেও এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। সবচেয়ে ভালো ফলাফল হলো, কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের ধরনের ওপর নির্ভর করে টিউমারের আকার ৬০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছোট হয়েছে বা সেগুলোর বৃদ্ধি অনেক কমে গেছে। গবেষকরা আরও দেখেছেন যে, এই ভ্যাকসিন যারা গ্রহণ করেছেন তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কোন ক্যান্সারে এটি কাজ করবে?
প্রাথমিকভাবে, এই ভ্যাকসিনটি কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে। তবে বিজ্ঞানীরা গ্লিওব্লাস্টোমা (এক ধরনের দ্রুত বর্ধনশীল মস্তিষ্কের ক্যান্সার) এবং বিভিন্ন ধরনের মেলানোমা (গুরুতর ত্বকের ক্যানসার, যার মধ্যে চোখের মেলানোমাও অন্তর্ভুক্ত) এর জন্যও ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মন্তব্য